১০:১৮ পূর্বাহ্ন

শনিবার, ১৮ মে , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : জুলাই ১৯, ২০২৩ ৩:৪০ অপরাহ্ন
হাঁসের ভ্যাকসিন শিডিউল
প্রাণিসম্পদ

অল্প পুঁজি ও কম রোগাক্রান্ত হওয়ার কারনে দিন দিন আমাদের দেশে হাঁস পালন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। হাঁসের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশ ভাল হলেও বেশ কিছু ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগে হাঁস মারা যেতে পারে। তাই হাঁস পালনের জন্য টিকা প্রদান বা হাঁসের ভ্যাকসিন সিডিউল খুব জরুরী।

হাঁস বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে আমাদের দেশে ডাক প্লেগ ও ডাক কলেরার কারনে হাঁসের মৃত্যুর রেকর্ড সবথেকে বেশী। তাই মূলত এই দুটি রোগের টিকা প্রদানের জন্য সরকারি ভাবে বলা হয়ে থাকে।

হাঁসের টিকা প্রদান কর্মসূচি নিচে দেওয়া হলোঃ

বয়স (দিন) টিকার নাম রোগের নাম টিকার ডোজ টিকা প্রাদানের স্থান
২০-২২ ডাক প্লেগ ডাক প্লেগ ১ মিলি বুকের চামড়ার নীচে
৪০-৪২ ডাক প্লেগ ডাক প্লেগ ১ মিলি বুকের চামড়ার নীচে
৭০ ডাক কলেরা ডাক কলেরা ১ মিলি বুকের চামড়ার নীচে
৯০ ডাক কলেরা ডাক কলেরা ১ মিলি বুকের চামড়ার নীচে
১০০ ডাক প্লেগ ডাক প্লেগ ১ মিলি বুকের বা রানের মাংসে

*এরপর প্রতি চার মাস অন্তর ডাক প্লেগ টিকা এবং ৬ মাস অন্তর ডাক কলেরা টিকা প্রদান করাতে হবে।

*উল্ল্যেখ্য বার্ড ফ্লুর প্রভাব বেশী থাকলে চার মাসে বার্ড ফ্লু টিকা দিতে হবে।

হাঁসের ভ্যাকসিন দেওয়ার নিয়ম:

ডাক প্লেগ ১০০ ডোজের ভ্যাকসিন ১০০ মিলি পরিস্কার পানির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে ভ্যাকসিন গান অথবা ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে প্রইয়োগ করা হয়। ডাক কলেরার ভ্যাকসিন লাইভ হলে একই নিয়মে দিতে হবে। কিল্ড হলে সরাসরি প্রয়োগ করা যায়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ১৬, ২০২৩ ২:৩৪ অপরাহ্ন
ছাগল পালনে কাঁচা ঘাস খাওয়ানোর উপকারিতা
প্রাণিসম্পদ

গরু-ছাগল পালন এখন একাংশ মানুষ তাদের অর্থনৈতিক চাকা পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসাবে নিয়েছেন। বিশেষ করে কম দামে কিনতে পাওয়া যায় ছাগল। যা মোটামুটি গ্রামের প্রতিটা কৃষকের আছে। তারা ছাগল পালনে বড় কিছু করার প্রত্যাশায় এতে শ্রম দিয়ে থাকে। তবে এই শ্রমকে সফল করতে লাগবে অনেকগুলো পদ্ধতি। তম্মধ্যে অন্যতম হলো ছাগলকে খাওয়াতে হবে নিয়মিত কাঁচা ঘাস। কারণ ছাগলকে কাঁচা ঘাস খাওয়ালে ছাগল শারীরিকভাবে সুস্থ থাকে। এছাড়াও ছাগলকে কাঁচা ঘাস খাওয়ালে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নানা উপকার পাওয়া যায়।

ছাগলকে কাঁচা ঘাস কেন খাওয়ানো প্রয়োজন:

১। মনে রাখবনে কাঁচা ঘাস কিনতে হয় না। এটি তৈরি হয় প্রাকৃতিক উপায়ে। যার কারণে এতে খরচ নেই বললেই চলে। আর তাই অর্থনৈতিক দিক বিবেচেনায় ছাগলকে কাঁচা ঘাস খাওয়ানো উচিত।

২। নিয়মিত ছাগলকে কাঁচা ঘাস খাওয়ালে দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং ছাগলের শারীরিক পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয় এবং ছাগল বেশি পরিমাণ দুধ প্রদান করতে সক্ষম হয়ে থাকে।

৩। ছাগলকে কাঁচা ঘাস খাওয়ালে ছাগল বাচ্চা জন্ম দেওয়ার সময় বাচ্চা মৃত্যুর হার অনেকগুনে কমে যায়। নিয়মিত কাঁচা ঘাস খাদ্য হিসেবে ছাগলকে খাওয়ালে বাচ্চার মৃত্যু কম হয়।

৪। ছাগলকে কাঁচা ঘাস খাওয়ালে ছাগলের শরীর সঠিক সময়ে প্রজননে সক্ষম হয়। এর ফলে ছাগলের প্রজননের জন্য কৃত্রিম পদ্ধতি প্রয়োগ করে সফল হওয়া যায়।

৫। ছাগলকে কাঁচা ঘাস খাওয়ালে ছাগলকে দানাদার খাদ্য কম দেওয়া লাগে। সেজন্য ছাগলকে দানাদার খাদ্য প্রদান করতে হয় না। তাই ছাগলের জন্য দানাদার খাদ্য কেনার টাকা বেঁচে যায়।

৬। ছাগলকে নিয়মিত কাঁচা ঘাস খাওয়ালে ছাগল যখন বাচ্চা জন্ম দেয় তখন বাচ্চার ওজন সঠিক পাওয়া যায়। বাচ্চা সুস্থ সবল হয়ে জন্ম নেয়।

৭। কাঁচা ঘাস ছাগলকে নিয়মিত খাওয়ালে ছাগলের মৃত্যুর হার অনেকগুনে কমে যায়। কাঁচা ঘাস ছাগলকে নিয়মিত খাওয়ালে ছাগলের জীবনীশক্তি বৃদ্ধি পায়। আর এর ফলে ছাগল অকালে মরা থেকে রক্ষা পায়।

৮। ছাগলকে কাঁচা ঘাস খাওয়ালে ছাগলের চিকিৎসা খরচ অনেকগুনে কমে যায়। কাঁচা ঘাস খাওয়ার ফলে ছাগল জটিল কোন রোগের দ্বারা আক্রান্ত হয়না। এর ফলে ছাগলের চিকিৎসার খরচ বেঁচে যায়।

ঘাস চাষ:
ছাগলের জন্য ইপিল ইপিল, কাঁঠাল পাতা, খেসারি, মাসকলাই, দুর্বা, বাকসা ইত্যাদি দেশি ঘাসগুলো বেশ পুষ্টিকর। এছাড়া উচ্চফলনশীল নেপিয়ার, স্পেনডিডা, এন্ড্রোপোগন, পিকাটউলুম ইত্যাদি ঘাস চাষ করা যায়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ১৫, ২০২৩ ১১:৩০ পূর্বাহ্ন
গবাদি প্রাণির উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও করণীয়
প্রাণিসম্পদ

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের একটি বিষয়। আবহাওয়ার হঠাৎ পরিবর্তন লাইভস্টকের ক্ষেত্রে একটি বড় বাঁধা। দেশের অনেকেরই জীবিকা নির্বাহের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে গরু মহিষের খামার । জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে যা সরাসরি প্রভাব ফেলছে গবাদি প্রাণির দুধ উৎপাদন এবং স্বাস্থ্যের উপর, ফলে আর্থিক ক্ষতির সম্মূখীন হচ্ছেন কৃষক ।

দুগ্ধজাত গবাদি প্রাণির উপর জলবায়ুগত প্রভাবের ফলে যে সব সাধারণ লক্ষণ দেখা দিচ্ছে তা হলো- খাদ্য গ্রহণ হ্রাস, দুধ উৎপাদন এবং দুধের চর্বি হ্রাস, শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বৃদ্ধি, শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস।

 

দুধ উৎপাদনের উপর প্রভাব – তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে গবাদি প্রণিরা কম খাদ্য গ্রহণ করে। যদি পানির ব্যবস্থাপনা সঠিক না হয়, তাহলে প্রাণি তার শরীরে থাকা পানিকে দুধ উৎপাদনে ব্যবহার না করে তার শরীরকে ঠান্ডা রাখার জন্য ব্যবহার করে। যার কারণে দুধ উৎপাদন ও দুধে চর্বি কমে যায়।

প্রজনন কর্মক্ষমতার উপর প্রভাব – দুগ্ধজাত প্রাণিরা শীতের তুলনায় তাপের প্রভাব বেশি অনুভব করে, যা দুগ্ধজাত প্রাণির প্রজনন কর্মক্ষমতাকে বিরূপভাবে প্রভাবিত করে। বেশি তাপের প্রভাবে প্রাণি কম গরমে আসে, গরমে এলেও ভালোভাবে তাপের লক্ষণ দেখা যায় না। এদিকে গর্ভবতী গবাদিপ্রাণির অকালে ভ্রুণ মৃত্যুর সম্ভাবনাও প্রবল।

 

প্রচন্ড গরমে গবাদিপ্রাণির যত্নে যা যা করনীয়ঃ

  • তাপ এবং শক্তিশালী সূর্যালোক থেকে প্রাণিদের রক্ষা করুন।
  • গবাদি প্রাণির জন্য ঘন ছায়াযুক্ত গাছ লাগান।
  • খোলা এবং বায়ুচলাচল শেড তৈরি করুন যা প্রাণীদের আর্দ্রতা এবং সরাসরি সূর্যালোক থেকে রক্ষা করে।
  • শেডের ছাদ পরিষ্কার এবং সাদা রঙের হতে হবে।
  • পুকুরে মহিষকে গোসল করানো এবং ধারায় ঝর্ণার পানি ছিটিয়ে দেওয়া।
  • প্রাণির জন্য সর্বদা বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন।
  • পাখা, কুলার, ফোয়ারা ইত্যাদির মতো শেড কুলিং ডিভাইসের ব্যবস্থা।
  • একটি সুষম খাদ্য নিশ্চিত করুন, যাতে প্রায় ১৬ শতাংশ হজমযোগ্য অপরিশোধিত প্রোটিন থাকা উচিত।
  • খনিজগুলির পরিপূরক করার জন্য পশুর খাদ্যে ধাতব স্ক্র্যাপ যোগ করুন।
  • গ্রীষ্মকালে ১০ টার আগে এবং ৪-৫ টার পরে খাবার প্রয়োগ করুন।
  • মাঠে চরাতে গবাদি প্রাণিকে বাইরে পাঠাবেন না। শীত না হলে ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় সকালে বা সন্ধ্যায় চরাতে হবে ।

 

আশা করা যায় উপরোক্ত বিষয়গুলো মাথায় রাখলে খামারিরা তাদের দুগ্ধজাত প্রাণিকে প্রচণ্ড গরম থেকে বাঁচাতে পারবেন এবং দুগ্ধ ব্যবসা থেকে অধিক মুনাফা অর্জন করতে পারবে।

 

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ১৩, ২০২৩ ৯:৪২ পূর্বাহ্ন
গবাদি পশুর গলাফুলা রোগ ও প্রতিকার
প্রাণিসম্পদ

গলাফুলা একটি তীব্র প্রকৃতির রোগ যা গরু এবং মহিষকে আক্রান্ত করে। এটি একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ যা Pasteurella multocida দ্বারা সংঘটিত হয়। এ রোগে মৃত্যুর হার খুবই বেশি। বর্ষাকালে গলাফুলা রোগ বেশি দেখা যায়। আমাদের দেশে বর্ষার শুরুতে এবং বর্ষার শেষে এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। পশুর শরীরে স্বাভাবিক অবস্থায় এ রোগের জীবাণু বিদ্যমান থাকে। কোনো কারণে যদি পশু ধকল যেমন ঠান্ডা, অধিক গরম, ভ্রমণজনিত দুর্বলতা ইত্যাদির সম্মুখীন হয় তখনই এ রোগ বেশি দেখা দেয়। গলাফুলা রোগের প্রচলিত নাম ব্যাংগা, ঘটু, গলগটু, গলবেরা ইত্যাদি।

 

এপিডেমিওলজি ও রোগজননতত্ত্ব
গলাফুলা (hemorrhagic septicemia) এশিয়া, আফ্রিকা, দক্ষিণ ইউরোপের কিছু দেশ ও মধ্যপ্রাচ্যে বিদ্যমান। তবে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় এটি বেশি পরিলক্ষিত হয়। গলাফুলা মূলত গরু ও মহিষের রোগ হলেও শুকর, ছাগল, ভেড়া, ঘোড়া, বাইসন, উট, হাতী এমনকি বানরেও এ রোগ হতে পারে। এ রোগ বছরের যে কোনো সময় হতে পারে তবে বর্ষাকালে এর প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি। বাহক পশুর টনসিল ও ন্যাজো-ফ্যারিনজিয়াল মিউকোসায় এ রোগের জীবাণু থাকে। অনুকূল পরিবেশে রক্তে এ রোগের জীবাণুর সংখ্যা বেড়ে গিয়ে
septicemia করে। এই বৃদ্বিপ্রাপ্ত জীবাণু মরে গিয়ে এন্ডোটক্সিন নিঃসৃত হয় যার ফলে রক্ত দূষিত হয়ে পড়ে। এন্ডোটক্সিন রক্তের ক্যাপিলারিস নষ্ট করে; ফলে এডিমা হয়। এছাড়া এন্ডোটক্সিন একদিকে কোষ কলা বিনষ্ট করে দেহে হিস্টামিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে অন্যদিকে টিস্যু বিনষ্টের ফলে টিস্যুর প্রোটিন ভেঙ্গে রক্তে প্রোটিনের পরিমাণ হ্রাস পায়। ফলে, এডিমার সৃষ্টি হয়। সে কারণে এ রোগে আক্রান্ত পশুর গলা ফুলে যায় ও রক্তে জীবাণুর উপস্থিতির (septicemia) কারণে পশুর দ্রুত মৃত্যু হয়।

লক্ষণ
এ রোগ অতি তীব্র ও তীব্র এ দুই ভাবে হতে পারে। অতি তীব্র প্রকৃতির রোগে হঠাৎ জ্বর (১০৬-১০৭০ ফা) হয়ে মুখ ও নাক দিয়ে তরল পদার্থ বের হতে থাকে। পশু অবসাদগ্রস্থ হয়ে পড়ে ও খাওয়া বন্ধ করে দেয় এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে মৃতু্য ঘটে। তীব্র প্রকৃতির রোগে আক্রান্ত পশু ২৪ ঘন্টার অধিক বেঁচে থাকে। এ সময় পশুর এডিমা দেখা দেয় যা প্রথমে গলার নিচে, পরে চোয়াল, তলপেট এবং নাক, মুখ, মাথা ও কানের অংশে বিসতৃত হয়।
গলায় স্ফীতি থাকলে গলার ভেতর ঘড় ঘড় শব্দ হয় যা অনেক সময় দূর থেকে শোনা যায়। প্রদাহযুক্ত ফোলা স্থানে ব্যথা থাকে এবং হাত দিলে গরম ও শক্ত অনুভূত হয়। সূঁচ দিয়ে ছিদ্র করলে উক্ত স্থান হতে হলুদ বর্ণের তরল পদার্থ বের হয়ে আসে। অনেক সময় কাশি হয় এবং চোখে পিচুটি দেখা যায়। নাক দিয়ে ঘন সাদা শ্লেষ্মা পড়তে দেখা যায়। সাধারণত লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে আক্রান্ত পশু মারা যায়। মারা যাবার সাথে সাথে পেট খুব ফুলে উঠে এবং নাক ও মুখ দিয়ে তরল পদার্থ বের হতে থাকে। পোস্টমর্টেম করলে পেরিকার্ডিয়াল স্যাক (pericardial sac) এ রক্ত মিশ্রিত তরল পদার্থ দেখা যায়, যা থোরাসিক (thoracic) এবং এবডোমিনাল ক্যাভিটি (abdominal cavity) তে বিসতৃত হতে পারে। ফ্যারিনজিয়াল এবং সার্ভাইক্যাল লিম্ফনোডে বিন্দু আকৃতির (petechial) রক্তক্ষরণ পরিলক্ষিত হয়।

অর্থনৈতিক গুরুত্ব
গলাফুলা রোগের যথেষ্ট অর্থনৈতিক গুরুত্ব আছে বিশেষত, এশিয়া এবং আফ্রিকার কিছু দেশে। এশিয়াতে ৩০% গবাদিপশু এ রোগের প্রতি সংবেদনশীল। ভারত দুগ্ধ উৎপাদনে এশিয়াতে সর্বোচ্চ যেখানে ৫০% দুধ আসে মহিষ থেকে, যারা এ রোগের প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল। ভারতে গত চার দশক ধরে গলাফুলা রোগে মৃত্যু হার গবাদিপশুর মৃত্যুহারের ৪৬-৫৫%। ১৯৭৪ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত ভারতে গবাদিপশুর ৫টি মহামারীতে আক্রান্ত গবাদিপশুর ৫৮.৭% মারা যায়। এই ৫টি মহামারী হল ক্ষুরারোগ, রিন্ডারপেষ্ট, বাদলা, এনথ্রাক্স এবং গলাফুলা। শ্রীলংকায় ১৯৭০ এর দশকে পরিচালিত একটি অপঃরাব সারভ্যাইল্যান্স স্টাডিতে দেখা গেছে গলাফুলা আক্রান্ত স্থানসমূহে বছরে প্রায় ১৫% মহিষ এবং ৮% গরু গলাফুলার কারণে মারা যায়। পাকিস্তানে একটি রির্পোটে দেখা গেছে সেখানে গবাদিপশুর মোট মৃত্যুর ৩৪.৪% মারা যায় গলাফুলা রোগে। মায়ানমারে পশু রোগ নিয়ন্ত্রণে বরাদ্দকৃত মোট বাজেটের ৫০ ভাগ ব্যয় হয় গলাফুলা রোগ দমনে। গলাফুলা রোগে শুধু গবাদিপশুর মৃত্যুই ঘটে না, সাথে সাথে বেশ কিছু অপ্রত্যক্ষ ক্ষতিও হয়। যেমন –
উৎপাদন হ্রাসঃ মাংস, দুধ, জোয়াল টানা, হালচাষের বিকল্প উপায়ের জন্য মোট ব্যয় ইত্যাদি। পশুর প্রজনন ক্ষমতা বিঘি্নত হওয়া, চিকিংসা খরচ ইত্যাদি।

প্রতিরোধ
এ রোগ উচ্ছেদ করা অসম্ভব কারণ এ রোগের জীবাণু স্বাভাবিক অবস্থায় পশুর দেহে থাকে। তবে নিম্নোক্ত ব্যবস্থা অবলম্বন করে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
• রোগাক্রান্ত পশুকে সুস্থ পশু থেকে আলাদা করে সুস্থ পশুকে টিকা দানের ব্যবস্থা করতে হবে।
• মড়কের সময় পশুর চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
• হঠাৎ আবহাওয়া পরিবর্তনের ক্ষেত্রে পশুর পরিচর্যার ব্যবস্থা করতে হবে।
• টিকা প্রয়োগের মাধ্যমে রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।

ঢাকার মহাখালীতে অবস্থিত এল.আর. আই কতৃর্ক প্রস্তুতকৃত টিকার নাম গলাফুলা টিকা। লোকাল স্ট্রেইন দ্বারা প্রস্তুতকৃত এই অয়েল এডজুভেন্ট টিকা সাধারণত প্রাপ্তবয়স্ক (৬ মাস বয়সের উপরে) গবাদিপশুকে ২ মিলি মাত্রায় ও ছাগল ভেড়াকে ১ মিলি মাত্রায় প্রয়োগ করতে হয়। এ রোগের প্রাদুর্ভাব আছে এরূপ এলাকায় ৬ মাস বা তদুধর্ব বয়সী বাছুরে প্রাপ্ত বয়স্ক গরুর অর্ধেক মাত্রায় টিকা দিতে হয়। এলাম অধঃপাতিত (Alum precipitated) টিকা মাংসে প্রদান করা হয়। যেহেতু দুই ধরনের টিকাই মাঠপর্যায়ে ব্যবহার হয় তাই বিষয়টির দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। কারণ অয়েল এডজুভেন্ট টিকা তেল থেকে প্রস্তুতকৃত বিধায় এই টিকা ভুলক্রমে মাংসে প্রদান করলে মাংসে প্রদাহ সৃষ্টি হয়ে মাংসের ক্ষতি হয় এবং সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। টিকা প্রদানের ২-৩ সপ্তাহ পর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জন্মাতে শুরু করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ১ বৎসর কাল পর্যন্ত বজায় থাকে। এই টিকা মৃত জীবাণুর দ্বারা প্রস্তুত বিধায় এই টিকা প্রদানের মাধ্যমে রোগ বিস্তারের কোনো সম্ভাবনা নাই। টিকা প্রয়োগের স্থান ২/৩ দিন পর্যন্ত ফোলা থাকতে পারে। ত্রুটিপূর্ণ ইনজেকশনের কারণে এই ফোলা স্বাভাবিক এর চেয়ে কয়েকদিন বেশি থাকতে পারে। ক্ষেত্র বিশেষে এনাফাইলেকটিক শক দেখা দিতে পারে। কোনো এলাকায় বা খামারে টিকা প্রদানের পূর্বে অল্প কয়েকটি গবাদিপশুকে টিকা প্রদানের পর ২৫-৩০ মিনিট অপেক্ষা করে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায় কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা শ্রেয়। যদি কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায় তবে উক্ত বোতলের টিকা পুনরায় ব্যবহার করা যাবে না। অয়েল এডজুভেন্ট টিকা বেশ ঘন হওয়ায় এই টিকা প্রদানে মোটা বারের নিডল ব্যবহার করা সুবিধাজনক।

রোগ নির্ণয়
হঠাৎ মৃত্যু হয় এ ধরনের রোগ যেমন বজ্রপাত, সাপে কাটা, বাদলা রোগ, রিন্ডারপেস্ট, এনথ্রাক্স ইত্যাদি থেকে গলাফোলা রোগকে আলাদা করতে হবে। সেরোলজিক্যাল টেস্ট যেমন
Indirect hemagglutination test এ উচ্চ টাইটার লেভেল (১:১৬০ বা তার বেশি) পাওয়া গেলে এ রোগ সমন্ধে নিশ্চিত হওয়া যায়।

চিকিৎসা
আক্রান্ত পশুর চিকিৎসায় বিলম্ব হলে সুফল পাওয়া যাবে না। তাই রোগের উপসর্গ দেখা দেয়ার সাথে সাথে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রতিরোধ
ভ্যাকসিনই এ রোগ প্রতিরোধের সবচেয়ে ভাল উপায়। মূলত তিন ধরনের ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এগুলো হল প্লেইন ব্যাকটেরিন, এলাম অধ:পাতিত ব্যাকটেরিন এবং অয়েল এডজুভেন্ট ব্যাকটেরিন। এর মধ্যে ৬ মাস বিরতিতে এলাম অধ:পাতিত ব্যাকটেরিন এবং ৯ থেকে ১২ মাস অন্তর অয়েল এডজুভেন্ট ভ্যাকসিন দিতে হয়। ভালো ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত খামারে বাছুরকে ৩ থেকে ৬ মাস বয়সে প্রথম, ৩ মাস পরে বুস্টার এবং এরপর বছরে একবার টিকা দিতে হয়। উন্মুক্ত খামারে বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই বাৎসরিক টিকার কোর্স শুরু করতে হয়।

লেখক: ডাঃ এ, এইচ. এম. সাইদুল হক
এক্সিকিউটিভ, ভেটেরিনারী সার্ভিসেস, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ১২, ২০২৩ ৯:৪৫ পূর্বাহ্ন
গাভীর স্বাস্থ্য উন্নয়নে যেভাবে তৈরি করবেন দানাদার খাদ্য
প্রাণিসম্পদ

আমাদের দেশে এখন গ্রামাঞ্চলের প্রায় পরিবারগুলো গাভী পালনের দিকে ঝুঁকছেন। গাভী থেকে একদিকে পাওয়া যাচ্ছে বাছুর আর অন্যদিকে পাওয়া যায় পুষ্টিকর দুধ। যা দিয়ে অর্থনৈতিক সংকটও নিরসন করতে পারেন গ্রামের মানুষগুলো। তবে আমাদের অধিকাংশ খামারিরা জানেনা কিভাবে যত্ন নিতে হবে গাভীর। গাভীর স্বাস্থ্য উন্নত করতে করণীয় সম্পর্কে তারা খুব বেশি বিজ্ঞ নয়। তারা জানেন কিভাবে তৈরি করা লাগে গাভীর দানাদার খাবার।

গাভীর স্বাস্থ্য উন্নয়নে দানাদার খাদ্য তৈরির উপায়ঃ

প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
সবুজ ঘাস, খড়,পানি এবং দানাদার খাদ্য।
১০০ কেজি দৈহিক ওজন বিশিষ্ট একটি গাভীর জন্য সাধারণত ১-২ কেজি খড়, ৫-৬ কেজি সবুজ ঘাস এবং ১-১.৫ কেজি দানাদার খাদ্য দিতে হয়।

দানাদার খাদ্য মিশ্রনে-
চাউলের কুঁড়া ২০%, গমের ভূষি ৫০%, খেসারি ভাঙ্গা ১৮%, খৈল ১০%, খনিজ মিশ্রণ ১%, আয়োডিন লবন ১%
গাভী যদি দুধ উৎপাদন করে থাকে সে ক্ষেত্রে প্রথম ১ লিটার দুধ উৎপাদনের জন্য ৩ কেজি দানাদার খাদ্য এবং পরবর্তী প্রতি ৩ লিটার দুধ উৎপাদনের জন্য ১ কেজি হারে দানাদার খাদ্য প্রদান করতে হবে।

নিচে ২৫০ থেকে ৩০০ কেজি দৈহিক ওজনের দুগ্ধবতী গাভীর জন্য সুষম খাদ্য তালিকা দেওয়া হল-

উপাদান দৈনিক দেয়ার পরিমাণঃ
দানাদার খাদ্য মিশ্রণ ৪-৭ কেজি, কাঁচা সবুজ ঘাস ৯-১২ কেজি,পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি এবং শুকনো খড় ৩-৪ কেজি।

গাভীর খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে আধুনিক পদ্ধতি অবলম্বন করলে খাদ্যে পাচ্যতা, পুষ্টিগুণ ও উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ১১, ২০২৩ ৯:৪৮ পূর্বাহ্ন
ভেড়া পালনে খামার ব্যবস্থাপনায় যা জরুরী
প্রাণিসম্পদ

ভেড়া পালনে ঝামেলা কম হওয়াতে এখন বেশির ভাগ মানুষ ভেড়া পালনের দিকে ঝুঁকছেন। এমনিতেই ভেড়ার রোগবালাই অহন্যান্য প্রাণীর চেয়ে খুব কম হয়। এছাড়া ভেড়া পালন ছাগলের চেয়ে সহজ। তবে ‍এর জন্য খামারিদের আরও সচেতনতা এবং ভেড়ার পালনে সার্বিক ব্যবস্থা জানা থাকার দরকার।

ভেড়ার বাসস্থান ও ব্যবস্থাপনা:
ভেড়া পালনের প্রথম এবং প্রধান শর্ত হলো স্বাস্থ্যকর বাসস্থান। আমাদের দেশে যেসব কারণে ভেড়া মৃত্যু হয় তার অনন্য তম কারণ হলো অস্বাস্থ্যকর বাসস্থান। ভেড়ার বসবাসের জন্য এমন জায়গা নির্ধারণ করতে হবে যেখানে আলো বাতাসের পরিমাণ ভালো। তাছাড়া ভেড়ার বাসস্থান তৈরির সময় আমাদের আরও একটি বিষয় খেয়াল রাখা খুব জরুরি আর তাহলো মেঝে কাঁচা বা পাকা যেমনই হোক না কেন সেখানে ভেড়া না রেখে মাচা বা স্লাট এর উপর ভেড়া পালন করা ভালো।

ভেড়া অন্য সকল গৃহপালিত পশুর মত খাদ্যর উচ্ছুষ্টাংশ খেয়ে থাকে। শুকনো খড়, গাছের পাতা লতা, সবুজ ঘাস ইত্যাদি খেয়ে থাকে। তাছাড়া ভেড়া খোলা মাঠে সবুজ ঘাস খেতে ভালোবাসে। ভেড়া একটি তৃণভোজী স্তন্যপায়ী প্রাণি। ভেড়া আঁশ জাতীয় খাদ্য, লতা-পাতা প্রভৃতিকে সহজেই সাধারণ শর্করা তে পরিনত করতে পারে। তাই ভেড়া পালনে খাদ্য খরচ কম।

অন্য সব গৃহপালিত পশুর মত ভেড়া রোগবালাই কম হয়। ভেড়ার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিয়মিত কৃমিনাশক ব্যবহার করা। প্রতি ২/৩ মাস পরপর ভেড়াকে কৃমিনাশক প্রয়োগ করতে হবে। ভেড়ার চর্ম রোগ রক্ষাতে বছরে অন্ততঃ দু’বার ভেড়ার পশম কাটতে হবে এবং গোসল করাতে হবে। তাছাড়াও এন্টরোটক্সিমিয়া, আমাশায়, ধনুষ্টংকার, ক্ষুরা, একথাইমা, পিপিআর, নিউমোনিয়া ইত্যাদি রোগ হতে পারে।

ভেড়ার প্রজনন:
ভেড়া অন্য সকল প্রাণীর মত প্রজননশীল। ভেড়ি সাধারণত ৬-৮ মাসে প্রজননে উপযোগি হয়। পুরুষ ভেড়া ৪-৬ সপ্তাহ বয়সে যৌন পরিপক্কতা লাভ করে। জাত ভেদে ভেড়ি যৌন পরিপক্কতা লাভ করে। ফিনশিপ জাতের ভেড়ি ৩-৪ মাস বয়সে এবং মেরিনো ভেড়ি কোন কোন সময় ১৮-২০ মাস বয়সে পূর্ণতা প্রাপ্ত হয়। ভেড়ার ঋতুচক্র ১৭ দিন পর পর আর্বতিত হয়। গর্ভকাল ৫ মাস। ১০-১২টি ভেড়ির জন্য একটি প্রজননক্ষম পাঠাই যতেষ্ঠ। একটি পাঠাকে ১০০-২০০ বারের বেশি প্রজনন করানো ঠিক নয়। এছাড়া অন্তঃপ্রজনন এড়াতে সময়ে সময়ে নিজের পালের পাঠা বাদ দিয়ে অন্য পাল থেকে পাঠা আনতে হবে।

ভেড়ার বাচ্চার যত্ন ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা:
আমাদের দেশে ভেড়ার পরিকল্পিত বাণিজ্যিক খামার নেই। পারিবারিক পর্যায়ে ভেড়া পালন করা হয়। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ভেড়ার বাচ্চার অধিক মৃত্যুহার। মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে দেখা গেছে প্রসবকালীন অব্যবস্থাপনা ও পুষ্টিহীনতা প্রধান। বাচ্চাকে শাল দুধ খাওয়াতে হবে। ভেড়া বাচ্চার আলাদা যত্ন নিতে হবে। প্রসবকালে মা ভেড়িকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে।

ভেড়া পালনের উপযোগিতা:
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভেড়া পালন করা হয় প্রধানত মাংস এবং উলের জন্য। কিন্তু আমাদের দেশে ভেড়া পালন করা হয় কোন কিছু চিন্ত্ ন্ করে। তবে বিক্রি করা হয় মাংসের জন্য।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ১০, ২০২৩ ৯:৫৪ পূর্বাহ্ন
ডেইরি ফার্ম শুরু করবেন যেভাবে
প্রাণিসম্পদ

ডেইরি ফার্ম করার দিকে এখন অনেকেই ঝুঁকছেন। তবে শুরুটা শুরু করতে গিয়ে অনেকে হিমশিম খাচ্ছেন। কোথায় থেকে, কিভাবে করবেন এটা নিয়ে শুরু হয় দুশ্চিন্তা। কত টাকা লাগবে, কয়দিন লাগবে। সব মিলিয়ে থাকে নানান চিন্তা। তবে কিছু বিষয় জেনে রাখলে ডেইরি ফার্ম নিয়ে এতটা বেগ পেতে হবে না আগ্রহীদের।

একটি পরিকল্পনা
বাজেট ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। কমপক্ষে ১৫ লিটার দুধের গরু বাছুরসহ ২টি। মনে রাখতে হবে গাভি সব সময় সমপরিমাণ দুধ দেবে না। কম-বেশি হতে পারে। তবে গড়ে ১০ লিটার ধরে নিতে পারেন। গোয়াল ঘর করতে হবে ৩০ ফিট বাই ১৫ ফিট। তাতে ইলেক্ট্রিক আর পানির ব্যবস্থা অবশ্যই থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে, ফ্লর যেন পাকা হয়। উপরে টিনের চাল থাকলেই হবে। চারদিকে আলো-বাতাস ঢোকে এমন বেড়া দিতে হবে।

এককালীন খরচ: ২টি দুধের গরুর দাম ৩ লাখ টাকা। গোয়াল ঘর খরচ ৬০ হাজার টাকা। ইলেক্ট্রিক ও পানি খরচ ২০ হাজার টাকা।
দুধ থেকে আয়: ২০ লিটার দুধ ৫০ টাকা করে ১ হাজার টাকা প্রতিদিনের আয়। তাহলে মাসিক আয় ৩০ হাজার টাকা। ‪

‎মাসিক ব্যয়: কর্মচারীর মাসিক বেতন ৭ হাজার টাকা। গরুর খাবার খরচ ১৫০ টাকা প্রতিদিন। তাহলে মাসিক খরচ ৯ হাজার টাকা। ওষুধ এবং অন্যান্য ২ হাজার টাকা।

মাসিক লাভ: আয় ও ব্যয় বাদ দিলে মাসে লাভ হবে ১২ হাজার টাকা। এককালীন খরচের ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা উঠে আসতে সময় লাগবে ২ বছর ৭ মাস।

পদক্ষেপ: এভাবে মাসিক আয় ধরে রাখতে ৮ মাস পর আবার ২টা দুধের গরু কিনতে হবে। তাহলে একটি সার্কেলের মধ্যে পড়ে যাবে। সেক্ষেত্রে কখনোই পকেট থেকে টাকা খরচ করতে হবে না।

দুর্যোগ: বড় ধরনের দুর্ঘটনা বা অসুখ-বিসুখ আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তাই এখানে তার হিসাব দেখানো হয়নি।

ব্যবসা: ২-৫ বছর পর লাভের পরিমাণ কেমন হবে? সম্পদের পরিমাণ কত হবে? এটি বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি তা বের করা যায়, তাহলেই বোঝা যাবে ডেইরি ব্যবসা কেমন হবে। সূত্র: জাগো নিউজ

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ৬, ২০২৩ ৩:১১ অপরাহ্ন
হাঁস পালনে ঘুরে দাঁড়ালেন তালেব
প্রাণিসম্পদ

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার বৈরিহরিণমাড়ী গ্রামের গ্রামের বাসিন্দা আবু তালেব মিয়া। দরিদ্রের কষাঘাত থেকে রেহাই পেতে শুরু করে হাঁসের খামার। বাড়ির পাশে উন্মুক্ত জলাশয়ে দলবেঁধে ভাসছে তার হাঁস।

জানা যায়, বৈরিহরিণমাড়ী গ্রামের দরিদ্র পরিবারের সন্তান আবু তালেব মিয়া। দাম্পত্য জীবনে স্ত্রী-সন্তান রয়েছে তার। এই সংসার চালাতে অনেক হিমশিম খেতে হচ্ছিল। এমনি এক পর্যায়ে স্থানীয় কয়েকটি হাঁসের খামার অনুসরণ করেন তিনি। প্রায় ৬ মাস আগে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থেকে ক্যাম্বেল জাতের ৫০০ পিস হাঁসের বাচ্ছা কিনে বাড়িতে শুরু করে খামার। এসব হাঁস বর্তমানে প্রতিদিন ২০০টি করে করে ডিম দিচ্ছে। এরপর থেকে আর কখনো পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। উৎপাদিত ডিম ও হাঁস বিক্রির লাভের টাকা দিয়েই সুখে চলছে তার সংসার।

উদ্যোক্তা আবু তালেব মিয়া জানান, প্রশিক্ষণ ছাড়াই হাঁসের খামার গড়ে তুলেছেন তিনি। কঠোর পরিশ্রম আর দৃঢ় মনোবল নিয়ে খামারটি পরিচালনা করে চলেছেন। বর্তমানে হাঁসের খাবার, ওষুধ ও অন্যান্য খরচ বাদে মাসে প্রায় ২০ হাজার টাকা লাভ থাকছে তার। তবে কিছুদিন আগে টানা লকডাউনের কবল ক্ষতির শিকার হয়েছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, এক সময়ে স্ত্রী-সন্তানের মুখে তেমন অন্ন যোগাতে পারিনি। এখন হাঁসের খামার করে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। পরিবার নিয়ে প্রতিদিন খাওয়া হয় মাছ-মাংস-ডিম।

পলাশবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের উপ-সহকারী কর্মকর্তা আতাউর রহমান জানান, যে কোন কাজ পরিকল্পিভাবে করলে অবশ্যই সফল হওয়া সম্ভব। উদ্যোক্তা আবু তালেব মিয়ার খামারে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। তাকে আরও লাভবান করতে সর্বাত্নক চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ৪, ২০২৩ ৫:৩৪ অপরাহ্ন
নবীন খামারিরা গরুর খামারে ব্যর্থ হওয়ার ৫ কারণ
প্রাণিসম্পদ

নবীন খামারিরা গরুর খামারে ব্যর্থ হওয়ার কারণ কি কি সে বিয়য়ে খামারিদের আগে থেকেই ভালোভাবে জেনে খামার ব্যবসায় আসা দরকার। অধিক লাভের আশায় অনেকেই বর্তমানে নতুন করে গরুর খামার গড়ে তুলছেন। তবে সঠিক ব্যবস্থাপনা না জানায় অনেকেই লোকসানে পড়ছেন। আসুন আজকে জানবো নবীন খামারিরা গরুর খামারে ব্যর্থ হওয়ার কারণ সম্পর্কে-

 

নবীন খামারিরা গরুর খামারে ব্যর্থ হওয়ার কারণঃ

১। নতুন খামারিরা খামার পরিচালনা এবং বাজারজাতের বিষয়ে ভালোভাবে না জেনেই অনেক সময় খামার শুরু করে। এতে করে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পায় এবং পন্য সঠিক দামে কেনা কিংবা বিক্রি করা না গেলে অনেক ক্ষেত্রে লোকসানে পড়তে হয়।

২। পূর্বের কোন পরিকল্পনা না থাকা অবস্থায় অনেকেই গরুর খামার শুরু করেন। কি ধরণের খামার করলে সহজেই লাভবান হওয়া যায় সেটি না জেনে গরুর খামার শুরু করাতে নতুনরা লোকসানে পড়েন।

৩। খামারের গরুগুলো পালন করার জন্য দক্ষ শ্রমিক না রাখতে পারলে অনেক ক্ষেত্রে খামারের উৎপাদন কমে যায়। এর জন্য গরুর খামারে লোকসান দেখা দিয়ে থাকে। সেজন্য খামারে দক্ষ জনবল নিয়োগ দিতে হবে।

৪। সল্প খরচে গরু পালনের জন্য আধুনিক ঘর নির্মাণ করার বিষয়ে কোন ধারণা না থাকায় খামার পরিচালনার ব্যয় বেড়ে যায়। এর ফলে নতুন খামারিরা তাদের খামারে লোকসান করে থাকেন।

৫। খামারে পালন করার জন্য উন্নতমানের গরু সংগ্রহ করতে না পারলেও অনেক ক্ষেত্রে নতুন খামারিরা লোকসান করে থাকেন। তাই খামারে পালনের জন্য ভালো ও উন্নত জাতের গরু নির্বাচন করতে হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ২৬, ২০২৩ ৯:২৬ পূর্বাহ্ন
স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে গরুর দুধ উৎপাদন করবেন যেভাবে
প্রাণিসম্পদ

গবাদিপশু দিয়ে লাভবান হওয়ার আশায় অনেকে খামার গড়ে তুলেছেন। গবাদিপশু তথা গরু পালনে লাভবান হওয়ার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে দুধ উৎপাদন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে গরুর দুধ উৎপাদনে যা জানা জরুরী তা আমাদের অনেকেরই জানা নেই।

স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে গরুর দুধ উৎপাদন করবেন যেভাবে:
যথাসম্ভব কম লোক দিয়ে খামারের সকল গরুর দুধ দোহন করতে হবে। খামারের প্রবেশদ্বারে জীবানু নাশক সহ ফুটবাথ রাখতে হবে।
দুধ দোহনের পরে গাভীকে খাবার দিতে হবে, ফলে ওলান ফুলা রোগ বা ম্যাসটাইটিস হবার সম্ভবনা থাকবে না।

ম্যাসটাইটিস প্রতিরোধে নিয়মিত সিএমটি পরীক্ষা করা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। চিকিৎসা ও কৃত্রিম প্রজনন গুরুত্ব দেয়ার সাথে সাথে খামার ব্যবস্থাপনায় অধিক গুরুত্ব দিতে হবে।

বছরে ২-৩ বার সঠিক পরিমানে কৃমি নাশক ওষুধ খাওয়াতে হবে। রোগ প্রতিরোধে নিয়মিত সঠিক মাত্রায় টিকা প্রদান করতে হবে।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop