‘জাতীয় চিড়িয়াখানাকে আধুনিক ও বিশ্বমানে রুপান্তর করা হবে’
প্রাণিসম্পদ
বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানাকে মাস্টারপ্ল্যানের মাধ্যমে আধুনিক ও বিশ্বমানে রুপান্তর করা হবে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
সোমবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা প্রাঙ্গণে চিড়িয়াখানায় সম্প্রতি জন্ম নেয়া দুটি বাঘ শাবকের নামকরণ, নিবন্ধন ও দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্তকরণ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী একথা জানান।
এ সময় গত ২৬ মে ২০২১ তারিখে চিড়িয়াখানায় নতুন জন্ম নেয়া পুরুষ বাঘ শাবকের নাম ‘দুর্জয়’ এবং মেয়ে বাঘ শাবকের নাম ‘অবন্তিকা’ রাখেন মন্ত্রী।
এ সময় মন্ত্রী বলেন,সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এর আদলে জাতীয় চিড়িয়াখানাকে গড়ে তোলা হবে। এ লক্ষ্যে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে। এ কাজে সিঙ্গাপুরের কনসালটেন্ট নিয়োগ করা হয়েছে। চিড়িয়াখানায় প্রাণীদের সাফারি পার্কের মতো করে রাখা হবে।
চিড়িয়াখানায় ভেতরে আলাদা আলাদা জোন তৈরি করে একই জাতীয় প্রাণী বা পাখিদের একই জোনে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। চিড়িয়াখানা পূর্বের তুলনায় সুসজ্জিত করা হয়েছে, অবকাঠামো উন্নয়ন করা হয়েছে, দর্শনার্থীদের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা তৈরি করা হয়েছে। করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এভাবে চিড়িয়াখানাকে অপেক্ষাকৃত আধুনিক পর্যায়ে আমরা নিয়ে যাচ্ছি। মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের পর বাংলাদেশেই হবে আধুনিক চিড়িয়াখানা।
তিনি আরো বলেন, চিড়িয়াখানার জন্য আমরা আইন প্রণয়ন করছি। ইতোমধ্যে চিড়িয়াখানা আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদন হয়েছে। আইন ও বিধি-বিধানের আওতায় বাংলাদেশের চিড়িয়াখানা পরিচালিত হবে।
মন্ত্রী আরো যোগ করেন, জাতীয় চিড়িয়াখানা নতুন দুটি শাবকসহ এখন ১১টি বাঘ রয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য পশু-পাখিও পর্যাপ্ত রয়েছে। করোনাকালে নির্বিঘ্ন পরিবেশ পেয়ে পশু-পাখির প্রজনন বেড়েছে। উদ্বৃত্ত পশু-পাখি রংপুর চিড়িয়াখানাসহ অন্যান্য চিড়িয়াখানায় দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে ৩৬ লাখ টাকার হরিণ বিক্রয় করা হয়েছে। প্রজনন বাড়ার কারণে চিড়িয়াখানার অভ্যন্তরে উদ্বৃত্ত পাখি সংকুলন করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে বিধায় আমরা প্রকৃতিতে কিছু পাখি উন্মুক্ত করে দিচ্ছি।
এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিনোদন ও পর্যটন কেন্দ্র খোলার ব্যাপারে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুসারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চিড়িয়াখানা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।
পরে মন্ত্রী ফিতা কেটে বাঘ শাবক ‘দুর্জয়’ ও ‘অবন্তিকা’ সবার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করেন। এরপর তিনি চিড়িয়াখানা লেক প্রাঙ্গণে উদ্বৃত্ত ১৬টি বক প্রকৃতিতে উন্মুক্ত করে দেন। পরে মন্ত্রী চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করে পশু-পাখির খাদ্য, পরিচর্যা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য খোঁজ খবর নেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুবোল বোস মনি ও মোঃ তৌফিকুল আরিফ, যুগ্ম সচিব এস এম ফেরদৌস আলম, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. শেখ আজিজুর রহমান, পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা, জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ডা. মো. আব্দুল লতীফসহ মন্ত্রণালয় ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।