খামারে লাভজনক করতে হলে যা জানা জরুরী
পোলট্রি
আমাদের দেশে মাংসের চাহিদা পূরণে ব্রয়লার মুরগি বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ব্রয়লার খামার লাভজনক করতে অতীব জরুরী বিষয়সমূহ কি কি রয়েছে সেগুলো খামারিদের ভালোভাবে জানতে হবে।
ব্রয়লার খামার লাভজনক করতে অতীব জরুরী বিষয়সমূহ:
দুই ফ্লকের মাঝে কমপক্ষে ১৪ দিনের বিরতি দেয়া । সম্পূর্ন ক্লিনিং এর পর কমপক্ষে ৩ দিন বিরতি দিয়ে পরবর্তী ফ্লক তোলা ।
পুরাতন ব্যাচের বর্জ্য যথাযথভাবে সরিয়ে খুব ভালভাবে শেড ক্লিনিং করে অতঃপর পরবর্তী ব্যাচের বাচ্চা উত্তোলন ।একই ফার্মে বিভিন্ন বয়সের মুরগি পালন না করা । সঠিক পন্থায় ব্রুডিং করা – পর্যাপ্ত তাপ, বায়ু চলাচল, ফিড, পানি, জায়গা, ইত্যাদি প্রদান ।
একটি ব্রুডারে বা গার্ডে; ইলেকট্রিক ব্রুডারের ক্ষেত্রে ২৫০-৩০০ মুরগির বেশি পালন করা উচিত নয় । গ্যাস ব্রুডারে (কোম্পানী অনুযায়ী) প্রতি গার্ডে ৫০০-১০০০ মুরগি পালন করা যেতে পারে ।
শেডে বাচ্চা তোলার ৪-৫ ঘন্টা পর সকল বাচ্চা পর্যাপ্ত ফিড ও পানি গ্রহন করেছে কিনা তার জন্য খাবার থলি (ক্রপ) চেক করুন; এটাই বাচ্চার ভবিষ্যত নির্ধারন করবে । কোনভাবেই মুরগি বা মুরগির বাচ্চা যেন পানিশূন্যতায় বা ডিহাইড্রেশনে না ভোগে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন । ওভার হিটিং বা অতিরিক্ত তাপ প্রদানের কারনে এবং পর্যাপ্ত পানির সরবরাহ না থাকলে মুরগি ও বাচ্চার পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন সমস্যা হয় । এতে মুরগি পর্যাপ্ত খাবার গ্রহন করে না; ছোট-বড় হয়, কাংখিত দৈহিক ওজন পাওয়া যায় না ।
আবহাওয়া অনুযায়ী প্রতি ১-৩ দিন পর পর একটু একটু করে মুরগির জায়গা বাড়াতে হবে যেন তাপ, খাদ্য, পানি গ্রহন, চলাচল এবং বিশ্রামের জন্য মুরগি পর্যাপ্ত জায়গা পায় ।
মুরগির ঘরের পর্দা অবশ্যই সবসময় নিচে আটকানো থাকবে । পর্দা নিচ হতে উপর দিকে উঠা-নামা করবে। মনে রাখতে হবে মুরগির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন হল বাতাস চলাচল বা ভেন্টিলেশন ।সম্পূর্ন পালক না হওয়া পর্যন্ত এবং অত্যাধিক গরমের সময় ছাড়া অন্যান্য সময় মুরগির গায়ে সরাসরি বাতাস দেয়া যাবে না ।
৩-৫ দিন বয়স হতে অপেক্ষাকৃত হালকা বা দুর্বল বাচ্চাগুলোকে আলাদা করা । ৭-৮ দিন বয়স হতে সম্পুর্নভাবে ছোট-বড় মুরগি বাছাই বা গ্রেডিং শুরু করা ।মুরগির শেডে অবশ্যই ছোট-মাঝারি-বড় ৩ টি গ্রেডে মুরগি পালন করা ।সর্বদা বিশুদ্ধ পানি ও সুষম খাবার সরবরাহ করুন ।
ব্রুডিং চলাকালীন সময়ে খাবার পাত্র কখনও খালি রাখা যাবে না; খাদ্যের অপচয় রোধে পাত্রের ১/৩ অংশে খাবার প্রদান করুন ।
প্রথম ৭ দিন সপ্তাহে ২ বার এবং ৮ দিন বয়স হতে প্রতিদিন একবার(১) সম্পূর্ন খাবার শেষ হবার পর খাবার পাত্র ঝেড়ে ও পরিষ্কার করে নতুন খাবার দিন । ড্রিংকার মুরগির গলা বরাবর এবং ফিডার মুরগির পিঠ বরাবর উচ্চতায় রাখুন যেন মুরগি স্বাচ্ছ্যন্দে পানি ও খাবার খেতে পারে ।
বড় মুরগির ক্ষেত্রে প্রতি ৪ ফুটের মাঝে অবশ্যই ফিডার ও ড্রিংকার থাকতে হবে ।অতিরিক্ত গরমের সময় দুপুরে ২-৩ ঘন্টা খাবার সরবরাহ বন্ধ রেখে অতিরিক্ত ড্রিংকারে ঘন ঘন পানি দিতে হবে । গরম বেশি পরলে দুপুরে খাবার বন্ধ করার সময় ধীরে ধীরে বাড়ানো যাবে ।
প্রতিদিন ১-২ বার ভালভাবে লিটার নাড়িয়ে দিয়ে লিটারের যত্ন নিন । এসময় খাবার ও পানির পাত্র যেন নোংরা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন । লিটার নাড়ানোর সময় ঘরের পর্দা কিছুটা নামিয়ে দিয়ে বাতাস চলাচল বৃদ্ধি করা উচিত যেন ধুলাবালির কারনে মুরগির শ্বাস কষ্ট না হয় । খামারে প্রবেশের পূর্বে হাত-পা সাবান দিয়ে ধুয়ে অতঃপর জীবাণুনাশক স্প্রে করুন ।