দেশি মাগুরের পোনা উৎপাদনে যেভাবে তৈরি করবেন পুকুর
মৎস্য
দেশে মাছ চাষিদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর মাছ চাষিদের অন্যতম চাহিদার জায়গা হলো মাগুরের চাষ। পুকুরে তৈরি হচ্ছে এই মাগুরের পোনা চাষ। এতে লাভবানও হচ্ছেন তারা। পুকুরে এই মাছ চাষে কতগুলো নিয়ম পালন করলে আরো লাভবান হবেন চাষিরা।
দেশি মাগুরের পোনা উৎপাদনে পুকুর তৈরিতে করণীয়ঃ
দেশি মাগুরের রেনু থেকে পোনা উৎপাদনের জন্য পুকুর তৈরি একটা বড় ভূমিকা পালন করে। পুকুর তৈরিতে কোনো ত্রুটি থাকলে কাক্সিক্ষত ফল পাওয়া যাবে না। পুকুরের তলায় পানি থাকলে প্রথমেই সেচ দিতে হবে।
প্রতি শতকে ১ কেজি হারে চুন পানির সাথে মিশিয়ে সমস্ত পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে। এরপর মই দিয়ে রোদে শুকিয়ে পুকুরের চারপাশ পরিষ্কার করতে হবে। পুকুরের পাড়ে জাল দিয়ে ভালভাবে বেড়া দিতে হবে। মাটি থেকে এ জালের উচ্চতা হবে কমপক্ষে চার ফুটের মত।
স্যালো মেশিন দিয়ে ১ ফুট থেকে ১.৫ ফুট পরিষ্কার পানিতে পুকুর ভরতে হবে।
মনে রাখতে হবে, অপরিষ্কার পানি কিছুতেই পুকুরে দেয়া যাবে না আবার বেশি পানিও দেয়া যাবে না। অনেক খামারি ২/৩ ফুট পানির মধ্যেই রেনু ছাড়েন বলে দশ ভাগের একভাগ পোনাও উৎপাদন হয় না শুধুমাত্র পানির উচ্চতার কারণে।
চুন প্রয়োগ: পুকুরের তলদেশ শুকিয়ে হালকাভাবে চাষ দিয়ে তলার মাটির অম্ল বা খরতা পরীক্ষা সাপেক্ষে প্রতি শতাংশে ১ থেকে ১.৫ কেজি হারে চুন প্রয়োগ করতে হবে। চুন প্রয়োগের পর পুকুর ১৫ সেন্টিমিটার (৬ ইঞ্চি) পরিমাণ পানি ঢুকিয়ে সপ্তাহখানেক ধরে রাখতে হবে।
জৈব সার প্রয়োগ: চুন প্রয়োগের ৭ থেকে ১৫ দিন পর প্রতি শতাংশে ১০ কেজি হারে গোবর সার অথবা ৫ কেজি হারে মুরগির বিষ্ঠা ছিটিয়ে দিতে হবে।
অজৈব সার প্রয়োগ: জৈব সার প্রয়োগের সাত দিন পর পানির উচ্চতা ৬০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বজায় থাকা অবস্খায় প্রতি শতাংশে ২০০ গ্রাম ইউরিয়া, ১০০ গ্রাম টিএসপি ও ২০ গ্রাম এমওপি সার ব্যবহার করতে হবে। মনে রাখতে হবে, পানির রঙ বাদামি সবুজ, লালচে বাদামি, হালকা সবুজ, লালচে সবুজ অথবা সবুজ থাকাকালীন অজৈব সার (রাসায়নিক) প্রয়োগের কোনো প্রয়োজন নেই।
পোনা মজুদ: ৫ থেকে ৮ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যরে সুস্থ্য সবল পোনা প্রতি বর্গমিটারে ৫০ থেকে ৮০টি হারে পুকুরে ছাড়া যেতে পারে। মে থেকে জুন মাস মাগুরের পোনা ছাড়ার যথার্থ সময়।