৯:৪৪ পূর্বাহ্ন

মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : অগাস্ট ৩০, ২০২১ ২:৫৭ অপরাহ্ন
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২১ উদযাপিত
ক্যাম্পাস

কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (ময়মনসিংহ) জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন কমিটির আয়োজনে মাছের পোনা অবমুক্ত করার মধ্য দিয়ে “জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২১” উদযাপন করেছে।

আজ সোমবার(৩০ আগস্ট) সকাল ১১টায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন কমিটির উদ্যোগে ব্রহ্মপুত্র নদের ঘাটে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান।

এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান বলেন, কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশে খাদ্য পুষ্টির অভাব দেখা দিবে এমন একটা সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষক এবং ছাত্র ছাত্রীদের গবেষণালব্ধ ফলাফল প্রান্তিক কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে দেশে প্রোটিন এবং ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়েছে। আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যার সুচিন্তা এবং অবদান কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণীর সম্মাননা যার মাধ্যমে এই পুষ্টি ঘাটতি পূরণের অগ্রযাত্রা শুরু। আজকে ফিশারিজ অনুষদের শিক্ষক-ছাত্র-ছাত্রী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদরে নিরলস পরিশ্রমের ফসল আজকের এই মাছের ঘাটতি পূরণ। আমি আশাবাদ ব্যক্ত করি ভবিষ্যতে আমরা মাছ উৎপাদনের ব্যাপারে আরো সাফল্যমন্ডিত হবো।

মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ মাহফুজুল হক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. এ. কে. এম. জাকির হোসেন, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন এর পরিচালক প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ, প্রোক্টর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মহির উদ্দিন, বাকৃবি জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. মোঃ আবুল মনসুর ,প্রফেসর ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম সরদার, প্রফেসর ড. মোছাঃ কানিজ ফাতেমা, প্রফেসর ড. ফাতেমা হক শিখাসহ মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের আরোও শিক্ষক-শিক্ষার্থী।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন কমিটির সদস্য-সচিব প্রফেসর ড. এ. কে. শাকুর আহম্মদ।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অগাস্ট ২৯, ২০২১ ১০:১২ পূর্বাহ্ন
দেশীয় মাছের উৎপাদন বেড়েছে নওগাঁয়
মৎস্য

নওগাঁয় চলতি বছরে দেশীয় মাছের উৎপাদন বেড়েছে তিন হাজার মেট্রিক টন।তবে চাষকৃত মাছের দানাদার খাবারের দাম বেশি হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত লভ্যাংশ পাচ্ছেন না চাষীরা।জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, নওগাঁয় পুকুর বা দিঘি রয়েছে ৪৭ হাজার ৩২৬টি। যার আয়তন প্রায় ১২ হাজার ৮৪৯ দশমিক ৯০ হেক্টর। এছাড়া উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ চাষের আয়তন ৩৪ হাজার ৯০০ দশমিক ৮৫ হেক্টর।

এ বছর জেলায় বদ্ধ ও উন্মুক্ত জলাশয়ে ৮৩ হাজার ৬০৯ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়েছে। যা গত বছর ছিল ৮০ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন। অর্থ্যাৎ গত বছরের তুলনায় এ বছর তিন হাজার ৯ মেট্রিক টন মাছের উৎপাদন বেড়েছে। জেলায় মাছের চাহিদা রয়েছে ৬১ হাজার ২১০ মেট্রিক টন। উদ্বৃত্ত ২২ হাজার ৩৯৯ মেট্রিক টন মাছ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।

নিচু এলাকা হিসেবে পরিচিত জেলার আত্রাই ও রানীনগর উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে আত্রাই নদী। এ দুই উপজেলার মৎস্যজীবীরা আত্রাই নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। এ নদীতে দেশীয় প্রজাতির শিং, মাগুর, কৈ, পুঁটি, খলিশাসহ অন্য মাছ পাওয়া যায়। দেশীয় মাছকে কেন্দ্র করে আত্রাই উপজেলার আহসানগঞ্জ স্টেশনের পাশে ভরতেঁতুলিয়া শুকটি পল্লী গড়ে ওঠেছে। এখানকার শুটকি রাজধানী ঢাকাসহ উত্তরাঞ্চলের রংপুর, নিলফামারী, সৈয়দপুর, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুরসহ দেশের প্রায় ২০টি জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে।

বদলগাছী উপজেলার কাস্টোডোব গ্রামের মাছচাষী রমজান আলী বলেন, এক বিঘা পরিমান পুকুর ইজারা নিয়ে গত তিন বছর থেকে শিং ও টেংরা এবং রুই, মৃগেল ও কাতলা চাষ করছি। গত দেড় বছর আগে কোয়ালিটি ফিডের দাম ছিল প্রতিবস্তা ৯০০-১০০০ টাকা। বর্তমানে সেই ফিডের দাম বেড়ে হয়েছে ১২৮০-১৩০০ টাকা। এতে দানাদার খাবারে প্রতিমাসে প্রায় ছয়-সাত হাজার টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। মৎস্য খামারিদের বাঁচাতে দানাদার খাবারের দাম কমানোর দরকার।

একই উপজেলার কাশিমালা গ্রামের চঞ্চল হোসেন বলেন, দেশীয় প্রজাতির মাছের চাহিদা মিটাতে হ্যাচারী করেছি।শিং, টেংরা, পাবদা, গুচি ও পুঁটিসহ অন্য প্রজাতির রেনু সরবরাহ করি। প্রতিমাসে প্রায় ২০০-৩০০ কেজি দেশীয় মাছের রেনু বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করি।তবে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ করা সম্ভব হয় না।

নওগাঁ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ফিরোজ আহম্মেদ জানান, এ বছর তিন হাজার মেট্রিক টন দেশীয় মাছের উৎপদান বেড়েছে। চলতি অর্থবছরে সরকার আমদানি শুষ্ক কমিয়েছে। এটা বাস্তবায়ন হলে মাছের খাবারের দাম কমবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অগাস্ট ২৮, ২০২১ ৩:৪৯ অপরাহ্ন
পুকুরে মাছের রোগ দমনে যা করবেন
মৎস্য

লাভজনক হওয়ার কারণে বর্তমানে অনেকেই পুকুরে মাছ চাষে ঝুঁকছেন। পুকুরে মাছ চাষ করার সময় বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এর মধ্যে মাছের রোগ অন্যতম। তবে মাছের রোগ সময়মতো দমন করতে পারলে অধিক পরিমাণে লাভবান হওয়া যায়।

পুকুরে মাছ চাষে রোগ দমন করার কার্যকর উপায়:
মাছের রোগ প্রতিরোধ করার জন্য পুকুরে মাছের সুস্থ ও সবল পোনা মজুদ করতে হবে। দুর্বল ও অসুস্থ মাছের পোনা সহজেই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তাই পোনা সংগ্রহ করার সময় শুধুমাত্র সুস্থ ও ভালো মানের পোনা বাছাই করতে হবে। মাছের রোগ প্রতিরোধ করার জন্য পুকুরে মাছের পোনা ছাড়ার আগেই সঠিক উপায়ে পুকুর প্রস্তুত করতে হবে। সঠিক নিয়ম মেনে পুকুর প্রস্তুত করলে মাছের রোগের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যাবে।

মাছ চাষে মাছের রোগ প্রতিরোধ করার জন্য পুকুর প্রস্তুতির সময়ে প্রতি শতকে ১ কেজি হারে চুন প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়াও প্রয়োজন অনুযায়ী অন্যান্য উপাদান পুকুরে প্রয়োগ করতে হবে। মাছের রোগ প্রতিরোধ করার জন্য নিয়মিত পুকুরের পানির গুণাগুণ পরীক্ষা করাতে হবে। পুকুরের পানি পরিবর্তন করার প্রয়োজন হলে সেচ দিয়ে পুকুরের পানি পরিবর্তন করতে হবে। আর দরকার হলে পানি নিষ্কাশন করে ফেলতে হবে।

পুকুরে মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এতে মাছের রোগ সহজেই দমন করা যাবে ও অধিক লাভবান হওয়া যাবে। মাছের রোগ প্রতিরোধ করার জন্য পুকুরের আশপাশ পরিষ্কার ও ছায়ামুক্ত রাখতে হবে। পুকুরে দিনের ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা যাতে সূর্যের আলো থাকে সে ব্যবস্থা করতে হবে। পুকুরের চারপাশে বড় কোন গাছ থাকলে তা কেটে ফেলতে হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অগাস্ট ২৮, ২০২১ ৯:৪৬ পূর্বাহ্ন
তিন দশকে বাংলাদেশে মাছের উৎপাদন বেড়েছে ২৫ গুণ
বিজ্ঞান ও গবেষণা

মাছ বাঙালি জাতির সংস্কৃতি ও কৃষ্টির অংশ। দেশের ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর পুষ্টি চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থান, দারিদ্র্যবিমোচন ও রপ্তানি আয়ে মৎস্য খাতের অবদান আজ সর্বজনস্বীকৃত। মোট দেশজ উৎপাদনের প্রায় ৪.৭৩ শতাংশ মৎস্য উপখাতের অবদান এবং কৃষিজ জিডিপিতে ২৫.৭২ শতাংশ। আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যে প্রাণিজ আমিষের প্রায় ৬০ শতাংশ আসে মাছ থেকে। দেশের প্রায় ১৪ লাখ নারীসহ মোট জনসংখ্যার ১২ শতাংশেরও বেশি অর্থাৎ প্রায় ২ কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মৎস্য খাতের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করছে। দেশের মানুষ গড়ে জনপ্রতি প্রতিদিন ৬০ গ্রাম চাহিদার বিপরীতে ৬২ দশমিক ৫৮ গ্রাম মাছ বর্তমানে গ্রহণ করছে।

আর এই প্রাণিজ আমিষের প্রধান উৎস মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা তৈরির জন্য অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও আয়োজন করা হচ্ছে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ। এবার ২৮শে আগস্ট থেকে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২১ শুরু হচ্ছে ।

৩রা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক এটি পালন করা হবে। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘বেশি বেশি মাছ চাষ করি, বেকারত্ব দূর করি’। কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মৎস্য উপখাতের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সম্ভাবনাময়। বিগত ২০০৮ সালে মৎস্য উপখাতে গড় প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫.০ শতাংশ। বর্তমানে প্রবৃদ্ধির হার শতকরা ৬ শতাংশ। দেশের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৪ দশমিক ০৪ শতাংশ আসে মৎস্য উপখাত থেকে।

সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় ২০১৫ সালের মধ্যে অর্জিত নির্দিষ্ট ৮টি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশ সরকার প্রণীত দারিদ্র্যবিমোচন কৌশলপত্রে মৎস্য উপখাতকে দারিদ্র্যবিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দরিদ্রবান্ধব অর্থনৈতিক উন্নয়নে অন্যতম প্রধান ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচনে মৎস্য উপখাতের, বিশেষ করে মাছচাষ সম্প্রসারণ ও মুক্ত জলাশয়ে মৎস্য সম্পদের জৈবিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দরিদ্রবান্ধব অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে । দেশে বর্তমান বেকার সংখ্যা ২০২১ সালের মধ্যে ১.৫ কোটিতে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বর্তমান দারিদ্র্যসীমার হার ২০ শতাংশ ও চরম দারিদ্র্যের হার ১০ শতাংশে কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে মৎস্য উপখাত সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশ পানিসম্পদে অত্যন্ত সমৃদ্ধ।

এ দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য পুকুর-দীঘি, ডোবা-নালা, নদ-নদী, খাল-বিল ও বাঁওড়। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল জুড়ে রয়েছে বিশাল হাওর এলাকা যা আমাদের মৎস্য সম্পদের সূতিকাগার হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশে ৩ দশমিক ০৫ লক্ষ হেক্টর আয়তনের প্রায় ১৩ লক্ষ পুকুর-দীঘি রয়েছে। দেশের ২৪ হাজার কি.মি. দীর্ঘ নদ-নদীর আয়তন প্রায় ১০ দশমিক ৩২ লক্ষ হেক্টর। এছাড়া রয়েছে ১ দশমিক ১৪ লক্ষ হেক্টর জলায়তনের প্রায় ১১ হাজার বিল, ৫ হাজার ৪৮৮ হেক্টর আয়তনের বাঁওড়, ৬৮ হাজার ৮০০ হেক্টর কাপ্তাই হ্রদ, প্রায় ২.০০ লক্ষ হেক্টর সুন্দরবন খাড়ি অঞ্চল এবং ২৮ দশমিক ৩০ লক্ষ হেক্টরের বিশাল প্লাবনভূমি।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, গত তিন দশকে বাংলাদেশে মাছের উৎপাদন বেড়ে হয়েছে প্রায় ২৫ গুণ। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা মাছ নিয়ে তাদের ‘দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার ২০২০’ শিরোনামে প্রকাশিত বৈশ্বিক প্রতিবেদনে বলেছে, স্বাদু পানির উন্মুক্ত জলাশয় থেকে মাছ আহরণে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে তৃতীয়। দেশে উৎপাদিত মাছের ৭৫ শতাংশ এখন বাজারজাত করছেন মৎস্যচাষিরা। এছাড়া কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদন ও চাষাবাদ পদ্ধতি উদ্ভাবন করে ফিরিয়ে আনা হয়েছে ২৪ প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় দেশি মাছ। সব মিলিয়ে স্বাধীনতার ৫০ বছরে মাছ উৎপাদনে রের্কড সৃষ্টি করছে বাংলাদেশ।

এছাড়াও মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, গত পাঁচ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে মাছের উৎপাদন। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে মাছ উৎপাদন হয় ৩৬ লাখ ৮৪ হাজার টন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৩৮ লাখ ৭৮ হাজার টন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৪১ লাখ ৩৪ হাজার টন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪২ লাখ ৭৭ হাজার টন এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৪৩ লাখ ৮১ হাজার টন। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের মৎস্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা গিয়ে দাঁড়াবে ৪৫ দশমিক ৫২ লক্ষ মে. টন।

বাংলাদেশ এখন মাছে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বর্তমান বিশ্বে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। বিশ্ব খাদ্য সংস্থা পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২২ সাল নাগাদ বিশ্বের যে ৪টি দেশ মাছ চাষে বিপুল সাফল্য অর্জন করবে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। তাছাড়া গবেষণার মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া অনেক প্রজাতির মাছ এখন চাষ করা হচ্ছে। হারিয়ে যাওয়া মাছ চাষ হচ্ছে সরকারি-বেসরকারিভাবেও। এ ছাড়া মা ইলিশ ও জাটকা রক্ষায় সরকার ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ এখন ইলিশ উৎপাদনে বিশ্বে রোল মডেল। বিশ্বে ইলিশ উৎপাদনকারী ১১টি দেশের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশেই ইলিশ উৎপাদন বেড়েছে; বর্তমানে ১২৫টি উপজেলার নদ-নদীতে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণালব্ধ তথ্যের ভিত্তিতে ২০০৮-২০০৯ সালে দেশে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ লাখ ৯২ হাজার মেট্রিক টন, যা বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৮-১৯ সালে ৫ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ গত ১২ বছরে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৮৩ শতাংশ। এছাড়া গত ২০১৬ সালে ইলিশ বাংলাদেশের ভৌগলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ইলিশের স্বত্ব এখন শুধুই বাংলাদেশের। এটা জাতির জন্য গৌরবের। বর্তমান সরকারের নানামুখী কর্মকাণ্ড ও বেকারত্ব নিরসনে মৎস্য খাত বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে। বর্তমানে মাছ চাষ ও ব্যবসায় দুই কোটির কাছাকাছি মানুষ যুক্ত আছেন।

মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বিশ্বজুড়ে মানুষের মাছ খাওয়া বেড়েছে ১২২ শতাংশ। বর্তমানে বিশ্বের ৭টি দেশের মানুষের প্রাণিজ আমিষের অর্ধেকের বেশি আসে মাছ থেকে। বাংলাদেশে প্রাণিজ আমিষের শতকরা ৫৮ শতাংশ আসে মাছ থেকে। আর বিশ্বে গড়ে প্রাণিজ আমিষের শতকরা ২০ শতাংশ আসে কেবল মাত্র মাছ থেকে। এদিকে, গত ১০ বছরে দেশে মাথাপিছু মাছ খাওয়ার পরিমাণ প্রায় শতভাগ বেড়েছে। ২০১০ সালের সর্বশেষ খানা জরিপে উঠে এসেছে- বছরে বাংলাদেশে একেকজন মানুষ প্রায় ১২ কেজি মাছ খেতো। এখন সেটা ৩০ কেজিতে পৌঁছেছে। দেশের জিডিপিতে কৃষির অবদান ১৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ। জিডিপিতে কৃষির অবদান কমলেও মৎস্য উপখাতের অবদান কিছুটা বেড়েছে। মোট জিডিপিতে মৎস্য উপখাতের অবদান ২০১৬-১৭ সালে ছিল ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ। তা কিছুটা কমে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৩ দশমিক ৪৯ শতাংশে দাঁড়ায়। তবে গত অর্থবছরে মৎস্য উপখাতের অবদান কিছুটা বেড়ে ৩ দশমিক ৫২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে টাকার অঙ্কে মৎস্য উপখাত থেকে জিডিপিতে যুক্ত হয়েছে ৮২ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল ৭৪ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা। এই খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ দশমিক ১০ শতাংশ।

বাংলাদেশে সামুদ্রিক মৎস্য উৎপাদন মূলত আহরণ নির্ভর। উপকূলব্যাপী ৭১০ কি.মি. দীর্ঘ তটরেখা থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত ১ দশমিক ৬৬ লক্ষ বর্গ কি.মি. বিস্তৃত বিশাল সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসম্পদে ৩৬ প্রজাতির চিংড়ি এবং ৪৭৫ প্রজাতির মাছ রয়েছে। বর্তমানে বঙ্গোপসাগর হতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রল ফিশিং এবং আর্টিসেনাল মৎস্য আহরণের মাধ্যমে মোট ৪ দশমিক ৩৯ লক্ষ মে. টন মৎস্য আহরণ করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ মৎস্য সম্পদের ন্যায় সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মৎস্যজীবীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক নৌযানে মৎস্য আহরণে নিয়োজিত প্রায় ২ দশমিক ৭০ লক্ষ মৎস্যজীবীর পরিবারের ন্যূনতম ১৩ দশমিক ৫০ লক্ষ মানুষের জীবিকা নির্বাহ হচ্ছে উপকূলীয় সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের মাধ্যমে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে গণভবন লেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মাছের পোনা অবমুক্ত করে মৎস্য চাষকে সামাজিক আন্দোলনে রূপ দেয়ার শুভ সূচনা করেছিলেন। তৎকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধু ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন ‘মাছ হবে এ দেশের দ্বিতীয় প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী সম্পদ।’ জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে মৎস্যবান্ধব বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের ফলে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন আজ সফল হয়েছে। এর ফলে একদিকে যেমন দেশ আজ মাছে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ায় সাধারণ মানুষ স্বল্পমূল্যে মাছ ও পুষ্টি পাচ্ছে, অন্যদিকে দেশে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্ব দূর হচ্ছে।

লেখক:
গণযোগাযোগ কর্মকর্তা
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তর
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়
[email protected]
সূত্র: মানব জমিন

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অগাস্ট ২৭, ২০২১ ১১:১১ অপরাহ্ন
ঘেরে বিষ প্রয়োগে ১০ লাখ টাকার মাছ নিধন!
মৎস্য

সাতক্ষীরায় বিষ প্রয়োগ করে দুর্বৃত্তরা একটি ঘেরের (খামার) মাছ মেরে ফেলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল ভোররাতে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগরদাড়ী ইউনিয়নের নেবাখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে রুই, কাতলা, মৃগেল ও চিংড়িসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ মারা গেছে।

মৎস্যচাষী রবিউল ইসলাম ডালিম জানান, চলতি মৌসুমে মিঠাপানির ১২ বিঘা ঘেরে রুই, কাতল, মৃগেল, তেলাপিয়া ও চিংড়ি মাছ চাষ করেন। প্রতিদিনের ন্যায় বুধবার রাতে তিনি ঘেরের বাসায় ঘুমিয়ে ছিলেন। ভোররাতে ঘেরের বেড়িবাঁধে সবজির বাগানে কিছুর শব্দ শুনতে পান। তাত্ক্ষণিক এগিয়ে গিয়ে দেখতে পান ঘেরের সব মাছ ছটফট করছে। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘেরের সব মাছ মারা যায়। এতে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকার মাছ মরে গেছে বলে জানান তিনি।

ডালিম আরো জানান, তার এলাকায় অনেকের ঘেরে মাছ চুরি হয়। একটি সংঘবদ্ধ মাছ চোরের দল মাছের ঘের থেকে মাছ চুরি করে আসছে। ধারণা করা হচ্ছে ওই চোরের দল মাছ চুরি করতে না পেরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধন করেছে।

আগড়দাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মঞ্জু মালি জানান, এভাবে মাছের ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে ক্ষতি করাটা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি তার ইউনিয়নের পাহারা জোরদার করবেন বলে জানান।

সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন জানান, ঘটনার বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অগাস্ট ২৭, ২০২১ ৬:৩০ অপরাহ্ন
মুক্ত জলাশয়ে স্বরূপে ফিরছে কাকিলা
বিজ্ঞান ও গবেষণা

একসময় নদী-নালা, হাওর-বাঁওড় ও খাল-বিলে পাওয়া যেত কাকিলা মাছ। কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতা এবং প্রজনন সমস্যায় হারিয়ে যেতে বসেছিল পুষ্টিসমৃদ্ধ মাছটি।আবারও মুক্ত জলাশয়ে এ প্রজাতির দেখা মিলবে। এমন আশার বাণীই শোনালেন দেশের মৎস্যবিজ্ঞানীরা।

বদ্ধ পরিবেশে কাকিলার অভ্যস্তকরণ ও কৃত্রিম প্রজনন কলাকৌশল উদ্ভাবনে সফলতা পেয়েছেন যশোরে অবস্থিত বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) স্বাদুপানি উপকেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা।

মৎস্যবিজ্ঞানীরা বলছেন, একসময় অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে মাছটি অধিক পরিমাণে পাওয়া যেত। কিন্তু জলবায়ুর প্রভাব, প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং মানুষের তৈরি নানা কারণে বাসস্থান ও প্রজননক্ষেত্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এ মাছের প্রাচুর্য ব্যাপক হারে কমে গেছে।

বিএফআরআই’র কোর গবেষণা কার্যক্রমের আওতায় তিন বছর নিবিড় চেষ্টার পর কৃত্রিম প্রজনন কলাকৌশল উদ্ভাবনের সফলতা পেয়েছেন মৎস্যবিজ্ঞানীরা। ফলে আবারও পানিতে ঢেউ তুলবে কাকিলা, রক্ষা পাবে বিলুপ্তির হাত থেকে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) স্বাদুপানি উপকেন্দ্র, যশোরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. রবিউল আউয়াল হোসেন, ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এবং বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শিশির কুমার দে কাকিলা মাছ নিয়ে গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন।

তারা জানান, কাকিলা বা কাখলে একটি বিলুপ্তপ্রায় মাছ। এর দেহ সরু, ঠোঁট লম্বাটে এবং ধারালো দাঁতযুক্ত। বাংলাদেশে যে জাতটি পাওয়া যায় সেটি মিঠা পানির জাত। মাছটি বাংলাদেশের অধিকাংশ অঞ্চলে কাইকল্যা, কাইক্কা নামেই বেশি পরিচিত।

এর বৈজ্ঞানিক নাম Xenentodon cancila। মাছটিকে ইংরেজিতে Freshwater garfish বলে। এটি Belonidae পরিবারের অন্তর্গত। বাংলাদেশ ছাড়াও শ্রীলঙ্কা, ভারত, পাকিস্তান, মায়ানমার, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে এ মাছ পাওয়া যায়। তবে রং ও আকারে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে।

গবেষকদলের প্রধান ও প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. রবিউল আউয়াল হোসেন জানান, কাকিলার দেহ লম্বা এবং সামান্য চাপা এবং প্রায় সিলিন্ডার আকৃতির। এগুলো লম্বায় ২৫ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। পরিণত পুরুষ মাছের মাথার শীর্ষে লাল চূড়া দেখতে পাওয়া যায়, যা থেকে সহজেই স্ত্রী ও পুরুষ মাছ আলাদা করা যায়।

তিনি বলেন, পুরুষ মাছের দেহ স্ত্রী মাছের তুলনায় অধিক সরু এবং আকারে একটু ছোট হয়। এটি শিকারি মাছ। এরা মূলত ছোট মাছ খেয়ে থাকে। প্রাকৃতিকভাবে প্রবহমান জলাশয়ে বিশেষ করে নদীতে এবং বর্ষাকালে প্লাবিত অঞ্চলে এরা প্রজনন করে।

তিনি আরও বলেন, পরিণত মাছেরা ভাসমান জলজ উদ্ভিদ নেই এমন স্থানে বসবাস করলেও জলজ উদ্ভিদের পাতার নিচে ও ভাসমান শেকড়ে এদের স্ত্রীরা ডিম ছাড়ে। কাকিলা মাছের কৃত্রিম প্রজনন বাংলাদেশ প্রথম এবং বিশ্বের কোথাও এ মাছের কৃত্রিম প্রজননের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

গবেষক দলের সদস্য ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, রাজবাড়ি জেলা সংলগ্ন কুষ্টিয়ার পদ্মা নদী থেকে কাকিলা ব্রুড (মা-বাবা) মাছ সংগ্রহ করে বিশেষ পদ্ধতিতে অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করে এনে যশোরের স্বাদুপানি উপকেন্দ্রের পুকুরে ছাড়া হয়। পরে হ্যাচারিতে উৎপাদিত কার্পজাতীয় মাছের জীবিত পোনা এবং নানা জলাশয় থেকে সংগৃহীত জীবিত ছোট মাছ খাইয়ে পুকুরের আবদ্ধ পরিবেশে মাছকে অভ্যস্ত করা হয়।

এ গবেষক জানান, চলতি বছরের মে মাস থেকে বৈজ্ঞানিক প্রটোকল অনুসরণ করে কৃত্রিম প্রজননের উদ্দেশ্যে উপকেন্দ্রের হ্যাচারিতে নির্দিষ্ট সংখ্যক মা-বাবা মাছকে বিভিন্ন ডোজে হরমোন ইনজেকশন দেওয়া হয়। এভাবে কয়েকবার বিভিন্ন ডোজের ট্রায়াল দেওয়া হলেও মাছের প্রজননে সফলতা আসেনি। অবশেষে ২৫ আগস্ট প্রজননকৃত মাছের ডিম থেকে পোনা বের হয় এবং কাকিলা মাছের কৃত্রিম প্রজননে সফলতা আসে।

সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা জানান, কাকিলা মাছের প্রজননের জন্য পিজি (Pituitary Gland) হরমোন ব্যবহার করা হয়। গত ১৮ আগস্ট পুকুর থেকে মাছ ধরে চার জোড়া মা-বাবা নির্বাচন করে হ্যাচারির চৌবাচ্চায় নির্দিষ্ট সময় ঝর্ণাধারা দিয়ে মা-বাবা মাছকে একটা নির্দিষ্ট মাত্রায় হরমোন ইনজেক্ট করা হয়। পরে মা-বাবা মাছকে একত্রে একটি চৌবাচ্চায় রেখে ঝর্ণাধারা দিয়ে সেখানে কচুরিপানা রাখা হয়। প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পর মা মাছ ডিম ছাড়ে। ডিমের ভেতরে পোনার বিভিন্ন দশা ও উন্নয়ন অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হয়। ডিম ছাড়ার প্রায় ৯০ থেকে ১০০ ঘণ্টার মধ্যে নিষিক্ত ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়।

গবেষকদলের সদস্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শিশির কুমার দে বলেন, কাকিলা মাছের প্রজননের ট্রায়ালের সময় চৌবাচ্চারে পানির গড় তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ ছিল ৪ দশমিক ৫ মিলিগ্রাম/লিটার এবং পিএইচ ছিল ৭ দশমিক ৬।

গবেষক দলের প্রধান ড. মো. রবিউল আউয়াল হোসেন ও মো. শরীফুল ইসলাম জানান, প্রতি ১০০ গ্রাম খাবার উপযোগী কাকিলা মাছে ১৭ দশমিক ১ শতাংশ প্রোটিন, লিপিড ২ দশমিক ২৩ শতাংশ, ফসফরাস ২ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং দশমিক ৯৪ শতাংশ ক্যালসিয়াম রয়েছে যা অন্যান্য ছোটমাছের তুলনায় অনেক বেশি।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ জানান, দেশের বিলুপ্তপ্রায় ৬৪টি মাছের মধ্যে ৩০টির কৃত্রিম প্রজননে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট সফলতা লাভ করেছে। সফলতার ধারাবাহিকতায় ৩১তম মাছ হিসেবে কাকিলা মাছ যুক্ত হলো।

তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে সব বিপন্ন প্রজাতির মাছকে কৃত্রিম প্রজননের আওতায় আনা হবে, যাতে দেশের প্রতিটি মানুষের খাবার প্লেটে দেশীয় মাছ থাকে। এজন্য ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অগাস্ট ২৭, ২০২১ ২:২৯ অপরাহ্ন
সাগরে মিলল বিশাল ৮টি পাখি মাছ
মৎস্য

কুয়াকাটার মৎস্যবন্দর মহিপুরে জেলেদের জালে ধরা পড়েছে বিরল প্রজাতির বিশাল আকৃতির ৮টি পাখি মাছ। বুধবার রাতে বঙ্গোপসাগরের বৈরাগী বয়াসংলগ্ন এলাকায় এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারে নুরুন্নবী মাঝি নামের এক জেলের জালে এ পাখি মাছগুলো ধরা পড়ে। ৮টি মাছের মধ্যে ৩টির ওজন ৬০ কেজি করে, ৪টির ওজন ৫৫ কেজি করে ও অপরটির ওজন ৪০ কেজি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মহিপুরের আড়তপট্টিতে মাছগুলো বিক্রির জন্য নিয়ে আসা হয়। মাছগুলো এক নজর দেখতে ভিড় জমান স্থানীয়রা।

নুরুন্নবী মাঝি জানান, প্রায় ১০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২ ফুট প্রস্থের ৩টিসহ মোট ৮টি পাখি মাছ ট্রলারে তুলতে তাদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে। মাছগুলো মেসার্স টিপু ফিস মৎস্য আড়দের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়েছে বলে তিনি জানান। স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী পিন্টু ভদ্র এ মাছগুলো কিনেছেন।

পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এমদাদুল্লাহ জানান, এলাকার মানুষ এটিকে পাখি মাছ নামে চিনলেও এটির বৈজ্ঞনিক নাম সেইল ফিশ। দ্রুতগামী এ মাছ খেতে খুব সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ মাছ গভীর সমুদ্রে বেশি দেখা যায়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অগাস্ট ২৫, ২০২১ ১১:০৬ অপরাহ্ন
মাছের উৎপাদন বাড়াতে ১০৬ কোটি টাকার প্রকল্প
মৎস্য

সরকার মাছের উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এ লক্ষ্যে ১০৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যায়ে ‘ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজম্যান্ট’ শীর্ষক একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

মৎস্য অধিদফতর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, আপাতত দেশের ৮টি বিভাগের ৮ জেলার ২৯টি উপজেলায় এসব প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ক্লাইমেট স্মার্ট মৎস্যচাষ প্রযুক্তি প্রবর্তনের মাধ্যমে মাছের উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বাড়ানো হবে।

আরও জানা গেছে, ব্যবসাবান্ধব সাপ্লাই চেইন এবং বাজার নেটওয়ার্ক প্রসারের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের বাজারে প্রবেশাধিকার বাড়ানো হবে এবং স্টেকহোল্ডারদের জীবিকায়নের মানোন্নয়নসহ টেকসই মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা বাড়ানো হবে।

সূত্র জানায়, সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অন্তর্ভূক্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মোট ব্যায় ১০৬ কোটি ২৫ লাখ টাকার মধ্যে সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে ২১ কোটি ২৫ লাখ টাকা এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা আইডিএ থেকে ঋণ সহায়তা বাবদ ৮৫ কোটি টাকা দেবে।

প্রকল্পটি ২০২১-২২ অর্থবছরে এডিপি’তে বৈদেশিক সাহায্য প্রাপ্তির সুবিধার্থে বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল। মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেক সভায় অনুমোদন দিয়েছে বলে জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্পের আওতায় ১৪৫টি বিল নার্সারি, ৪৯টি মৎস্য অভয়াশ্রম স্থাপন, ১৯৪টি পুকুর ও জলাশয় পুনঃখনন করা হবে। ১৪৫টি মৎস্য-বান্ধব ফিশিং নেট সরবরাহ করা হবে। ১ হাজার ৯৫০টি বিভিন্ন ধরনের মৎস্য চাষ প্রযুক্তির প্রদর্শনী খামার, ২৯টি শুঁটকি প্রদর্শনী স্থাপন করা হবে। সাপ্লাই চেইন উন্নয়নের জন্য বরফ সুবিধাসহ ৫৮টি ইনসুলেটেড ভ্যান সরবরাহ করা হবে।

মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্যের ভ্যালু চেইন উন্নয়নে ১৪টি মিনি প্রসেসিং ইউনিট নির্মাণ ও ফিশ প্রসেসিং যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হবে। ৬০০ জন দরিদ্র মৎস্যচাষীকে বিকল্প কর্মসংস্থান কার্যক্রমে সহায়তাসহ প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা ও সেমিনার আয়োজন করা হবে।

পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত মোকাবেলায় বিদ্যমান জনশক্তির দক্ষতা উন্নয়ন, বিকল্প কর্মসংস্থান, সাপ্লাই চেইন উন্নয়ন ও ভ্যালু অ্যাডেড পণ্য তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে বলে প্রকল্পটি ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। প্রকল্পটি চলতি জুলাই ২০২১ থেকে শুরু হয়ে ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে শেষ হবে।

জানতে চাইলে প্রকল্পটি সম্পর্কে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম জানিয়েছেন, ‘দেশের মাছের চাহিদা পূরণে প্রকল্পটি ভূমিকা রাখবে। অনেকের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করবে।’সূত্র:বাংলা ট্রিবিউন

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অগাস্ট ২৪, ২০২১ ৭:১৮ অপরাহ্ন
হাঁস-মাছ চাষে বছরে ২৭ লাখ টাকা আয় করেন ইমন
প্রাণিসম্পদ

ইমরুল কাওছার ইমন দৈনিক ভোরের ডাকের নিজস্ব প্রতিবেদক। স্বপ্ন ছিল সফল উদ্যোক্তা হবেন। আর এ স্বপ্ন নিয়েই ২০১৯ সালে স্বল্প পরিসরে শুরু করেন মাছ চাষ। পাশাপাশি গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরের নলডাঙ্গায় মায়ের নামে গড়ে তুলেছেন হাঁসের খামার। হাঁস আর মাছ চাষে বছরে তার আয় হচ্ছে ২৭ লাখ টাকা।

জানা গেছে, স্বল্প পরিসরে ২০১৯ সালে একটি মাত্র পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন ইমন। মাছ চাষে দুই বছরে সফল হওয়ার পর তিনি পরিকল্পনা করেন ‘খাঁকি ক্যাম্পবেল’ জাতের হাঁস পালনের। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি করোনা মহামারির মাঝামাঝি সময়ে গড়ে তোলেন একটি হাঁসের খামার। হাঁসের ডিম বিক্রির টাকায় চার একর জমিতে তিনটি বিশাল পুকুরে পরিকল্পিতভাবে চাষ করছেন বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। চার মাস পরপর মাছ বিক্রি থেকে তার আয় হচ্ছে প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক টাকা। এ ছাড়া ডিম বিক্রি করে মাসে লক্ষাধিক টাকা আয় হচ্ছে।

এর আগে ইমন ২০১৫ সালে ঢাকার গুলিস্তানে নিজের জমানো টাকা দিয়ে শার্ট তৈরির একটি ছোট্ট কারখানা শুরু করেন। প্রথম দিকে মাত্র তিনজন কর্মচারী নিয়ে কারখানা শুরু করলেও বর্তমানে ৫০ জনের বেশি লোক কাজ করছে তার কারখানায়। পাশাপাশি তিনি শান্তিনগরে একটি ট্রাভেল এজেন্সি খুলেছেন। ব্যবসার লাভের টাকায় বেশ কয়েকটি মাইক্রোবাস কেনেন তিনি। রাজধানীতে উবারের সঙ্গে চুক্তি করে যাত্রীসেবা দেয় মাইক্রোবাসগুলো।

একইসঙ্গে নিজের বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে দেশের নামকরা অনেক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গড়ে তোলেন সম্পর্ক। এই সুবাদে এসব প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কার্যক্রম ও ব্যবসার পণ্য প্রসার ঘটাতে ‘ক্রিকেট ব্র্যান্ডিং’ এর কাজ শুরু করেন। দেশের বিভিন্ন ক্লাবভিত্তিক টুর্নামেন্টসহ বাংলাদেশ জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের জার্সি ও গ্যালারিতে ব্র্যান্ডিংয়ের (বিজ্ঞাপন) কাজ করেন তিনি।

তবে চলতি বছরের মার্চে এসে তার জীবনের সব হিসেব এলোমেলো হয়ে যায়। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপে ক্ষতি হতে থাকে একের পর এক ব্যবসায়। লকডাউনে গার্মেন্টস-কারখানা বন্ধ। উবারের গাড়ির চাকাও ঘোরেনি। সারাবিশ্বে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা ও ক্রিকেট ব্র্যান্ডিং বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে সমন্বিতভাবে হাঁস ও মাছ চাষের পরিকল্পনা নেন তিনি। গড়ে তোলেন মায়ের নামে ‘হামিদা ডাক অ্যান্ড ফিশ ফার্ম’।

স্থানীয়রা জানান, ইমনের ফার্মে বর্তমানে চার-পাঁচজন শ্রমিক রয়েছে। একটি পুকুরে এক পাশে চাষ করছেন মনোসেক্স তেলাপিয়া ও আরেক পাশে চাষ হচ্ছে থাই জাতের পাঙাশ। তার পাশে পানির ওপরে বাঁশ ও টিন দিয়ে মাচা বানিয়ে হাঁসের খামার করেছেন। এ ছাড়া আরেকটি পুকুরে চাষ হচ্ছে ভিয়েতনামি কৈ, হাইব্রিড শিং, বিদেশি মৃগেল, কালিবাউশ ও সরপুঁটি। অন্যটিতে চাষ হচ্ছে দেশি জাতের মাছ।

স্থানীয় সংবাদকর্মী শাহিন মিয়া জানান, ইমরুল কাওছার ইমন মূলত সাংবাদিক। সাংবাদিকতার পাশাপাশি বেকার যুবকদের কীভাবে কাজে লাগানো যায় এমন ইচ্ছে ছিল তার অনেক দিনের। সেই ইচ্ছে থেকেই হাঁসের খামার দেন। খামারে ‘খাকি ক্যাম্পবেল’ জাতের এক হাজার হাঁস রয়েছে। এ হাঁস থেকে দৈনিক ৭০০- ৭৫০টি ডিম আসে। হাঁসের সঙ্গে পরিকল্পিতভাবে করছেন মাছ চাষ। ইতোমধ্যে তার খামারটি লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে। এ ছাড়া তিন-চারজন বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে এখানে।

খামারটি দেখভালের দায়িত্বে আছেন ইমনের ছোট ভাই নাহিদ আনসারী। তিনি বলেন, এই খামারের উদ্যোক্তা আমার বড় ভাই ইমরুল কাওছার ইমন। তিনি ঢাকায় থাকেন। মাঝে মাঝে খামারটি পরিদর্শন করার জন্য আসেন। আমি এই খামারটির সার্বিক দেখভাল করি। এ ছাড়া দুইজন কর্মচারী রয়েছে। তারা তিন বেলা হাঁসগুলোকে খাবার দেয়। পাশাপাশি পুকুরগুলোও দেখাশোনা করে। এক হাজার হাঁস থেকে প্রতিদিন ৭০০-৮০০ ডিম আসে। দুই দিন পরপর ডিমগুলো বিক্রি করে থাকি। বর্তমানে খামারটি লাভজনক অবস্থায় আছে।

হামিদা ডাক অ্যান্ড ফিশ ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমরুল কাওসার ইমন বলেন, মূলত পাঁচ বছরের একটি পরিকল্পনা নিয়ে পথচলা শুরু করেছি। বর্তমানে এক হাজার খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস এবং চার একর জমিতে দেশি-বিদেশি প্রজাতির নানা ধরনের মাছ চাষ করছি। বর্তমানে খামার ও পুকুরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১২ জন লোক কাজ করছে। আগামী বছরগুলোতে যা কয়েকগুণ বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, এলাকায় আরও অনেক খামার গড়ে উঠছে। প্রতিদিনই মানুষ নানা তথ্য নিতে খামারে আসছে। আমাদের অভিজ্ঞ কর্মীরাও বিভিন্ন খামারে গিয়ে বিনামূল্যে নানা ধরনের দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। তরুণরা চাকরির পেছনে না ছুটে নিজের শ্রম ও মেধা কাজে লাগিয়ে নিজের পাশাপাশি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে।

তিনি বলেন, করোনার এই মহামারিতে উচ্চ ঝুঁকি নিয়ে বিনিয়োগ করেছি। এর সুফল হিসেবে কিছু মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। অন্তত তারা দেশের বোঝা হয়ে থাকছে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিশন বাস্তবায়নে তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে, উদ্যোক্তা হতে হবে।

সম্প্রতি খামারটি পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং গাইবান্ধা-৩ আসনের সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতি। তিনি বলেন ‘প্রজেক্টটি দেখে আমি অভিভূত। সাংবাদিকতার পাশাপাশি ইমন যেভাবে কাজ করছে এটা সত্যিই অকল্পনীয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান কৃষিতে যেন যুবকরা কাজ করে নিজে স্বাবলম্বী হয় এবং অন্যকে কাজ দিতে পারে। আমি কৃষকলীগের একজন কর্মী হিসেবে, এলাকার এমপি হিসেবে ইমনের এই প্রজেক্টকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সহযোগিতা করব।’
সূত্র: ঢাকা পোস্ট

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অগাস্ট ২৪, ২০২১ ৬:৫৩ অপরাহ্ন
জালে ধরা পড়ল ১০ মণ ওজনের শাপলাপাতা মাছ
মৎস্য

বাগেরহাটে ১০ মণ ওজনের বিশালাকৃতির এক শাপলাপাতা মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়েছে।

মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) সকালে বাগেরহাট শহরের কেবি বাজারে জেলেরা মাছটি নিয়ে আসেন বিক্রির জন্য। মাছটি দেখতে অনেকেই বাজারে ভিড় জমান।

জানা যায়, অনুপ কুমার বিশ্বাসের আড়তে উন্মুক্ত ডাকের মাধ্যমে মাছটি বিক্রি হয়। মাছ ব্যবসায়ী জাফর ও জাকির সরদার ৪৮ হাজার টাকায় মাছটি কিনে নেন। তারা ৩৫০ টাকা কেজি দরে মাছটি কেটে বিক্রি করবেন বলে জানান। এ জন্য এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে।

শহরের মাজার মোড় সংলগ্ন বাজারে আসা কেরামত আলী বলেন, মাইকে ১০ মণ ওজনের মাছ বিক্রির কথা শুনে বাজারে এসেছি। ২ কেজি কিনলাম, যদিও পুরো মাছটি দেখতে পারিনি।

অনুপ কুমার বিশ্বাস জানান, পাথরঘাটার মাছ ব্যবসায়ী মাসুম কোম্পানির জেলেদের জালে মাছটি ধরা পড়ে। এত বড় মাছ খুব কম পাওয়া যায়। তাছাড়া শাপলাপাতা মাছ খুবই সুস্বাদু। সাধারণত এক থেকে তিন মণ ওজনের এই মাছ পাওয়া যায়। যেগুলো খুচড়ো বাজারে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop