পতিত জমিতে মাল্টা চাষে আলিম ও আলেয়ার দৃষ্টান্ত স্থাপন
কৃষি বিভাগ
জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার সীমান্ত সংলগ্ন চেঁচড়া গ্রামে পতিত জমিতে মাল্টা চাষ করে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ভাই-বোন আব্দুল আলিম ও আলেয়া বেগম। তারা ওই এলাকার ময়েন উদ্দিনের সন্তান।
জানা যায়, সীমান্ত এলাকায় বসবাস করলেও একটু লেখাপড়া জানার কারণে দুই ভাই-বোন মিলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে মাল্টা চাষের। সেই লক্ষ্য নিয়ে স্থানীয় মসজিদের নামে থাকা আড়াই বিঘা পতিত জমি লিজ নিয়ে দিনাজপুর থেকে উন্নত জাতের বারি-১ জাতের ২৩০টি চারা সংগ্রহ করে মাল্টা চাষ শুরু করেন। যেখানে তেমন কোন ফসল হয়না আবার বেশির ভাগ অংশ জুড়ে রয়েছে ঝোঁপঝাড়।
মসজিদ কমিটির নিকট থেকে দুই লক্ষ টাকা দিয়ে ১০ বছরের জন্য লিজ নিয়ে শুরু করে মাল্টা চাষ। জমি লিজ নেওয়া, বাগান তৈরি, সার কীটনাশক, লেবারসহ এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ৭ লাখ টাকা বলে জানান আব্দুল আলিম।
তিনি জানান, ইউটিউব থেকে মাল্টা চাষের বিষয় দেখে আগ্রহ সৃষ্টি হলেও স্থানীয় কৃষি বিভাগ মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ করা থেকে শুরু করে সব রকম পরামর্শ প্রদান করেছে।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানায়, মসজিদের নামে থাকা আড়াই বিঘা পতিত জমি যেখানে তেমন কোন ফসল হতো না, সেখানে ভাই-বোন মিলে মাল্টা করে এলাকায় তাক লাগিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বর্তমানে বাগানের মাল্টার গাছ গুলোতে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে মাল্টা, দেখে যেন মন শান্তি। তাই ভালো লাভের স্বপ্ন দেখছেন মাল্টা চাষি আব্দুল আলিম ও আলেয়া বেগম। আগামী সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে মাল্টা তোলা সম্ভব হবে।
মাল্টা বাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত আলেয়া বেগমরে দুই ছেলে আলফাজ ও আলী রাজ জানান, গত বছর প্রথম মৌসুমে ৮০ হাজার টাকার মতো মাল্টা বিক্রি করলেও এবার ফলন ভালো হওয়ায় ২/৩ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি হবে এমন আশা প্রকাশ করেন তারা। বর্তমানে জমিতে থাকা মাল্টার বাগান দেখে মাল্টা ব্যবসায়ীরা দেড় লাখ টাকা দাম করছেন বলেও জানান, আলফাজ ও আলী রাজ।
মাল্টা চাষে সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই মাল্টার বাগান করার আগ্রহ প্রকাশ করছেন বলে জানান, প্রতিবেশী রুস্তম আলী। পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ লুৎফর রহমান বলেন, এখানকার মাটি লাল এটেলযুক্ত হওয়ায় মাল্টা চাষের উপযোগী। সে কারণে পড়ে থাকা অর্থাৎ পতিত জমিতে বিশেষ করে যে জমি গুলোতে তেমন ফসল হয়না এ সব জমিতে মাল্টা চাষের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ দেখে পাঁচবিবি উপজেলায় চলতি মৌসুমে ছোট বড় মিলে ১০০ টি মাল্টার বাগান করা সম্ভব হয়েছে বলে জানান তিনি।