ক্রেতাশূন্য মাছ বাজার, লোকসানের মুখে পড়েছেন আড়তদাররা
মৎস্য
দু’দিনের বৃষ্টির কারণে ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জের পাইকারি মাছ বাজার। বিভিন্ন প্রকারের মাছের সরবরাহ বাড়লেও বেচাকেনা না থাকায় হতাশ পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা। এ অবস্থায় লোকসানের মুখে পড়েছেন আড়তদাররা।
শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম তীরে শহরের তিন নম্বর ঘাটে জেলার সবচেয়ে বড় পাইকারি মাছ বাজারটি প্রায় ২০০ বছর ধরে পরিচালিত হচ্ছে। নদীপথে পরিবহনের সুবিধা থাকায় ব্রিটিশ আমলে এখানে মাছ বাজারটি প্রতিষ্ঠিত হয়।নদ-নদী, খাল-বিল ও হাওর অঞ্চলের সব ধরনের ছোট বড় তাজা মাছ ছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছও বিক্রি হয় এই বাজারে। মূলত এই বাজার থেকেই নগরীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার বাজারগুলোতে মাছ সরবরাহ হয়ে থাকে।
তবে দু’দিনের টানা বৃষ্টির কারণে বাজারে দূর-দূরান্তের পাইকার না থাকায় মজুতকৃত মাছে পচন ধরার আশঙ্কা করছেন আড়তদাররা। অন্যদিকে ক্রেতার অভাবে লোকসান দিয়ে মাছ বিক্রি করতে হচ্ছে খুচরা বিক্রেতাদের।
এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীরা বলেন, মাছ পচে যাবে বলে লোকসান দিয়ে হলেও মাছ বিক্রি করতে হচ্ছে। একজন ইলিশ মাছ বিক্রেতা ১ হাজার ২৫০ টাকা কেজিতে ইলিশ কিনে আনলেও বিক্রি করতে হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকায় বলে অভিযোগ করেন।
এদিকে প্রয়োজনের তাগিদে বৃষ্টি উপেক্ষা করে স্বল্পসংখ্যক ক্রেতা বাজারে এসে কম মূল্যে মাছ কিনতে পেরে খুশি। ক্রেতারা বলেন, এই বাজারে টাটকা মাছ পাওয়া যায়। এ ছাড়াও বৃষ্টি থাকায় প্রায় প্রতিটি মাছ কেজিপ্রতি ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা কমে পাওয়া যাচ্ছে।
জেলা মৎস্য আড়তদার সমিতির দাবি, খোলা আকাশের নিচে উন্মুক্ত পরিবেশেই ২০০ বছর ধরে মাছ বাজারটি অস্থায়ীভাবে চলছে। সব ধরনের কর প্রদান করেও তারা কোনো সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না।
৩নং মাছ ঘাট মৎস্য আড়তদার সমবায় সমিতির সহসাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সরকারের কাছে আমাদের বিনীত আবেদন, আমাদের ঘাটটি যাতে স্থায়ী করে দেওয়া হয়।’
এই মাছ বাজারে শতাধিক আড়তদার ও হাজারের বেশি পাইকারি ব্যবসায়ী বংশ পরম্পরায় মাছ ব্যবসা পরিচালনা করছেন। প্রতিদিন অন্তত তিন কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয় এই আড়তে।