চাহিদার তুলনায় বেশি গরু রয়েছে কুমিল্লায়, বিক্রি নিয়ে চিন্তায় খামারী!
প্রাণিসম্পদ
একদিকে আসন্ন কোরবানির ঈদ অন্যদিকে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সারাদেশে চলছে কঠোর লকডাউন। লকডাউনে কোরবানির হাট নিয়ে চিন্তিত খামারীরা।কোরবানির ঈদে কুমিল্লায় ২ লাখ ৩৭ হাজার পশুর চাহিদা রয়েছে। তার বিপরীতে মজুদ রয়েছে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৩৪৫টি পশু। এবার চাহিদার তুলনায় ১ হাজার ৩৪৫টি পশু বেশি রয়েছে কুমিল্লায়।
গতবছরের লস কাটিয়ে উঠতে গিয়ে অধিক শ্রমে লালিত গরু-ছাগল বিক্রি করতে পারছেন না খামারীরা। আর বিক্রি করলেও চাহিদার চেয়েও কয়েকগুণ কমে ছাড়তে হচ্ছে গরু। তাই সারা দেশের মতো কুমিল্লার ৩০ হাজারের বেশি খামারিদের মধ্যে রয়েছেন চরম দুশ্চিন্তা।
জানা যায়, কুমিল্লার ১৭টি উপজেলাতে প্রায় ৩০ হাজারের অধিক খামারী রয়েছেন। যারা কোরবানি কেন্দ্রিক নিয়েছেন প্রস্তুতি।কোরবানির ঈদে বিক্রির উদ্দেশ্যে দীর্ঘদিন ধরে লালন-পালন করা এসব গবাদিপশু শেষ পর্যন্ত হাটে ওঠানো ও বিক্রি করা যাকে কি-না, এ নিয়ে খামারিদের কপালে এখন চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
এদিকে, করোনার সংক্রমণ এড়াতে গত বছরের মতো এবারও অনলাইনে গবাদিপশু বেচাবিক্রি শুরু হয়েছে। অনেকে এরই মধ্যে অনলাইনে কোরবানির জন্য পশু কিনতে শুরু করেছেন। তবে জেলার বেশিরভাগ খামারি এখনো অনলাইনে গবাদিপশু বিক্রিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেননি এবং পারদর্শী নন। যার কারণে খামারে লালন-পালন করা গবাদিপশু বিক্রি করতে পারা নিয়ে প্রতিনিয়ত শঙ্কা ও উৎকণ্ঠার মধ্যদিয়ে দিন পার করছেন খামারিরা।
রামিশা ক্যাটেল ফার্মের পরিচালক সবুর আহমেদ জানান, আমাদের খামারে থাকা ৩০টি গরুর মূল্য এক কোটি টাকার বেশি। কিন্তু এখনো কোন গরু বিক্রি হয়নি। গরু বিক্রি করা নিয়ে আমরা খুবই চিন্তার মধ্যে আছি। আমরা অপেক্ষায় আছি কবে হাট বসবে। কারণ হাট না বসলে আমরা গরুগুলোর সঠিক দাম পাবো না। সব মিলিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্য দিয়ে আমাদের দিন কাটছে।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম জানান, গত বছরের মতো এবারও অনলাইনে গবাদিপশু বেচাকেনার সুযোগ রয়েছে। করোনার সংক্রমণ এড়াতে আমরা সকলকে অনলাইনে গবাদিপশু বেচাকেনা করতে উদ্বুদ্ধ করছি। এছাড়া আমরা খামারিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। এরপরও জেলার ৩৯১টি পশুর হাটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসন থেকে। আগামী ১৪ জুলাইয়ের পর লকডাউন যদি শিথিল হয়, তখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব হাট বসবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, এবারের কোরবানির ঈদে বিক্রির উদ্দেশ্যে জেলার ১৭টি উপজেলা ও একটি সিটি করপোরেশন এলাকার মধ্যে মোট ৩০ হাজার ১৮৮টি খামারে গবাদিপশু লালন-পালন করা হয়েছে। এবারের কোরবানির ঈদে জেলায় ২ লাখ ৩৭ হাজার পশুর চাহিদা রয়েছে। তার বিপরীতে মজুদ রয়েছে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৩৪৫টি পশু। এবার চাহিদার তুলনায় ১ হাজার ৩৪৫টি পশু বেশি রয়েছে কুমিল্লায়।
এগ্রিভিউ/এসএমএ