দুটি গরু দিয়ে খামার শুরু করে এখন কোটিপতি শাহ নেওয়াজ!
প্রাণিসম্পদ
দিনাজপুরের শাহ নেওয়াজ মাত্র দুটি বিদেশি গরু কিনে শুরু করলেন খামার। আর তা দিয়েই গড়ে তুলেছেন বিশাল এক দুগ্ধ খামার। এখন তিনটি পৃথক শেডে গরু রয়েছে ৭০টি। এসব গরুর লালন পালন এবং যত্নে কাজ করছেন ১০ জন শ্রমিক। খামারের প্রথম শেডে রয়েছে ১৬টি বাছুর। দ্বিতীয় শেডে রাখা হয়েছে বাচ্চা প্রসবের জন্য অপেক্ষমান গাভি।
শাহ নেওয়াজ দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার বড়গলি (মেলার বাগান) গ্রামের সফল উদ্যোক্তা। তিনি ২০১৩ সালে দুই লাখ টাকা পুঁজিতে বাজার থেকে কিনেছিলেন বিদেশি জাতের দুটি গরু। সেই দুটি গরু থেকে ৮ বছরের মাথায় তার নিজস্ব বাড়িতে গড়ে উঠেছে ‘নেচার ফ্রেশ ডেইরি ফার্ম’।
জানা যায়, তিনটি শেডেই বর্তমানে রয়েছে ৩টি গাভি। আগামী দুয়েক মাসের মধ্যেই বাচ্চা প্রসব করবে এই তিনটি গাভী। তৃতীয় এবং বৃহত্তম শেডে রাখা হয়েছে শুধুমাত্র এমন গাভি, যেগুলো এখন দুধ দেয়। এসব গাভি মিলে প্রতিদিন প্রায় ২শ লিটার করে দুধ দেয়।
গরু পালনে ব্যবহার করা হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তি। গরু থেকে দুধ সংগ্রহ করতে তুরস্ক থেকে আনা হয়েছে আধুনিক ‘মিলকিং’ যন্ত্র। ফলে গাভি থেকে দুধ সংগ্রহ করতে বাড়তি কোনো ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে না তাদেরকে। এছাড়াও গোখাদ্য হিসেবে নিজস্ব ৯ বিঘা জমিতে চাষ করা হয়েছে নেপিয়ার এবং সুইট লেমন জাতের ঘাস।
প্রতিদিন শ্রমিকরা জমি থেকে এসব ঘাস কেটে নিয়ে আসেন। এরপর আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সাইজে এসব ঘাস কেটে গরুগুলোকে খাওয়ানো হয়।
‘নেচার ফ্রেশ ডেইরি ফার্ম’ -এর মালিক শাহ নেওয়াজের ভাই সাজ্জাদ আহম্মেদ জানান, আশপাশের বিভিন্ন জেলা এবং উপজেলা থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন ব্যক্তি এই গরুর খামার দেখতে আসেন। এছাড়াও ফার্মের নামে খোলা ফেসবুক পেজে প্রতিদিন প্রায় ১০০-১৫০ জন ব্যক্তি এসব গরু লালন পালনের বিভিন্ন পদ্ধতি জানতে চেয়ে ম্যাসেজ করেন। মাত্র ২ লাখ টাকা দিয়ে শুরু করেছিলাম। বর্তমানে আমার খামারে প্রায় ২ কোটি টাকার গরু আছে। আমার পুরো প্রকল্পটি প্রায় ৩ কোটি টাকার।
তিনি আরো জানান, শুরু থেকেই আমার ইচ্ছা ছিল যেন আমার খামারে একশ গরু থাকে। তবে খুব অল্প দিনেই আমি সফল হয়েছি। গরু লালন পালনে শুরু থেকেই উপজেলা এবং জেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয় আমাকে সার্বিক সহযোগিতা এবং পরামর্শ প্রদান করে আসছে।
তবে তিনি অভিযোগ করেন, আমাদের উপজেলায় গরুর দুধ সংগ্রহের জন্য চিলিং সেন্টার (দুধ সংগ্রহ কেন্দ্র) নেই। ফলে আমিসহ উপজেলার ১১৪টি খামারের মালিককে গরুর দুধ বাজারজাত করতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
ঘোড়াঘাট উপজেলা প্রাণী সম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা (এলডিডিপি) ডা. রাকিবা খাতুন বলেন, ঘোড়াঘাটে চিলিং সেন্টার না থাকায় দুধ বিপণনে খামারীরা কিছুটা সমস্যায় ভুগছেন। চিলিং সেন্টার নির্মাণে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।