২:২৩ পূর্বাহ্ন

শনিবার, ১৬ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : এপ্রিল ১৭, ২০২১ ২:২৭ অপরাহ্ন
উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে কৃষি
কৃষি গবেষনা

।।অর্ঘ্য চন্দ।।
বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান জীবনীশক্তি হচ্ছে কৃষি। আবহমানকাল ধরে বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে কৃষির রয়েছে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। বর্তমানে বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদন তথা জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ১৩.৬ শতাংশ। খাদ্যশস্য উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের স্থান দশম।

ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে দানাদার খাদ্যশস্যের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪১৫.৭৭ লাখ মেট্রিক টন, উৎপাদন হয়েছে ৪৫৩.৪৪ লাখ মেট্রিক টন, যার ফলে দেশ আজ দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ২০০৬ সালে দানাদার খাদ্যশস্যের উৎপাদন ছিলো ২৬১.৩৩ লাখ মেট্রিক টন। এক ও দুই ফসলি জমি অঞ্চল বিশেষে চার ফসলি জমিতে পরিণত করা হয়েছে এবং দেশে বর্তমানে ফসলের নিবিড়তা ২১৬% যেখানে ২০০৬ সালে দেশে ফসলের নিবিড়তা ছিলো ১৮০%।

ধান উৎপাদনে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। খরা, লবণাক্ততা, জলমগ্নতা সহনশীল ও জিংকসমৃদ্ধ ধানসহ এ পর্যন্ত ধানের ১৩৪টি উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। এতে ধান উৎপাদন ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০০৬ সালে শাকসবজির উৎপাদন ছিল ২০ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন যেখানে ২০১৯-২০ অর্থবছরে সবজি উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৮৪ লাখ ৪৭ হাজার মেট্রিক টন। যার ফলস্বরূপ সবজি উৎপাদনে বিশ্বে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। এছাড়াও আম উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে সপ্তম।

২০০৯ থেকে বিভিন্ন ফসলের ৬৩১টি উচ্চ ফলনশীল নতুন নতুন জাত ও ৯৪০টি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। ভাসমান বেডে চাষাবাদ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সবজি ও মসলা উৎপাদন অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ভাসমান বেডে চাষাবাদ পদ্ধতিটিকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা ২০১৫ সালে কৃষিতে বাংলাদেশের বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে।

২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত বিআরআরআই কর্তৃক ধানের ৫৫টি জাত, বিএআরআই কর্তৃক বিভিন্ন ফসলের ২৫৮টি জাত, বিজেআরআই কর্তৃক পাটের ১৫টি জাত, বিএসআরআই কর্তৃক ইক্ষুর ৯তি জাত ও সুগার বিট, তাল ও স্টেভিয়ার ৪টি জাত, সিডিবি কর্তৃক তুলার ১০টি জাত এবং বিআইএনএ কর্তৃক বিভিন্ন ফসলের ৬৮টি জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। সরকার ২০১৮ সালে গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছে। এর ফলে গম ও ভুট্টা গবেষণা আরো সম্প্রসারিত হবে। দেশের জনগণের পুষ্টি চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পুষ্টিবিষয়ক গবেষণা কার্যক্রম সম্পাদন, জনসচেতনতা সৃষ্টি ও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। বাংলাদেশ এখন টেকসই খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

তাছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যখন লকডাউনে ঘরবন্দি, ঠিক সেই সময়েও মাঠে ছিলেন বাংলার কৃষকরা। তাদের উৎপাদিত ফসলই বাঁচিয়ে রেখেছে ঘরবন্দি ১৬ কোটি মানুষের জীবন। বাঁচিয়ে রেখেছে আমাদের অর্থনীতি। করোনাকালে কৃষির এই অবদান আমাদের আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে – কৃষিই আসল ভরসা।

কৃষকের এই অবদানের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে তার উৎপাদিত পণ্যের সঠিক বাজারজাতকরণ ব্যবস্থা খুবই প্রয়োজন। সর্বোচ্চ উৎপাদন ও সুষ্ঠ বাজারজাতকরণ কেবল করোনা সংকটে নয়, দীর্ঘমেয়াদে খাদ্য নিরাপত্তা রক্ষায়ও অবদান রাখবে। বর্তমান সময়ে এদেশের উন্নতির জন্য কৃষিবিদদের অবদান প্রশংসনীয়।

কৃষিবিদদের হাতেই সৃষ্টি হচ্ছে ফসলের নতুন নতুন জাত কিংবা ফসল উৎপাদনে আধুনিক প্রযুক্তি। কৃষি বিজ্ঞানিদের গবেষণায় ফসলের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবনের ফলে দেশ আজ খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির বিভিন্ন সূচকে বিশ্বের জন্য পথিকৃৎ। কৃষিতে এ সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়েছে সাধারণ কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং কৃষিবিদ ও কৃষিবিজ্ঞানীদের নিরলস গবেষণার ফলে। এগিয়ে যাক আমাদের কৃষি, এগিয়ে যাক আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি।

লেখক: শিক্ষার্থী (৪র্থ বর্ষ) , কৃষি অনুষদ
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট –৩১০০

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৬, ২০২১ ১০:২৪ পূর্বাহ্ন
পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে চাষিরা
কৃষি গবেষনা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার পান চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবসহ নানা কারণে দিন দিন কমে যাচ্ছে পান চাষের পরিমাণ। ফলে এ অঞ্চলে পান চাষ প্রায় বিলুপ্তির পথে। কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন কমে যাচ্ছে এই চাষের প্রতি।

পান চাষিদের অভিযোগ, সরকারি কোনো সাহায্য সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে না পান চাষের জন্য। ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে যেকোনো ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলে সরকার তাদের সহায়তা করে কিন্তু পানের বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হলে চাষিদের পাশে কেউ দাঁড়ায় না।

পান চাষিরা আরো জানায়, পানের বরজ তৈরি করে পানের লতা লাগিয়ে ভাল ফলন পেলেও সার কীটনাশক ব্যবহারে পানের রোগ ঠেকাতে পারছেন না তারা। তাই পানের বরজ বাদ দিয়ে অন্য ফসল ফলানোর দিকে ঝুঁকে পড়ছে পান চাষিরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জগলুল হায়দার জানান, পান চাষের উপর কৃষি বিভাগের কোনো কাযর্ক্রম নেই। তবে চাষীরা যদি সহযোগিতা চান তাহলে পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করা হবে। আমরা পান চাষে কৃষকদের আগ্রহী করে তুলছি বলেও তিনি জানান।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১১, ২০২১ ৬:০৫ অপরাহ্ন
খুবিতে পেঁয়াজ গবেষণাতে চমকঃ
কৃষি গবেষনা

খুবির গবেষণায় সাফল্য, ফরিদপুরী জাতের পেঁয়াজের হেক্টর প্রতি উৎপাদন হয়েছে ১৬ মেট্রিক টন

মাটি ও সার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে #দেশী_পেঁয়াজের_উৎপাদন_দ্বিগুণ করা সম্ভব

কেননা বাজারে যতই কম দামের পেঁয়াজ পাওয়া যাক , দেশি পেঁয়াজে ঝাঝ  বেশি থাকায় ভোক্তাদের চাহিদা দেশি পেঁয়াজে ই বেশি থাকে । তাই আমাদের এই দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে ।

আমাদের দেশে যে পেঁয়াজ উৎপাদিত হয় তার আকার ও ওজন কম। সাধারণভাবে গড় ওজন ২০-৫০ গ্রাম। ফলে সামগ্রিক উৎপাদন কম হয়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সয়েল, ওয়াটার এন্ড এনভায়রনমেন্ট ডিসিপ্লিনের গবেষকরা মাটি, জৈব সার ও সেচ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফরিদপুরী দেশী জাতের পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধি নিয়ে একটি গবেষণা পরিচালনা করেন। সম্প্রতি এই গবেষণার কাজ শেষ হয়েছে। গত ৫ এপ্রিল গবেষণা মাঠের পেঁয়াজ উত্তোলন করে দেখা যায় আশানুরূপ ফলন হয়েছে। এই গবেষণা প্লটের গড় পেয়াজের আকার বড় এবং ওজন ৬০-১০০ গ্রাম পর্যন্ত। এই ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করে কৃষকরা পেঁয়াজ চাষ করলে বর্তমান পেঁয়াজের ফলন শতকরা ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি সম্ভব। এর ফলে দেশ পেঁয়াজ উৎপাদনে সয়ম্ভর, এমনকি উদ্বৃত্ত হতে পারে।

পেঁয়াজ চাষের গবেষক ছিলেন ঐ ডিসিপ্লিনের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নিশান। এ ব্যাপারে গবেষণা প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক সয়েল, ওয়াটার এন্ড এনভায়রনমেন্ট ডিসিপ্লিনের প্রফেসর মোঃ সানাউল ইসলাম জানান, আমাদের দেশে পেঁয়াজের চাহিদা বাৎসরিক ২৪ লাখ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয় প্রায় ২৩ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন। পচনসহ ঘাটতি ধরা হয় সাড়ে ৭ লাখ মেট্রিক টন। মাটি, জৈব সার ও সেচ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দেশে উৎপাদন ১০ লাখ টন পর্যন্ত বৃদ্ধি সম্ভব। এছাড়া একই জমিতে আগামী ও নাবি দু’জাতের পেঁয়াজ চাষ করলে ৪-৫ লাখ টন পেঁয়াজ অতিরিক্ত উৎপাদন সম্ভব। কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং চাষ পদ্ধতির উন্নতি করতে পারলে দেশ অচিরেই চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত পেঁয়াজ উৎপাদনে সক্ষম হতে পারে। তিনি আগামী বছর এই মৌসুমে উপকূলীয় লবণাক্ত বটিয়াঘাটা-দাকোপ এলাকাতে গবেষণা চালাবেন। তিনি আরও জানান, গবেষণা প্লটের মধ্যে মাটি, সার ও সেচ ব্যবস্থাপনা নেওয়ায় উৎপাদন হয়েছে হেক্টর প্রতি ১৫ টন। উৎপাদিত ৪০-৫০ শতাংশ পেঁয়াজের প্রতিটির গড় ওজন ছিলো ৭০-৯০ গ্রাম।

তিনি জানান, ২৮ দিন বয়সের চারা ফরিদপুর থেকে এনে ১০ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা মাঠে লাগানো হয়। শুষ্ক মৌসুমে (এপ্রিল-মে) গবেষণা প্লটের লবণাক্ততার মাত্রা ছিলো ৪ ডেসিসিমেন্স/মিটার। প্লটের পেঁয়াজ উত্তোলন করা হয় গত ৫ এপ্রিল। ১৮টি পর্যবেক্ষণ প্লটে এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়। সঠিক চারা ও সারি ঘনত্ব, যথযাথ মাটি, সার ও সেচ ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করে আশাতীত ফলন পাওয়া সম্ভব হয়েছে।

এই বড় সাইজের পেঁয়াজ গুলোকে যদি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিউট , কৃষি মন্ত্রণালয়  ও সরেজমিন গবেষণা বিভাগ গুলোর সমন্বিত পদ্ধতির মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে জনপ্রিয় করা গেলে, কৃষক দের সার, বীজ , কীটনাশক , কারিগরি  সহযোগিতা এর মাধ্যমে , তাহলে আমাদের আর বিদেশ থেকে আমদানি নির্ভর থাকতে হবেনা, প্রয়োজনে আমরা রপ্তানি করতে পারবো ।

আর আলু এর মত পেয়াজের ও সংরক্ষণ পদ্ধতি অনেক বড় একটি সমস্যা, এটি চাহিদা অনুযায়ী যোগান দেওয়া গেলে আমরা পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারবো ।

মোঃ আমিনুল খান

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১১, ২০২১ ৫:২৮ অপরাহ্ন
ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষের দিকে আগ্রহ বাড়ছে সিলেটের কৃষকদের
কৃষি গবেষনা

সিলেটের কৃষকরা পতিত পুকুর কিংবা বিলে কচুরিপানা পচিয়ে বেড তৈরি করে এর ওপর নানা জাতের সবজি চাষ করার দিকে আগ্রহী হয়ে উঠছেনে। জেলার বিভিন্ন স্থানে ইতোমধ্যে ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষের এই প্রবনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ফলনও হচ্ছে ভালো।

জানা যায়, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট (বারি) সিলেট এর সহযোগিতায় সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ এবং হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় শুরু হয়েছে ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ প্রকল্পের কাজ।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট (বারি) সূত্রে জানা যায়, সরেজমিন গবেষণা বিভাগ সিলেটের ব্যবস্থাপনায় ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ গবেষণা, সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ প্রকল্পের মাধ্যমে এ অঞ্চলে ভাসমান বেডে কৃষকদের সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। কৃষকদের সব ধরণের কলাকৌশলের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরামর্শ এবং চাষাবাদ প্রক্রিয়া হাতে কলমে শেখানো হয়। সবকিছু জেনে নেয়ার পর কৃষকরা ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ শুরু করেন। একজনের সফলতা দেখে অন্যজন একি রকম চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এখন পর্যন্ত সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার রূপশাল এবং ফেঞ্চুগঞ্জের কটালপুর গ্রামে প্রাথমিক ভাবে বিনামূল্যে তৈরি ১৫০টি বেডের মাধ্যমে এসব এলাকায় সবজি ও মসলা উৎপাদিত হচ্ছে। উৎপাদিত চাষে কীটনাশক ও রাসায়নিক সার লাগেনা। ফলে সবজির গুনগত মান ও স্বাদ অক্ষুন্ন থাকে। তিনি আরো জানান, ভাসমান বেডে সবজি চাষ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য এলাকায়ও ভাসমান বেডে সবজি চাষ কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হবে।

জানা যায়, সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার রূপশাল গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন গত ৩বছর যাবত এই পদ্ধতিতে সবজি ও মসলা চাষে সম্পৃক্ত রয়েছেন। আবুল হোসেন এর ভাসমান বেড সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, তিনি ভাসমান বেড তৈরি করে তার ওপর চাষ করছেন টমেটো, বেগুন, কাচা মরিচ, লাল শাক, কলমি শাক, ঢেঁড়শ, বরবটি, লাউ ও সিম। যা একদিকে তাদের পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা মিটাতে সক্ষম হচ্ছে, অন্যদিকে আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছেন। আবুল হোসেন এর ভাসমান বেডে সবজি চাষ দেখে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা ও আগ্রহ বাড়ছে।

কৃষক আবুল হোসেন জানান, সরেজমিন গবেষণা বিভাগ সিলেটের সহযোগিতায় “ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ গবেষণা, স¤প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ” প্রকল্পের আওতায় ভাসমান বেড তৈরি করে তাতে নানা জাতের সবজির চাষ অব্যাহত রেখেছি। আগামীতে আরও বেশি বেড তৈরি করে সবজি চাষ করবেন বলে তিনি জানান। ২০ ফুট গভীর পানির ওপর ভাসমান বেড করা খুবই কষ্টসাধ্য। কষ্ট হলেও আমরা সাফল্য পেয়েছি। বাজারে এই বেডের সবজির প্রচুর চাহিদা রয়েছে।

ভাসমান বেডের তত্তাবধানের নিয়োজিত বৈজ্ঞানিক সহকারী রায়হান জানান, একই বেডে এক সবজি তোলার পর অন্য সবজি চাষ করা যায়। ভাসমান বেডে উৎপাদিত সবজি জৈব পদ্ধতিতে তৈরি হয় বলে প্রযুক্তিটি পরিবেশ বান্ধব ও সবজি স্বাস্থ্য ঝুঁকিমুক্ত। তাছাড়া খরচও তুলনামূলক কম। ফলে কৃষক বেশি দামে বিক্রি করে লাভবান হতে পারেন।

সরেজমিন গবেষণা বিভাগ (বারি) সিলেটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মাহমুদুল ইসলাম নজরুল জানান, সিলেটের অনেক পুকুর এবং খাল-বিল প্রায় সারা বছরই পতিত অবস্থায় পড়ে থাকে। এসব জায়গায় ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ করলে এর ঘাটতি পূরণ সহ আর্থিক ভাবে লাভবান হবেন কৃষকরা। সিলেট অঞ্চলে এখনো সবজির প্রচুর ঘাটতি রয়েছে। তাই সিলেটে ভাসমান বেডে পানির স্বল্প খরছে সবজি চাষ ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পেলে পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে আর্থিক ভাবেও কৃষকরা লাভবান হতে পারেন।

তিনি আরো জানান, বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিদের্শনা মতে, দেশের প্রতিটি ইঞ্চি জমির ব্যবহার ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের বিবেচনায় ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা উৎপাদন পদ্ধতি বিস্তার প্রয়োজন। কৃষি বান্ধব সরকারের সার্বিক সহযোগিতায় কৃষকদের কল্যাণে এ পদ্ধতির সবজি ও মসলা চাষে সহযোগিতা আরো বৃদ্ধি পাবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১০, ২০২১ ১০:৪২ পূর্বাহ্ন
বশেমুরকৃবি‘র গবেষণায় শিমের নতুন জাত উদ্ভাবন
কৃষি গবেষনা

কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রফেসর ড. মো. গোলাম রসুল‘র নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক শিমের নতুন জাত উদ্ভাবন করেছেন। এটি অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় বীজ বোর্ড।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে বাংলাদেশে বছরে ২০ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে ১ লাখ ৪৪ হাাজর ৫০ টন সিম উৎপাদিত হচ্ছে (বিবিএস, ২০২০)। দেশের প্রায় সব জাতগুলো মৌসুমের একই সময়ে ফলন দেয় এবং বেশিরভাগ চাষি একই সময়ে তাদের শিম বাজারে নিয়ে আসেন। এতে করে শিমের বাজারমূল্য হ্রাস পায়। তাছাড়া খরা, লবণাক্ততা, অতিবৃষ্টি, পোকামাকড় (এফিড) বা রোগবালাইয়ের আক্রমণে উৎপাদন কমে যায়।

বাংলাদেশের মোট আয়তনের ৩৭% উপকূলীয় এলাকা। ওই এলাকাতে চাষ উপযোগী সবজি তথা শিমের অনুমোদিত উফশি তেমন জাত নেই। এমতাবস্থায়, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা, টেকসই খাদ্য উৎপাদন বজায় রাখা এবং খরা, অতিবৃষ্টি ও লবণাক্ততার প্রভাব প্রতিরোধসহ বিস্তৃত উপকূলীয় এলাকায় চাষযোগ্য নতুন জাত উদ্ভাবনই সর্বোত্তম ও বিকল্প উপায়।

এই জাতের বীজ রোপণ করতে হবে গোবর-মাটির মিশ্রণে ভরা (অর্ধেক-অর্ধেক) ছোট পলিথিন ব্যাগে। চারা গজালে মাঠে গর্তে লাগাতে হবে। প্রতি গর্তে ১০ কেজি পচা গোবর, ১০ গ্রাম ইউরিয়া (দুইবারে), ৩০ গ্রাম টিএসপি ও ২০ গ্রাম পটাশ সার প্রয়োগ করতে হবে। এক কঞ্চি বিশিষ্ট বাউনি বা মাচা চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।

কৃষি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নতুন বিইউ শিম-৭ জাতটি লবণসহনশীল ও উচ্চফলনশীল। এ জাতটি দেশের বিস্তৃত দক্ষিণাঞ্চলে শীত মৌসুমে পতিত থাকা জমির সুষ্ঠু ব্যবহার ও অধিক পরিমাণ সবজি উৎপাদন বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম হবে।

প্রফেসর ড. মো. গোলাম রসুল জানান, নতুন উদ্ভাবিত এ জাতে গাছপ্রতি ২ দশমিক ৪ থেকে ৩ দশমিক ৫ কেজি সিম উৎপাদিত হয়। সেই হিসেবে হেক্টর প্রতি সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ফলনশীলতা ৩৫ টন।

তিনি বলছেন, ১২ ডিএস/এম লবণাক্ততা সহনশীল হওয়ায় এই জাতের শিম ১৯টি উপকূলীয় জেলাসহ সারাদেশে আবাদ করা সম্ভব। বিশ্বে টাটকা সবজিতে ০.৫ থেকে ৩২.০ মাইক্রোগ্রাম/গ্রাম অ্যান্থসায়নিন পাওয়া যায়। নতুন জাতটিতে উচ্চমাত্রায় অ্যান্থসায়ানিনের উপস্থিতি নিশ্চিত করা গেছে।

অ্যান্থসায়নিন হলো পোলিফেনোলিক রঞ্জক যা পরাগায়নে সাহায্যকারী পতঙ্গ এবং বীজ বিস্তারককে আকর্ষণ করে ফসলের বংশ বিস্তারের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে গাছকে সুরক্ষায় ভূমিকা রাখে। শাকসবজিতে প্রাপ্ত অ্যান্থসায়নিন মানবদেহের ভাস্কুলার প্রদাহ হ্রাস এবং থ্রম্বোসিস (রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধা) প্রতিরোধে যথেষ্ট কার্যকরী বলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে স্বীকৃত।

প্রফেসর ড. মো. গোলাম রসুল জানান, প্রায় সব জাতের শিমই জাব পোকা এবং জ্যাসিড দ্বারা আক্রান্ত হয়। শীতের অর্থাৎ ফেব্রুয়ারিতে তাপমাত্রা বাড়ার কারণে সিমের প্রধান পতঙ্গ শত্রু। অর্থাৎ এফিড এবং জ্যাসিড মাত্রাতিরিক্তভাবে বংশবিস্তারের কারণে ফসলটি মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়ে ফলন কমে যায়, যা থেকে নতুন জাতটি প্রতিরোধী।

অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে রোপণ করলে ১৩০ দিনে এই সিম সংগ্রহ করা যায়। তবে বীজ সংগ্রহের জন্য আরও ২০ দিন সময় বেশি লাগবে বলে তিনি জানান।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ৯, ২০২১ ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন
গোপালগঞ্জে ভাসমান ধাপে পেঁয়াজ চাষে সাফল্য
কৃষি গবেষনা

গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার নকড়ীরচর গ্রামের ঐতিহ্যবাহী বর্ণির বাঁওড়ে ১২ ভাসমান ধাপে পেঁয়াজ চাষের জন্য কৃষককে আর্থিক সহায়তা, বীজ ও পরামর্শ দেয় সদর উপজেলা কৃষি অফিস। আর তাতে নানারকম সবজি চাষ শেষে এই সময়ের প্রচুর চাহিদাসম্পন্ন ফসল পেঁয়াজ পরীক্ষামূলক চাষে সাফল্য এসেছে।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেকেন্দার আলী জানান, বর্ষা শেষে নভেম্বর মাসে যখন পানি নামতে শুরু করে তখন কচুরিপানা দিয়ে পেঁয়াজ চাষের ধাপ তৈরি করতে হয় ।

কচুরিপানা দিয়ে তৈরি ভাসমান ধাপে পেঁয়াজ চাষে দেশে প্রথমবারের মতো এই সফলতা এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভাসমান ধাপে সবজি ও মসলা চাষে সনাতনী পদ্ধতির পরিবর্তে এসেছে আধুনিক পদ্ধতি। আগে ভাসমান ধাপ দিয়ে বেড বানিয়ে ওপর লতাবিহীন বিভিন্ন শাক ও সবজি উৎপাদন করা হতো।

বর্তমানে লাউ, কুমড়া, ঢ্যাঁড়স, করলার পাশাপাশি উৎপাদন হচ্ছে মসলা জাতীয় ফসল হলুদ ও আদা। এবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভাসমান বেডে পেঁয়াজ চাষ।

ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ গবেষণা সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ বিশ্বাসের পরামর্শে ভাসমান ধাপে প্রথম পরীক্ষামূলক পেঁয়াজ চাষ করা হয়। ভাসমান বেডে সাধারণত পেঁয়াজ ভালো হয় না। কিন্তু গোপালগঞ্জে ভাসমান বেডে পরীক্ষামূলক পেঁয়াজ চাষ সফল হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ১১ টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে বলে তিনি জানান।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ৮, ২০২১ ৫:৩৫ অপরাহ্ন
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এ বছর বোরোর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা
কৃষি গবেষনা

চলতি মৌসুমে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৪ জেলায় ২লাখ ৩৮ হাজার ২৯০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর বোরোর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকরা অধিক জমিতে বোরো চাষ করেছেন বলে জানা গেছে।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৪ জেলা হচ্ছে-নড়াইল, খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতিে মৗসুমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এ ৪ জেলায় মোট ২লাখ ৩৮ হাজার ২শ’৯০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০লাখ ৬১হাজার ৪শ’৪৯ মেট্রিক মেট্রিক টন চাল। এর মধ্যে নড়াইল জেলায় বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৭হাজার ৮শ’৭০ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২লাখ ৬ হাজার ৬শ’১০ মেট্রিক মেট্রিক টন চাল।খুলনা জেলায় বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৭হাজার ৫শ’৪০ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২লাখ ৫৭হাজার ৫শ’৪ মেট্রিক টন চাল। সাতক্ষীরা জেলায় বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮০হাজার হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩লাখ ৫১ হাজার ২শ’ মেট্রিক টন চাল এবং বাগেরহাট জেলায় বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫২হাজার ৮শ’৮০ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২লাখ ৪৬ হাজার ১শ’৩৫ মেট্রিক টন চাল।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,নড়াইল সদর উপজেলার, লোহাগড়া উপজেলার মাঠের পর মাঠ সবুজের সমারোহ।কৃষাণ-কৃষাণীরা বোরো ধানের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।আগাম জাতের পাকা বোরো ধান চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে কাটা শুরু হবে বলে কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকরা জানিয়েছেন। সবুজ ও আধাপাকা বোরো ধানের শীষে প্রকৃতির সৌন্দর্য যেমন বেড়েছে তেমনি অর্থনৈতিক সচ্ছলতার স্বপ্নে বিভোর কৃষাণ-কৃষাণীরা।

নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় জানান,কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে বোরো চাষিদের উদ্বুদ্ধকরণ,পরামর্শ,মাঠ দিবস,উঠান বৈঠক,নতুন নতুন জাতের বীজ সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক চাষিদের প্রয়োজনীয় কৃষি লোন প্রদান করেছে।বাজারে সারেরও কোন সংকট নেই। বিভিন্ন জাতের চালের চাহিদা ব্যাপক থাকায় এ অঞ্চলে বোরো চাষ দিন দিন বাড়ছে বলে তিনি জানান।বাসস

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ৬, ২০২১ ১১:৫৪ পূর্বাহ্ন
তরমুজের স্বাস্থ্য উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ
কৃষি গবেষনা

গ্রীষ্মকালের জনপ্রিয় সুস্বাদু ফল তরমুজ বাজারে উঠতে শুরু করেছে। এই ফলের ৯২ ভাগই পানি। ৬ ভাগ চিনি এবং অন্যান্য উপাদান ২ ভাগ রয়েছে। এটি ভিটামিন এ জাতীয় ফল।

তরমুজের স্বাস্থ্য উপকারিতা

১. হার্টের সুস্থতায়: তরমুজ খেলে ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলকে দূরে রাখা যায় যা হার্ট সংক্রান্ত রোগগুলোকে প্রতিরোধ করতে পারে)। তরমুজে উপস্থিত সিট্রোলিন হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো।

২. শরীর আর্দ্র রাখতে: তরমুজে রয়েছে ৯০ শতাংশ পানি যা শরীরকে বেশ আর্দ্র রাখে।

৩. হজম ক্ষমতা বাড়াতে: তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি যা হজম ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। এ ছাড়া এতে রয়েছে ফাইবার যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও খাবার হজম করিয়ে পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।

৪. একটি তরমুজের বড় টুকরোয় মাত্র ৮৬ ক্যালরি, ২২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ও ১ গ্রামের থেকেও কম ফ্যাট থাকে এবং কোনোরকম কোলেস্টেরল থাকে না। এটি আপনার শরীরের প্রতিদিনের ফাইবারের প্রয়োজনীয়তাকে ৫ শতাংশ মেটায়। যা শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে।

৫. ক্যানসার প্রতিরোধে: তরমুজে থাকা লাইকোপেন ক্যানসারের প্রবণতা অনেকটা কমিয়ে আনে। এই লাইকোপেনের জন্যই তরমুজের রং গাঢ় লাল হয় এবং এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর যা ক্যানসার রোধ করে।

৭. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

তরমুজ ভিটামিন সি তে সমৃদ্ধ যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। এছাড়াও এতে রয়েছে ভিটামিন বি৬ যা অ্যান্টিবডি গঠন করতে সাহায্য করে। এর ফলে শ্বেত রক্ত কণিকা সঠিক পরিমাণে তৈরি হয়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ৪, ২০২১ ১০:১৩ অপরাহ্ন
নড়াইলের ৩ উপজেলায় ২ হাজার ৮৫ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ
কৃষি গবেষনা

নড়াইলের ৩ উপজেলা তথা নড়াইল সদর,লোহাগড়া এবং কালিয়া উপজেলায় এবার গমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এই ৩ উপজেলায় মোট ২ হাজার ৮৫ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। আবাদকৃত জমিতে উচ্চফলনশীল বারি গম-৩০, ৩২ ও ৩৩ জাতের গমের চাষ হয়েছে বেশি। এছাড়া বারি গম-২৫,২৬,২৭,২৮ ও প্রদীপ জাতের গমেরও চাষ হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিপু মজুমদার জানান, এ পর্যন্ত জেলার ৩ উপজেলায় চাষকৃত ৯৫ শতাংশ জমির গম কাটা হয়েছে।বাকি জমির গম কাটা আগামী দু থেকে তিন দিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে।

নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৩ উপজেলায় ২হাজার ৮৫ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৫শ’৬ মেট্রিক টন। গমের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং লাভজনক হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকরাও প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও আগ্রহ সহকারে গমের চাষ করেছেন।

গত বছর থেকে এ বছর ৩শ’১৯ হেক্টর বেশি জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। গম চাষে তেমন কোন খরচ নেই।সামান্য সেচের প্রয়োজন হয়।এ কারণে অনেক চাষি প্রতি বছর গম চাষে মনোযোগী হচ্ছেন-এমনটাই বলেছেন কৃষি কর্মকর্তারা। লাভজনক হওয়ায় অনেক প্রান্তিক ও বর্গাচাষি অর্থকরী এ ফসল চাষে দিন দিন ঝুঁকে পড়ছেন বলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা গেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে আরো জানা গেছে, চলতি মৌসুমে নড়াইলের ৩ উপজেলায় মোট ২ হাজার ৮৫ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে নড়াইল সদর উপজেলায় গমের আবাদ হয়েছে ১হাজার ৮০হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩হাজার ৮শ’৮৮ মেট্রিক টন।লোহাগড়া উপজেলায় গমের আবাদ হয়েছে ৬শ’ ১৫হেক্টর জমিতে।
উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২হাজার ২শ’ ১৪ মেট্রিক টন এবং কালিয়া উপজেলায় গমের আবাদ হয়েছে ৩শ’৯০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১হাজার ৪শ’ ৪ মেট্রিক টন। আবাদকৃত জমিতে উচ্চফলনশীল বারি গম-৩০, ৩২ ও ৩৩ জাতের গমের চাষ বেশি হয়েছে। এছাড়া বারি গম-২৫,২৬,২৭,২৮ ও প্রদীপ জাতের গমের চাষ হয়েছে বলে কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

গমের ভালো ফলনের লক্ষ্যে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে গম চাষিদের উদ্বুদ্ধকরণ,পরামর্শ,মাঠ দিবস,উঠান বৈঠক,নতুন নতুন জাতের বীজ সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।গম চাষে অন্য ফসলের তুলনায় খরচ কম। গমে পোকার আক্রমণ হয় না বললেই চলে।ফলনও বেশি। বাজারে গমের চাহিদা ব্যাপক থাকায় এ জেলায় গমের চাষ দিন দিন বাড়ছে বলে জানান নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ৪, ২০২১ ৭:১২ অপরাহ্ন
মশা কমাবে দেশীয় প্রজাতির খলিসা মাছ
কৃষি গবেষনা

বাকৃবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশের শহর, গ্রাম সর্বত্র মশার উপদ্রবে বিপর্যস্ত। মশার মাধ্যমে মানুষের ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া রোগ। এছাড়া ‘মাইক্রোসেফালি’ যা মশাবাহিত জিকা ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে বলে ধারণা করছেন চিকিৎসকরা। মশা প্রতিরোধে ব্যবহৃত হচ্ছে ক্ষতিকর কীটনাশক। যা পরিবেশ ও মানুষের শরীরের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। এক্ষেত্রে মশা থেকে রক্ষা পেতে জৈবিক পদ্ধতিতে (মশাভুক্ত মাছ) মশা নিধনসহ সমন্বিত উদ্যোগের কথা বলেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. হারুনুর রশীদ। রবিবার এক সাংবাদিক সম্মলেনে এসব কথা বলেন তিনি। সংবাদ সম্মলেনের সভাপতিত্ব করেন মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবুল মনসুর।

ড. হারুনুর রশীদ জানান, মশার বিস্তার রোধে সমন্বিত ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দিতে হবে। সমন্বিত ব্যবস্থাপনাগুলো মূলত ‘জৈবিক বালাইদমন পদ্ধতি’ যা দীর্ঘমেয়াদী কিন্তু টেকসই ও কার্যকর। মশা নিয়ন্ত্রণে পাশ^বর্তী সফল দেশগুলোর (ভারত, ভিয়েতনাম) দিকে তাকালে দেখতে পাই যে, সারা বছর ধরে বেশ কিছু জৈবিক (মশাভুক মাছ) ও রাসায়নিক দমন পদ্ধতির সমন্বিত প্রয়োগের মাধ্যমে সাফল্য পেয়েছেন তারা। আমরা তাদেরকে অনুসরণ করতে পারি। জৈবিক উপায়ে মশা নিধনের জন্য ২০১৭ সালে চট্টগ্রামে একটি গবেষণা করেছিলাম। এসময় আমরা চট্টগ্রামের বিভিন্ন ড্রেনে ও নর্দমার নোংরা পানিতে প্রচুর পরিমাণ মসকুইটো ফিশ পাই । তাদের পেট কেটে দেখেছি প্রচুর পরিমাণে মশার লার্ভা। এই মাছটি কিছুটা আমাদের দেশি দাড়কিনা মাছের মতো দেখতে এবং মাছগুলো শহরের অ্যাকোরিয়ামের দোকানে বিক্রি হয়ে থাকে। ঢাকা-চট্টগ্রামে বেশ কয়েক বছর আগে এই মাছ ও গাপ্পি ছাড়া হয়েছিল বলে শুনেছি। আমি চট্টগ্রামের ড্রেনে গাপ্পি তেমন দেখিনি, কিন্তু মসকুইটো ফিশ প্রচুর পরিমাণে দেখেছি। এ মাছগুলো ড্রেনের নোংরা পানিতে শুধু বছরের পর বছর টিকে আছে তাই নয়, বংশও বিস্তার করছে। সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমাণ মশার লার্ভা খেয়ে আমাদের সাহায্য করছে।

পরবর্তীতে মসকুইটো ফিশ ছাড়াও দেশি-বিদেশি মাছ নিয়ে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করি। উদ্দেশ্য ছিল মশার লার্ভা ভক্ষণে তাদের দক্ষতার তুলনা করা। গবেষণায় আমরা দেখেছি যে, বিদেশি মসকুইটো ফিশ বা গাপ্পির তুলনায় মশক লার্ভা ভক্ষণের ক্ষেত্রে আমাদের দেশি জাতের খলিসা মাছের দক্ষতা প্রায় দ্বিগুণ। বিদেশি মাছের তুলনায় দাড়কিনা মাছের দক্ষতাও ভালো লার্ভা দমনের ক্ষেত্রে কিন্তু ড্রেন বা নর্দমার পানিতে এই মাছ বেশিদিন টিকে থাকতে পারে না। অপরদিকে খলিসা শুধু মশার লার্ভা ভক্ষণেই ভালো নয়, এটির ড্রেনের পানিতে অভিযোজন ও টিকে থাকার হারও ভালো। এসব মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উৎপাদন খুবই সহজ। মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য মাছগুলো যাতে হারিয়ে না যায় এজন্য সিটি কর্পোরেশনগুলো প্রতিবছর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উৎপাদন ও বড় করে শহরের বদ্ধ জলাগুলোতে প্রতিবছর ছেড়ে দিতে পারে। এতে করে এসব জলায় মশা ডিম ছাড়লে উৎপন্ন লার্ভা খেয়ে দেশি মাছগুলো মশা দমনে অনেকাংশে অবদান রাখবে। কর্তৃপক্ষ চাইলে দেশের স্বার্থে এ পোনার প্রযুক্তি সরবরাহ, পোনা উৎপাদনের প্রশিক্ষণ সহায়তা থেকে শুরু করে যাবতীয় সহায়তায় বিশ^বিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের বিশেষজ্ঞ দল বিনা পারিশ্রমিকে সহায়তা প্রদানের করবে বলেও আশ^স্ত করেন।

 

 

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop