৭:৩০ অপরাহ্ন

সোমবার, ১৮ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : জুলাই ২৮, ২০২২ ১০:১২ পূর্বাহ্ন
হনুমানকে ‘বিরক্ত’ না করতে বন বিভাগের আহ্বান
প্রাণ ও প্রকৃতি

বেশ কিছুদিন থেকেই নীলফামারী শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরেফিরে একটি হনুমানকেই চোখে পড়ছে। উৎসুক মানুষের ভিড়ে দ্রুত স্থান পরিবর্তন করছে বিপন্নপ্রায় এই প্রাণীটি। ধারণা করা হচ্ছে, টাঙ্গাইল থেকে ট্রাকযোগে এদিকে এসেছে হনুমানটি। যথাসময়ে নিজ গন্তব্যে ফিরবে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ কর্তৃপক্ষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৫ থেকে ২০ দিন আগে সৈয়দপুর থেকে নীলফামারীতে আসে এই হনুমানটি। বেশ কিছুদিন থেকে তাকে দেখা যাচ্ছে শহরের গাছবাড়ি, কৃষি ফার্ম, মিলনপল্লী, হাড়োয়া, পুরাতন রেলস্টেশন এবং সবশেষ মঙ্গলবার দেখা গেছে নীলফামারী সরকারি কলেজ এলাকায়।

বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, টাঙ্গাইলের মধুপুর এলাকা থেকে ট্রাকে করে এদিকে আসতে পারে হনুমানটি। কারণ আনারস ও কলা ট্রাকে করে পরিবহন করা হয় এদিকে। হনুমানটি ওই ট্রাকগুলোতে এসেছে। তবে মানুষের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়নি এই প্রাণীটি।

জেলা শহরের গাছবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আবদুল ওয়াহেদ সরকার জানান, ১৫ দিন আগে আমার এলাকায় হনুমানটির দেখা মেলে। মোবাইল ফোন টাওয়ারে অবস্থান নেয় সে। আমরা অবশ্য ভাত, কলা খেতে দিয়েছিলাম। খেয়ে তাকে আবারো টাওয়ারে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। সেখান থেকে আবার অন্যত্র চলে যায়।

শহরের মিলনপল্লী এলাকার বাসিন্দা আবদুল খালেক জানান, ১০ থেকে ১২ দিন আগে বিকেলে আমাদের পাড়ায় দেখা যায় হনুমানটি। উৎসুক মানুষ ভিড় করলে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে সে। এ ছাড়া আগের দিন সকালে দেখা যায় কৃষি ফার্মের কদম গাছে। সেখান নেমে পুরাতন রেলস্টেশন এলাকার দিকে যায় সে।

ওই এলাকার বাসিন্দা আইনুল হক বলেন, প্রাণীটি কাউকে ক্ষতি করতে দেখিনি। তবে হনুমানটিকে কুকুর দেখতে পেলে উচ্চস্বরে ডাকাডাকি শুরু করে।

নীলফামারী সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নূরুল করিম জানান, মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দুপুরে কলেজ এলাকার একটি দেয়ালে তাকে বসে থাকতে দেখা গেছে। উৎসুক মানুষ দেখতে ভিড় জমায়। যেহেতু সে আমাদের ক্ষতি করছে না, সে হিসেবে সংরক্ষণ করার সুযোগ থাকলে কর্তৃপক্ষ সেটি করতে পারে।

রংপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মতলুবুর রহমান জানান, হনুমানটি টাঙ্গাইল মধুপুর থেকে ওই এলাকায় গেছে। কিছুদিন পর আবার সে তার এলাকায় ফিরে যাবে এক্ষেত্রে তাকে বিরক্ত করা যাবে না। এ সময় হনুমানটিকে বিরক্ত না করার আহ্বান জানান তিনি। বন বিভাগের এই কর্মকর্তা আর বলেন, আমরা হনুমানটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ২৮, ২০২২ ৯:৩৩ পূর্বাহ্ন
তিন খামারির ৩০ লাখ টাকার গরু চুরি!
প্রাণিসম্পদ

বৃষ্টি হওয়া সুযোগে রংপুর মাহিঞ্জে একরাতে ৩ খামারির প্রায় ৩০ লাখ টাকার গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। বড় একটি গাড়িতে করে নিয়ে যায় গরু। এতটাকার গরু হারিয়ে অসহায় পড়েছেন সেই খামারিরা।

সম্প্রতি জেলার ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের বাড়িতে দিবাগত রাতে এ গরু চুরির ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা, পুলিশ প্রশাসন ও খামারীদের নেতৃবৃন্দ।

খামারির সুত্রে জানা যায়, রোববার দিবাগত রাতে বৃষ্টি হওয়ার সুযোগ নিয়ে গরু গুলো চুরি করা হয়েছে। রাত আনুমানিক ৩-৪ টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গরুগুলো বড় হওয়ায় হেটে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। বড়গাড়িতে করে নিয়ে গেছে বলে মনে করেন খামারীরা। তবে এর সাথে স্থানীয় কোন চক্রের জোগসাজস থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন খামারীরা। এটি সংঘবদ্ধ কোন চোর সিন্ডিকেটের কাজ।

স্খানীয় মাহিগঞ্জের খামারি গৌতম বোসের ২ টি গরু, হাসান আলী’র ২ টি এবং আনোয়ার হোসেন ৩ টি গরুচুরি করে নিয়ে যায় চোর চক্র। ৭টি গরুর বর্তমান বাজারমুল্য প্রায় ৩০ লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা।

ক্ষতিগ্রস্থ খামারি গৌতম বোস জানান, রাত ৪ টার দিকে গরু চিৎকারে ঘুম ভেঙ্গে যায়। গরুর গোয়ালে গিয়ে দেখি দরজা খোলা, ৩ টি গরু নাই। পরে বাহিরে খোঁজা খুজির পর একটি গরু পাওয়া যায়। এ বিষয়ে জিডি করা হয়েছে। জেলা ডেইরি ফার্মাস এসোসিয়েশন রংপুর সাধারণ সম্পাদক এস এম আসিফুর ইসলাম জানান, হঠাৎ করে খামার থেকে গরু চুরি বিষয়টা খুবই চিন্তার।

জেলা ডেইরি ফার্মাস এসোসিয়েশন রংপুর সভাপতি লতিফুর রহমান মিলন জানান, বিষয়টি গরুত্ব সহকারে নিয়ে প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।

মেট্রোপলিটন মাহিগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান জানান, এই সড়কের গুরুত্বপূর্ণ অনেক স্থানে সিসিক্যামেরা রয়েছে, সেগুলো পর্যালোচনা করে যতদ্রুত সম্ভব অপরাধীদের সনাক্ত করা এবং হারিয়ে যাওয়া গরুগুলো উদ্ধার করা।

রংপুর জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার সিরাজুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থ খামারিদের সাথে কথা বলে তালিকা করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ২৭, ২০২২ ১০:২৩ পূর্বাহ্ন
দানাদার খাদ্য, মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ: প্রধানমন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ

সরকার গৃহীত কৃষিবান্ধব নীতি ও কার্যক্রমে দানাদার খাদ্য, মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে বাংলাদেশ আজ স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং দুধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দ্বারপ্রান্তে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (২৭ জুলাই) ‘কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি) ২০২০’ সম্মাননা প্রদান উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সরকার প্রথমবারের মতো ‘কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি) ২০২০’ সম্মাননা প্রদান করতে যাচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন এবং যারা এ স্বীকৃতি পাচ্ছেন তাদেরও আন্তরিক অভিনন্দন।

সরকারপ্রধান বলেন, আমরা দেশব্যাপী ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। এতে কৃষিনির্ভর শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনসহ ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার নিরবচ্ছিন্ন, সাশ্রয়ী ও দ্রুত যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণে সফল হয়েছি। এ সেতুর মাধ্যমে নদীবিধৌত উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষি ও মৎস্য সম্পদ আহরণ এবং সারাদেশে দ্রুত বাজারজাতকরণের ফলে এ অঞ্চলের কৃষি ও কৃষকের জীবনমান আরও উন্নতি হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার গৃহীত কৃষিবান্ধব নীতি ও কার্যক্রমে দানাদার খাদ্য, মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে বাংলাদেশ আজ স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং দুধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দ্বারপ্রান্তে। ধান, পাট, আম, পেয়ারা, আলু প্রভৃতি ফসল ও ফল উৎপাদনে বাংলাদেশ শীর্ষ ৮টি দেশের মধ্যে রয়েছে।

তিনি বলেন, এসব কার্যক্রমে যারা অবদান রাখছেন, তাদের মধ্য থেকে নির্বাচিত ব্যক্তিবর্গকে আজ ‘কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি) ২০২০’ হিসেবে ঘোষণা ও সম্মাননা প্রদান করা হচ্ছে। এর ফলে দেশে কৃষিপেশার মর্যাদা সমুন্নত হবে এবং কৃষির উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। আমাদের লক্ষ্য, বর্তমান প্রয়াসকে আরও গতিশীল করে ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার উন্নত, সুখী, সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ২৫, ২০২২ ১০:৩৪ পূর্বাহ্ন
ছাগলের কৃমি দমনে করণীয়
প্রাণিসম্পদ

ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন বাংলাদেশের খামারীদের ভাগ্যবদলের অন্যতম পাথেয়। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের মাংস যেমন সুস্বাদু, চামড়া তেমনি আন্তর্জাতিকভাবে উন্নতমানের বলে স্বীকৃত। তবে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলেও নিতে হয় আলাদা যত্ন। বিশেষ করে কৃমি দমনে কার্যকরী পদক্ষেপ খামারীদের জন্য বেশ উপকারী।

ছাগলের বাচ্চার কৃমি দমনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ:

কৃমি দমন : কৃমি ছাগলের মারাত্মক সমস্যা। বয়স্ক ছাগল ও বাচ্চার কৃমি দমনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, শুধু পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ ও উন্নত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই আশানুরূপ উৎপাদন পাওয়া যায় না।

কৃমির জন্য উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। কাজেই কাছের প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল থেকে ছাগলের মল পরীক্ষা করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ছাগলকে নিয়মিত কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়াতে হবে।

১-৪ মাস পর্যন্ত বাচ্চা দের কৃমি মুক্ত করার পদ্ধতি:

বাচ্চা ছাগল, ভেড়া, গাড়ল:- বিভিন্ন খামারী এরং ছাগল পালন কারীর সাথে আলোচনা করে এবং নিজে অভিজ্ঞতা থেকে একটি সাধারণ বিষয় লক্ষ্যণীয় হল ছাগলের ক্ষেত্রে বাচ্চা জন্মানোর প্রথম ১ মাস বাচ্চা গুলোর দৈহিক বৃদ্ধি ভাল থাকে এবং দেখতে খুব সুন্দর থাকে কৃমি মুক্ত না করা বাচ্চাগুলো দ্বিতীয় মাস থেকেই আস্তে আস্তে দৈহিক বৃদ্ধি এবং সৈন্দর্য কমতে থাকে, দিন দিন শুকিয়ে যায় আর পেটের সাইজ বড় হতে থাকে,খুবই ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হয়, আবার পায়খানার সাথে সাদা সাদা ফিতা কৃমি,হুক কৃমি,চাবুক কৃমি বের হতে থাকে ।

বাচ্চাগুলো খুবই দূর্বল হয়ে ধীরে ধীরে হাড় চামড়ার সাথে ভেসে উঠে কিছু বাচ্চা মারা যায় আবার কিছু বাচ্চা বছর পার হলেও শরির স্বাস্হ্য খারাপ হতেই থাকে । আমারা খামারে সাধারণতঃএই সমস্যার সন্মুখিন হচ্ছি বা হতে পারি। সেজন্য নিচের নিয়মে ছাগল,গাড়লের বাচ্চাদের কৃমি মুক্ত করতে পারলে খামার কে লাভবান করা সম্ভব।

বাচ্চাকে ১ মাস বয়স হলে নিওট্যাক্স,বা এক্সট্রাস মানুষের সিরাপ জেনেরিক নেইম লিভামিসোল প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ১ এমএল হিসেবে খাওয়াতে হবে । (বিঃদ্রঃ কৃমির প্রভাব দেখা দিলে ১৫দিন বয়স থেকেও দেওয়া যেতে পারে।) দুই মাস বয়স পূর্ন হলে এলটিভেট জেনেরিক নেইম লিভামিসোল + ট্রাইক্লাবেন্ডাজল ৪০ কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ১ টি ট্যাবলেট হিসেবে খাওয়াতে হবে ।

তিন মাস বয়স হলে এমেকটিন প্লাস জেনেরিক নেইম আইভারমেকটিন + ক্লোরসুলন ২৫ কেজি হিসেবে ১ এমএল চামড়ার নীচে ইঞ্জেকশন দিতে হবে। চার মাস বয়স হলে প্যারাক্লিয়র ফেনবেন্ডাজল গ্রুপের ট্যাবলেট ১০-২০ কেজির জন্য ১ টি । তার ৭-৮ মাস পূর্ণ হলে বড় ছাগলের রুটিনে কৃমি মুক্ত করতে হবে ।

বাচ্চা গাড়ল, ভেড়া, ছাগলের ক্ষেত্রে যেহেতু ১-২ মাসের অধিক সময় পর্যন্ত মায়ের দুধ পান করে তাই কৃমির ঔষধ খাওয়ানোর পর লিভারটনিক না খাওয়াতে পারলে তেমন কোন সমস্যা হবে না আর ৩-৪ মাসে কৃমির ঔষধের দেওয়ার পর লিভারটনিক খাওয়াতে হবে ।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ২৫, ২০২২ ৮:৩১ পূর্বাহ্ন
কুমিরের মুখ থেকে বেঁচে ফিরল গরু
প্রাণিসম্পদ

সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে কুমিরের মুখ থেকে বেঁচে ফিরেছে একটি গরু।

রবিবার (২৪ জুলাই) বিকালে মোংলা উপজেলার জয়মনি এলাকার চাঁদপাই ফরেস্ট লঞ্চঘাট সংলগ্ন শ্যালা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, বিকালে জয়মনি এলাকার শ্যামল মজুমদারের একটি গরু শ্যালা নদীতে পানি খেতে নামে। এসময় একটি কুমির গরুটির পিছনে এসে আক্রমণ করে। কুমিরটি পা টেনে গরুটিকে গভীর পানিতে টেনে নিতে লাগলে গরুটি পাল্টা প্রতিরোধ করে এবং কুমিরকে নিয়ে উপরে উঠে আসে।

পরে স্থানীয়রা দ্রুত এগিয়ে আসলে কুমিরটি গরুর পা ছেড়ে নদীতে ফিরে যায়।

গরুর মালিক বলেন, কুমিরের আক্রমণে গরুর পেছনের রান ও দুই পা জখম হয়েছে। রান ও পায়ের কয়েক জায়গার মাংস কামড়ে থেঁতলে গেছে। গরুটিকে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, নদীতে পানি খেতে নেমে একটি গরু কুমিরের আক্রমণের শিকার হয়। কুমির কামড়ে থাকা অবস্থাতেই গরুটি উপরের দিকে উঠে আসে। বনবিভাগ গরুটি উদ্ধার করে মালিকের কাছে হস্তান্তর করেছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ২৪, ২০২২ ৫:৩৩ অপরাহ্ন
নিরাপদ মাছ উৎপাদন ও সরবরাহে কাজ করছে সরকার: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ

নিরাপদ মাছ উৎপাদন ও সরবরাহে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

রবিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২২ উদযাপন উপলক্ষ্যে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র সংলগ্ন মাঠে আয়োজিত কেন্দ্রীয় মৎস্য মেলা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা জানান।

এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশে অতীতে মাছের মান নিয়ন্ত্রণে কোন আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন পরীক্ষাগার ছিল না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে আন্তর্জাতিক মানের পরীক্ষাগার স্থাপন করেছেন। মাছের খাবার এবং যে মাছ রপ্তানি করা হবে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এখন সম্ভব হচ্ছে। সরকারের পদক্ষেপের কারণে বাজারে এখন ফরমালিনের প্রয়োগ নেই। মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাসহ সরকারের অন্যান্য পর্যায়ের কর্মকর্তারা দেখভাল করছে।

নিরাপদ মাছ ছাড়া ক্ষতিকর কোন মাছ বাজারে বা অন্য কোন জায়গায় বিক্রি হবে না। যে মাছ ক্ষতিকর তা উৎপাদনও কেউ যাতে করতে না পারে সে বিষয়ে সরকার কাজ করছে।

মন্ত্রী জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের মৎস্য খাতকে সমৃদ্ধ করার জন্য সর্বপ্রথম গণভবন লেকে মাছের পোনা অবমুক্ত করেছিলেন। তার ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৎস্য খাতকে সমৃদ্ধ করার জন্য যেখানে যেভাবে বিনিয়োগ দরকার সেখানে সেভাবে বিনিয়োগ করছেন। তার লক্ষ্য মাঝে যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি, শুধু এখানে থেমে থাকলে হবে না। ব্যাপক উৎপাদন করে বিদেশে রপ্তানি করে বিদেশ থেকে আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করব। সে অর্থ দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। এ খাতকে আরও সম্প্রসারিত করার জন্য বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে। যারা এগিয়ে আসবে রাষ্ট্র তাদের সব ধরনের সহায়তা দেবে।

তিনি আরও বলেন, মাছ হবে খাবারের একটা বড় অংশ। মাছ হবে পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা মেটানোর একটা সহায়ক খাত। বেকারত্ব দূর করা, উদ্যোক্তা তৈরি, গ্রামীণ অর্থনীতি সচল করা এবং বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশের সমৃদ্ধির একটি বড় খাত হবে মাছ।

এর আগে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাককে সাথে নিয়ে কেন্দ্রীয় মৎস্য মেলায় বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছোট মনির এমপি ও মোছা. শামীমা আক্তার খানম এমপি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. হেমায়েৎ হুসেন, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদসহ মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।

এদিন সকালে গণভবনে থেকে ভার্চুয়ালি জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২২ ও কেন্দ্রীয় মৎস্য মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শুরু হওয়া কেন্দ্রীয় মৎস্য মেলা আগামী তিন দিন অনুষ্ঠিত হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ২৪, ২০২২ ৫:১৮ অপরাহ্ন
বাফিটার উদ্যোগে সিলেটের বানবাসিদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ
প্রাণ ও প্রকৃতি

বাংলাদেশ এগ্রো ফিড ইনগ্রিডিয়েন্টস ইম্পোর্টার্স এন্ড ট্রেডার্স এসোসিয়েশন এর উদ্যোগে সিলেটে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়।

গত শুক্রবার (১ জুলাই) বাংলাদেশ এগ্রো ফিড ইনগ্রিডিয়েন্টস ইম্পোর্টার্স এন্ড ট্রেডার্স এসোসিয়েশন সিলেটের বানবাসিদের মাঝে বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন

দেশের কৃষিখাত সংশ্লিষ্ট প্রাণীজ (পোল্ট্রি, মৎস্য ও ডেইরী) খাদ্য উৎপাদণ শিল্পের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডার হিসাবে প্রাণীজ খাদ্য তৈরির উপকরণসমূহ আমদানি ও সরবরাহকারীদের একমাত্র প্লাটফর্ম বাংলাদেশ এগ্রো ফিড ইনগ্রিডিয়েন্টস ইম্পোটার্স এন্ড ট্রেডার্স এসোসিয়েশন সিলেটে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় রাধানগর, জাফলং, গোয়াইনঘাট, এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ২৩, ২০২২ ৭:০৪ অপরাহ্ন
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষ্যে হাতিরঝিলে বর্ণাঢ্য নৌ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত
প্রাণিসম্পদ

জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষ্যে হাতিরঝিলে বর্ণাঢ্য নৌ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (২৩ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর হাতিরঝিলে এ নৌ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। নৌ শোভাযাত্রায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

শোভাযাত্রা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ‘নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে এ বছর জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন হচ্ছে। ভাতে-মাছে বাঙালির ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা কাজ করছি। যেখানে পানি আছে অর্থাৎ লেক, নদী, পুকুর সর্বত্রই মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং নিরাপদ মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য নৌ শোভাযাত্রার কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।

এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, আগামীকাল (২৪ জুলাই) বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন এবং মৎস্য সেক্টরে যারা ভালো অবদান রেখেছেন তাদের পদক প্রদান করবেন।

তিনি আরও যোগ করেন, সরকার চায় নদী-নালা, খাল-বিল, হাওড়-বাওড় যেন মুক্ত থাকে এবং মাছ চাষের জন্য উপযোগী অবস্থায় থাকে। পরিবেশ যেন দূষণ না হয়, পানি যেন দূষণ না হয়। মা মাছ ও জাটকা ধরা থেকে সবাই যেন বিরত থাকে। যাতে মাছ বৃদ্ধি পেয়ে আমাদের সমৃদ্ধি নিয়ে আসে।

মৎস্য খাতের ভবিষ্যত পরিকল্পনা সংক্রান্ত সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের মাছের চাহিদা মেটানোর সক্ষমতা আমাদের হয়েছে। ভবিষ্যতে মাছ রপ্তানি করে আমরা বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে চাই। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে দেশের সমৃদ্ধিতে মৎস্য খাত ভূমিকা রাখবে সেটাই লক্ষ্য।

নৌ শোভাযাত্রায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব এ টি এম মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. হেমায়েৎ হুসেন, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদসহ মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, নৌপুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ও মৎস্যজীবী সমিতির সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।

এদিন সকালে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২২ এর কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বণার্ঢ্য সড়ক শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ২৩, ২০২২ ৬:৩৬ অপরাহ্ন
প্রাণিসম্পদ দফতরের জনবল সংকটে বিপাকে খামারিরা
প্রাণিসম্পদ

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে জনবল সংকট রয়েছে। যার ফলে, প্রাণিসম্পদ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন খামারি-উদ্যোক্তারা। নানাবিধ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের। সমস্যা দেখা দিলে পাচ্ছেন না দ্রুত কোন সমাধান।

তথ্যানুযায়ী, ১১টি পদের মধ্যে ৬টি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। শূন্যপদ গুলো যথাক্রমে- ভেটেরিনারি সার্জন (ভিএস) একজন, উপজেলা লাইভ-ষ্টক অফিসার (ইউএলএ) একজন, কৃত্রিম প্রজনন সহকারী (ভিএফএ) দুইজন, কম্পাউন্ডার একজন, এমএলএসএস একজন। এ দিকে গবাদিপশুর প্রাণঘাতী রোগের প্রতিষেধক (পিপিআর) ভ্যাকসিন না থাকায় ঝুঁকির আশংকা করছেন খামারিরা।

কর্তৃপক্ষের দাবি, চাহিদাপত্র পাঠালেও এখনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। তবে, অন্যান্য ঔষধ ও প্রতিষেধক ভ্যাকসিনের মজুদ ও চিকিৎসা সেবা প্রদান স্বাভাবিক রয়েছে। অপর দিকে খামারিদের অভিযোগ, তারা প্রত্যাশিত চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ পাচ্ছে না। সময় মতো ডাক্তার না থাকায় পরামর্শ ও চিকিৎসা পাওয়া যায় না।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. জি. এম. আব্দুল কুদ্দুস জানান, আন্তরিকতা থাকা স্বত্বেও জনবল, ঔষধ ও প্রতিষেধক প্রয়োজনের তুলনায় প্রাপ্তি অপ্রতুল হওয়ায় সেবা প্রত্যাশী খামারি ও গৃহস্থলী গবাদিপশু পালনকারী সবাইকে খুশি করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী উপজেলা গবাদি পশু গরুর সংখ্যা ৯৮ হাজার পাঁচশ বিশটি। এর মধ্যে দেশিগরু ৫৫ হাজার ৩৩০টি ও সংকর জাতের গরু ৪৩ হাজার ১শ’ ৯০টি। গাভী ৪০ হাজার ৬ ৪০টি। এর মধ্যে দেশি গাভী ২৬ হাজার ৪শ ৬০টি ও সংকর জাতের গাভী ১৪ হাজার২২০টি। সক্ষম গাভী ৩৬ হাজার ৫১০টি। এর মধ্যে দেশি ২৩ হাজার ৭২০টি ও সংকর জাতের ১২ হাজার ৭৯৮টি।

ছাগলের সংখ্যা এক লাখ ৩০ হাজারটি। আর ভেড়া ১০৪টি। খামারির সংখ্যা গাভী ৬২টি, হৃষ্টপুষ্ট করণ ১২০টি, ছাগল ১৫৭টি ও ভেড়া ১টি। পোল্ট্রি খামারির সংখ্যা লেয়ার ২০টি, ব্রয়লার ৫৫, হাঁস ২২, কবুতর ১০ ও কোয়ের ৫টি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুলাই ২৩, ২০২২ ৩:০৯ অপরাহ্ন
নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত মাছ সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া সরকারের লক্ষ্য: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ

নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত মাছ সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া সরকারের লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

শনিবার (২৩ জুলাই) সকালে রাজধানীর মৎস্য ভবনে মৎস্য অধিদপ্তরের সভা কক্ষে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

মৎস্য খাতে বাংলাদেশ একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী এ সময় বলেন, এখন আমাদের লক্ষ্য নিরাপদ মাছ উৎপাদন। শুধু মাছের উৎপাদন বাড়ালেই হবে না, নিরাপদ ও পুষ্টিকর মাছ উৎপাদনে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে। ভোক্তার কাছে আমরা নিরাপদ মাছ পৌঁছে দিতে চাই। এ লক্ষ্য নিয়ে ২৩ জুলাই থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২২ উদযাপন হচ্ছে।

মন্ত্রী আরও জানান, মিঠা পানির মাছ, সামুদ্রিক মাছ সব ক্ষেত্রে আমাদের অভাবনীয় সাফল্য এসেছে। বিগত ১৬ বছরের ব্যবধানে মাছের উৎপাদন দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের মোট জিডিপির ৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপির ২৬ দশমিক ৫০ শতাংশ মৎস্যখাতের অবদান। বিশ্বে অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মৎস্য আহরণে বাংলাদেশ ৩য়, বদ্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে ৫ম, ইলিশ উৎপাদনে ১ম ও তেলাপিয়া উৎপাদনে ৪র্থ স্থানে রয়েছে। এ অর্জন সম্ভব হয়েছে উদ্যোক্তাদের আগ্রহ এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার কারণে।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, একটা সময় মৎস্য খাতে যথাযথ পরিচর্যা না হওয়ায় ও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় মাছের আকাল দেখা দিয়েছিল। আমাদের নিজস্ব যেসব মাছ তার একটা বিশাল অংশ হারিয়ে গিয়েছিল। ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ৩৬ প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় মাছ আবার ফিরিয়ে আনা হয়েছে। মাছ যাতে হারিয়ে না যায় সেজন্য ময়মনসিংহে লাইভ জিন ব্যাংক করা হয়েছে, যেখানে শতাধিক প্রকারের মাছ থাকবে। কোথাও কোন মাছ হারিয়ে যাওয়ার মত অবস্থা হলে তার রেণু ও পোনা ছড়িয়ে দেওয়া যাবে। এছাড়া নিজস্ব গবেষণা থেকে সুবর্ণ রুই নামক একটি দ্রুত বর্ধনশীল ও অধিক উৎপাদনশীল মাছ উদ্ভাবন করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী আরও বলেন, বন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশাল সমুদ্র জয়ের পর এর অভ্যন্তরে কত প্রকার মাছ আছে, কী সম্পদ আছে, প্রচলিত-অপ্রচলিত মাছ আছে সেগুলো অনুসন্ধান করার জন্য আমাদের মীন সন্ধানী জাহাজ কাজ করছে। বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় প্রচলিত-অপ্রচলিত বিশাল মৎস্য ভান্ডার রয়েছে। এই মৎস্যসম্পদ এক সময় আমাদের বড় ধরনের আয়ের উৎস হতে পারে। সে জায়গায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তরসমূহ কাজ করছে। সমুদ্রসীমায় আমাদের কূটনৈতিক সাফল্যের ধারাবাহিকতায় গভীর সমুদ্রে টুনা ও সমজাতীয় পেলাজিক মাছ আহরণে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

মাছ রপ্তানির প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ইলিশ পূর্বেই আমাদের ভৌগলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য ছিল। ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে নতুন সংযুক্ত হয়েছে আমাদের বাগদা চিংড়ি। বিশ্বপরিমণ্ডলে বাগদা এখন বাংলাদেশের হিসেবে পরিচিত। এটি বিশ্বপরিমন্ডলে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করেছে। পৃথিবীর প্রায় ৫২ টি দেশে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আমাদের মাছের চাহিদা রয়েছে। এসব দেশে বিভিন্নভাবে মাছ রপ্তানি হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ও তার সরকারের ব্যবস্থাপনায় মাছের মান নিয়ন্ত্রণে দেশে তিনটি অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরী স্থাপন করা হয়েছে। এখানে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা সম্ভব হবে। কোন দেশেই যাতে মাছের সাথে বিষাক্ত উপাদান না যায়, এটা আমরা নিশ্চিত করছি।

করোনায় বিশ্বের অনেক দেশের মৎস্য খাতে বিপর্যস্ত অবস্থা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, এ সময় আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে তিনটি দেশ মৎস্য উৎপাদনে সাফল্য দেখিয়েছে। এ তিনটি দেশের একটি বাংলাদেশ, অপর দুটি দেশ মিশর ও ভিয়েতনাম। করোনার সময় মৎস্য উৎপাদনকারীরা বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়লে তাদের জন্য সরকার ভ্রাম্যমান বিক্রয় ব্যবস্থা চালু করেছে। সে সময় মাছের খাদ্য বিদেশ থেকে আনার ক্ষেত্রে যেসব প্রতিকূলতা ছিল সেগুলো রাষ্ট্রীয়ভাবে মোকাবিলা করা হয়েছে। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষিদের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য নগদ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকাকালে যাতে মৎস্যজীবীরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য তাদের পর্যাপ্ত সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। বিকল্প কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার জন্য বিনামূল্যে বিভিন্ন উপকরণ দেওয়া হচ্ছে, প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ লক্ষ ৯৯ হাজার মেট্রিক টন, ২০২০-২১ অর্থবছরে তা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৫ লক্ষ ৬৫ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। ইলিশের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করতে সরকার কাজ করছে। যাতে দেশের সব প্রান্তিক মানুষ ইলিশের স্বাদ নিতে পারে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার ও মো. আব্দুল কাইয়ূম, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. হেমায়েৎ হুসেন, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদসহ মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এদিন সকালে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২২ এর কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বণার্ঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। শোভাযাত্রায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের মন্ত্রী বলেন, নিরাপদ মাছ নিশ্চিত করার জন্য আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছি। মাছ বাঙালি জাতির কৃষ্টির অন্যতম অংশ। ভাতে-মাছে বাঙালির সে ঐতিহ্য আমরা ফিরিয়ে আনতে চাই। মাছ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে চাই। মাছ চাষের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর হবে, উদ্যোক্তা তৈরি হবে এবং গ্রামীণ অর্থনীতি সচল হবে।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop