৫:২৬ পূর্বাহ্ন

মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : অক্টোবর ২৪, ২০২২ ৯:০২ অপরাহ্ন
সিত্রাং মোকাবিলায় কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল
কৃষি বিভাগ

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবিলায় জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি নিজেদের অধীন সব দপ্তর বা সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করেছে। সেই সঙ্গে তাদের সার্বক্ষণিক কর্মস্থলে অবস্থানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সোমবার (২৪ অক্টোবর) মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জরুরি প্রস্তুতিমূলক সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। কৃষিতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় এ সভা হয়।

এতে যেসব এলাকায় ৮০ ভাগ আমন ধান পেকেছে, সেগুলো কর্তনের জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এছাড়া সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কৃষি বিভাগের অফিসে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় পূর্ব প্রস্তুতি ও পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শদান, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক মাঠে অবস্থান করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে জরুরি ভিত্তিতে মন্ত্রণালয়ে রিপোর্টদান এবং ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পুনর্বাসন পরিকল্পনা অগ্রিম প্রস্তুত রাখা, যাতে দ্রুততম সময়ে কৃষকদের পুনর্বাসন সহায়তাদান করা যায়। সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

উপকূলীয় এলাকায় ফসল ক্ষেতে পানি প্রবেশ করলে দ্রুততম সময়ে তা নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক সমন্বয় সাধন এবং স্লুইচ গেট অপারেশনের মাধ্যমে লবণাক্ত পানি শস্য ক্ষেতে প্রবেশ রোধ, অধিক উচ্চতায় জোয়ারের কারণে লবণাক্ত পানি প্রবেশ করলে তা নিষ্কাশনের দ্রুত ব্যবস্থা করা- এসব বিষয়ে কৃষি বিভাগ নিয়মিতভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করবে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম। এতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) রবীন্দ্রশী বড়ুয়া, অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা), অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা), মহাপরিচালকসহ (বীজ) মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সংস্থা প্রধান, ঘূর্ণিঝড়প্রবণ জেলাগুলোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অক্টোবর ২৪, ২০২২ ৫:০৪ অপরাহ্ন
দেশে খাদ্য সংকট হবে না: কৃষিমন্ত্রী
কৃষি বিভাগ

কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশে মাঠভর্তি ফসল রয়েছে। আমনের অবস্থা ভালো, সোনালী ফসল হবে। এছাড়া, দেশে যথেষ্ট খাদ্য মজুদ রয়েছে। কাজেই, বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বাংলাদেশে খাদ্যের কোন সংকট হবে না, দুর্ভিক্ষ হবে না। পৃথিবীর অন্য যে কোনো দেশে খাদ্যের অভাব হতে পারে, দুর্ভিক্ষ হতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশ কোনো খাদ্য সংকটে পড়বে না। এই মুহূর্তে দেশে খাদ্যের কোনো হাহাকার নাই, আগামী দিনেও হাহাকার হবে না।

আজ সোমবার টাঙ্গাইল শহরের পৌর উদ্যানে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

রাজপথের নিয়ন্ত্রণ বিএনপির নিকট থাকবে না মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, রাজপথের নিয়ন্ত্রণ সবসময়ই আওয়ামী লীগের হাতে ছিল, এখনও আছে, আগামী দিনেও থাকবে। রাজাকার আর জামায়াতকে সাথে নিয়ে বিএনপি যতই আন্দোলন করুক, রাজপথের নিয়ন্ত্রণ তাদের কাছে থাকবে না। তিনি বলেন, বিএনপি আন্দোলন করে সরকারের পতন ঘটাতে পারবে না। বর্তমান সরকার একটি ন্যায়সঙ্গত, জনগণের নির্বাচিত সাংবিধানিক সরকার, মেয়াদের শেষ দিন পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবে।

মন্ত্রী বলেন, আন্দোলনের নামে বিএনপি রেল লাইনে আগুন দিবে, বিদ্যুৎ লাইন কেটে দিবে, ঘরে-গাড়িতে আগুন দিবে জীবন্ত মানুষ মারবে আর পুলিশ চুপ করে বসে থাকবে তাতো হতে পারে না। মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় যা যা করা দরকার, সরকার তাই করবে। তিনি বলেন, ২০১৫ সালে একটানা ৯০ দিন হরতাল দিয়েছিলো বিএনপি, তখনও তারা সফল হয় নি। আন্দোলন ফেলে মাথা নিচু করে বাড়িতে ফিরে গিয়েছিলো। আগামী দিনেও বিএনপিকে খালি হাতে নতমুখে ঘরে ফিরে যেতে হবে।

সম্মেলনে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আমিরুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, সদস্য এ বি এম রিয়াজুল কবির কাওছার, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুক, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন ।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অক্টোবর ২৪, ২০২২ ৯:৪৫ পূর্বাহ্ন
বরবটি চাষে ভাগ্য বদল মিরসরাইয়ের চাষিরা
কৃষি বিভাগ

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বরবটি চাষে ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে অনেকের। অন্য বছরের তুলনায় এবার দামও ভালো পাওয়ায় খুশি কৃষকরা। এতে আগামীতে বরবটি চাষে কৃষকরা আরও আগ্রহী হবেন বলে জানায় উপজেলা কৃষি অফিস।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, দেশের অন্যতম সবজিভান্ডার হিসেবে পরিচিত মিরসরাইয়ের বিভিন্ন ইউনিয়নে এবার ২২০ একর জমিতে বরবটি চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে দেশি এবং হাইব্রিড প্রজাতি চাষ করা হয়। এবার দেশি বরবটি চাষ করা হয়েছে বেশি। বর্তমানে কৃষকরা পাইকারি হিসেবে প্রতিকেজি বরবটি বিক্রি করছেন ৪৫-৫০ টাকা। যা গতবছর এ সময়ে মূল্য ছিল ২২-২৫ টাকা। অন্যদিকে খুচরা ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছ থেকে কিনে সাধারণ ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছে ৭০-৭৫ টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী, জোরারগঞ্জ, দুর্গাপুর, মিরসরাই সদর ইউনিয়ন, খৈয়াছরা ও ওয়াহেদপুর ইউনিয়নে বরবটি চাষ করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি চাষ করা হয়েছে ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায়।

সাইফুল্লাহ জানান, গত সপ্তাহে ৩৫০ কেজি বরবটি তিনি বাজারে নিয়ে বিক্রি করেছেন প্রতিকেজি ৪৫ টাকা করে। এবার এ পর্যন্ত ৫ বাজারে বিক্রি করেছেন। আরও ১ মাস বিক্রি করতে পারবেন। সোমবার ও বৃহস্পতিবার উপজেলার বড়দারোগাহাট বাজারে নিয়ে পাইকারদের কাছে বরবটি বিক্রি করেছেন।

কৃষকরা বরবটি তুলে আটি বেঁধে উপজেলার মিঠাছরা, বড়তাকিয়া, বড়দারোগাহাট, সীতাকুণ্ড, বাড়বকুণ্ড ও শুকলালহাট বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যান। সবচেয়ে বড় বাজার বসে দুইশ বছরের পুরোনো বড়দারোগাহাটে। এখানে বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে কিনে ট্রাকযোগে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যান।

ওয়াহেদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল কবির ফিরোজ জানান, ‘আমার ইউনিয়ন সবজি চাষের জন্য বেশি উপযোগী। তাই কৃষকরা বিপুল পরিমাণ সবজি চাষ করে। যদি উপজেলায় হিমাগারের ব্যবস্থা থাকত, তাহলে কৃষকরা সবজি সংরক্ষণ করে ভালো দাম পেত।’

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কাজী মো. নুরুল আলম জানান, ‘মিরসরাইয়ে গত কয়েক বছরের তুলনায় বরবটি চাষ বেড়েছে। প্রায় ২২০ একর জমিতে চাষ হয়েছে। দাম ভালো হওয়ায় চাষ বাড়বে বলে জানান তিনি।’

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অক্টোবর ২৪, ২০২২ ৯:২৫ পূর্বাহ্ন
কলা চাষের দিকে ঝুঁকছেন চন্ডিহারার চাষিরা
কৃষি বিভাগ

কলার গাছ রোপণের পর পাতা না কাটলে ভলো ফলন পাওয়া যাবে। শিবগঞ্জ উপজেলার চন্ডিহারা গ্রামের আবুল মুনছুর জানান ,কলার পাতা না কেটে ফলন পেয়েছেন ভালো । কলার উৎপাদন ও ভালো দাম পেয়ে খুশি তার মতো অনেক কৃষক। কলায় লাভ বেশি হওয়ায় শিবগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ঝুঁকছেন চাষিরা কলা চাষে।

কাক ডাকা ভোরে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার চন্ডিহারায় রংপুর- বগুড়া মহাসড়কের কলার হাটে ক্রেতা বিক্রেতাদের কেনা-বেচায় মুখরিত হয়ে ওঠে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাকডাকও বেড়ে যায়। সকাল থেকে কলার হাটে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যাপারীরা আসে হাটে । আবার অনেকে কলাচাষিদের বাড়িতে রাতে অবস্থান নেয়।

শিবগঞ্জ উপজেলা বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে খুব কমখরচে কলার আবাদ হয়ে থকে। আর সেই কলার হাট বসে চন্ডিহারার রাস্তার পাশে দেড় থেকে ২ কিলোমিটার জুড়ে। ভোরে কলা চাষিরা রিকশা ভ্যান ভোঝাই করে কলা নিয়ে আসে চন্ডিহারা হাটে।

কলা চাষি আকরাম জানান ,হাট বারে এখানে কুষ্টিয়া, যশোর, জয়পুরহাট, ঢাকা, পাবনাসহ বিভিন্ন জেলার ব্যাপরীরা আসে। প্রতি হাট বারে প্রায় ২০ ট্রাক কলা বিক্রি হয়। সাগার কলা, রঙিন সাগর, স্থানীয় ভাষায় অনুপম, এঁটে , চাঁপাকলাপ্রচুর সমাহার হাটে।

জেলার কাহালু উপজেলার কলার ব্যাপারী আনছার হোসেন জানান ,তিনি প্রায় ৩০ বছর এ হাট থেকে কলা কিনে নিয়ে তার এলাকায় পাইকারীতে বিক্রি করে থাকেন।তাতে বেশ ভালো দাম পেয়ে থাকেন।

জেলার অনেক জাযগায় কেজি ও হালিতে খুচরা বিক্রি হয়ে থাকে। চাঁপা কলা এক কাঁদি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। এক কাঁদিতে প্রায় দেড়শত থেকে ২০০ কলা থাকে। খুচরা বাজারে এ কলা ১৫ থেকে ২০ টাকা হালি(৪ টা) আবার ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়ে থাকে। সাগার ও রঙিন সাগার কলা দামও প্রায় একই রকম। তবে কৃষক সপরী কলার দামভালো পেয়ে থাকেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক এনামুল হক জানান,জেলায় এবার ৬০০ হেক্টর জমিতে কলা চাষ হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা সম্পূর্ণ পূরণ হয়েছে। এ উৎপাদন সারা বছর চলমান থাকে।

শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার আল মুজাহিদ জানান, এ হাট থেকে ২০ ট্রাক কলা বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতিট্রাকে ১৫ থেকে ২০ ট্রাক কলা হাট বারে বিক্রি হয়ে থাকে। ট্রাক প্রতি ১০ থেকে ১২ টন কলাবহন করতে পারে। এতে প্রতিহাট বারে ১৫০ টন থেকে পৌনে ২০০ টন বিক্রি হয় এ হাট থেকে। তবে ভালা দাম পেয়ে চাষি ও ব্যাপরীরা খুশি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অক্টোবর ২৩, ২০২২ ৭:২৬ অপরাহ্ন
থানার পতিত জমিকে সবজি বাগান বানালেন ওসি
কৃষি বিভাগ

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর থানার ২ বিঘা পতিত জমির গর্ত ভরাট করে শাক-সবজি আবাদ করে নাম কুড়চ্ছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শ্যামল কুমার দত্ত। বাগানে লাগানো হয়েছে প্রায় ১৭ ধরনের শাক-সবজি। যা থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যদের সবজি চাহিদার অনেকটাই মেটাচ্ছে।

থানায় আসা সেবা প্রত্যাশীরা থানার মধ্যে এরকম শাক-সবজি চাষ করা দেখে নিজেরা আগ্রহী হয়ে বসতবাড়িতে শাক-সবজির চাষাবাদ শুরু করছেন।

সরজমিনে বাগান ঘুরে দেখা যায়, পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়মিত পরিচর্যায় সবজি বাগানটি দিনেদিনে সৌন্দর্যপূর্ণ হয়ে উঠছে। কখনো বেগুন গাছে রঙিন ফুল, আবার কখনোবা লাউয়ের ডগায় হলুদ ফুল। আর এই ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে বাগানে ছুটে আসছে মৌমাছি, প্রজাপতিসহ বিভিন্ন মধুপ্রেমী পতঙ্গেরা।

এ রকম দৃশ্য বাগানে আসা যে কারোরই নজর কাড়বে। বাগানটিতে প্রায় ১৭ ধরনের শাক-সবজির মধ্যে রয়েছে কাঁচামরিচ, পেয়াজ, রসুন, বেগুন, ফুলকপি, পাতাকপি, টমেটো, শিম, পেঁপে, চিচিঙ্গাসহ লালশাক, পুঁইশাক, ডাঁটাশাক। আর মাচায় ঝুলছে লাউ, বাইঙ্গা ও চিচিঙ্গা।

কাজিপুর থানায় কর্মরত কনস্টেবল রেজওয়ানুল ইসলাম বলেন, পুলিশের চাকুরি করার পাশাপাশি অবসর সময়ে সবজি বাগানের পরিচর্যার কাজ করতে অনেক ভালো লাগে। এখন আমাদের শাকসবজি কিনতে হয়না বাগানের উৎপাদিত সবজিতেই আমাদের চাহিদা মিটে যায়।

কাজিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শ্যামল কুমার দত্ত বলেন, এক বছর আগে থানার এই পতিত জমিটুকু ৫ ফিটের মতো গর্ত ছিল। বর্ষা মৌসুমে এই জায়গায় অনেক পানি জমে সাপ, ব্যাঙসহ বিভিন্ন পোকামাকড় আশ্রয়স্থল গড়ে তুলত। এমনকি আমাদের থানার মধ্যেও এই পোকামাকড় ঢুকে পড়ত। ফলে আমাদের থানার কার্যক্রম পরিচালনা করতে বিভিন্ন বেগ পোহাতে হতো।

তিনি আরও বলেন, তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং আইজিপি স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক থানার পতিত জমিতে শাক-সবজি লাগিয়ে চাষাবাদ শুরু করেছি। সবজি চাষাবাদ করে আমরা বিভিন্ন দিক দিয়ে উপকৃত হয়েছি। থানায় এখন আর বর্ষা মৌসুমে পানি আটকে থাকেনা। বাগানে উৎপাদিত শাকসবজি থানায় কর্মরত পুলিশদের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি তাদের অর্থ বাঁচিয়ে দিচ্ছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অক্টোবর ২১, ২০২২ ৭:২৪ অপরাহ্ন
লক্ষ্মীপুরে আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষক
কৃষি বিভাগ

লক্ষ্মীপুরের কৃষকরা আগাম শীতকালীন সবজি চাষে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন সবজি ক্ষেতে। বীজ বপন থেকে শুরু করে চারা গাছ লাগানো, সার-কীটনাশক প্রয়োগে ব্যস্ত সবাই।

লক্ষ্মীপুর সদর, কমলনগর, রামগতি ও রায়পুরের কৃষকরা বিভিন্ন শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন। এরমধ্যে রয়েছে- মুলা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, শিম, লালশাক, ঢেঁড়শ, ধুন্দুল, করলা, পালংশাক, পুঁইশাক, বরবটি, লাউ, কুমড়া।

কৃষকরা শীত আসার আগেই এসব সবজি বাজারে নিয়ে আসতে চান। আর চার থেকে ছয় সপ্তাহ পর এসব সবজি বাজারজাত করতে পারবেন বলে আশা করছেন তারা।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের সুতারগুপ্টা, বেড়ির মাথাসহ বেশ কিছু এলাকায় দেখা যায়, মাঠে কাজ করছেন কৃষকরা। কেউ সার ছিটচ্ছেন, কেউ মাটি দিচ্ছেন, কেউবা সবজি ক্ষেত পরিচর্যা করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো লাভ পাবেন বলে আশাবাদী চাষিরা।

এদিকে বিভিন্ন স্থানে চিচিঙ্গা, লাউ, চষা ও বেগুনের ভালো ফলন হয়েছে। আগাম শীতকালীন সবজি হিসেবে এসব সবজি বাজারে ওঠা শুরু করেছে। বিক্রিও হচ্ছে বেশ ভালো দামে। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার আবিরনগর, টুমচর, শাকচর, মিয়ারবেড়ি, চর উভূতি, ভবানীগঞ্জ, আবদুল্যাপুর, তেওয়ারিগঞ্জ, লাহারকান্দিসহ বিভিন্ন এলাকায় সারাবছর ধরে শাক-সবজির চাষ হয়। তবে শীত মৌসুমকে কেন্দ্র করে আগাম শীতের সবজি আবাদ হয় ব্যাপক হারে। জেলার সবচেয়ে বড় সবজির হাট পিয়ারাপুরবাজার। সপ্তাহে চারদিন হাট বসে ঐ বাজারে। স্থানীয় কৃষকরা সরাসরি হাটে তোলেন কৃষিপণ্য। এসব পণ্য এখানে পাইকারি দরে বিক্রি করেন তারা।

ভবানীগঞ্জের কৃষক শরীফ উল্যাহ জানান, শীতের শুরুতে শীতকালীন সবজি বাজারে তুলতে পারলে দাম ভালো পাওয়া যায়। পাশাপাশি বাজারে চাহিদা থাকার কারণে তিনি এ বছর শীতকালীন সবজি হিসেবে লাউ, শিম ও বেগুনের চাষ করেছেন। আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহরে মধ্যে এসব আগাম সবজি বাজারে বিক্রি করতে পারবেন তিনি।

একই এলাকার কৃষক হোসেন জানান, প্রতি বছর তিনি শীতকালীন সবজি চাষ করে ভালো দামে বিক্রি করতে পারেন। এ বছর তিনি আট একর জমিতে শসা ও টমেটো চাষ করেছেন। ফলন ভালো হলে গত বছরের তুলনায় এ বছর তিনি বেশি লাভবান হবেন বলে আশা করছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. জাকির হোসেন জানান, প্রতিবছরের মতো এবারো জেলার কৃষকরা আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন। এবার জেলায় মোট সাড়ে পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করেছে। এ সবজি আগামী দুই মাসের মধ্যে বাজারজাত করা যাবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অক্টোবর ২০, ২০২২ ৬:২০ অপরাহ্ন
শেরপুরের তুলা চাষ করে চাষিরা লাভবান
কৃষি বিভাগ

জেলার নকলা উপজেলার পাশদিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চলের নিস্ফলা জমিতে তুলা চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গাছে ব্যাপক ফলন দেখে বুঝাযাচ্ছে খরচের তুলনায় এবার কৃষকরা কয়েকগুণ বেশি লাভ পাবেন।কয়েক বছর ধরে কম খরচে বেশি লাভ পাওয়ায়, নকলার স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে তুলা চাষে আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। জলবায়ুসহনশীল এ তুলা চাষে বেশি লাভ পাওয়ায় উপজেলার বড় ও মাঝারি শ্রেণীর কৃষকরা তুলা চাষে ঝুঁকছেন। তুলার যেন নেই তুলনা, বর্তমানে এটি কৃষকদের কাছে সাদা সোনায় পরিণত হয়েছে।

নকলায় কার্পাস তুলা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন উপজেলার চন্দ্রকোণা ও চরঅষ্টধর ইউনিয়নের চাষি। তুলা চাষে সংসারে সচ্ছলতা আসায় অন্য ইউনিয়নের চাষিরাও আগ্রহী হচ্ছেন। অনুর্বর জমিতে কম পুঁজিতে নামেমাত্র শ্রমে ও সরকারি সহযোগিতা পাওয়ায় উপজেলায় তুলা চাষের পরিমাণ ও চাষির সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। তাদের উৎপাদিত তুলা সরাসরি তুলা উন্নয়ন বোর্ড ন্যায্য দামে কিনে নেয়। ফলে কৃষকরা অন্য ফসলের তুলনায় তুলাতে অধিক লাভবান হচ্ছেন।

উপজেলায় সরকারি সহযোগিতায় ২০১৫ সালে পরীক্ষামূলকভাবে উন্নত জাতের তুলা চাষ শুরু করা হয়। প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে সরকারি সহায়তায় কৃষকরা সিবি-১২ এবং হাইব্রিড প্রজাতির রুপালি-১ জাতের তুলার চাষ করছিলেন। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের আগ্রহ বেড়ে যায়। তবে কিছু কিছু ক্ষেতে এসিট, জেসিট, আমেরিকান বোলওয়ার্ম, স্পটেট বোলওয়ার্ম ও আঁচা পোকার অক্রমণ দেখা দিয়েছিল। এতে তুলা চাষি কীটনাশকের বদলে ফেরোম্যান ফাঁদ ও পার্চিং পদ্ধতিতে বেশ উপকার পেয়েছেন।

নকলা সাব কটন ইউনিট অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর নকলা ইউনিটে ৪০ হেক্টর জমিতে তুলার আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি সহযোগিতায় বিভিন্ন প্রদর্শনী ও কৃষকের নিজ অর্থায়নে চাষ করা হয়েছে। ভালো ফলন ও ন্যায্য দাম পাওয়ায় আগামীতে চাষির সংখ্যা অনেক বাড়বে বলে আশা করছেন তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাসহ স্থানীয় কৃষকরা।

তুলা চাষিরা জানান, রূপালি-১, হোয়াইট গোল্ড-১ ও হোয়াইট গোল্ড-২ জাতের তুলা প্রতি বিঘাতে বীজসহ উৎপাদন হয় ১৬ মণ থেকে ১৮ মণ করে। যার বর্তমান বাজার মূল্য কমপক্ষে ৫৭ হাজার থেকে ৬৪ হাজার টাকা। এমন অনুর্বর জমিতে অন্য কোনো ফসলে এই লাভ পাওয়া কোনোক্রমেই সম্ভব নয়। আবার একই জমিতে সাথী ফসল হিসেবে বিভিন্ন শাক-সবজি ও মসলা জাতীয় ফসল চাষ করেও বাড়তি আয় করা যায় বলে চাষিরা জানান। তাইতো তুলা চাষিদের মধ্যে অনেকে বলেন, “দুই বিঘা জমির তুলা চাষে, লাখপতি অনয়াসে”।

সফল তুলা চাষিদের মধ্যে জাংগীড়ার পাড় এলাকার আরিফুজ্জামান রঞ্জু একজন। তিনি কয়েক বছর ধরে তুলা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। তিনি এবছর ৫ একর জমি বন্ধক নিয়ে তুলা চাষ করেছেন। রঞ্জুসহ অনেকেই বলেন, তুলা চাষে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ালে অনেক অনুর্বর, নিস্ফলা বা অনাবাদি জমিতে তুলা চাষ করে অনেকের ভাগ্য পরিবর্তন করা সম্ভব। চাষিদের মতে, নিস্ফলা জমিতে তুলা চাষ করায় একদিকে যেমন জমির সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে কৃষকরা বেশ টাকা পাচ্ছেন, তাদের পরিবারে আসছে স্বচ্ছলতা। তাই অনেকে ধান ও গমসহ বিভিন্ন আবাদ ছেড়ে তুলা চাষে আগ্রহী হয়েছেন।

নকলা সাব কটন ইউনিট কর্মকর্তা মো. তোফায়েল আলম জানান, এ দেশে আমেরিকান, ইজিপসিয়ান, ইন্ডিয়ান ও পাকিস্তানি জাতের তুলা চাষ হলেও নকলা ইউনিটে রুপালি-১, হোয়াইট গোল্ড-১, হোয়াইট গোল্ড-২ জাতের তুলা বেশি চাষ করা হয়েছে। এছাড়া ডিএম-৪, সিডিবি ও সিবি-১২ জাতের তুলা চাষ করা হয়েছে। তিনি বলেন, তুলা গ্রীষ্মকালীন ফসল। মে মাসের শেষ ভাগ থেকে শুরু করে জুনের প্রথমার্ধ পর্যন্ত জমিতে তুলা বীজ বপন করতে হয়। তুলার ভালো ফলনের জন্য গড়ে ২৩.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং বাৎসরিক গড় বৃষ্টিপাত ৬৩৫ থেকে ১০১৬ মিলিমিটার হওয়া উত্তম। ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটার গভীরতায় চাষ করে হেক্টরপ্রতি ২৭৭ কেজি অস্থিচূর্ণ, ৯.৫ টন থেকে ১৩.৮ টন গোবর বা সবুজ সারসহ পরিমিত পরিমাণে ইউরিয়া, টিএসপি, এমপি সার ব্যবহার করলে ফলন ভালো হয়। আর জাত ভেদে বীজ বুনতে হয় ৭.৫ থেকে ১৮ কেজি। বীজ বপনের ৬ মাস পর তুলা সংগ্রহ করা যায়। নকলা উপজেলার সব ইউনিয়নে তুলা চাষ করা সম্ভব। প্রত্যন্ত অঞ্চলে তুলা চাষ ছড়িয়ে দিতে তুলা উন্নয়ন বোর্ড ও বিভিন্ন প্রকল্প কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে বলে তোফায়েল আলম জানান।

তুলা উন্নয়ন বোর্ডের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে কথা হলে তারা জানান, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনো কৃষিনির্ভর। এদেশের ৬৫ শতাংশ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির সঙ্গে জড়িত। বাংলাদেশ বর্তমানে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও এখনো বিভিন্ন শস্য ও ফসল আমদানি নির্ভরতা কমেনি। এমন একটি কৃষি ফসল তুলা। কিন্তু তুলা উৎপাদনে আমরা পিছিয়ে আছি। তুলা একটি আন্তর্জাতিক মানের শিল্প ফসল, যা বিশ্বব্যাপী “সাদা সোনা” হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৮০ লাখ বেল তুলার চাহিদা রয়েছে, কিন্তু চাহিদার প্রায় ৫ শতাংশ দেশে উৎপাদন হচ্ছে। আর পোশাক খাতে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ তুলা বিদেশ থেকে এখনও আমদানি করতে হয়।

আবাদ থেকে তুলার আঁশ ছাড়াও ভোজ্যতেল, খইল, জ্বালানি উপজাত হিসেবে পাওয়া যায়। এ ভোজ্যতেলে খুব কম পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকে এবং তুলার বীজ থেকে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ হারে তেল পাওয়া যায়; যা উচ্চ প্রোটিনসমৃদ্ধ এবং সয়াবিন তেলের চেয়েও পুষ্টিকর। আর তুলার খইলে ২৪ শতাংশ উচ্চ প্রোটিন পাওয়া যায়, ২০ শতাংশ হারে উচ্চফ্যাট ও ৪০ শতাংশ ক্রুড আঁশ; যা পশু ও মৎস্যখাদ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

তুলার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ঐতিহ্য, ইতিহাস, সভ্যতা ও অর্থনীতি। মানুষের পাঁচটি মৌলিক চাহিদার মধ্যে খাদ্যের পরেই বস্ত্রের স্থান। আর এ বস্ত্রের প্রায় ৭০ ভাগ আসে তুলা থেকে। পৃথিবীতে তুলার ইতিহাস রচিত হয়ে আসছে সাত হাজার বছর পূর্বথেকে। বিভিন্ন তথ্যে জানা গেছে,

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তুলা উন্নয়ন বোর্ড গঠন করে পাকিস্তানে নেওয়া ৩২৫ জন চাষিকে স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনেন এবং ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে ৭৯৬ একর জমি তাদের মধ্যে তুলা চাষের জন্য বরাদ্দ প্রদান করেন। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে তুলা চাষের শুভ সূচনা হয়। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব ভবন ছিল না, কিন্তু বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তুলা উন্নয়ন বোর্ডের জন্য একটি নিজস্ব ভবনের জায়গা ও অর্থ বরাদ্দ করেন। এর পর থেকে তুলা চাষি ও আবাদ দিন দিন বাড়ছে।

যেখানে সারা বিশ্বে তুলা একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। সেখানে এদেশে তুলার উৎপাদন মাত্র দুই লাখ বেলের মতো; যদিও আগে এক লাখ বেলের নিচে উৎপাদন হতো। সম্প্রতি তুলা উন্নয়ন বোর্ডের হাইব্রিড উন্নত জাতের তুলা উদ্ভাবন ও চাষের ফলে তুলা উৎপাদন দিন দিন বাড়ছে। বিপুল পরিমাণ তুলা আমদানিতে বছরে ২৪ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়। যদিও আমদানিকৃত তুলা ভ্যালুঅ্যাডের মাধ্যমে সুতা ও কাপড়ের আকারে বিদেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। এসব তুলা এ দেশে উৎপাদন করতে পারলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব বলে অনেকে মনে করছেন।

দেশব্যাপি তুলা চাষ সম্প্রসারণের লক্ষ্যেতুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান, তুলা উন্নয়ন বোর্ড ঢাকা অঞ্চলের কর্মকর্তা কুতুব উদ্দিন, সম্প্রসারিত তুলাচাষ প্রকল্পের পরিচালক ড. মো. গাজী গোলাম মর্তুজা, তুলা উন্নয়ন বোর্ডের বিজ্ঞানী ড. মো. তাসদিকুর রহমান ও ড. কামরুল ইসলামসহ অনেক কর্মকর্তা দেশব্যাপি আবাদ করা বিভিন্ন তুলার মাঠ পরিদর্শন করে চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করার পাশাপাশি উদ্বুদ্ধ করণ আলোচনা সভা করেছন। এতে করে তুলা চাষের প্রতি কৃষকরে আগ্রহ বাড়ছে বলে মনে করছেন অনেকে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অক্টোবর ১৭, ২০২২ ১০:৫১ পূর্বাহ্ন
বগুড়ায় মাঠজুড়ে আগাম শীতের সবজি চাষ
কৃষি বিভাগ

কার্তিকের এই সময়টায় মাঠে আমন ফসল থাকার কথা। আছেও তাই। তবে আমন আবাদের চেয়েও বেশি চোখে পড়ছে শীতের অনেকটা আগেই শীতের সবজি আবাদ। কৃষক বলছেন, এগুলো শীতের আগাম সবজি। প্রকৃত শীতের সবজির আবাদ শুরু হবে এই সবজি ওঠার পর।

সবজি আবাদে তারা কোনো ফাঁকা জমি রাখছে না। বাড়ির উঠানে বহির্আঙিনায় (খুলি) লাল শাক সহ সব ধরনের শাক মূলা চিচিঙ্গা সিম ফুলকপি বাঁধাকপি ঢ্যাঁড়শ টমেটো আবাদ করছে। বাঁশের জাংলা বসিয়ে লাউ করলা আবাদ করছে।

মাঠ পর্যায়ের কৃষক বলছেন, ধান আবাদের চেয়ে সবজি আবাদে লাভ বেশি। এখন ভর বছর সব ধরনের সবজি ফলানো যায়। ফলন উঠতে কম সময় লাগে। সবজি বেচা যায় ভর বছর। ধানে তা হয় না। আমন আউশ বোরো এগুলো সময়ের ধান। ঋতুর পালাবদলে ফসল সব সময় থাকছে। সকল ঋতুতে ফলানোর ধানের অনেক ভ্যারাইটি এসেছে। শীতের সবজি গ্রীষ্ম বর্ষা শরতের মধ্যে ফলছে! এমনটিই ঘটেছে বগুড়ায়। শীত আসতে এখনো অনেকটা সময় বাকি। এর মধ্যে বগুড়া সদর শিবগঞ্জ মহাস্থানগড় ও তার আশেপাশের এলাকা, শাজাহানপুর শেরপুর ধুনট সারিয়াকান্দি সোনাতলা কাহালু নন্দীগ্রাম উপজেলার গ্রামগুলোতে শীতের সবজি ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, বরবটি, সিম, পালং শাক, পুঁই শাক, বেগুন, মুলা, গাঁজর, করলা সহ শীতের সব ধরনের সবজি ফলছে।

শিবগঞ্জের উথলি গ্রামের কৃষক মালেক উদ্দিন জানান, ‘কিছুই কওয়া যায় না বাপো। কলিকালে সব পাল্টে গেছে। গরমের মধ্যে ফুলকপি মুলা বেগুন গাঁজর হয় তাও দেখা লাগিচ্চে।’ এই বিষয়ে কৃষি বিভাগ জানায়, সময়ের ঋতু সময়ে ঠিক থাকছে না। প্রকৃতির মতিগতি পাল্টে গিয়েছে। এখন সকল সিজনে সব ধরনের ফসল মিলছে। তাছাড়া উন্নত জাতের অনেক বীজ এসেছে। বাড়তি পরিচর্যায় শীতের আগাম সবজি চাষ হচ্ছে। শীতের আগাম সবজি আবাদে লক্ষ্যমাত্রা ধরা  হয়েছে ৪ হাজার ৩শ ৮৫ হেক্টর ভূমি। যা গত বছরের চেয়ে দেড় হাজার হেক্টর বেশি। এবার শীত মৌসুমের আগে এবং শীত মৌসুমে অন্তত ২৫ হাজার হেক্টর ভূমিতে সবজির আবাদ হবে। এ থেকে উৎপাদন ধরা হয়েছে সাড়ে ৫ লাখ মে. টন সবজি। গ্রামে প্রায় প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় যেভাবে সবজি আবাদ হচ্ছে তাতে আশা করা যায় ৭ লাখ টনেরও বেশি সবজি আবাদ হবে। গ্রামে সবজি অর্থনীতি নতুন মাত্রা পাবে।
এদিকে বগুড়া অঞ্চলে শীতের অনেকটা আগেই যে কুয়াশাপাত হচ্ছে তা শীতের সবজির আগাম আবাদকে এগিয়ে দিচ্ছে। বগুড়ার মাঠে এখন পুরুষের পাশাপাশি নারী কৃষকদেরও সবজির মাঠ পরিচর্যায় দেখা যায়।

শিবগঞ্জের উত্তর শ্যামপর, মাঝপাড়া, বাকসন, এনায়েতপুর, সাদুল্লাপুর, জামালপুর, বাড়ুগড়, রায়নগর, কাজীপুর এবং মহাস্থানগড়ের আশেপাশের গ্রামে এই সময়ে কৃষক এক ফসল সবজি বিক্রি করে পুনরায় সবজি আবাদের কেউ চারা রোপণ করছে কেউ উঠতি সবজি আবাদে পরিচর্যা করছে। সবই শীতের আগাম সবজি। এই সবজির তরকারির স্বাদ কী শীতের সবজির মতো! এমন প্রশ্নে উত্তর মেলে পার্থক্য আছে। বগুড়া নগরীর গৃহিণী কামরুন নাহার বললেন, তিনি শাকের রাজা পালং শাক রেঁধেছিলেন। স্বাদ একই। আগাম পালং শাক পাতার আকার বড়। শীতের লাল শাকের চেয়ে আগাম লাল শাকের স্বাদ ভালো।
এই বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক দুলাল হোসেন জানান, গত ক’বছর ধরেই বগুড়া অঞ্চল সবজি আবাদে বড় ভূমিকা রাখছে। প্রতি বছর সবজি আবাদের জমি বাড়ছে। ঋতুর পালাবদলে বগুড়া অঞ্চলে সব মৌসুমে সব ধরনের ফসল ফলছে। এগিয়ে আছে সবজি আবাদে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অক্টোবর ১৫, ২০২২ ১২:২৪ অপরাহ্ন
রোগের প্রতিষেধক কালো ধান
কৃষি বিভাগ

ব্ল্যাক রাইস বা কালো ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার চাষিরা। এই ধানের চালে পুষ্টিগুণ বেশি বলে দাবি তাঁদের। এ ধানে ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে।

কালো ধান চাষে খরচ কম। প্রতি কেজি ধান বিক্রি হয় ৫০০ টাকায়। কৃষি বিভাগ বলছে, কৃষককে ধান বিক্রির সুযোগ করে দিতে পারলে ব্ল্যাক রাইসের চাষ বাড়বে।

পাংশা পৌর শহরের কুড়াপাড়া এলাকায় ডা. আব্দুল কাদের বালিকা মাদ্রাসার সুপার আব্দুল কুদ্দুস এবার পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করেছেন ব্ল্যাক রাইস। তাঁর বাড়ির পাশের জমিতে সবুজ পাতার ফাঁকে দোল খাচ্ছে কালো রঙের ধান। এর থেকে হবে কালো রঙের চাল।

আব্দুল কুদ্দুস জানান, ইউটিউবে এই ধানের চাষাবাদ শিখেছেন। তাঁর মতে, চীনের রাজা-বাদশাহদের সুস্বাস্থ্যের জন্য কালো ধান চাষ হতো, যা ছিল প্রজাদের জন্য নিষিদ্ধ। ঔষধি গুণাগুণের কারণে এই ধান চাষের ইচ্ছা জাগে তাঁর। পরে ২০০ গ্রাম বীজ সংগ্রহ করে চার শতাংশ জমিতে চাষাবাদ করেন। চারা রোপণের নব্বই দিনের মধ্যে ধান ঘরে তোলা যায়। অন্যান্য ধানের চেয়ে রোগ বালাইও কম। ফলনও ভালো পাবেন বলে প্রত্যাশা তাঁর।

কৃষক আল-আমিন হোসেন জানান, তিনিও ইউটিউবে ভিডিও দেখে এই ধানের চাষ শিখেছেন। এই ধান প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৫০০ টাকায়। তিনি জানতে পেরেছেন, পাংশা পৌর শহরে এই ধানের চাষ হচ্ছে। তাই দেখতে এসেছেন। আগামীতে তিনিও চাষ করতে চান।

স্থানীয় শাহীন রেজা জানান, ‘শুনেছি এই চালে ঔষধি গুণ আছে। অনেক রোগবালাই কমে যায় এই চালের ভাত খেলে। এই চালের ভাত কেমন, তা খাওয়ার জন?্য ধান সংগ্রহ করে চাষাবাদ করব।’

কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার ঘোষ জানান, কালো ধানের দাম ও চাহিদা অনেক বেশি। কালো ধানে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় শরীরের রোগ প্রতিরাধ ক্ষমতা বাড়ায়। এতে থাকা ফাইবার হার্টকে রাখে সুস্থ। এছাড়া ডায়াবেটিস, স্নায়ুরোগ ও বার্ধক্য প্রতিরোধক।

সূত্র: সমকাল

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অক্টোবর ১৫, ২০২২ ১০:৪০ পূর্বাহ্ন
ফসল হারানোর শঙ্কায় কলাপাড়ার চাষিরা
কৃষি বিভাগ

কলাপাড়ায় চাকামইয়া ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামের দুই সহস্রাধিক কৃষক পরিবারের আমন ফসল হারানোর শঙ্কায় রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।

সেখানকার লাবরখালের সঙ্গে প্রভাবশালী মহলের ব্যক্তিগত স্লুইসসহ বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়ে জোয়ারের পানিতে কৃষকের বেড়ে ওঠা আমন চারায় পচন ধরায় ফসল হারানোর এমন শঙ্কায় পড়েছেন।

প্রায় ১৫ দিন আগে ৪৪ নম্বর পোল্ডারের আনিপাড়া গ্রামের ওই স্লুইসসহ প্রায় ৩০ ফুট বেড়িবাঁধ ছিন্ন হয়ে গেছে। এখন ভাঙ্গনের পরিধি ক্রমশ বাড়ছে। সংলগ্ন প্রাইমারী স্কুলে যেতে পারছে না শিশুরা। মানুষ শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভোগান্তির যেন শেষ নেই।
শুক্রবার সকালে সরেজমিনে গেলে

কৃষকরা তাদের দুরবস্থার কথা বলেন। মো. মিলন তালুকদার জানান,  ১৬/১৭ বছর আগে স্থানীয় এক বিএনপি ও এক আওয়ামী লীগ নেতা খালের সঙ্গে নদীর সংযোগ করে পানি তুলে মাছ চাষের জন্য যৌথ উদ্যোগে সরকারি বেড়িবাঁধ কেটে স্লুইস করেন।

এরপর জবরদস্তি গ্রামের মানুষকে জিম্মি করে বছরের পর বছর মাছ শিকার করেন। প্রায় এক বছর আগে এই স্লুইসটির মাটি দেবে যায়। নিচ থেকে সুড়ঙ্গ হয়ে যায়। পানি ওঠানামা করতে করতে কয়েকদিন আগে স্লুইসসহ প্রায় ৩০ ফুট প্রস্থ বেড়িবাঁধ সম্পূর্ণভাবে ভেসে গেছে। এখন প্রতিদিন জোয়ারে দুই দফা প্লাবিত হয় আমন চারা। লকলক করে বেড়ে ওঠা আমন চারা জোয়ারের পানিতে ডুবে এখন পচন ধরেছে। আর এক-দুই সপ্তাহ পরে নদীর পানি লোনা হয়ে যাবে। ওই পানি আমন খেতে ঢুকে সকল ফসল নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় কৃষকরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।

কৃষক আরিফ হাওলাদার জানান, বাঁধটি স্লুইসসহ ভেঙ্গে যাওয়ায় আনিপাড়া, গান্ধাপাড়া, কাঠালপাড়া, কাছিমখালী ও নেওয়াপাড়া গ্রামের কৃষকের শত শত একর জমির আমন ফসল পচে যাওয়ার অবস্থা হয়েছে। এখনই পচতে শুরু করেছে।

এ ছাড়া গ্রামের মানুষের যোগাযোগে সমস্যা হচ্ছে। শিশুরা স্কুলে যেতে পারছে না। ইউপি চেয়ারম্যান মজিবর রহমান হাওলাদার জানান, ওটি ব্যক্তিগত স্লুইস থাকায় সমস্যা হয়েছে। তারপরও বাঁধটি মেরামতের সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফ হোসেন জানান, জরুরীভিত্তিতে কৃষকের আমন ফসল রক্ষায় বাঁধটি মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে যারা বাঁধ কেটে ব্যক্তিগত স্লুইস করেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মহিব্বুর রহমান জানান, কৃষকের আমন ফসল রক্ষায় বিধ্বস্ত বাঁধটি মেরামতের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শীঘ্রই মেরামতের কাজ শুরু হবে।

সূত্র : জনকণ্ঠ

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop