কোরবানিকে সামনে রেখে দুশ্চিন্তায় দুর্গাপুরের গরুর খামারিরা
প্রাণিসম্পদ
গো-খাদ্যের সংকট, মূল্য বৃদ্ধি, বাজার মন্দা, স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় পশুর হাট স্থাপনে বিধিনিষেধসহ ইত্যাদি কারণে রাজশাহীর দুর্গাপুরে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে দুচিন্তায় খামারিরা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, উপজেলার একটি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে ছোট বড় প্রায় ১শ ২৫টি গরুর খামার রয়েছে। এসব গরুর খামারে প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজাকরণের প্রতিযোগিতা চলছে। সম্প্রতি প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজা করণে ১২৫ খামারিকে প্রশিক্ষণ, কৃমি নাশক ওষুধ ও ভিটামিন মিনারেল জাতীয় ওষুধ বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলায় ৫ হাজার পরিবারে ২-৩টি করে গরু প্রাকৃতিক উপায়ে মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে। এসব খামার ও পরিবার থেকে কোরবানির জন্য ২০ হাজার গরু টার্গেট করা হয়েছে। এছাড়াও ৩০ হাজার ছাগল স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে। এসব সুস্থ গরু ও ছাগল নিজ উপজেলা ও জেলার চাহিদা পূরণ করে ঢাকায় কোরবানির হাটে সরবরাহ করা হবে।
জানা যায়, প্রতিবছর কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে উপজেলায় মৌসুমী খামারি ও ব্যবসায়ীরা মানবস্বাস্থ্যের ক্ষতিকর অবৈধ স্টেরয়েড হরমোন ব্যাবহার করে দ্রুত গরু মোটাতাজা করত। যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কিন্তু এবার প্রাণিসম্পদ বিভাগের তৎপরতার কারণে চলতি বছর এই প্রবণতা অনেকটাই কম। এ বছর ব্যাপক হারে প্রাকৃতিক উপায়ে খড়, ঘাস, বিভিন্ন প্রকারের ভুষি, খৈল এবং ভিটামিন খাইয়ে গরু মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে।
খামারি ও চাষিরা জানান, গরুকে প্রাকৃতিক পন্থায় মোটাতাজা ও সুস্থ রাখতে সাধারণত খড়, লালি-গুড়, ভাতের মাড়, তাজা ঘাস, খৈল, গম, ছোলা, খেসারি, মাষকলাই, মটরের ভুসিসহ বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবার দেয়া হয়। গরুর জন্য এটা বিজ্ঞানসম্মত। এ নিয়মে গরু মোটাতাজা করা হলে ক্রেতা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন না। এ ধরনের গরুর মাংস খেয়ে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি থাকে না। তাই প্রাকৃতিক উপায়ে মোটাতাজা গরুর চাহিদা ও দাম ভালো পাওয়া যায়। কিন্তু বর্তমানে গো-খাদ্য বস্তা প্রতি দাম বেড়েছে ১শ টাকার ওপরে। ফলে খামারি ও চাষিরা অনেকটাই বেকায়দায় রয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল কাদির জানান, করোনা সংকটের মধ্যেও এবার ব্যাপকহারে গরু লালন পালন করছেন চাষিরা। এবার ওষুধ বা ইনজেকশন দিয়ে কোনো গরু মোটা করা হচ্ছে না। উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ তৎপর রয়েছেন। চাষি ও খামারিদের প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজাকরণে প্রশিক্ষণ ও নানান প্রচারণা চালানো হয়েছে। প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন খামার ঘুরে চাষিদের নানা রকম পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।