১২:১৩ পূর্বাহ্ন

শনিবার, ১৬ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : জুন ৪, ২০২১ ৯:৪৬ অপরাহ্ন
হাটহাজারীতে কৃষিতে উপকারী নভেল বেসিলাসের উপর জাতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত
কৃষি গবেষনা

কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু।। ব্যাক্টেরিয়ার নাম শুনলেই মানুষ আগে ভয় পেতো, এখন আর ভয় নয়, বন্ধু হিসেবে বেসিলাস ব্যাক্টেরিয়াকে গ্রহণ করা যাবে, আর মানুষের সাথে যার মিল সবচেয়ে বেশি। মিলের সাদৃশ্যকে বিবেচনায় এনে প্রকৃতি হতে শতকরা ৭৬ ভাগ উপকারি ব্যাক্টেরিয়া সংগ্রহ করা যাবে উদ্ভাবনীয় প্রযুক্তির মাধ্যমে।

কৃষিতে উপকারী নভেল বেসিলাস ব্যাক্টেরিয়ার ব্যবহার ও প্রয়োগোত্তর ফলাফল নিয়ে শুক্রবার (৪ জুন)চট্রগ্রামের হাটহাজারিতে এক ব্যতিক্রম ধরণের জাতীয় সেমিনারে এমনটিই জানালেন প্রধান গবেষক ড. মুহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ড. খলিলুর রহমান ভূইয়া, এর সভাপতিত্বে সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর পরিচালক (প্রশশিক্ষণ ও যোগাযোগ) ড. মুহাম্মদ সামসুল আলম।

পরে মেমিনারের কারিগরি সেশনে প্রধান আলোচক হিসাবে র্ভাচুয়ালী যোগ দেন দিয়ে গুরুত্বর্পূন বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. মো. নাজিরুল ইসলাম।

মহাপরিচালক ড.মো.নাজিরুল ইসলাম বলেন, নভেল বেসিলাস এর প্রয়োগ একটি নতুন বিষয় যার উপর ইতোমধ্যেই কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট অনেকটা পথ এগিয়েছে।

আরো জোড়ালো গবেষণার মাধ্যমে নয়া এই পরিবেশ বান্ধব উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার উপর জোর দিতে হবে। সারা দেশ ব্যাপী এই প্রযুক্তি কৃষকের কাছে সহজ ভাবে পৌছে দিতে হবে। উপসচিব নাসিমা খনম গবেষণাটি খরা, বন্যা এলাকাতেও ছড়িয়ে দেবার আহবান জানান।

আরও আলোচনা করেন কৃষি সম্প্রসারণের চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মঞ্জরুল হুদা, মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ড. খলিলুর রহমান ভূইয়া, ড. মো. আবু হেনা ছরোয়ার জাহান ,প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ইকবাল ফারুক, উপসচিব নাসিমা খানম প্রমুখ।

প্রকল্পের প্রধান গবেষক ও উর্ধবতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং কর্মসুচি পরিচালক ড.মু. তোফাজ্জল হোসেন রনি মুল বিষয়বস্তু তুলে ধরেন। সেমিনারের সেশন চেয়ারম্যান ড. সামসুল আলম বলেন, কৃষিতে উপকারী বেসিলাস এর ব্যবহার কৃষি বন্ধব যা একটি ভাল উদ্যোগ। উন্নত দেশের ন্যায় আমরা এখন তা শুরু করেছি। মুলত ব্যাক্টেরিয়াগুলো শক্তিশালি পেপ্টাইডোগ্লাইকোন এর মাধ্যমে প্রতিকুল অবস্থায় গাছকে খাদ্যরস গ্রহণে সহয়তা করে শক্তিশালি করে এবং এন্টাগনাস্টিক হিসেবে কাজ করে যার ফলে জীবাণুরা অবস্থান করতে পারেনা।

ফলে,গাছ আর ঢলে পড়ে না। প্রধান গবেষক ড. হোসেন বলেন, ব্যাক্টেরিয়ার সাথে প্রাণীকুলের মধ্যে মানুষের সাথে সবচেয়ে বেশি মিল যা শতকরা ৩৭ ভাগ যেখানে বানরের সাথে মাত্র ৬ ভাগ। সুতরাং বন্ধুপ্রিয় মিলের সাদৃশ্যকে কেন্দ্র করে অঞ্চল ভিত্তিক এই গবেষণার কার্যক্রম আরো বাড়াতে হবে। উপকারি ব্যাক্টেরিয়া ব্যাহার করে বেগুনের ঢ্লে পড়া রোগ দমন করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, দেশে বড় আকারে বায়ো-সেন্টার করে এ ধরনের কাজকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এর ফলেই ব্যাক্টেরিয়ার উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে। ব্যাক্টেরিয়ার জীবন ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষণ, কালচার, নামকরণ এবং কৃষিতে উপকারী বেসিলাস এর ব্যবহার প্রয়োগ এবং ঢলে পড়া রোগ দমন ব্যবস্থাপনা নিয়ে সেমিনারে আলোচনা করা হয়।

পরে কারিগরি সেশন চেয়ারম্যান আগুন্তক গবেষক, সসম্প্রসারণ কর্মকর্তাদের মাঝে ব্যাক্টেরিয়াল পণ্য হস্তান্তর করেন। সেমিনারে বিজ্ঞানী,কৃষক,সরকারি-বেসরকারী প্রতিনিধি,গণমাধ্যম কর্মি ও আমন্ত্রিত অতিথিগণ অংশ নেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মে ১১, ২০২১ ৫:০৪ অপরাহ্ন
মুক্তা চাষে সফল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার মামুন
কৃষি গবেষনা

অনিক আহমেদ: মুক্তা চাষে সাফল্যের নজির গড়েছেন পাবনার আটঘরিয়ার ভরতপুরের উদ্যোক্তা মোহাম্মদ আল মামুন। এই উদ্যোগে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখছেন তিনি। আগ্রহীদেরকে কৃত্রিম উপায়ে মুক্তা চাষের কৌশল সম্পর্কে ধারণাও দিচ্ছেন ।

মুক্তা চাষ; বহু পুরোনা এক চাষ ব্যবস্থা হলেও চাষী পর্যায়ে তেমন ছড়ায়নি এই উদ্যোগ। মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রকল্প ও গবেষণার আওতায়ই রয়ে গেছে যুগের পর যুগ।

এই মুক্তা চাষেই সাফল্যের নজির গড়েছেন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আল মামুন। চাকরির পাশাপাশি বাড়তি আয়ের পথ খুঁজতে গিয়েই এই উদ্যোগে আগ্রহ জন্মে তার। মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণ নিয়ে নেমে পড়েন ঝিনুকের দেহে কৃত্রিম উপায়ে মুক্তা তৈরির সৃজনশীল কাজে।

৪০ শতাংশের পুকুরে ১০ মাস আগে ২ হাজার ২’শ ঝিনুকে মুক্তা চাষের জন্য প্রস্তুত করেন। এরই মধ্যে পেয়ে গেছেন ১ হাজার ডিজাইন মুক্তা। বিনিয়োগের তুলনায় লাভ বহুগুণ।

মুক্তা চাষ এখন সহজ ও দারুণ সম্ভাবনাময় উদ্যোগ মামুনের কাছে। আগ্রহী উদ্যোক্তাদেরকে পুরো কৌশল শেখাতেও প্রস্তুত তিনি। এরই মধ্যে মুক্তা চাষে আগ্রহী হয়েছেন স্থানীয় অনেক তরুণ।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মে ২, ২০২১ ৫:৪০ অপরাহ্ন
ধানের ব্লাস্ট রোগ ও তার প্রতিকার
কৃষি গবেষনা

ধান বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী খাদ্যশস্য।  আমাদের দেশে আউশ, আমন,  বোরো এই তিন মৌসুমে ধান চাষ করা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ধান উৎপন্ন হয় বোরো মৌসুমে।  কিন্তু এ মৌসুমে দেশের বিভিন্ন জেলায় বোরো ধানের জমিতে ছত্রাকজনিত ‘ব্লাস্ট’ রোগ ব্যাপক আকারে দেখা দেয় । এ কারণে ধানের শীষ শুকিয়ে চিটা হয়ে যাচ্ছে। ধানের রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম “ব্লাস্ট রোগ” ধানের মহামারী সৃষ্টি করে, জমির সব ফলস নিমিষেই শেষ করে দেয়, সঠিক সময় সঠিক পদক্ষেপ গ্রহন করতে না পারলে জমির সব ধান এ রোগের প্রাদুর্ভাবে নষ্ট হয়ে যায়।

 

বিশেষজ্ঞদের ধারণা ব্লাস্ট রোগের মহামারীর প্রধান কারণ বিরুপ আবহাওয়া। দিনে অধিক তাপমাত্রা, রাতের নিম্ন তাপমাত্রা, সকালের কুয়াশা ও শিশির, মৃদু বাতাস, ইউরিয়া সার বেশি ব্যবহার, পটাশ সার কম দেয়াসহ অধিক আদ্রতার কারণে ওই ছত্রাকের প্রকোপ বাড়ে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

 

রোগের ধরনঃ

 

সাধারণত তিন ধরনের ব্লাস্ট রোগ দেখতে পাওয়া যায়। যথাঃ পাতা বা লিফ ব্লাস্ট, গিঁট বা নোড ব্লাস্ট এবং নেক বা শীষ ব্লাস্ট। এই তিন ধরনের ব্লাস্ট রোগের মধ্যে নেক বা শীষ ব্লাস্ট সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর। “পাইরিকুলারিয়া ওরাইজি” নামক এক ধরনের ছত্রাকের আক্রমণে এই রোগের বিস্তার ঘটে।

 

১. লিফ ব্লাস্টের আক্রমণে ধান গাছের পাতায় শুরুতে চোঁখের মতো ছোট ছোট  দাগ দেখা যায় এবং আক্রমণের মাত্রা প্রকট হলে অনেকগুলো দাগ একত্রিত হয়ে সম্পূর্ণ পাতা পুড়ে যাওয়ার মত হয়। লিফ ব্লাস্টের কারনে পাতায় খাদ্য তৈরি ব্যহত হয়।

 

২. নোড বা গিঁট ব্লাস্টের কারণে গাছের গিটসমূহে পচঁন ধরে, আক্রান্ত স্থানে গাছটি ভেঙে যায় এবং গিঁটের উপরের অংশ শুকিয়ে যায়।

 

৩. নেক ব্লাস্টের আক্রমণ ধানের শীষ বের হওয়ার পর দেখা যায়। সাধারণত শীষের গোড়ায় পঁচন ধরে। ফলে খাবার ও পুষ্টি উপাদান ধানে যেতে পারে না এবং ধান চিটা হয়। এ রোগের আক্রমণে সম্পুর্ন জমির ফসল নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

 

রোগ প্রতিরোধঃ

কৃষিবিদরা রোগ প্রতিরোধে নিম্নোক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলেছেন,

 

১. ধানের কুশি অবস্থায় রোগটি দেখা দিলে বিঘাপ্রতি প্রায় পাঁচ কেজি পটাশ সার অতিরিক্ত প্রয়োগ করে জমিতে সেঁচ দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

২. ধানের থোড় আসার পর একবার এবং ফুল আসার পর আবার ছত্রাকনাশক স্প্রে করলেও রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

৩. এছাড়াও রোগ প্রতিরোধে ট্রাইসাইকাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন- ট্রপার ৭৫ ডব্লিউপি বা জিল ৭৫ ডব্লিউপি প্রতিলিটার পানিতে ০.৮১ গ্রাম অথবা (টেবুকোনাজল ৫০% + ট্রাইফ্লুক্সিট্রোবিন ২৫%) জাতীয় ছত্রাকনাশক যেমন- নাটিভো ৭৫ ডব্লিউপি ১০ লিটার পানিতে ৭.৫ গ্রাম মিশিয়ে বিকেলে স্প্রে করা। অথবা এ রোগের জন্য অনুমোদিত অন্য যেকোনো ছত্রাকনাশক যেমন ফিলিয়া, স্টেনজা, কারিশমা, নোভা, টু ইন ওয়ান প্রভৃতি অনুমোদিত মাত্রায় স্প্রে করতে হবে। তবে ধানের নেক ব্লাস্টের জন্য ট্রাইসাইকাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশকের কার্যকারিতা অধিক পরিলক্ষিত হয়।

 

পরবর্তী বছরগুলোতে যেন এ রোগের বিস্তার ঘটাতে না পারে সে জন্য রোগটি প্রতিরোধে কৃষিবিদরা নিম্নোক্ত পরামর্শগুলো প্রদান করেনঃ

 

১. ধান কাটার পর ধানের নাড়া-খড়কুটো জমিতেই পুড়িয়ে ফেলতে হবে

২. আক্রান্ত জমির ফসল থেকে বীজ সংগ্রহ করা থেকে বিরত থাকা

৩. সবসময় পরিশোধিত বীজ ব্যবহার করা

৪. অতি মাত্রায় ইউরিয়া সার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা

৫. পটাশ সার যথাযথ মাত্রায় ব্যবহার করা

৬. জমির মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখতে সবসময় পানি রাখার ব্যবস্থা করা।

লেখকঃ

মামুনার রশীদ

শিক্ষার্থী

কৃষি অনুষদ,

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর।

মোবাইল নংঃ 01755225212

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২৫, ২০২১ ১২:০৬ অপরাহ্ন
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বোরোর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা
কৃষি গবেষনা

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৬ জেলা তথা, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে এবার বোরোর সোনালী ধানের মিষ্টি গন্ধে মাতোয়ারা কৃষকরা। চলতি মৌসুমে একদিকে যেমন প্রকৃতিতে লাগছে অসাধারণ তেমনি অর্থনৈতিক সচ্ছলতারও স্বপ্ন দেখছেন সেখান কৃষকরা।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে,গত এক সপ্তাহ আগে থেকে কৃষাণ-কৃষাণীরা আনন্দের সাথে ধান কাটা ও মাড়াই শুরু করেছেন।ধান কাটা শুরুর পর ব্যস্ততা বেড়েছে কৃষাণ-কৃষাণীর। শনিবার পর্যন্ত প্রায় ২০ শতাংশ ধান কাটার কাজ শেষ হয়েছে।ঝড়-বৃষ্টি না হলে আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে ধান কাটার কাজ সম্পন্ন হবে বলে।

যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস জানান,কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে চলতি মৌসুমে বোরো চাষিদের উদ্বুদ্ধকরণ,পরামর্শ,মাঠ দিবস,উঠান বৈঠক,নতুন নতুন জাতের বীজ সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।

যশোর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক জাহিদুল আমীন জানান, চলতি মৌসুমে এ অঞ্চলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৪ হাজার ১৩১ হেক্টর বেশি জমিতে বোরো আবাদ হওয়ায় ফলনেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। এ অঞ্চলের ছয় জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল তিন লাখ ৫৩ হাজার ৭৮০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গিয়ে আবাদ হয়েছে তিন লাখ ৬৭ হাজার ৯১১ হেক্টর জমিতে।গত কয়েক বছর চালের দাম ভালো পাওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকরা অধিক জমিতে বোরো চাষ করেছেন।

যশোর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলায় হাইব্রিড জাতের বোরো ধান ২৭ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমিতে ও উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের বোরো ধান এক লাখ ৩০ হাজার ২২৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলায় হাইব্রিড জাতের বোরো ধান আট হাজার ২১৭ হেক্টর জমিতে ও উচ্চ ফলনশীল জাতের বোরো ধান ৭২ হাজার ১৭ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।

মাগুরা জেলায় হাইব্রিড জাতের ধান ৭ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে ও উচ্চ ফলনশীল জাতের বোরো ধান ৩২ হাজার ২৪১ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।কুষ্টিয়া জেলায় হাইব্রিড জাতের বোরো ধান চার হাজার ৬৯৫ হেক্টর জমিতে ও উচ্চ ফলনশীল জাতের বোরো ধান ৩০ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলায় হাইব্রিড জাতের বোরো ধান দুই হাজার ৪৬১ হেক্টর জমিতে ও উচ্চ ফলনশীল জাতের বোরো ধান ৩৩ হাজার ২৮৫ হেক্টর জমিতে এবং মেহেরপুর জেলায় হাইব্রিড জাতের ধান এক হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে ও উচ্চ ফলনশীল জাতের বোরো ধান ১৭ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।

এ বছরে চালের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ লাখ ৪৯ হাজার ৯৮৩ মেট্রিকটন। ধান কেটে ঘরে তোলার আগে যদি শিলাবৃষ্টি না হয় তবে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে উদ্বৃত্ত হবে বলে কৃষি কর্মকর্তারা জানান।

তিনি আরো জানান, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক বোরো চাষিদের প্রয়োজনীয় কৃষি লোন প্রদান করেছে।বাজারে সারেরও কোন সংকট ছিল না। বিভিন্ন জাতের ধান ও চালের দাম ভালো থাকায় এ অঞ্চলে বোরোর চাষ বেড়েছে। কৃষি যান্ত্রীকরণ উদ্যোগের আওতায় এ জেলায় ১৮টি কম্বাইন্ড হারভেষ্টারের মাধ্যমে বোরো কাটা, মাড়াই ও ঘরে তোলার কাছ চলছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২৪, ২০২১ ১২:৫১ অপরাহ্ন
বোরো ধান আবাদে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে নড়াইল
কৃষি গবেষনা

নড়াইল জেলায় এরই মধ্যে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। কৃষকরা সোনালী ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে বলে জানান কৃষি বিভাগ।

নড়াইল কৃষি বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, এ বছর করোনার মধ্যেই কৃষকরা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও অতিরিক্ত ৬২০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। ধান উৎপাদনে উদ্বৃত্ত জেলা নড়াইলে এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৪৭ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে। সেখানে আবাদ হয়েছে ৪৮ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে।

নড়াইল সদর উপজেলার ইছামতি বিল, কাড়ার বিল, আউড়িয়া, লস্কারপুর সলুয়ার বিল, কুমড়ির বিল, তারাপুর বিল, পেড়লির বিল, চাচড়ার বিল, চামরুল বিল, ধাড়িয়ার বিল, লোহাগড়া উপজেলার ইছামতি বিল, ইতনা বিল, কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ি বিল, পাটেশ^রী বিল, কলাবাড়িয়ার বিলসহ বিভিন্ন বিলে বোরো ধানের চাষ হয়েছে।

এসব বিলে হাইব্রিড জাতের হীরা, তেজ গোল্ড, এসএল ৮এইচ, উফসি জাতের ব্রিধান- ২৮, ব্রি ধান-২৯, ব্রি ধান-৫০, ব্রি ধান-৫৮, ব্রি ধান-৬৩, ব্রি ধান-৬৭, ব্রি ধান-৭৬, ব্রি ধান-৮৪, ব্রি ধান-৮৮, ব্রি ধান-৮৯, ব্রি ধান-৯৬ সহ বিভিন্ন জাতের ধানের চাষ হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় জাতেরও কিছু ধানের চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সঠিক পরিচর্যায় এবছর ধানে বাম্পার ফলন আশা করছেন চাষিরা।

নড়াইল সদর উপজেলার সিবানন্দপুর গ্রামের কৃষক ইশারত শেখ বলেন, আমাদের বিলে এবছর বোরা ধান খুবই ভাল হয়েছে। সম্প্রতি ঝড়ে কিছুটা সমস্যা হলেও ধানের ফলন ভালো হয়েছে। এরই মধ্যে ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে পুরোপুরি কাটা শুরু হয়ে যাবে।

ফেদি গ্রামের তরিকুল ইসলাম বলেন, দেশের মানুষ করোনার ভয়ে ঘরবন্দী থাকলেও কৃষকরা করোনার ভয়কে উপেক্ষা করে বোরো ধানের চাষ করেছেন। করোনাকে ভয় পাচ্ছি না। তবে ঝড় ও শিলা বৃষ্টিকে ভয় পাচ্ছি। এ মুহূর্তে ঝড় ও শিলা বৃষ্টি হলে ধান নষ্ট হয়ে যাবে।

লোহাগড়া উপজেলার হান্দলা গ্রামের কৃষক এসকেন্দার মোল্যা বলেন, আমরা অর্থে কষ্টের মধ্যেই ধান চাষ করি। এ বছর ধান ভালো হয়েছে। গত বছর দাম ভালো পাওয়ায় এবছর আরো বেশি জমিতে ধান চাষ করেছি। আগামী এক মাসের মধ্যে ধান কাটা শেষ হবে। শিলা বৃষ্টি, ঝড় না হলে আল্লাহর রহমতে ভালোভাবে ধান ঘরে তুলতে পারবো।

কালিয়া উপজেলার নোয়াগ্রমের বাদশা মিয়া বলেন, আমাদের এলাকায় ধান খুব ভালো হয়েছে। আশা করছি গত বছরের মত এবছরও ধানের ভালো দাম পাবো।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর নড়াইলের উপ-পরিচালক দীপক কুমার দে বলেন, সরকারিভাবে বিভিন্ন সহযোগিতা দেয়ায় এবং গত মৌসুমে ধানের দাম ভ ালো পাওয়ায় চাষিরা পতিত জমিতেও এবছর ধানের চাষ করেছে। সরকারিভাবে চাষিদের মাঝে বোরো ধানের বীজ বিতরণ, সার প্রণোদনা, ন্যায্য মূল্যে সার বিতরণ, করোনার সময়ে কৃষকের পাশে থেকে উৎসাহ যোগানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ধান উৎপাদনে উদ্বৃত্ত জেলা নড়াইল। এ জেলায় উৎপাদিত ধান জেলার চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী জেলায় সরবরাহ করা হয়। এ বছর ধান বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৪৭ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে। সেখানে আবাদ হয়েছে ৪৮ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও অতিরিক্ত ৬২০ হেক্টর জমিতে। এরই মধ্যে তিন হাজার হেক্টর জমির ধানা কাটা সম্পন্ন হয়েছে। এক মাসের মধ্যেই ধান কাটা সম্পন্ন হবে। আশা করি এবছরও কৃষকরা তাদের কষ্টার্জিত ধানের ন্যায্য মূল্য পাবেন।-বাসস

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২৩, ২০২১ ৩:৫৬ অপরাহ্ন
স্বল্পমূল্যের সৌরশক্তি চালিত সেচ পদ্ধতি উদ্ভাবন করলো সিকৃবির শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর
কৃষি গবেষনা

পরিবেশ বান্ধব স্বল্পমূল্যের সৌরবিদ্যুৎ চালিত সেচ পাম্প উদ্ভাবন করেছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের এমএসএর শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান। এ পদ্ধতি  প্রচলিত ধারার  চেয়ে ৬০ ভাগ সাশ্রয়ী ।তার এই গবেষনায় প্রাথমিক নির্দেশনা, প্রযুক্তিগত পরামর্শ ও সার্বিক তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব ছিলেন অধ্যাপক ড. পীযূষ কান্তি সরকার।

ফসল উৎপাদনের সিংহভাগ ব্যয় হয় জমিতে সেচ দিতে  ৷ ডিজেল ও বিদ্যুতের দাম পাল্লা দিয়ে বাড়ায় সেচের খরচ বাড়ছে। সেই অনুপাতে ফসলের দাম  মিলছে না। ফলে ক্ষতির বহর বাড়ছে  ৷ সঠিক সময়ে প্রয়োজন অনুযায়ী সেচ দিতে না পারায় ফসলের উৎপাদনে হেরফের ঘটে ।  মোস্তাফিজুরের উদ্ভাবিত প্রযুক্তিটি  অনেকটাই কমানো যাচ্ছে সেই খরচ৷ পরিবেশ বান্ধব এই পদ্ধতি সেচের ক্ষেত্রে বিপ্লব আনতে পারে বলে মনে করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা । তাদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তিটি প্রচলিত জ্বালানি চালিত সেচ-যন্ত্রের চেয়ে শতকরা ৬০ ভাগ সাশ্রয়ী। তাদের প্রস্তাবিত সম্পূর্ণ সেচ মডিউলটির বর্তমান বাজারমূল্য সর্বসাকুল্যে ২৮০০০ টাকা মাত্র। অপরদিকে, বর্তমানে যেকোন প্রচলিত সৌর পাম্পের দাম অবস্থাভেদে প্রায় ৯ লাখ টাকা।

গবেষণায় দেখা যায়, ৪০ বিঘা জমিতে সেচ প্রয়োগ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৪৩৩৫ টাকা । অথচ প্রচলিত জ্বালানি চালিত পাম্পের মাধ্যমে উক্ত সেচ কাজে খরচ হতো প্রায় ১০৬০০ টাকা। সৌরশক্তি অত্যন্ত পরিবেশবান্ধব। যদিও মাঠ পর্যায়ে তা জনপ্রিয় হচ্ছে না শুধু তার উচ্চ মূল্যের কারণে। এই প্রাথমিক সমস্যাটিকে সামনে রেখেই গবেষণা কাজটি শুরু করেন কৃষি প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান।

মোস্তাফিজুর জানান, বাংলাদেশে প্রতি বছর নতুন সেচের অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে গড়ে প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমি। কিন্তু এই বিশাল জমির পুরোটিতেই জ্বালানি চালিত পাম্প দ্বারা সেচ প্রদান করা হয়। বর্তমান প্রযুক্তির যুগে বাংলাদেশকে তার কৃষি বিপ্লব ধরে রাখতে হলে কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে জমিতে সেচ প্রদান বাবদ কৃষককে একটি বড় মূলধন ব্যয় করতে হয়। এমতাবস্থায় উচ্চমূল্যের সৌরচালিত সেচ পাম্প কৃষকরা গ্রহণ করবে না, এটাই স্বাভবিক। তাই আমরা চিন্তা করি বর্তমান বাজার মূল্যের চেয়ে আরও সাশ্রয়ী কিন্তু টেকসই এবং কৃষকবান্ধব  সেচ পাম্প প্রযুক্তির সাথে কৃষকদের পরিচিত করা যায় কিনা। দীর্ঘ এক বছর নানান প্রকার মাঠ গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এই মডিউলটি তৈরি করা হয়েছে। এই মডিউলে ব্যয়বহুল এবং কৃষক নিজে ব্যবহার করতে পারবে না এমন যন্ত্রাংশ (যেমন ট্র্যাকিং সেনসর) বাদ দেয়া হয়েছে।

জানা  যায়, উদ্ভাবিত প্রযুক্তি যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের মোট ডিজেল চাহিদার শতকরা ৫ ভাগ কমানো সম্ভব ।তাছাড়া আগামী ২০ বছরে প্রায় ১.০৮৬ মিলিয়ন টন কার্বন নিঃসরণ কমানো সম্ভব হবে যা বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে।বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়ে সরকার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সম্প্রসারিত করতে পারেন।

গবেষণা কাজের তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক ড. পীযূষ কান্তি সরকার  জানান, ‘তরুণ গবেষক মোস্তাফিজুর রহমানের গবেষণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও সময় উপযোগী। প্রযুক্তিটি ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষকরা  যেমন উপকৃত হবেন, পাশাপাশি উৎপাদন খরচও কমে আসবে । আশা করি  সরকারের নীতিনির্ধারণী কর্তৃপক্ষ উক্ত সেচ মডিউলটি কৃষকপর্যায়ে সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।’

সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. সানজিদা পারভীন জানান, ‘নিঃসন্দেহে এটি একটি যুগোপযোগী প্রযুক্তি। আমাদের বিভাগের একজন গবেষক দ্বারা প্রযুক্তিটি উদ্ভাবিত হওয়ায় আমি গর্ববোধ করছি। আমাদের প্রত্যাশা দেশের কৃষকরা এ প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে উপকৃত হবেন।’

সরকারের সহায়তায় পেলে মোস্তাফিজুর রহমান তার উদ্ভাবিত প্রযুক্তিটি প্রান্তিক কৃষকদের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে পারবে বলে মনে করেন। এ ব্যাপারে কৃষিমন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সকলের সহায়তার আশাবাদী।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২৩, ২০২১ ১১:১২ পূর্বাহ্ন
সানশাইন আলু চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের
কৃষি গবেষনা

নতুন জাতের আলু সানশাইন। আর এই সানশাইনের বাম্পার ফলনে এই আলু চাষের দিকে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে শেরপুর জেলার কৃষকদের। এই আলু চাষ করে লাভবানও হচ্ছেন তারা। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের আওতায় নকলা উপজেলায় চলতি মৌসুমে নতুন এ বীজ আলুর ফলন দেখে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।

নকলা উপজেলার বিএডিসি কর্মকর্তা জানান, আমরা মাঠ পরিদর্শনসহ নিয়মিত চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। সানশাইন জাতের আলু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন হচ্ছে এবং দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি করা সম্ভব। নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা ও নারায়ানখোলা ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চলে, কুইন অ্যানি আটাডো, গ্র্যানোলা, ডায়মন্ড, কার্ডিনাল, এস্টারিক্সসহ ২০টি জাতের বীজ আলু চাষ করা হয়। কিন্তু এ বছর সানশাইন জাতের বীজ আলু চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কৃষকরা।

এতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে উৎপাদন হচ্ছে বেশি। চলতি মৌসুমে নকলা উপজেলায় ১৯টি ব্লকে বিএডিসির চুক্তিবদ্ধ ৩৬ কৃষকসহ অর্ধশতাধিক আলুচাষিকে নির্বাচন করে বীজ আলু উৎপাদনের লক্ষ্যে ২৭০ একর জমিতে এবং রফতানি করার লক্ষ্যে আরও ৩০ একর জমিতে বিএডিসির আওতায় আলু চাষ করা হয়েছে। এসব জমিতে প্রতি একরে এক মেট্রিক টন হারে ৩০০ মেট্রিক টন বিএডিসির আলুবীজ রোপণ করা হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বীজ আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১ হাজার ৫২১ মেট্রিক টন থেকে ১ হাজার ৬০৭ মেট্রিক টন অর্জিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে আলু বাছাই কাজেও ব্যস্ত সময় পার করে সংসারে বাড়তি আয় করছেন স্থানীয় শ্রমজীবী নারীরা।

শেরপুরের কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের উপ-পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, গুণগত মান ও অধিক উৎপাদনসম্পন্ন সানশাইন বীজ আলু উৎপাদনের লক্ষ্যে আলুর বিভিন্ন ব্লক পরিদর্শনে গিয়েছি। মাঠ দিবসের মাধ্যমে প্রদর্শনী প্লট স্থাপন ও মাল্টি লোকেশন পারফরম্যান্স যাচাইসহ চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি। উৎপাদিত এ আলু বিদেশে রফতানি করা সম্ভব।

তিনি আরও জানান, বিএডিসির আওতায় কৃষকের উৎপাদিত আলু গ্রেডিং করার পর সরকার-নির্ধারিত দামে কিনে হিমাগারে সংরক্ষণ করা হবে। পরে সরকার-নির্ধারিত দামে কৃষকদের কাছে বিক্রি করা হবে। এতে আলু চাষিরা দুই দিক থেকেই লাভবান হবেন বলেও তিনি জানান।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৯, ২০২১ ৪:৫০ অপরাহ্ন
“ব্রি উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল জাতগুলো খাদ্য উৎপাদনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে”
কৃষি গবেষনা

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) কর্তৃক উদ্ভাবিত নতুন নতুন অভিঘাত সহনশীল ও উচ্চ ফলনশীল জাতগুলো দেশের খাদ্য নিরাপত্তাকে টেকসই করবে এবং ভবিষ্যতে খাদ্য উৎপাদনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে বলে মন্তব্য করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জনাব মেসবাহুল ইসলাম

তিনি সোমবার (১৯ এপ্রিল) ব্রি উদ্ভাবিত উচ্চ তাপ সহনশীল ধানের প্রস্তাবিত জাত এবং বাসমতি টাইপ ধান, হাইব্রিড ধানের গবেষণা ও বিভিন্ন পুষ্টিগুণ সম্পন্ন জাতের প্লটসমূহ পরিদর্শন শেষে ব্রি প্রশিক্ষণ কমপ্লেক্সে এর মিলনায়তনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।

পরিদর্শনকালে ব্রির মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর সচিব‘কে বিভিন্ন গবেষণা প্লট সর্ম্পকে ব্রিফ করেন।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, আমাদের দেশের কৃষকরা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী চাষাবাদ প্রক্রিয়ায় রূপান্তর বা পরিবর্তন নিয়ে আসছেন। ধানের জমি অনেক ক্ষেত্রে হাই ভ্যালু ফসলের জন্য ছেড়ে দিতে হচ্ছে। এখন আমাদের কে অল্প জমিতে অধিক ধান ফলাতে হবে। এজন্য অভিঘাত সহনশীল ও উচ্চ ফলনশীল জাত ব্যবহার করতে হবে।

তিনি বলেন, মানুষের রুচির পরিবর্তন হচ্ছে। এখন মানুষ সরু চাল খেতে পছন্দ করে। আগে সরু ও সুগন্ধি ধানের জাতগুলো যেখানে হেক্টর প্রতি ২-৩ টন ফলন দিত এখন ব্রি উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল সুগন্ধি জাতগুলো ৫-৬ টন ফলন দিচ্ছে যা অত্যন্ত আশা ব্যঞ্জক। এ সময় তিনি ব্রির বিজ্ঞানীদের উচ্চ তাপমাত্রা সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবনের গবেষণা কার্যক্রমের অগ্রগতি দেখে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।

পরিদর্শনকালে ব্রির মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ওয়াহেদা আক্তার, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আসাদুল্লাহ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাজিরুল ইসলাম, জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমীর মহাপরিচালক ড. আখতারুজ্জামান, ব্রি’র পরিচালক (গবেষণা) ড. কৃষ্ণপদ হালদার, পরিচালক (প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা) ড. মো. আবু বকর ছিদ্দিক এবং বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানগণ।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৯, ২০২১ ২:১৭ অপরাহ্ন
ব্রি-২৮ ধান চাষ করে ব্যাপক ক্ষতির মুখে কৃষকরা
কৃষি গবেষনা

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে আগাম জাতের উচ্চ ফলনশীল ব্রি-২৮ জাতের ধান চাষ করে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। ধানের নেক ব্লাস্ট (শীষ মরা) রোগের আক্রমণে তারা এখন দিশেহারা। অধিক খরচে আবাদ করে কৃষকের মাথায় এখন হাত পড়েছে।

অনেকেই এখন জমির ধান কেটে বাড়িতে আনতে চান না বলে জানিয়েছেন। ব্রি-২৮ জাতের ধানে চিটার পরিমাণ বেশি হওয়ায় খড় ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যাবে না বলে ধান কাটতে অনীহা কৃষকদের। তাদের দাবি শীষ মরা রোগে আক্রান্ত ধানের খড়ও গবাদিপশু খেতে চায় না।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫শ’ হেক্টর বেশি জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এবছর ১৬ হাজার ২১২ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ হয়। যার মধ্যে ৩ হাজার ১শ হেক্টর জমিতে ব্রি-২৮ ধান চাষ করা হয়েছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে উপজেলার সোনাহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ ভরতের ছড়া, উজির পাড়া, মাহিগঞ্জ, লক্ষী মোড়, পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পাটেশ্বরী ব্রিজ পাড়, বেলদহ, আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের মোগলকাটা, ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের দেওয়ানের খামার, বাগভান্ডার, ঈশ্বরবরুয়া, কামাত আঙ্গারীয়া, তিলাই ইউনিয়নের পশ্চিম ছাট গোপালপুর, বানিয়াটারী, পাথরডুবি ইউনিয়নের মইদাম, বাঁশজানী, শিলখুড়ি ইউনিয়নের উত্তর তিলাই, দক্ষিণ ধলডাঙ্গা ও কাঠগীর এলাকায় ব্রি-২৮ জাতের ধানের শীষ শুকিয়ে সাদা হয়ে চিটায় পরিণত হয়েছে। কৃষকদের মতে এই রোগের নাম ‘শীষ মরা’ আর কৃষি অফিসের মতে এটি ‘নেক ব্লাস্ট’ রোগ।

আন্ধারীঝাড়ের কৃষক ফজলুর রহমান জানান, এক বিঘা ধান কেটে বাড়িতে নিয়েছি, এই ধানের খড় গরুও খেতে চায় না। অপর কৃষক রফিকুল জানান, বিঘা প্রতি ছয় মণ ধান দেয়ার চুক্তিতে তিন বিঘা জমিতে ব্রি-২৮ ধান চাষ করেছি। শীষ মরা রোগে সমস্ত জমির ধান চিটা হয়ে গেছে। লাভ তো দুরের কথা, খরচ উঠবে না। জমির মালিক যদি ছাড় না দেন বাজার থেকে ধান কিনে দিতে হবে তাকে।

পাইকের ছড়ার বেলদহ গ্রামের কৃষক ভুট্টু জানান, ধানের শীষের গোড়ার দিকে কালো দাগ হয়, দুইদিনের মধ্যে সমস্ত শীষ শুকিয়ে সাদা হয়ে যায়। ওষুধ দিয়েও কাজ হচ্ছে না। তিনি আরো জানান, তার এক প্রতিবেশীর এক বিঘা জমিতে ১ মণের কম ধান হয়েছে। দক্ষিণ ভরতের ছড়ার কৃষক ইদ্রিস আলী জানান, এক বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি, ওই জমিতে ৩/৪ মণ ধান হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

একই এলাকার কৃষক শাহ আলম জানান, ৩৮ শতাংশ জমিতে ধান লাগিয়েছিলাম। ধানের যে অবস্থা তাতে ধান কাটা আর না কাটা একই সমান।

অধিকাংশ কৃষকের দাবি উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে ক্ষেতে ওষুধ স্প্রে করেও শীষ মরা ঠেকানো সম্ভব হয়নি।

সোনাহাট ডিগ্রী কলেজের কৃষি বিভাগের প্রভাষক আজিজুল হক বলেন, ধানের শীষ বের হওয়া শুরু হলে জমিতে সব সময় দুই আড়াই ইঞ্চি পানি রাখলে এবং পটাশিয়াম ও ছত্রাক নাশক স্প্রে করলে ধানের শীষ সাদা হয়ে ধান এত বেশী নষ্ট হবে না এবং ধান নেকব্লাষ্টে আক্রান্ত কম হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, নেকব্লাস্ট দমনে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। ব্রি-২৮ জাতটি বর্তমান সময়োপযোগী নয়। কৃষি অফিসের তৎপরতায় ব্রি-২৮ জাতের ধান চাষ গত বছরের তুলনায় এবছর অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। জমিতে অধিক পরিমাণে ইউরিয়া ও ডিএপি সার প্রয়োগ, পরিমাণ মতো এমওপি সার প্রয়োগ না করার কারণে নেকব্লাস্টের পরিমান বেড়ে গেছে। প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দেয়া জমিতে ৬৬ লিটার ওষুধ মেশানো পানি স্প্রে করতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে কৃষি অফিস থেকে। কৃষকরা সঠিকভাবে স্প্রে না করায় নেক ব্লাস্ট প্রতিরোধ সম্ভব হচ্ছে না। তিনি কৃষকদের ব্রি-২৮ জাতের পরিবর্তে ব্রি-৭৪, ব্রি-৮৬, ব্রি-৮৯ ও ব্রি-৯২ জাত চাষ করার পরামর্শ প্রদান করেন।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৯, ২০২১ ১১:৩২ পূর্বাহ্ন
সাদুল্যাপুরে বাড়ছে বিষমুক্ত সবজি চাষ
কৃষি গবেষনা

সাদুল্যাপুর উপজেলার হাট-বাজারে মিলছে বিষমুক্ত সবজি। আর এই বিষমুক্ত সবজির চাহিদা ব্যাপক থাকায় কৃষকরাও হচ্ছেন লাভবান।সেক্সফেরোমন পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষকরা এখন কোনো প্রকার কীটনাশক ছাড়াই বেগুন, পটোল, করলা, ঢ্যাঁড়শ, শসা, টমেটো, বরবটি, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, মিষ্টিকুমড়া, চালকুমড়া, লালশাক এবং পুইশাক চাষ করছেন তারা।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ থেকে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৪৬০ হেক্টর জমিতে বিষমুক্ত সবজি চাষ হয়েছে। এর মধ্যে বেগুন ১০৫ হেক্টর জমিতে, পটোল ৫৫ হেক্টরে, করলা ১০০ হেক্টরে, শসা ৮০ হেক্টরে, টমেটো ২০ হেক্টরে, ঝিঙ্গা ৮ হেক্টরে, চিচিঙ্গা ১০ হেক্টরে, চালকুমড়া ১২ হেক্টরে, মিষ্টিকুমড়া ১৫ হেক্টরে, বরবটি ২০ হেক্টরে, ঢ্যাঁড়শ ১০ হেক্টরে, লালশাক ১০ হেক্টরে এবং পুইশাক চাষ করা হয়েছে ১৫ হেক্টর জমিতে। বিষমুক্ত উপায়ে চাষ পদ্ধতির এসব ফসল এখন হাট-বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, ভালো ফলনের আশায় কৃষকরা এক সময় বেগুনসহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেতে নানা ধরনের কীটনাশক স্প্রে করতেন। এসব কীটনাশক মানবদেহের জন্য অত্যন্ত\হক্ষতিকর। তাই তাদের সেক্সফেরোমন পদ্ধতিতে কীটনাশক ছাড়াই বেগুনসহ অন্যান্য সবজি চাষ পদ্ধতি শেখানো হয়েছে। এভাবে সবজি চাষ করে তারা\হবেশ ভালো ফলন পাচ্ছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বসুনিয়া জানান, কৃষকদের বিষমুক্ত উপায়ে সবজি চাষে আগ্রহী করে তুলতে বিভিন্নভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের উপজেলা পরিষদের কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এনে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে বিষমুক্ত সবজি চাষের সুফল ও গুণাগুণ সম্পর্কে বোঝানো হয়েছে। যার কারণে তারা এখন বিষমুক্ত সবজি চাষে অনুপ্রাণিত হয়েছেন।

তিনি আরো জানান, বর্তমানে উপজেলার ধাপেরহাট, ইদিলপুর, ভাতগ্রাম, ফরিদপুর ও জামালপুর ইউনিয়নে সর্বাধিক জমিতে এখন বিষমুক্ত সবজি চাষ করেছেন কৃষকরা। তাতে বেশ ভালো উৎপাদন হচ্ছে।

উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের কৃষক জাহিদুল ইসলাম জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে তিনি বিষমুক্ত সবজি চাষ করে আশাতীত ফলন পেয়েছেন। এ সবজি বাজারে নিয়ে গেলে নিমেষেই বিক্রি হয়। ক্রেতারাও এ সবজি খোঁজেন এবং তুলনামূলক বেশি দামেই কেনেন।\হসবজি বিক্রেতা মুন্না সাহা জানান, অন্য যে কোনো সবজির চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয় বিষমুক্ত সবজি। অনেক ক্রেতা আগেই জানিয়ে রাখেন বিষমুক্ত সবজির কথা। এতে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খাজানুর রহমান জানান, কৃষকদের\হকীটনাশক ছাড়াই ফসল ফলাতে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। এতে কৃষক, কৃষি ও ক্রেতারা সবাই উপকৃত হবেন বলে জানান তিনি।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop