পলাশবাড়ী পৌরসভায় বেগুনি ফুলে ভরে উঠেছে শিমের জাংলা
কৃষি বিভাগ
১০:৪৭ অপরাহ্ন
ঝিনাইদহ জেলায় মসুর উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাতশ’ জন কৃষকের মধ্যে বিনামুল্যে সার ও বীজ বিতরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে কৃষি বিভাগের আয়োজনে এ সার ও বীজ বিতরণ করা হয়। এ সময় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া আক্তার চৌধুরী, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আরতি দত্ত, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জুনাইদ হাবীব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চলতি রবি মৌসুমে মসুরের ডাল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের সাতশ’ জন কৃষকের মধ্যে জনপ্রতি পাঁচকেজি মসুর বীজ ও ১৫ কেজি রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়।
পুরনো পুকুরকে সংস্কার করে যেমন মাছের উৎপাদন বাড়িয়ে অর্থ উপার্জন করা যায় ঠিক তেমনি ওই পুকুরের পাড়কেও অর্থ উপার্জনের কাজে লাগাতেই হবে। পুকুরের পাড়ে বিভিন্ন মরসুমী শাকসব্জি ফলিয়ে বাড়তি আয় করা সম্ভব আর এই সমস্ত কাজগুলি বাড়ির মহিলারা সহজেই করতে পারে
পুকুরের তলা থেকে পাড়ে আনা হিউমাস যুক্ত মাটিতে যদি লতানো সব্জি যেমন – কুমড়ো, লাউ, চাল কুমড়ো, পুঁইশাক,প্রভৃতি ফলন খুবই ভালো হয়। তাছাড়া মাঁচা করে উচ্ছে,ঝিঙ্গে ,শসা, প্রভৃতি চাষ করা যেতে পারে। এছাড়া পুকুরের পাড়ের কোনগুলিতে কলাগাছ লাগাতে পারলে খুবই ভালো ফলন হয়।সবকিছু মিলিয়ে একটি পুকুরকে যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায় তাহলে ওই পুকুর থেকেই বছরে একটা বেশ ভালো টাকা আয়ের সম্ভাবনা থাকে।
শুধুমাত্র পুরনো পুকুর নয় গ্রামের সাধারণ পুকুর গুলির ও উৎপাদন ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও আমরা সেই সব পুকুরগুলোকে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারি না। গতানুগতিক ধারা অনুযায়ী বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে চারামাছ মজুদ করার পর আর সারা বছর কোন পরিচর্যা করা হয় না। এতে পুকুরটি তার সঠিক ব্যবহার ও উৎপাদন থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে একটি পুকুর হল মাছ চাষের সম্পদ তাই এই সম্পদকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে মাছের উৎপাদন কিভাবে বাড়ানো যায় তা নিয়েও আমাদের সর্বদাই ভাবা দরকার আমাদের এটা মনে রাখলে ভালো হবে “মাছ হচ্ছে জলের ফসল চাষ করলে লাভ ডবল, ছোট বড়ো জলাশয় সব পুকুরেই মাছ চাষ হয়”।
বরিশাল জেলার বিভিন্ন উপজেলার গ্রামগুলোতে বসতবাড়ির আঙ্গিনায় অনাবাদি ও পতিত জমিতে পারিবারিক পুষ্টি সবজি বাগান করে বদলে যাচ্ছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জীবনমান। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলার সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের গিলাতলী গ্রাম ও বিল্ববাড়ি ব্লক-এর পর্ব বিল্ববাড়ি, আগৈলঝাড়া উপজেলার ফুল্লশ্রী গ্রাম, বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধপপাশা ইউনিয়নসহ হিজলা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে পারিবারিক পুষ্টি সবজি বাগান তৈরীর মাধ্যমে বদলে যাচ্ছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জীবনমান।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরো জানায়, প্রতিটি ইঞ্চি হোক পুষ্টি ভান্ডার। কোন অংশ পতিত না রেখে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করতে পারেন। এতে পুষ্টি চাহিদা পূরণের সাথে সাশ্রয় হবে অর্থ। পাবেন বিষমুক্ত সবজি। শুধু শীতকালেই নয়, সারা বছর চাষ করতে পারেন এ সবজি, সবজি অধিকাংশ জাতগুলো এখন সারা বছর ব্যাপী চাষ করা যায়। পাশাপাশি যারা ছাদ বাগানী আছেন তারাও চাইলে টবে সবজি চাষ ও আদা চাষসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করতেন পারেন। এ সব সবজির মধ্যে রয়েছে, লাউ, বরবটি, শশা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, করল্লা, পেঁপে, মিষ্টি কুমরা, লাল মুলা, কাঁচা মরিচ, বেগুন, পিয়াজ, লাল শাক, ছিমসহ বিভিন্ন সবজি। এসব সবজি চাষে খরচও অনেক কম। এ সকল চাষাবাদে মাঝে মধ্যে জৈবসার ব্যবহার করা যেতে পারে।
এ বিষয়ে জেলার সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের নারী কৃষাণী মঞ্জুরানী ও সদর উপজেলার পর্ব বিল্ববাড়ি গ্রামের মো. সেকেন্দার চৌধুরী বলেন, তারা নতুন এ পদ্ধতিতে নিজের বাড়ীর আশেপাশে বিভিন্ন ধরনের তরিতরকারি, শাক ও ফলমূল চাষাবাদ করে পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাড়তি টাকাও রোজগার করছেন।
এসব প্রান্তিক কৃষান-কৃষাণী আরো বলেন, বসতবাড়ির আঙ্গিনায় অনাবাদি, পতিত ও পরিত্যক্ত জায়গায় সবজি ও ফল চাষ করে বর্তমানে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এছাড়া সবজি বা তরিতরকারির যে দাম, তাতে প্রতিদিন সবজি কিনে খাওয়া সম্ভব ছিল না। কিন্তু নতুন এ প্রযুক্তিতে সবজি চাষ করে বর্তমানে এখন নিজেরা খেতে পারছে। এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলার একাধিক কৃষাণী জানান, এ ধরনের চাষাবাদে কোন রকম কীটনাশক ব্যবহার না করে, শুধুমাত্র ভার্মি কম্পোষ্ট সার ও জৈব বালাইনাশক পদ্ধতি অবলম্বন করে এ পুষ্টি বাগান প্রকল্পের মাধ্যমে তারা লাউ, মিষ্টি কুমড়া, কলমি শাক, লাল শাক, বেগুন ও কাঁচা-মরিচ আবাদ করে আসছেন।
এ ব্যপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (খামারবাড়ী)’র অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ শওকত ওসমান বলেন, এ প্রকল্পের শুরু থেকে এ পর্যন্ত উপজেলাগুলোর প্রায় বেশির ভাগ কৃষাণ/ কিষাণী পুষ্টি বাগান করা এবং খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন সম্পর্কিত নিয়মিত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন। প্রশিক্ষণকালীন সময়ে তারা যেসব বীজ বা চারা পেয়েছে, তা দিয়ে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কৃষাণ/কিষাণীরা, তাদের বসতবাড়ির আঙ্গিনায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান চাষ করছেন। অতিরিক্ত পরিচালক আরো বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ প্রকল্পের কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে, পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং দারিদ্রতা হ্রাসসহ পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পূরণের মাধ্যমে বসতবাড়িতে আদর্শ পুষ্টি বাগান স্থাপিত হবে এবং নতুন প্রযুক্তিরও সম্প্রসারণ হবে।
(বাসস)
গ্রীষ্মকালীন গ্রাফটিং বারি-৮ জাতের টমেটো চাষ করে লাভবান হয়েছেন জেলার বাহুবল উপজেলার রাঘপাশা গ্রামের কৃষক মো. রুহুল আমিন মানিক মিয়া। তিনি মাত্র ১০ শতক জমিতে টমেটো চাষ করে সফলতার মুখ দেখেছেন। বর্তমান সময়ে তাকে দেখে এলাকার অনেকেই গ্রাফটিং টমেটো চাষে আগ্রহী হচ্ছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, টমেটো চাষে কৃষক মানিক মিয়া মালচিং পেপার ও হলুদ ফাঁদ ব্যবহার করেছেন। ক্ষেতে জৈব বালাইনাশক দেওয়া হয়েছে। এতে বিষমুক্ত টমেটো উৎপাদন হয়। ক্ষেত থেকে এসব টমেটো সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি ৮০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন। পাইকাররা এসব টমেটো প্রতি কেজি বাজারে বিক্রি করেন ১২০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত।
কৃষক মানিক মিয়া বলেন, দ্বিমুড়া কৃষি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীমের পরামর্শে তিনি প্রায় ১০ শতক জমিতে গ্রাফটিং টমেটো জাত বারি-৮ আবাদ করে সফলতা পান। প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচে ৫০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি হয়েছে। আরও কিছুদিন বিক্রি থেকে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা আয় হওয়ার সম্ভাবনা। তাই আগামীতে আরও বেশি পরিমাণ জমিতে এ জাতের টমেটো চাষ করার প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি।
উপজেলার দ্বিমুড়া কৃষি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীম বলেন, লাভজনক পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো ও পেঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধি কর্মসূচি আওতায় মোটিভেশনের মাধ্যমে মালচিং পেপার দিয়ে গ্রীষ্মকালীন গ্রাফটিং টমেটো চাষ করেন কৃষক মানিক লাভবান।
তিনি বলেন, গ্রাফটিং পদ্ধতিতে গেলে তিত বেগুনের চারা দিতে হয় একই সঙ্গে। গ্রাফটিং করার উদ্দেশ্য হলো বর্ষাকালে মাটিতে আর্দ্রতা বেশি থাকে। তিত বেগুনে কাটিং পদ্ধতিতে গ্রাফটিং করলে এর শিকড় অনেক শক্ত হয়। ফলে পানি শিকড় নষ্ট করতে পারে না। বাহুবলে এ জাতের টমেটোর চাষ তেমন ছিল না। বর্তমানে চাষিরা টমেটো চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন।
(বাসস)
গোপালগঞ্জে সরিষা চাষে বিনামূল্যে প্রণোদনার সার-বীজ পাচ্ছেন ৬ হাজার ২০০ জন কৃষক। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে আসন্ন রবি মৌসুমে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় জেলার ৫ উপজেলার ৬ হাজার ২০০ কৃষক সার-বীজ পাবেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপরিচালক আঃ কাদের সরদার এ তথ্য জানিয়েছেন। এ তথ্য জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, তেলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ১ হাজার ৪০০ জন কৃষক, মুকসুদপুর উপজেলায় ১ হাজার ২০০ জন কৃষক, কাশিয়ানী উপজেলায় ১ হাজার ৩০০ জন কৃষক, কোটালীপাড়া উপজেলায় ১ হাজার ২০০ জন কৃষক ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ১ হাজার ১০০ জন কৃষক সরিসায় প্রণোদনা পাবেন।
প্রত্যেক কৃষককে ১ বিঘা করে (৩৩ শতাংশ) জমি আবাদের জন্য ১ কেজি করে সরিষা বীজ, ১০ কেজি ডিএপি সার ও ১০ কেজি করে এমওপি সার বিনামূলে বিতরণ করা হবে। সেজন্য ৬ হাজার ২০০ কেজি বীজ, ৬২ হাজার কেজি ডিএপি সার ও ৬২ হাজার কেজি এমওপি সার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জে বরাদ্দের চিঠি এসেছে বলে ওই কর্মকর্তা জানান। ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ১ হাজার ৪০০ কেজি বীজ, ১৪ হাজার কেজি ডিএপি সার ও ১৪ হাজার কেজি এমওপি সার বিতরণ করা হবে। মুকসুদপুর উপজেলায় ১ হাজার ২০০ কেজি বীজ, ১২ হাজার কেজি ডিএপি সার ও ১২ হাজার কেজি এমওপি সার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। কাশিয়ানী উপজেলায় ১ হাজার ৩০০ কেজি বীজ , ১৩ হাজার কেজি ডিএপি সার ও ১৩ হাজার কেজি এমওপি সার বিতরণ করা হবে। কোটালীপাড়া উপজেলায় ১ হাজার ২০০ কেজি সরিষা বীজ, ১২ হাজার কেজি ডিএপি সার ও ১২ হাজার কেজি এমওপি সারের সহায়তা পাচ্ছেন কৃষক। টুঙ্গিপাড়ায় ১ হাজার ১০০ কেজি বীজ, ১১ হাজার কেজি ডিএপি সার ও ১১ হাজার কেজি এমওপি সার পাবেন কৃষক।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপ-রিচালক সঞ্জয় কুন্ডু বলেন, প্রণোদনার সার-বীজ পেয়ে কৃষক ৬ হাজার ২০০ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করবেন। ৬ হাজার ২০০ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করে কৃষক সরিষার উৎপাদন বৃদ্ধি করবেন। এর মাধ্যমে দেশে তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। সার-বীজ বিতরণের বিষয়ে জেলা মনিটরিং কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। তারপর উপজেলা পর্যায়ে এসব সার-বীজ কৃষকের মধ্যে বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
খাদ্য মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার হলেও বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশ বিভিন্ন কারণে তার জনগণের খাদ্য, সুপেয় পানি ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হিসশিম খাচ্ছে। কক্সবাজার জেলার চকরিয়ায় বদরখালীতে ১৬ অক্টোবর ২০২৩ বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষ্যে আইএসডিই, পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক-প্রান এবং খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক-খানি এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশ এবং আলোচনায় খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষির জন্য পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিতের দাবিতে পানির ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠার তাগিদ দেন অংশগ্রহনকারি বক্তারা।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ভার্চু স্কুল এন্ড কলেজ এর প্রতিষ্টাতা ও প্রধান শিক্ষক এবং রত্নগর্ভা আয়েশা-গোলাম শরীফ গণগ্রন্থাগারের সাধারণ সম্পাদক মহি উদ্দিন কাদের অদুল বলেন, কৃষির জন্য পানির প্রাপ্যতা এবং প্রবেশগম্যতা একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয় এবং পানি নিয়ে দ্বন্দ্ব কৃষি উৎপাদনে সরাসরি প্রভাব ফেলে। কৃষি উৎপাদনের জন্য সেচের পানির ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং পানির গুণমানের উপর বিভিন্ন প্রভাব সার্বিক পানির চাহিদার উপর চাপ সৃষ্টি করে। বিশ্বব্যাপী কৃষি, খাদ্য উৎপাদন এবং প্রক্রিয়াকরণের দীর্ঘমেয়াদী কার্যকারিতার চাবিকাঠি হচ্ছে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, এবং পানি সম্পর্কিত অন্যান্য চ্যালেঞ্জের প্রতি সহনশীলতা বৃদ্ধি এবং পানির ঘাটতি মোকাবেলা করতে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় অর্থায়ন একটি কার্যকরী সমাধান হতে পারে।
অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধে জিয়াউল হায়দার শিহাব বলেন, বাংলাদেশ নিম্নভূমির ব-দ্বীপ দেশ হওয়ায় বন্যা ও খরা উভয়েরই ঝুকিতে রয়েছে। বাংলাদেশের পানি ব্যবস্থাপনার মূল উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে: বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ ও নিষ্কাশন। পানি ব্যবস্থাপনার জন্য সরকারি অর্থায়ন এক্ষেত্রে বিভিন্ন কারণে গুরূত্বপূর্ণ। সঠিক বাস্তবায়ন এবং সরকারি হস্তক্ষেপে তত্ত্বাবধায়ন করে যথাযথ পানি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দেশে খাদ্য নিরাপত্তার বিভিন্ন দিক নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
আগত বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় এনে “রুপকল্প-২০৪১ “-এর আলোকে জাতীয় কৃষিনীতি, খাদ্য নিরাপত্তা আইন, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-২০৩০ এবং ডেল্টা প্ল্যান-২১০০সহ অন্যান্য পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে, কিন্তু খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই কৃষি প্রধান দেশের সর্বত্র পানির সঠিক ব্যবহার এবং ব্যবস্থাপনার কোন বিকল্প নেই। বক্তারা আরোও বলেন, উপযুক্ত পদক্ষেপের মাধ্যমে পানি ব্যবস্থাপনা এবং খাদ্য অধিকার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে নীতিনির্ধারক ও গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে সেই সাথে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে হবে।
আইএসডিই কর্মসুচী সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রতি বছর খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার বিভিন্ন দিক পর্যালোচনার জন্য একটি নির্দিষ্ট বিষয়বস্তুর উপর দৃষ্টি নিবন্ধ করে বিশ্ব খাদ্য দিবস পালিত হয় যার এবারকার প্রতিপাদ্য “পানিই জীবন, পানিই খাদ্য; কাউকে পেছনে ফেলে নয়”। বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে জনগণের খাদ্য অধিকার নিশ্চিত করতে পানির অধিকার, প্রাপ্যতা, ব্যবস্থাপনার উপর গুরূত্বারোপ করে তিনি বলেন, খাদ্য অধিকার তথা পানি ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনায় নীতিমালা, বরাদ্দ, এবং জনঅর্থায়নের মতো সময়োপযোগী ও গুরূত্বপূর্ণ জনদাবি গুলো তুলে ধরতে এবং স্থানীয় পর্যায়ে প্রচারাভিযানের অংশ হিসেবে এরকম কর্মসূচি গুলো খুবই গুরত্বপূর্ণ।
আইএসডিই, পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক-প্রান এবং খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক-খানি এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই নাগরিক সমাবেশ ও আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন, চকরিয়া উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ধনঞ্জয় পাল, বদরখালী জব্বার নগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক রুহুল কাদের, ভূক্তভোগী জনসাধারনের পক্ষে বক্তব্য রাখেন জেসমিন কাউসার, জালাল উদ্দিন, ইমা্ম হোসেন বাবু, মোঃ আবু মুছা, মোবারকা জন্নাত, তৌহিদুল ইসলাম, গিয়াস উদ্দিন, মনোয়ারা বেগম প্রমুখ। র্যালী, গণসমাবেশ ও আলোচনা সভায় চকরিয়া উপজেলার বদরখালী এলাকার উপকুলীয় এলাকার শতাধিক ভুক্তভোগী লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
নীলফামারীতে কম সময়ে উচ্চ ফলনশীল বীনা ১৭ জাত ধানের মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা সদরের চড়াইখোলা ইউনিয়নের আরাজি চড়াইখোলা গ্রামে ওই মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন- জেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের উপ-পরিচালক ড. এ এস এম আবু বকর সাইফুল ইসলাম। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিক আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন বিনা ধান ১৭ রংপুর উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আলী, কৃষক পিয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।
কৃষক পিয়ারুল ইসলাম জানান, তিনি এক বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল আগাম জাতের বিনা ধান ১৭ আবাদ করে স্বল্প সময়ে কর্তন করতে পারছেন। আগাম কর্তন করা ওই জমিতে আগাম আলু কিংবা সরিষা চাষ করবেন। এতে করে বছরে জমিতে অন্তত তিনটি ফসল ফলানো সম্ভব।
তিনি বলেন, ‘রোপা আমনের অন্যান্য জাতের ধান কর্তন করতে এখোনো এক মাস সময় বাকি অথচ বীনা ধান রোপনের ৮৫ দিনের মধ্যে কর্তন করা সম্ভব হচ্ছে’।
সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ বীনা ধান-১৭ বিশেষ একটি জাতের। কৃষকরা লাভবান হবেন। খরচ কম, ফলন বেশি এবং সময়ও কম লাগছে। কৃষকদের এই জাতের ধান আবাদ করতে উদ্বুদ্ধ করছি আমরা কৃষি বিভাগের সহায়তায়’।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিক আহমেদ জানান, এই জাতের ধান আবাদে আমরা কৃষকদের উৎসাহ দিয়েছি। আরাজি চড়াইখোলা গ্রামে পাঁচ জন কৃষক ১৫০শতাংশ জমিতে এই জাতের ধান আবাদ করেছেন।
কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক ড. এস এম আবু বকর সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এই জাতের ধান উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্পজীবনকালীন। পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট রংপুর উপকেন্দ্রের উদ্যোগে এবং কৃষি বিভাগ নীলফামারীর সহযোগীতায় মাঠ পর্যায়ে প্রদর্শণী প্লট করা হয়েছে। এ জাতের ধান ১১২ থেকে ১১৮ দিনের মধ্যে কর্তন করা যায়। হেক্টরপ্রতি ফলন হয় ৬ দশমিক ৮ থেকে ৭ দশমিক ৫ টন পর্যন্ত’।