কৃষিতে অবদানের জন্য এআইপি সম্মাননা পাচ্ছেন ১৩ জন
কৃষি বিভাগ
কৃষি খাতে অবদানের জন্য প্রথমবারের মত ১৩ জনকে কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এগ্রিকালচারালি ইম্পরটেন্ট পারসন-এআইপি) ঘোষণা করেছে সরকার। রোববার প্রকাশিত গেজেটে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে তাদের এ সম্মাননার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে।
সরকার প্রতিবছর বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সিআইপি) ঘোষণা করে। তারা সরকারিভাবে বেশ কিছু সুবিধা ও সম্মান পান। সিআইপিদের আদলে এআইপিরাও বেশ কিছু সুবিধা ও সম্মান পাবেন।
এ সম্মাননা দিতে আগে থেকেই কাজ করছিল সরকার। এজন্য ‘কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নীতিমালা ২০১৯’ তৈরি করে সরকার। তবে কোভিড মহামারীর কারণে এ স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়া পিছিয়ে যায়।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্প্রসারণ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব বলাই কৃষ্ণ হাজরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এবার দেওয়া হচ্ছে ২০২০ সালের পদক। ২৭ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা দেওয়া হবে।
এআইপির প্রথম সম্মাননা পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন
কৃষি উদ্ভাবন (জাত/প্রযুক্তি) ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক্স ও প্ল্যান্ট ব্রিডিং বিভাগের অধ্যাপক লুৎফুল হাসান, দিনাজপুরের এ আর মালিক সিডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউস সোপান মালিক, বাগেরহাটের ফিউচার অর্গানিক ফার্মের স্বত্ত্বাধিকারী সৈয়দ আব্দুল মতিন ও সিলেটের আলীম ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক আলীমুছ ছাদাত চৌধুরী।
কৃষি উৎপাদন, বাণিজ্যিক খামার স্থাপন ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প ক্যাটাগরিতে নাটোরের দৃষ্টান্ত এগ্রো ফার্মের মালিক সেলিম রেজা, ঠাকুরগাঁওয়ের মেহেদী আহসান উল্লাহ চৌধুরী, ঝালকাঠির এশা ইন্টিগ্রেটেড এগ্রিকালচালারাল ফার্মের মালিক মাহফুজুর রহমান, পিরোজপুরের জাগো কেঁচো সার উৎপাদন খামারের মালিক বদরুল হায়দার বেপারি, পটুয়াখালীর শাহবাজ হোসেন খান ও কুমিল্লার বিসমিল্লাহ মৎস্য বীজ উৎপাদন ও খামারের মালিক মো. সামছুদ্দীন কালু।
স্বীকৃত বা সরকার নিবন্ধিত সংগঠন ক্যাটাগরিতে নওগাঁর শাহ কৃষি তথ্য পাঠাগার ও জাদুঘরের উদ্যোক্তা জাহাঙ্গীর আলম শাহ।
এছাড়া বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কারে স্বর্ণপদক পাওয়া দুজনকেও এআইপি স্বীকৃতি দেওয়া হবে। তারা হলেন- পাবনার নুরন্নাহার কৃষি খামারের নুরন্নাহার বেগম এবং একই জেলার ঈশ্বরদীর মা-মনি কৃষি খামারের উদ্যোক্তা শাহজাহান আলী বাদশা।
‘কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নীতিমালা- ২০১৯’ অনুযায়ী এআইপি স্বীকৃতির মেয়াদ হবে এক বছর। এই এক বছরের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে তাদের একটি কার্ড দেওয়া হবে।
নির্বাচিত ব্যক্তিরা সচিবালয়ে ঢোকার পাস পাবেন, বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান এবং স্থানীয় সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা আয়োজিত অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হবেন, সরকার পরিচালিত গণপরিবহনে (বিমান, রেল, বাস ও নৌ ভ্রমণে) আসন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
পাশাপাশি ব্যবসার কাজে এআইপিদের বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসকে উদ্দেশ্যে করে ‘লেটার অব ইন্ট্রোডাকশন’ ইস্যু করবেন, এআইপি ও তার নিকটাত্মীরা সরকারি হাসপাতালের কেবিনপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন এবং বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ-২ ব্যবহারের সুবিধা পাবেন।
এ পুরস্কার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদক্ষেপ উল্লেখ করে অতিরিক্ত সচিব বলাই কৃষ্ণ বলেন, “কোভিডকালে কৃষিতে অবদান রাখার জন্য এনাদেরকে পুরস্কৃত করার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। যারা সিআইপি, আমরা দেখি শিল্পপতিরা অনেক সুবিধা পান। সেই সিআইপির আদলে আমরা এআইপি দিচ্ছি। এখানে এআইপিরা যথেষ্ট সুযোগ সুবিধা পাবেন।”
এতে শিক্ষিত সমাজ ও তরুণরা উদ্বুদ্ধ হবে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রযুক্তিনির্ভর কৃষি আসছে, বাণিজ্যিক কৃষির কথা বলা হচ্ছে। রপ্তানি বাড়ছে। এসব কারণে মেধাবী তরুণরা কৃষিতে আসবে।