কৃষকের ধান কেটে দিলো ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদক
কৃষি বিভাগ
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সারা দেশে চলা লকডাউনে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষক। জমিনে বাম্পার ফলন হলেও পাচ্ছেন না তারা ধান কাটার কোন শ্রমিক। এমতাবস্থায় দলীয় নেতাকর্মীদের কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমন আহ্বানে সাড়া দিয়ে সারাদেশে কৃষকদের ধান কেটে ঘরে তুলে দিচ্ছেন ছাত্রলীগ। নেতাকর্মীদের অনুপ্রাণিত করতে ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যও কাস্তে হাতে নেমে পড়েন কৃষকদের ধান কাটতে।
সোমবার (২৬ এপ্রিল) ঢাকার আশুলিয়া থানার ধামসোনা ইউনিয়নের শুবন্দী এলাকায় এ ধানকাটা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
এ সময় তাদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধামসোনার শুবন্দী এলাকার স্থানীয় কৃষক নূর মোহাম্মদের প্রায় ১ একর জমির ধান কেটে তার বাড়িতে পৌছে দেন। এ সময় তারা ধান মাড়াইয়ের কাজেও অংশ নেন। শ্রমিক বেশে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছাত্রলীগের জন্য নতুন কিছু নয় বলে মনে করেন ছাত্র সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতারা।
ছাত্রলীগ সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় বলেন,‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার আহ্বানে দেশের এই ক্রান্তিকালে সকল সংকট মোকাবেলায় বিভিন্ন কর্মসূচি সফল করতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। গত বছর করোনা মহামারিতে শ্রমিক সংকটে যখন কৃষকেরা ধান কাটতে পারছিলো না তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সারাদেশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়েছে। গত বছরের ন্যায় এবারও যখন করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকতে, তখন সারাদেশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শ্রমিক সংকটে পড়া অসহায় কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দিচ্ছে। চলমান সংকটে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কৃষকদের পাশে থাকবে।’
সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ রোধে লকডাউন ঘোষণা করার পর সারাদেশের বিভিন্ন এলাকায় অনেক কৃষক শ্রমিক সংকটে পড়েন। এতে তারা জমির পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কায় পড়েন। করোনা পরিস্থিতির অবনতিতে আমাদের অভিভাবক কৃষি বান্ধব নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গতবারের ন্যায় এবারও এমন সংকটময় মুহূর্তে নিরুপায় অসহায় কৃষকের পাশে দাঁড়িয়ে ধান কেটে ঘরে তুলে দিচ্ছে। আজ অসহায় কৃষকের ধান কেটে সহযোগিতা করতে পেরে আমরা গর্বিত। সারাদেশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শ্রমিক সংকটে থাকা কৃষকের পাশে থেকে এ কর্মসূচি চলমান রাখবে।’
কৃষক নূর মোহাম্মদ জানান, ‘চলমান লকডাউনের কারণে জমির পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কায় পড়েছিলাম। যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় দূরদূরান্ত থেকে ধানা কাটা শ্রমিক আসতে পারছে না। ফলে এলাকায় দেখা দিয়েছে ধান কাটা শ্রমিক সংকট। মাঠে পাকা ধানগুলো নষ্ট হওয়ার পথে খুবই দুশ্চিন্তায় ছিলাম। আমার এমন অসহায়ত্বের কথা শুনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা টাকা-পয়সা ছাড়াই আমার এক একর ক্ষেতের ধান কেটে বাড়িতে পৌছে দেন। আমি তাদের এ সাহায্যের কথা কখনো ভুলব না।’
এ সময় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আসাদুজ্জামান সোহেল, সহ-সভাপতি আরিফুল ইসলাম আরিফ, সহ-সভাপতি ম. সাইফ বাবু, সহ-সভাপতি রাকিব হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জাব্বার রাজ, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সম্পাদক ইমরান জমাদ্দার, উপ-দপ্তর সম্পাদক মিরাজুল ইসলাম খান শিমুল, উপ-সাহিত্য সম্পাদক এস এম রিয়াদ হাসান, উপ-অর্থ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম আতিকসহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা এ ধান কাটা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।