ফজলি আম ও বাগদা চিংড়ি পাচ্ছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি
প্রাণ ও প্রকৃতি
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ক্ষীরশাপাতি আমের পর এবার রসালো, আঁশবিহিন, আকারে বিশাল ফজলি আম এবং কালো ডোরা কাটা বাগদা চিংড়ি খুব শীঘ্রই জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেটর বা জি-আই সনদ পেতে যাচ্ছে।
সরকারের পেটেন্টস, ডিজাইন এবং ট্রেডমার্ক বিভাগের রেজিস্টার মোঃ আবদুস সাত্তার জানিয়েছেন, ফজলি আম ও বাগদা চিংড়ির জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিতে গেজেট প্রকাশ করা হয়ে গেছে।আর দিন পনেরোর মধ্যে সনদ দেবার কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে তিনি জানান।
নিয়ম অনুযায়ী স্বীকৃতির জন্য আবেদন আসার পরে এই দুটি কৃষি পণ্যের ভৌগলিক নির্দেশক যাচাই করা হয়েছে, দুটি জার্নাল প্রকাশ করা হয়েছে।এই পণ্যের নির্দেশক নিয়ে এখনো কেউ আপত্তি করেনি। জার্নাল প্রকাশের দুই মাসের মধ্যে এটি নিজেদের বলে কেউ আপত্তি না করলে সনদ দেয়া হবে বলে তিনি জানান।ফজলি আমের জিআই সনদের আবেদন করেছিল ফল উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্র। আর বাগদা চিংড়ির জন্য আবেদন করে মৎস্য অধিদপ্তর।
ফজলি আমের ভৌগোলিক নির্দেশক স্বীকৃতির জন্য আবেদন করা হয় ২০১৭ সালের ৯ মার্চ। আবেদন করে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, রাজশাহী অফিস। অন্যদিকে বাগদা চিংড়ির ভৌগোলিক নির্দেশক স্বীকৃতির জন্য আবেদন করা হয় ২০১৯ সালের ২১ মে। আবেদন করে মৎস্য অধিদপ্তর। আমের মৌসুমের শেষের দিকে বাজারে আসা ফজলি পাশের দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও উৎপাদন হয়। আর লবণাক্ত পানির বাগদা চিংড়ি এশিয়ার বেশ কিছু দেশে হয়। কিন্তু এই কৃষিপণ্য দুটি কেন বাংলাদেশের জিআই সনদ কেন পাবে সেটি ব্যাখ্যা করেন মো. আবদুস সাত্তার। তিনি বলেন, যে পণ্য একটি অঞ্চলের ঐতিহ্যের অংশ সেটির ক্ষেত্রে এই সনদ দেয়া হয়। আবহাওয়া, মাটি, পানি ও ভৌগোলিক গঠনের উপরে যেকোনো কৃষিপণ্যের বৈশিষ্ট্য, ঘ্রাণ ও স্বাদ নির্ভর করে এবং নির্দিষ্ট অঞ্চলেই সেটা হবে। যেমন এশিয়ার বেশ কিছু দেশে ‘ব্ল্যাক টাইগার শ্রিম্প’ বা বাগদা চিংড়ি পাওয়া যায়। কিন্তু আমাদের এখানে যেটা হয় সেটার বৈশিষ্ট্য অন্য কোনোটার সঙ্গে মিলবে না। অন্য কোথাও চাষ হলেও সেটার স্বাদ ও ঘ্রাণ মিলবে না।
পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তর সূত্র জানায়, প্রথম দফায় ৩টি পণ্যের ভৌগোলিক নির্দেশক স্বীকৃতি পায় বাংলাদেশ। এগুলো হচ্ছে- জামদানি, ইলিশ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ক্ষীরশাপাতি আম। দ্বিতীয় ধাপে ৬টি পণ্যের ভৌগোলিক নির্দেশক স্বীকৃতি মেলে। পণ্যগুলো হলো- ঢাকাই মসলিন, রাজশাহী সিল্ক, কালিজিরা চাল, দিনাজপুরের কাটারিভোগ, বিজয়পুরের (নেত্রকোনা) সাদামাটি ও শতরঞ্জি। এর সঙ্গে ফজলি আম ও বাগদা চিংড়ি যুক্ত হলে মোট জিআই পণ্য হবে ১১টি। জিআই সনদ পেলে ফজলি আম ও বাগড়া চিংড়ি উৎপাদন করার অধিকার এবং আইনি সুরক্ষা পাবে। অন্য কোনো দেশ আর সেগুলোকে নিজেদের বলে দাবি করতে পারবে না।