১১:৫৯ পূর্বাহ্ন

সোমবার, ১৮ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : এপ্রিল ৪, ২০২১ ১:৩৫ অপরাহ্ন
তিস্তার চরে বাদাম তোলায় ব্যস্ত কৃষক
কৃষি বিভাগ

রংপুর জেলার, গংগাচড়া, কাউনিয়া, পীরগাছা উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীতে মাইলের পর মাইল চর পরেছে। বন্যার পর চরের মাটিতে পলি জমায় মাটি র্উবর হওয়ায় অতিরিক্তি সার, সেচ, কীটনাশক দিতে হয় না। ফলে বীজ রোপণে তিন মাসের মধ্যেই বাদাম তোলা হচ্ছে। চরজুড়ে এখন বাদাম তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা।

রংপুরে উৎপাদিত বাদামের মান ভালো হওয়ায় প্রতি বছরই দশেরে বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এসে এখান থেকে বাদাম কিনে নিয়ে যায়। গংগাচড়া উপজেলার চর চিলাখাল, মানুষ খাওয়া, নেল্টা, মহিপুর, চালাপাক চরসহ বিভিন্ন চরে কৃষকেরা বাদামের চাষ করেছেন।

কাউনিয়া উপজেলার গড্ডিমারী চরের কৃষক দুলাল মিয়া জানান, গতবার চরের ৩ একর জমিতে বাদাম চাষ করতে সবমিলে খরচ হয়েছে ৪৮ হাজার টাকা। বিক্রি করেছি ২ লাখ টাকা। আশাকরছি এবার ৩ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবো। কারণ এবার বাদামের বাজার বেশ চড়া।

মধুপুর চড়ের তাসলিমা জানান, গত বছর শখের বসে বাপ দাদার ১ একর জমিতে বাদাম চাষ করে বেশ লাভোবান হয়েছিলাম। এবার ৫ একর জমিতে বাদামের চাষ করেছি। বাদাম চাষে খুব একটা খরচ হয় না। অল্পতে বেশি লাভ। গত বছরের তুলনায় এ বছর বাদাম ভালো আছে। লাভও বেশি হবে বলে আশা করছি।

বাদাম চাষিরা জানান, প্রতি বছর অক্টোবর থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বাদামের বীজ লাগানো হয়। জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময় জমি থেকে এই বাদাম তোলার কাজ শুরু হয়। বাদামের বীজ লাগানোর আগে চাষ দিয়ে মাটি সামান্য নরম করে নিতে হয়। আর মাঝে মধ্যে জমির আগাছা পরিস্কার করতে হয়।তারপর সারি করে লাগানো হয় বাদাম বীজ। তিস্তা নদীর চরের মাটি উর্বর হওয়ায় অতিরিক্ত সার, কীটনাশক ও সেচ দিতে হয় না। তিন মাসের মধ্যই বাদাম ঘরে তোলেন চাষিরা । তাই অল্প পরিশ্রমে অধিক লাভে খুশি বাদাম চাষিরা।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে এ বছর রংপুর জেলায় ৩৯০ হক্টের জমিতে বাদাম চাষ করা হয়েছে, গত বছর ছিল ২৫০ হক্টের জমিতে চাষ হয়েছিল। জেলায় এখন স্থানীয় জাতরে বভিনি নাম্নে বাদামরে চাষ হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহায়তায় জেলায় বাদাম চাষ সম্প্রসারণের জন্য কৃষকদের মাঝে বীজ, সার, কীটনাশকসহ নানা ধরনরে উপকরণ দেয়া হচ্ছে।

রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত উপরিচালক রিয়াজ উদ্দিন জানান ,সরকারে পক্ষ থেকে প্রত্যেক বাদাম চাষীকে ১০ কেজি করে বীজ দেয়া হয়েছে। আর প্রণোদনা হিসাবে ১০০জনকে কৃষক কেডিএপি ১০ কেজি, ৫ কেজি সার, বারী ৮ বীজ ১০ কেজি করে দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বাদাম জমি থেকে তোলার সঙ্গে সঙ্গে বাজারজাত না করে শুকেিয় গুদামজাত করে পরে বাজারজাত করা হলে কৃষকরা অধিক লাভবান হবেন।

সূত্রঃ ডেইলি বাংলাদেশ

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ৩১, ২০২১ ১২:৪৭ অপরাহ্ন
লিচুর মাইট (মাকড়) রোগ ও প্রতিকার
কৃষি বিভাগ

লিচু বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় একটি ফল। উত্তরবঙ্গে উন্নত জাত ও সুস্বাদু লিচুর জন্যে পরিচিত। যদিও আমাদের আবহাওয়া লিচু চাষের জন্যে উপযুক্ত, তথাপি এই দেশে লিচু চাষ এখনো জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি তেমন।
লিচুর তেমন কোনো মারাত্মক রোগ দেখা যায় না। তবে আর্দ্র ও কুয়াশাযুক্ত আবহাওয়ায় পুষ্পমঞ্জুরি পাউডারি মিলিডিউ ও অ্যানথ্রাকনোজ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তা ছাড়া অনেক সময় ছত্রাকজনিত রোগের কারণে ফল পচে যায়।

মাইট লিচুর অন্যতম শত্রু পোকা। মাকড়সা জাতীয় এই পোকা আকারে খুব ছোট হয়।

ক্ষতির স্থান ও লক্ষণ

মাকড় জাতীয় এ পোকা লিচু গাছের নতুন পাতায় আক্রমণ করে এবং পাতার রস চুষে খেয়ে পাতা কুঁকড়ে ফেলে। আক্রান্ত পাতায় গল তৈরি হয়ে থাকে। আক্রান্ত পাতায় মখমলের মত লালচে বাদামী দাগের সৃষ্টি হয়ে থাকে।পুষ্প মঞ্জুরি, ফুলের কুড়ি এবং ছোট ফলও এরা ক্ষতি করে থাকে। অতি মাত্রায় লিচু মাইটের আক্রমণ হলে ব্যাপকভাবে ফলন কমে যায়। এদের আক্রমণ প্রায় সারা বছরই থাকে। নভেম্বর- ফেব্রুয়ারি মাসে আক্রমণ অপেক্ষাকৃত কম থাকে। এপ্রিল – মে মাসে এদের সংখ্যা বেশি থাকে। পূর্ণ বয়স্ক মাকড় আক্রান্ত পাতায় ফেব্রুয়ারি – মার্চ এবং জুন- জুলাই মাসে দেখা যায়।

প্রাকৃতিক শত্রু দ্বারা বালাই দমন
বাংলাদেশ এ তিন ধরণের মাকড়সা (Tetranychus spp) পাওয়া গেছে যা দ্বারা প্রাকৃতিকভাবে মাইটকে দমন করা সক্ষম। প্রকৃতিতে অনেক বল্লা রয়েছে যারা মাজরা পোকার দমনে সহায়তা করে থাকে।

ব্যবস্থাপনাঃ

১। আক্রান্ত পাতা সংগ্রহ করে মাটিতে পুতে ফেলা ।

২। জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করা যেমন: নিমবিসিডিন (০.৪%) হারে ব্যবহার করা।

৩। মধ্য ভাদ্র হতে কার্তিক মাস এবং মাঘের শেষ হতে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত গাছে ২-৩ বার অনুমোদিত মাকড়নাশক যেমন: থিওভিট বা কুমুলাস বা রনভিট ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

এপ্রিল – মে মাসে লিচুর মাইটের (মাকড়) আক্রমণ পাওয়া গেলে কেলথেন ৪০ এমএফ অথবা নিউরণ ৫০০ ইসি অথবা টারকিউ ৫০ ইসি অথবা ওয়েটেবুল সালফার ২ মিলি প্রতি লিটার পানির সাথে মিশিয়ে ফুট পাম্প অথবা ভলিউম পাওয়ার স্প্রেয়ার দিয়ে ভালভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে।

কান্ড ও ফলের মাজরা পোকা দমনের পূর্বে জরিপ করে দেখতে হবে কি পরিমাণ লিচু পোকা দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। পোকার আক্রান্ত ব্যাতীত ফল রক্ষার জন্য বালাইনাশক প্রয়োগ যে খরচ হবে, তা যদি ফল বিক্রি করার পর বেশি মুল্য পাওয়া না যায় সে ক্ষেত্রে বালাইনাশক স্প্রে না করাই ভাল।সাইপারমেথ্রিন(রিপকর্ড/সিমবুশ/বাসাথ্রিন/এরিভো/অন্যান্য) ১০ ইসি ১ এমএল প্রতি লিটার পানির সাথে মিশিয়ে ফল পাকার ১৫/২০ দিন পূর্বে লিচু ফলের মাজরা পোকা দমনের জন্য প্রয়োগ করা যেতে পারে।

করনীয়
১। ফল সংগ্রহ শেষ হলে গাছের মরা ডালপালা, ফলের বোটা, রোগ বা পোকা আক্রান্ত ডাল পালা ও অতিঘন ডাল পালা ছাটাই করে পরিস্কার করে দিন ।

২। পরিস্কার করার পর একটি ছত্রাক নাশক ও একটি কীটনাশক দ্বারা পুরো গাছ ভালভাবে স্প্রে করুন ।

৩। নিয়মিত বাগান পরিদর্শন করুন।

সাবধানতাঃ

বাগান অপরিচ্ছন্ন রাখবেন না ।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ৩০, ২০২১ ১১:০৭ পূর্বাহ্ন
আমের গুটি ঝরা রোধে করনীয়
কৃষি বিভাগ

গুটি থেকে আমে পরিণত হতে শুরু করেছে মুকুল। এসময় বাড়তি যত্ন বিশেষ করে সেচ, পোকামাকড় ও রোগ দমনে সচেতন হলে ১৫-২০ শতাংশ পর্যন্ত আমের ফলন বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

ঢাকা: গুটি থেকে আমে পরিণত হতে শুরু করেছে মুকুল। এসময় বাড়তি যত্ন বিশেষ করে সেচ, পোকামাকড় ও রোগ দমনে সচেতন হলে ১৫-২০ শতাংশ পর্যন্ত আমের ফলন বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হর্টিকালচারাল উইংয়ের গবেষণা কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ স্বদেশ কুমার পাল বাংলানিউজকে বলেন, পুষ্টিকর এ ফল ঘরে তুলতে হলে অবশ্যই বিশেষ যত্ন নিতে হবে। আমের গুটি ঝরার সমস্যায় বেশি পরেন চাষীরা। তবে সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে বলেও জানান তিনি।

এ সময় গুটি আমের যত্ন নিয়ে আম চাষীদের জন্য কিছু পরামর্শ তুলে ধরেন তিনি।

পানি সেচ: আমের গুটি যখন মার্বেল আকারের মত হয় তখন সেচ দিতে হবে। এতে গুটি ঝরা কমে যাবে। প্রতিবার সেচ দেওয়ার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেন ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই মাটি তা শুষে নেয়। পানি যেন জমে না থাকে। আমের গুটি যত বড় হতে থাকে পানির প্রয়োজনও তত বাড়ে। সেজন্য আম পুষ্টতার পর্যায়ে না পৌঁছা পর্যন্ত, মাটির রসের অবস্থা অনুযায়ী হালকা সেচ দিতে হবে।

আমে পোকার আক্রমণ: আমের গুটি আসার পর আম যখন আরো একটু বড় হয় তখন উইভিল পোকা কচি আমের গায়ে ডিম পাড়ে। সে ডিম থেকে বাচ্চা হয় এবং তা ভেতরে প্রবেশ করে আমের আঁটি ছিদ্র করে আঁটির ভেতরের অংশ খেয়ে ফেলে।

আম পুষ্ট হওয়ার আগেই আমের নিচ দিকে ছিদ্র করে পোকা বের হয়ে মাটিতে পড়ে যায় এবং মাটিতে পুত্তলি দশা কাটিয়ে পূর্ণাঙ্গ পোকায় পরিণত হয়। ছিদ্র করা আমটি ছিদ্র বরাবর ফেটে যায়। আক্রান্ত আম পচতে শুরু করে। একবার যে গাছে এ পোকার আক্রমণ দেখা দেয়, প্রায় প্রতি বছরই সে গাছে এ জাতের পোকার আক্রমণ হতে থাকে।

উইভিল পোকা দমন: উইভিল পোকা দমনের জন্য গাছের গোড়াসহ চারদিকের মাটি চাষ করে দিতে হবে এবং আগাছামুক্ত রাখতে হবে, যাতে ওই পোকার পুত্তলি মাটিতে লুকিয়ে থাকতে না পারে। এতে রোদের তাপে পোকা মারা যাবে বা পাখি খেয়ে নষ্ট করে দেবে।

উইভিল পোকার আক্রমণ প্রতিরোধের জন্য আক্রান্ত গাছের মরা, পোকাক্রান্ত ও অপ্রয়োজনীয় ডালপালা কেটে দিতে হবে।

তবে মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে শুরু করে ১৫ দিন পর পর ২-৩ বার প্রতি লিটার পানিতে ১ মি.লি. হারে সাইপারমেথ্রিন (রিপকর্ড/সিমবুস/ফেনম/বাসাথ্রিন) ১০ ইসি জাতীয় কীটনাশক মিশিয়ে গাছের কাণ্ড, ডাল ও পাতায় ভালোভাবে মিশিয়ে স্প্রে করে এ পোকা নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে।

আমে রোগের আক্রমণ: আমের মুকুলের ন্যায় গুটি যখন মটর দানার মত হয় তখন, অ্যানথ্রাকনোজ রোগের আক্রমণ হতে পারে। আমের ছোট মটর দানায় অ্যানথ্রাকনোজ রোগ হলে আমের গায়ে কালো দাগ দেখা যায়। এ অবস্থায় কচি ফল ঝরে পড়ে।

রোগ নিয়ন্ত্রণ: আমের আকার মটর দানার মত হলে প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মি.লি. টিল্ট-২৫০ ইসি অথবা ২ গ্রাম ইন্ডোফিল এম-৪৫ মিশিয়ে গাছের পাতা, মুকুল ও ডালপালা ভালোভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে। এছাড়া গাছের নিচ থেকে মরা পাতা কুড়িয়ে তা পুড়িয়ে ফেলতে হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ২৮, ২০২১ ১২:১৪ পূর্বাহ্ন
‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বরিশালে উন্নয়ন মেলা উদ্বোধন’
প্রাণ ও প্রকৃতি

নাহিদ বিন রফিক (বরিশাল): ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল বাংলাদেশ উদযাপন’ শীর্ষক দু’দিনে উন্নয়ন মেলা অন্যান্য স্থানের মতো বরিশালেও উদ্বোধন করা হয়েছে।

আজ বরিশালে উদ্বোধন উপলক্ষ্যে জেলা স্কুল মাঠে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এমপি.।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ বিশ্বের রোল মডেল। কোনো তলাহীন ঝুড়ি নয়। এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে আছি। আমরা দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি। ২০৪১ সালে সম্পদশালী দেশে পরিণত হব। বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখতেন তাঁরই সুযোগ্য সন্তান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তা বাস্তবায়ন করে দেখালেন। আমরা উন্নতির উচ্চশিখরে পৌঁছতে চাই। এ জন্য মিলেমিশে কাজ করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করেই তা সম্ভব।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এবং বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মো. সাইফুল হাসান বাদল।

জেলা প্রশাসক জসীম হায়দারের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান বিপিএম (বার), উপ-মহা পুলিশ পরিদর্শক মো. শফিকুল ইসলাম বিপিএম (বার), পুলিশ সুপার জনাব মো. মারুফ হোসেন বিপিএম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সম্মানিত উপপরিচালক জনাব হৃদয়েশ্বর দত্ত, সিভিল সার্জন ডা. মো. মনোয়ার হোসেন এবং গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জনাব জেরাল্ড অলিভার গুডা প্রমুখ।

মেলা আগত দর্শণার্থীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়। এতে কৃষি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শতাধিক স্টল স্থান পায়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ২৭, ২০২১ ৭:৫১ অপরাহ্ন
টিভির খবর পাল্টে দিলো বাতেনের জীবন
কৃষি বিভাগ

২০১৯ সাল। ঘরে বসে টিভি দেখছিলাম। হঠাৎ খবরে দেখতে পাই বাজার থেকে কেনা তরমুজ খেয়ে এক বাচ্চা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ওই সময় আমি সিদ্ধান্ত নেই আমার বাচ্চাকে বাজার থেকে কেনা তরমুজ খাওয়াব না। পরের বছর নিজের জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ২০-২৫টি তরমুজের চারা রোপন করি। কিছুদিন পর লক্ষ্য করি পাহাড়ি মাটিতে তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে।

ওই সময়ে ৭০-৮০টি তরমুজ পাই, প্রতিটির ওজন ছিল ১২-১৮ কেজি। তরমুজগুলো খুবই সুস্বাদু ও মিষ্টি, রঙও খুব সুন্দর ছিল। তরমুজগুলো ছিল ট্রপিক্যাল ড্রাগন জাতের। পরে চিন্তা করলাম ফলন যেহেতু ভালো হয়েছে তাহলে বাণিজ্যিকভাবে তা চাষ করা সম্ভব। এ বছর বাণিজ্যিকভাবেই তরমুজের আবাদ করেছি। তরমুজের ভালো ফলনে আমার জীবন বদলে গেছে।

এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে গেলেন, শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার হলদি গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে আব্দুল বাতেন। তিনি পেশায় চিফ জুডিসিয়াল ম্যজিস্ট্রেট আদালতের গাড়িচালক।

পাহাড়ের এটেল মাটিতে আব্দুল বাতেনের তরমুজ ক্ষেত কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। প্রতিদিনই আশপাশের উপজেলা থেকে অনেকে এখানে আসেন তরমুজের ক্ষেত দেখতে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ তরমুজ চাষে আগ্রহও দেখিয়েছেন।

আব্দুল বাতেন জানান, বাড়তি আয়ের আশায় ২০১৩ সালে হলদি গ্রামে নিজের ৭৫০ শতাংশ জমিতে নানা জাতের ফলের মিশ্র বাগান গড়ে তোলেন। সেখানে বাণিজ্যিকভাবে আম, কাগজি ক্রস লেবু, সিডলেস এলাচি লেবু, মাল্টা, পেঁপে, জাম্বুরা ও কমলা চাষ করেন। বাগান থেকে আশানুরূপ ফলন পাওয়ায় এবং সন্তানকে বিষমুক্ত তরমুজ খাওয়ানোর ইচ্ছা থেকেই ১০০ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষ করেন।

তিনি আরো জানান, স্থানীয় কৃষি অফিসের বীজের ডিলারের মাধ্যমে থাইল্যান্ডের ট্রপিক্যাল ড্রাগন জাতের ১০০ গ্রাম তরমুজ বীজ সংগ্রহ করেন। মাল্টা বাগানের ফাঁকে ফাঁকে ২৪০০ চারা করেন। প্রতিটি গাছে ৭-৮টি করে তরমুজ আসে। বয়স ভেদে একেকটি তরমুজের ওজন হয়েছে ৩-৫ কেজি। পরিপক্ক হলে প্রতিটি তরমুজের ওজন হবে প্রায় ১২-১৮ কেজি।

আব্দুল বাতেন জানান, পোঁকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পুরো তরমুজ বাগানে বসিয়েছেন সেক্সফেরোমন ফাঁদ। ওই বাগান থেকে ১২ হাজার ৫শ’ পিস তরমুজ পাওয়া যাবে। যার বাজার মূল্য প্রায় ১০ লাখ টাকা।

পাহাড়ি জমিতে তরমুজের ফলন অবাক করেছেন অনেককে। স্থানীয় এক স্কুলশিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, জীবনে প্রথম শুনলাম
পাহাড়েও তরমুজের ফলন হয়। এটি আমাদের জন্য নিঃসন্দেহে আনন্দের। আব্দুল বাতেনকে দেখে অনেকেই তরমুজ চাষে আগ্রহী হবেন।

পাহাড়ে তরমুজ চাষের সফলতা দেখতে আসা পাশর্^বর্তী শ্রীবরদী উপজেলার কৃষক আলমগীর হোসেন জানান, পাহাড়ে তরমুজ চাষ তাদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। আগামী বছর ২০০ শতাংশ জমিতে তিনি তরমুজ চাষ করবেন বলে জানান।

ঝিনাইগাতী কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, কৃষি বিভাগে চাকরি জীবনে পাহাড়ে তরমুজ ফলনের ঘটনা এবারই প্রথম দেখলাম। আব্দুল বাতেনকে তরমুজের পরিচর্যায় আমরা সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিচ্ছি। এরই মধ্যে তার তরমুজ ক্ষেত কয়েকবার পরিদর্শন করা হয়েছে।

ডেইলি বাংলাদেশ

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ২৬, ২০২১ ১১:০৬ পূর্বাহ্ন
খুলনায় দিনব্যাপি বন সংরক্ষণ বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
প্রাণ ও প্রকৃতি

খুলনায় তালের চারা উত্তোলন, বনায়ন, বনের প্রয়োজনীয়তা ও বন সংরক্ষণ বিষয়ক দিনব্যাপি প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।

গত বৃহস্পতিবার খুলনার ডুমুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রশিক্ষণে ২৫ জন স্থানীয় প্রশিক্ষণার্থী অংশ গ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের ম্যানগ্রোভ সিলভিকালচার বিভাগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদ।

এজাজ আহমেদ বলেন, গাছ না থাকলে প্রাণের অস্তিত্ব থাকবে না। গাছই একমাত্র নিয়ামক যে বাতাসে অক্সিজেন ছেড়ে দিয়ে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহণের মাধ্যমে সুশীতল বায়ু প্রদান করে। দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত গাছের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাই সকলকে গাছ লাগানো ও গাছ সংরক্ষণে ভূমিকা রাখতে হবে।

বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের ম্যানগ্রোভ সিলভিকালচার বিভাগের খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আসম হেলাল উদ্দিন আহম্মেদ সিদ্দীকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্তিত ছিলেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোসাদ্দেক হোসেন, ডুমুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আইযুর হোসাইন প্রমুখ।

বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত প্রযুক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত প্রশিক্ষণ দেন ম্যানগ্রোভ সিলভিকালচার বিভাগের গবেষণা কর্মকর্তা মোঃ আকরামুল ইসলাম।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ২৩, ২০২১ ৭:৩৫ অপরাহ্ন
বিস্ময়কর উদ্ভাবন; এক গাছেই উপরে বেগুন, নিচে আলুু!
কৃষি গবেষনা

গাছ একটাই, কিন্তু উপরের অংশে ফলবে বেগুন আর মাটির নিচের অংশে আলু। এমন উদ্ভাবনের ফল রীতিমতো বিস্ময়ের খোরাক জাগাচ্ছে সবার মনে। একইগাছে একসাথে বেগুন ও আলু ধরে বিধায়, গবেষক এক্ষেত্রে বেগুনের ইংরেজি পরিভাষা ‘ব্রিঞ্জাল’ আর ‘আলু’ একত্রে নিয়ে গাছটির নাম দিয়েছেন ‘ব্রিঞ্জালু বা বেগুন-আলু।’

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) অবসরপ্রাপ্ত ভাইস-চ্যান্সেলর ড. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ ফারুক ব্রিঞ্জালু’র উদ্ভাবক। গত বছরের নভেম্বর মাসে শুরু করা এ গবেষণা চলতি মাসে সফলতার মুখ দেখেছে। ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস, এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) ক্যাম্পাসের গবেষণা মাঠে গবেষণাটি সম্পন্ন হয়েছে।

গবেষক ড. ফারুক জানান, ‘এখানে জোড় কলমের মাধ্যমে আলু ও বেগুন গাছের কলম সৃষ্টি  করে একটি স্বতন্ত্রধর্মী গাছে রূপ দেওয়া হয়েছে। গাছটির উপরের অংশে বেগুন ধরবে আর নিচের অংশে আলু।’ বিএডিসি’র সহকারি পরিচালক ফাহাদ উল হক ও আইইউবিএটি শিক্ষার্থী মাহাদী হাসান সংশ্লিষ্ট এ গবেষণার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।

 

ব্রিঞ্জালু নিয়ে গবেষকের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে গবেষক ড. ফারুক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বছর দুয়েক আগে একইগাছে টমেটো ও আলু ধরিয়ে টমালু উদ্ভাবন করেছিলাম। টমালু এ বছরই বগুরার কিছু চাষী বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করছে। নিশ্চয়ই আনন্দের বিষয় এটি। সেই আলোকে ব্রিঞ্জালুকেও বাণিজ্যিকীকরণের উদ্দেশে মাঠপর্যায়ে ছড়িয়ে দেবার সর্বাত্ম চেষ্টা থাকবে। এক্ষেত্রে সরকারি কিংবা বেসরকারি কোন সংস্থার পৃৃষ্ঠপোষকতা গবেষণার সার্বিক দিককে তরান্বিত করবে।

আরও পড়ুনঃ তাল ও ডিম বেগুনের লাভজনক সংযোজন

সূত্রঃবিডি প্রতিদিন

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ২১, ২০২১ ১০:৫২ পূর্বাহ্ন
বাণিজ্যিকভাবে কেঁচো সার উৎপাদনের স্বপ্ন দেখছেন হালিম
কৃষি গবেষনা

পরিশ্রম আর আগ্রহের সমন্বয় ঘটাতে পারলে যেকোনো কাজেই মিলে প্রত্যাশিত সাফল্য। নার্সারি ব্যবসা দিয়ে শুরু করে বার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার উৎপাদনেও সফলতার পথে হাঁটছেন। নিজের নার্সারিতে বার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার ব্যবহারের পাশাপাশি বাজারজাত শুরু করেছেন এমনই এক উদ্যোক্তা। বলছিলাম পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ির সীমান্তঘেঁষা পানছড়ির স্বপ্নবাজ তরুণ আব্দুল হালিমের কথা।

পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ির সীমান্তঘেঁষা পানছড়ির উপজেলা শহর ঘেঁষা টিএন্ডটি ভবন। টিএন্ডটি ভবনের পাশেই সরকারি পরিত্যাক্ত টিলাভূমিতে গড়ে তোলা হয়েছে গাউছিয়া নার্সারি। গাউছিয়া নার্সারিতেই একটি ছোট্ট টিনের ঘরে বিশেষভাবে তৈরি ট্যাঙ্কে ও দশটি রিংয়ে চালার ঘরে চলছে স্বপ্নবাজ আব্দুল হালিমের কেঁচো সার বা বার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন প্রক্রিয়া।

সেখানেই জাগো নিউজকে নিজের বার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার উৎপাদনের গল্প শোনালেন তরুণ উদ্যোক্তা মো. আব্দুল হালিম। বললেন মাস ছয়েক আগে বান্দরবানে নার্সারির উপর প্রশিক্ষণে গিয়ে বার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার তৈরির ধারণা লাভ করেন তিনি।

শুরুতেই কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় বান্দরবান থেকে সংগ্রহ করেন এপিজিক নামক তিন কেজি কেঁচো। এর পরপরই শুরু করেন কঁচো থেকে পরিবেশ বান্ধব জৈব সার তৈরির মতো কর্মযজ্ঞ। মা-বাবা আর ডিগ্রি পড়ুয়া ছোট ভাইকে সাথে নিয়ে গেল নভেম্বর মাসে পানছড়ির টিএন্ডটি ভবন লাগোয়া গাউছিয়া নার্সারিতে শুরু করেন বার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার উৎপাদন প্রক্রিয়া।

বললেন পরিবারের অভাব-অনটনের কথা চিন্তা করে ২০০৪ সালে স্বল্প পরিসরে প্রতিষ্ঠা করেন গাউছিয়া নার্সারি। নিজের আন্তরিকতা আর ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় গত ১৬ বছরে ডালপালা মেলেছে গাউছিয়া নার্সারি। ২০০৬ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিলেও পাশ করতে পারেননি এ তরুণ।

পরিবারের অভাব-অনটনের কারণে আর পরীক্ষাও দেয়া হয়নি। ফলে সেখানেই থেমে গেছে তার শিক্ষাজীবন। আর্থিক অস্বচ্ছলতায় লেখাপড়া করতে না পারলেও আক্ষেপ নেই তার।

নার্সারি প্রতিষ্ঠার ১৬ বছরের মাথায় তার স্বপ্নে নতুন পালক হিসেবে যুক্ত হয়েছে বার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার উৎপাদান। বান্দরবান থেকে সংগ্রহ করা তিন কেজি এপিজিক কেঁচো আর চারটি ট্যাঙ্কে ও দশটি রিংয়ে দিয়েই তার পদযাত্রা।

মাত্র ছয় মাসে বার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার উৎপাদান করে সাফল্য পেয়েছেন পানছড়ির আব্দুল হালিম। বর্তমানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার উৎপাদানের স্বপ্ন দেখছেন এ যুবক। এজন্য তিনি সরকারি ঋণ সহায়তা প্রদানেরও দাবি জানান।

পানছড়ির মোহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা গাউছিয়া নার্সারির মালিক মো. আব্দুল হালিম বার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার উৎপাদন ও বিপণনে নিজের সংসারে সমৃদ্ধি এনেছেন। নিজের নার্সারিতে বার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার ব্যবহার করার পাশাপাশি প্রতি মাসে এক টনেরও বেশি জৈব সার বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন। স্থানীয় কৃষকদের পাশাপাশি পানছড়ি বাজারে সার বিক্রেতারাও নেন কেঁচো সার। বার্মি কম্পোস্ট সারের পাশাপাশি সার উৎপাদনকারি বিশেষ কেঁচোও বিক্রি করছেন তিনি। নিজের পাশাপাশি বাবা-মা আর ডিগ্রি পড়ুয়া ছোট ভাইয়ের ঘামঝরা পরিশ্রমে স্বপ্নের পথে হাঁটছেন আবদুল হালিম।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, বার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার একটি ফসল বা গাছের সুষম খাদ্যের যোগান দেয়। যেখানে রাসায়নিক সারে কেবল এক বা দুইটি খাদ্য উপাদান থাকে সেখানে বার্মি কম্পোস্টে রয়েছে সুষম খাদ্য উপাদান।

কেঁচো সার উৎপাদনে এপিজিক ও এন্ডিজিক নামক কেঁচো ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর ফলে মাটিতে অণুজীবের পরিমাণ বৃদ্ধির পাশাপাশি মাটিতে বাতাসের চলাচলের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। সাধারণত রিং পদ্ধতিতে বার্মি কম্পোস্ট উৎপাদিত হয়।

কলার বাকলসহ বিভিন্ন ঘাস, লতার দিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে প্রায় এক সপ্তাহ রেখে দিতে হয়। পরে রিংয়ের মধ্যে ২০০ গ্রাম এপিজিক ও এন্ডিজিক কেঁচো মিশিয়ে রাখতে হয়। এভাবেই তৈরি হয় বার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার। এ সার মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতে অত্যন্ত কার্যকর ও পরিবেশ বান্ধব।

কেঁচো সার উৎপাদনে তরুণ উদ্যোক্তা আব্দুল হালিমের সাফল্যে অনেকেই বার্মি কম্পোস্ট উৎপাদনে আগ্রহী হচ্ছেন জানিয়ে পানছড়ির উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা অরুণাঙ্কর চাকমা জানান, রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমাতে কৃষকরা বার্মি কম্পোস্ট সার বেছে নিচ্ছেন। তিনি বলেন, সরকার রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে জৈব সার ব্যবহারে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছে।

সূত্রঃজাগো নিউজ

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ২১, ২০২১ ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন
সৈয়দপুরে বোরোর আশাতীত ফলনের আশা করছেন কৃষকরা
কৃষি বিভাগ

সৈয়দপুর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ইরি-বোরো খেত বেড়ে উঠছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে আশাতীত ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।

কৃষি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত বছর বন্যায় দীর্ঘদিন পানি আটকে থাকায় সৈয়দপুরে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে চলতি মৌসুমে বোরোর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহিনা বেগম জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং কোনো প্রকার পোকামাকড়ের উপদ্রব দেখা না দিলে চলতি মৌসুমে ৩০ হাজার ৯৯১ মেট্রিক টন ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকরা। এতে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সরকারের খাদ্য ভাণ্ডারে যোগান দেওয়া সম্ভব হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মার্চ ২০, ২০২১ ৮:৫০ পূর্বাহ্ন
লিচু ফেটে যাওয়ার কারণ ও তার প্রতিকার
কৃষি বিভাগ

বর্তমানে বিভিন্ন প্রকার ফল উৎপাদনের ক্ষেত্রে ফলের ফেটে যাওয়া একটি বড় সমস্যা। সাধারণত: ফল বড় হওয়ার পর অর্থাৎ ফল পুষ্ট হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে ফাটা শুরু করে। ফল বড় হওয়ার পর কোন কারণে নষ্ট হলে কৃষকের জন্য ক্ষতিকর হয়ে পড়ে। প্রায় সব ফলকেই ফাটতে দেখা যায়। তবে আমাদের দেশের ফল গুলোর মধ্যে লিচু ও ডালিম বেশী ফাটে। অন্যান্য ফলের মধ্যে কলা, আম, পেয়ারা, কাঁঠাল ইত্যাদি ফেটে যেতে পারে। ফল ফেটে যাওয়ার প্রক্রিয়াটি খুব দ্রুত সম্পন্ন হয় এবং উক্ত ফাটা জায়গায় রোগ জীবানুর আক্রমণ ঘটতে পারে। ফলে গোটা ফল নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা দেখা দেয়। ফল ফেটে গেলে তার বাজার মূল্য কমে যায়। তাছাড়া কোন কোন সময় তা খাওয়ার অনুপযুক্ত হয়ে যায় ফলে কৃষক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ে।

ক্ষতির ধরণ বা প্রকৃতি:
লিচুর ফল ফাটা বিভিন্ন রকম হতে পারে। সামান্য ফাটা, কেবলমাত্র খোসা ফাটা, লম্বালিম্বভাবে গোটা ফল ফাটা ইত্যাদি। ফল ফেটে গেলে তার অপক্ক শাঁস অনাবৃত হয়ে পড়ে এবং সরাসরি বাতাসের সংস্পর্শে আসে ফলে শাঁস দ্রুত শুকায়ে যায়। পরবর্তীতে তা রোগ ও পোকার আক্রমণের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায়। লিচুর ফাটা লম্বালম্বি বা আড়াআড়ি দু রকমই হতে পারে।

ফল ফাটার পদ্ধতিঃ
খরা বা অনাবৃষ্টির সময় ফলের জাইলেম ও ফ্লোয়েম কোষে অনাকাংখিত আবহাওয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কিছু শক্তিশালী কোষের উৎপন্ন হয় যা বিভক্ত হওয়ার বা বৃদ্ধি পাওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। যদি শুস্ক আবহাওয়ার পর পানি/সেচ সরবরাহ বৃদ্ধি করা হয় তখন বর্ধনশীল কোষ (Merstematic tissuc) খুব দ্রুত বাড়া শুরু করে । কিন্তু , জাইলেম ও ফ্লোয়েমের শক্ত কোষগুলো সমভাবে বাড়তে পারে না। এমতাবস্থায়, কোষ বৃদ্ধির এই তারতম্যের কারণে ফলের আবরণের শক্তকোষগুলো ফেটে যায়।

ভারতের কানোয়ার ও তার সহযোগী বিজ্ঞানীবৃন্দ ব্যাখ্যা করেছেন যে, লিচুর ফল বৃদ্ধি দুটি পর্যায়ে ঘটে থাকে। প্রথম পর্যায়ে, ফল তার সম্ভাব্য দের্ঘ্য পর্যন্ত দ্রুত বাড়ে। বিশেষতঃ ফলের বীজ দ্রুত বাড়ার কারণে দ্বিতীয় পর্যায়ে ফলের শাঁস দ্রুত বাড়া শুরু করে যে সময় (মে মাসে) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এবং আপেক্ষিক আদ্রতা কম থাকে। এ সময় ফলের যে অংশে সরাসরি রোদ্র পায় সে দিকে ফলের খোসায় হালকা বাদামী দাগ পড়ে। দাগযুক্ত খোসার রং গাঢ় হয় এবং জায়গাটা শুকিয়ে যায়। একই সময় দ্রুত বর্ধনশীল শাঁসের চাপে দাগযুক্ত আক্রান্ত খোসার জায়গাটি ফেটে যায়। শাঁস বৃদ্ধির হার বেশী হলে ফাটল দ্রুত সম্পন্ন হয় এবং ফাটল সুস্পস্ট হয়ে উঠে।

ফল ফাটার কারণঃ
ফল ফাটার বিভিন্ন কারন রয়েছে। তবে, লিচু ফল ফেটে যাওয়ার নিম্নের এক বা একাধিক কারণ থাকতে পারে।

(ক) আবহাওয়া জনিতঃ আবহাওয়ার মুল উপাদান তাপমাত্রা, আপেক্ষিক আদ্রতা এবং বৃষ্টিপাত। লিচুর ফল ফাটার সঙ্গে আবহাওয়ার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গোছ। কানোয়ার, সিংহ প্রভৃতি বিজ্ঞানীদের মতে গরম বাতাস/ আবহাওয়া লিচুর ফল ফাটার প্রধান কারণ। তারা বলেন ফল পাকার আগে গরম আবহাওয়া তৎসহ গরম বাতাস ফল ফাটাতে সহায়তা করে। ফলের শাঁস দ্রুত বৃদ্ধির সময় তাপমাত্রা ৩৮০ সে. বা অধিক এবং আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৬০ % বা কম হলে ফল ফাটা তরান্বিত হয়। দিন ও রাতের তাপমাত্রার ব্যাপক তারতম্য, তৎসহ গরম আবহাওয়ার পর হঠাৎ পর্যাপ্ত সেচ প্রদান বা বৃষ্টিপাত ফল ফাটতে সহায়তা করে। ফল পাকার পূর্ব মুহূর্তে উচ্চ তাপমাত্রা, নিম্নমাত্রার আপেক্ষিক আর্দ্রতা তৎসহ দীর্ঘ বৃষ্টিপাত ফল ফাটার অন্যতম কারণ বলে বিজ্ঞানী মিশ্র মনে করেন।

(খ) হরমোনজনিতঃ সুস্থ্য ও ফাটা লিচুর রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সুস্থ্য লিচুর তুলনায় ফাটা লিচুর খোসা ও বীজে কম মাত্রায় এবং শাঁসে বেশী মাত্রায় অঙিন বিদ্যমান থাকে। জিবারেলিন এর মাত্রা খোসা, বীজ ও শাঁসে স্বাভাবিক ফলের তুলনায় বেশী থাকে। এছাড়া সাইটো কাইনিন ও এবসিসিক এসিড ফাটা ফলে বেশী লক্ষ্য করা গেছে।

(গ) জাতের বৈশিষ্ট্য জনিতঃ লিচুর সব জাতে একইরকম ফাটল দেখা যায় না। কোন কোন জাত বেশী সংবেদনশীল আবার কোন কোনটি ফাটা প্রতিরোধক। ভারতে বেশ কিছু জাতের উপর পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, জাতভেদে ফল ফাটার পরিমাণ ০.৩-৩৬.২% । এর মধ্যে সর্বোচ্চ ফাটল দেরাদুন জাতে এবং সর্বনিম্ন ফাটল সীডলেস নং-২ জাতে লক্ষ্য করা গেছে। বাংলাদেশের দিনাজপুর ও ঈশ্বরদী এলাকায় আবাদকৃত জাতগুলোর মধ্যে বোম্বাই ও স্থানীয জাতের ফল ফাটার পরিমান বেশী হয়ে থাকে। চায়না -৩ ও বেদানা জাতে ফল ফাটার পরিমাণ বেশ কম, নাই বললেই চলে। গবেষণায় দেখা গেছে, আগাম পাকে এমন জাতের ফল ফাটার পরিমাণ নাবী জাতের তুলনায় বেশী। ভারতেও একই রকম ফলাফল লক্ষ্য করা গেছে।

(ঘ) পুষ্টির অভাব জনিতঃ কিছু কিছু পুষ্টি উপাদান যেমন পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, দস্তা, বোরণ, তামা, মালিবডেনাম ও ম্যাঙ্গানিজ ফল বৃদ্ধির সময় শারীরতাত্বিক পদ্ধতির সাথে সম্পর্কিত হওয়ায় এদের অভাবে ফল ফাটা ত্বরান্বিত হয়। পরীক্ষায় দেখা গেছে ফাটা লিচুতে স্বাভাবিক লিচুর তুলনায় বেশী পরিমাণে নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়াম থাকে। অপরদিকে ক্যালসিয়াম ও দস্তা কম পরিমাণে বিদ্যমান থাকে। স্বাভাবিক ও ফাটা ফলের অম্লতা (পিএইচ) এবং মিষ্টতার (টিএসএস) কোন তারতম্য ঘটে না । তবে, ফাটা ফলে পানির পরিমাণ বেশী থাকতে দেখা গেছে।

(ঙ) মাটির আর্দ্রতাজনিতঃ ত্রুটিপূর্ণ সেচ ব্যবস্থাপনার কারণে ফল ফাটা বেড়ে যেতে পারে। ফলের শাঁস বৃদ্ধির সময়ে মাটির আর্দ্রতা কমে যাওয়া এবং পরিমিত মাত্রায় সেচ প্রদান না করার কারণে মাটিতে রসের ঘাটতি দেখা দেওয়ায় লিচুর ফল ফেটে যেতে পারে।

(চ) রোগ পোকার আক্রমণ ও আঘাত জনিতঃ কোন কোন সময় রোগ ও পোকার আক্রমণ বা শারীরিকভাবে ফল ফল আঘাত প্রাপ্ত হলে তা ফেটে যায় এবং পচনকারী জীবানুর আক্রমণ দেখা দিতে পারে । তবে, এসব কারণে ব্যাপক আকারে ফাটল দেখা যায় না।

প্রতিকার
১। যে সব জাত ফাটল প্রতিরোধক/ সংবেদনশীল সে গুলোর চাষাবাদ করতে হবে।
২। বিভিন্ন প্রকার হরমোন সেপ্র করে ফলের পরিপক্কতা দীর্ঘায়িত করা এবং খোসার সমপ্রসারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে

ফলের ফাটা দমনের ক্ষেত্রে ভাল ফলাফল পাওয়া গেছে। ন্যাপথালিন এসিটিক এসিড ((NAA) ২৫ পিপিএম হারে এর সাথে জিবারেলিক এসিড ৫০ পিপিএম হারে ১০ দিন পর পর সেপ্র করে ফাটল রোধ করা সম্ভব।

৩। ফল বৃদ্ধির সময় জিংক সালফেট ( প্রতি লিটারে ৫ গ্রাম), রোবাঙ/ বরিক এসিড ( প্রতি লিটারে ৫ গ্রাম) একত্রে বা আলাদা আলাদা ভাবে সেপ্র করলে ফল ঝরে পড়া ও ফাটা উভয় সমস্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায়।
৪। ফল বৃদ্ধির সময় গাছে নিয়মিত ও পরিমিত পরিমাণ সেচ প্রদান করলে মাটির আর্দ্রতা / রস বৃদ্ধি এবং বাতাসের তাপমাত্রা কমে যাবে। ফলে লিচুর ফাটল কমে যাবে।
৫। মাটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে। জৈব সার প্রয়োগে মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা বেড়ে যাবে। ফলে বিরুপ আবহায়ায় মাটির রস দ্রুত হ্রাস বৃদ্ধির হার কমে যাবে। উপরন্ত, জৈব সারে সব ধরনের পুষ্টি উপাদান থাকায় মাটির অপুষ্টি জনিত সমস্যাও দুর হবে।

অনেক সময় চাষীরা ফল ফাটার প্রকৃত কারন নির্ণয় করতে পারেনা । সে জন্য একক ভাবে কোন চেষ্টার উপর নির্ভর না করে উপরের আলোচিত প্রতিকারগুলোর সমন্বিত ব্যবস্থা নিলে কার্যকর ভাবে লিচুর ফাটল রোধ করা সম্ভব হবে।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop