৯:২৩ অপরাহ্ন

বুধবার, ২০ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ১০, ২০২২ ১১:২৯ পূর্বাহ্ন
মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক প্রাণিসম্পদ খাতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ

মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক দেশের প্রাণিসম্পদ খাতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

বুধবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ফার্মগেটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর প্রাঙ্গণে অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি) এর আওতায় দেশের প্রান্তিক খামারিদের দোরগোড়ায় আধুনিক ও জরুরি প্রাণিচিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা জানান।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. আব্দুর রহিম। মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিকের সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন প্রকল্পের চীফ টেকনিক্যাল কোঅর্ডিনেটর ড. মো. গোলাম রব্বানী।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, মো. তৌফিকুল আরিফ ও এস এম ফেরদৌস আলম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তরের উপপরিচালক শেফাউল করিম, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, এসিআই এগ্রোবিজনেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ড. এফ এইচ আনসারী প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, “আগে প্রাণীকে নিয়ে যেতে হতো ডাক্তারের কাছে, এখন ডাক্তার চলে যাবে প্রাণীর কাছে। শেখ হাসিনার উপহার, প্রাণীর কাছে ডাক্তার। দেশের ইতিহাসে ইতিহাসে মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা ও পৃষ্ঠপোষকতায়। তিনি বিশ্বাস করেন সকল জীবের প্রতি রাষ্ট্রের দায়িত্ব রয়েছে।

মন্ত্রী আরো বলেন, “প্রাণীর তাৎক্ষণিক চিকিৎসায় আমরা প্রান্তিক খামারিদের কাছে ভেটেরিনারি ক্লিনিক পৌঁছে দিচ্ছি। প্রথম পর্যায়ে আজ ৬১ টি উপজেলায় ৬১ টি ক্লিনিক বিতরণ করা হচ্ছে। পরবর্তী ধাপে আরও ১৮০টি ভেটেরিনারি ক্লিনিক বিতরণ করা হবে। শেষ ধাপে আরও ১১৯টি ক্লিনিক বিতরণ করা হবে। ৬১টি জেলায় মোট ৩৬০টি মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক বিতরণ করা হবে।পর্যায়ক্রমে যেখানে পশুপাখির চিকিৎসা প্রয়োজন সেখানে আমরা মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক আমরা পৌঁছে দেবো। পশুপাখির চিকিৎসায় সব আধুনিক মেডিকেল সুবিধা এ ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিকে থাকবে”।

প্রধান অতিথি আরো বলেন, “প্রাণী স্বাস্থ্যের সাথে মানুষের স্বাস্থ্য সম্পৃক্ত। পশুপাখির অসুস্থতা থেকে জীবাণু আমাদের অজান্তে শরীরে প্রবেশ করতে পারে। সেজন্য ‘ওয়ান হেলথ’ এর কথা ভাবলে পশু-পাখিকে অসুস্থ রেখে আমরা ভালো থাকলে হবে না। আবার পশুপাখিকে ভালো রেখে আমরা খারাপ থাকলেও হবে না। কারণ অনেক পশুপাখিই মানুষের সংস্পর্শে আসে, মানুষের সাথে সম্পৃক্ত থাকে। এজন্য প্রাণীদের ভালো রাখ রাষ্ট্রের দায়িত্ব, সরকারের দায়িত্ব। আমরা চাই নিরাপদ প্রাণিজ আমিষের চাহিদা মেটাতে। সে কারনে আমরা প্রাণী চিকিৎসায় মোবাইল ফোনের ক্লিনিকের উদ্যোগ নিয়েছি। এ উদ্যোগের কারণে প্রাণিসম্পদ খাতে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে”।

“আমাদের অর্থনীতির চাকা গতিশীল করা,বেকারত্ব দূর করা, উদ্যোক্তা তৈরি করা এবং পুষ্টি-আমিষের চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ খাত আমূল পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। এ গুরুত্বপূর্ণ খাতটি একসময় নানাভাবে অবহেলিত ছিল।  বর্তমান সরকার এ খাতকে গুরুত্ব দিচ্ছে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করেন এ খাতকে এগিয়ে নিতে হবে জাতিকে এগিয়ে নেয়ার সাথে তাল মিলিয়ে”।-যোগ করেন মন্ত্রী।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ৯, ২০২২ ২:৫৮ অপরাহ্ন
গরুর খামার করে স্বাবলম্বী বেনাপোলের খামারি নাছির
প্রাণিসম্পদ

ভারত থেকে চোরাইপথে আসা দেশের সবচেয়ে বড় খাটাল (গরু রাখার স্থান) যশোরের পুটখালি গ্রামে। গরুর হাটের সাথে সংশ্লিষ্ট দুই হাজার গরু ব্যবসায়ী এখন বেকার জীবনযাপন করছেন। তাদের মধ্যে একজন হলেন নাছির উদ্দিন। পাঁচটি গরু দিয়ে ছোট খামার শুরু করে এখন তিনি সফল খামারি।

ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ হলে ১৫ বছর ধরে ধীরে ধীরে গড়ে তুলেছেন গরুর খামার। নাছির ২০১৩ সালে নেপালি জাতের মাত্র ৫টি গরু দিয়ে যাত্রা শুরু করেন। পরবর্তীতে স্থানীয় একটি এনজিও থেকে ৩ লাখ টাকা ঋণ ও নিজস্ব কিছু পুঁজি নিয়ে আরও ৫টি গরু কেনেন। গরুর প্রেমে পড়ে পুটখালির মাঠে গড়ে তুলেন বিশাল খামার। ৯ বছর ধরে তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন স্বপ্নের গরুর খামার। বর্তমানে বছরে আয়ের পরিমাণ প্রায় দুই কোটি টাকা।

জানা যায়, বর্তমানে তার খামারে ১২০ টি দুধের গাভি রয়েছে। এসব গাভি থেকে প্রতিদিন ৫০০-৬০০ লিটার দুধ পেয়ে থাকেন। বিভিন্ন দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত কোম্পানি ও স্থানীয় মিস্টির দোকানে এসব দুধ সরবরাহ করে থাকেন তিনি।তার খামারে বর্তমানে ১২০টি গাভি, ৫৫০টি ষাঁড় ও ১২০টি বাছুর রয়েছে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা।

ডেইরি খামারের পাশাপাশি রয়েছে একটি ছাগলের খামার। যেখানে দেশি ও উন্নত জাতের প্রায় ১২৫ টি ছাগল রয়েছে।

বর্তমানে তার খামারে কাজ করছেন ৮৫ জন শ্রমিক। তাদের ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন দিচ্ছেন। শ্রমিকরা জানান, এখানে কাজ করতে পেরে তারা অনেক খুশি।

খামারি নাছির উদ্দিন জানান, প্রত্যেক বছরে খরচ বাদ দিয়ে দেড় থেকে ২ কোটি টাকা আয় হয়ে থাকে। গরুর খাদ্যের দাম ও দুধের বাজার ওঠা-নামার সাথে আয়ও ওঠা-নামা করে থাকে। তিনি আরও জানান, তার খামারের সফলতার পেছনে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সহযোগিতা রয়েছে।

যশোর জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদফতরের কর্মকতা ড. রাশেদুল হক জানান, খামারি নাছিরের খামার এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় গরুর খামার। তিনি একজন দক্ষ খামারি। তাকে দেখে গ্রামের অন্যান্যরা গরু পালনে উৎসাহিত হচ্ছেন। তার খামারের গরু জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হচ্ছে। আমারা কনোরায় ক্ষতিগ্রস্থ খামারীদের সরকারী ভাবে প্রনোদনা দেয়ার চেষ্টা করছি

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ৯, ২০২২ ১২:৪৪ অপরাহ্ন
গরু মোটাতাজা করতে খামারিরা যা করবেন
প্রাণিসম্পদ

গরু পালন লাভজনক হওয়াতে এখন আমাদের দেশের অনেকেই গরুর খামার করার প্রতি ঝুঁকছেন। তবে, এই গরু যদি হয় আরেকটু মোটাতাজা তাহলে আর কথা ই নাই। আর এর জন্য দরকার গরুর সুষম খাদ্য। আর সুষম খাদ্য প্রয়োগে আপনি আরো লাভবান হতে পারেন গরু পালনে।

খামারে গরু মোটাতাজাকরণে যেসকল আমিষ খাবার আপনার গরুকে খাওয়াবেন:

শুকনা খড়: ২ বছর বয়সের গরুর জন্য দৈহিক ওজনের শতকরা ৩ ভাগ এবং এর অধিক বয়সের গরুর জন্য শতকরা ২ ভাগ শুকনা খড় ২ থেকে ৩ ইঞ্চি করে কেটে এক রাত লালীগুড়-চিটাগুড় মিশ্রিত পানিতে ভিজিয়ে সরবরাহ করতে হবে।

কাঁচা ঘাস: গরুকে প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ কেজি কাঁচা ঘাস বা শস্য জাতীয় তাজা উদ্ভিদের উপজাত দ্রব্য যেমন- নেপিয়ার, পারা, জার্মান, দেশজ মাটি কলাই, খেসারি, দুর্বা ইত্যাদি খাওয়াতে হবে।

দানাদার খাদ্য: গরুকে প্রত্যেক দিন কমপক্ষে ১ থেকে ২ কেজি দানাদার খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। নিচে ১০০ কেজি দানাদার খাদ্যের তালিকা দেয়া হলো- গম ভাঙা-গমের ভুসি ৪০ কেজি চালের কুঁড়া ২৩.৫ কেজি খেসারি বা যে কোনো ডালের ভুসি ১৫ কেজি তিলের খৈল-সরিষার খৈল ২০ কেজি লবণ ১.৫ কেজি। উল্লিখিত তালিকা ছাড়াও বাজারে প্রাপ্ত ভিটামিন মিনারেল মিশ্রণ ১% হারে খাওয়াতে হবে।

১৫০ কেজি ওজনের গবাদিপশুর খাদ্য তালিকা: খড় = ৩ কেজি কাঁচা ঘাস = ৫-৬ কেজি দানাদার খাদ্যের মিশ্রন = ১.৫-২ কেজি চিটাগুড় = ৫০০ গ্রাম ইউরিয়া = ৪৫ গ্রাম (নিয়মানুয়ায়ী) লবন = ৩৫ গ্রাম।

১০০ কেজি দৈহিক ওজনের গবাদিপশুর খাদ্য তালিকা: ধানের খড় = ২ কেজি সবুজ ঘাস = ২ কেজি (ঘাস না থাকলে খড় ব্যবহার করতে হবে দানদার খাদ্যে মিশ্রন = ১.২-২.৫ কেজি ইউরিয়া = ৩৫ গ্রাম (নিয়মানুযায়ী) চিটাগুড়া = ২০০-৪০০ গ্রাম লবণ = ২৫ গ্রাম দানাদার খাদ্যের সাথে লবন, ইউরিয়া, চিটাগুড় এক সাথে মিশিয়ে দিনে ২ বার দিতে হবে। ধানের খড় এবং কাঁচা ঘাস ছোট ছোট করে কেটে এক সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ালে ভালো ফল পাওয়া যায়।

কৃমিমুক্তকরণ ও টিকা প্রদান: গরুকে ডাক্তারের নির্দেশনা মত কৃমির ওষুধ খাওয়াতে হবে। নতুন গরু সংগ্রহের পর পরই পালের সব গরুকে একসঙ্গে কৃমিমুক্ত করা উচিত। এক্ষেত্রে প্রতি ৭৫ কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ১ টি করে এনডেক্স বা এন্টিওয়ার্ম ট্যাবলেট ব্যবহার করা যেতে পারে।

পূর্ব থেকে টিকা না দেয়া থাকলে খামারে আনার পর পরই সব গরুকে তড়কা, বাদলা ও ক্ষুরা রোগের টিকা দিতে হবে। এ ব্যাপারে নিকটস্থ পশু হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে।

ঘর তৈরি ও আবাসন ব্যবস্থাপনা: আমদের দেশের অধিকাংশ খামারী ২/৩ টি পশু মোটাতাজা করে থাকে, যার জন্য সাধারণত আধুনিক শেড করার প্রয়োজন পড়ে না। তবে যে ধরনের ঘরেই গরু রাখা হোক, ঘরের মধ্যে পর্যন্ত আলো ও বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে। ঘরের মল- মূত্র ও অন্যান্য আবর্জনা যাতে সহজেই পরিষ্কার করা যায়, সে দিকে খেয়াল রেখে ঘরে তৈরি করতে হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ৭, ২০২২ ৫:০১ অপরাহ্ন
চিড়িয়াখানায় কোনরকম অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা বরদাশত করা হবে না- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ

বাংলাদেশের জাতীয় প্রতিষ্ঠান চিড়িয়াখানায় কোনরকম অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা বরদাশত করা হবে না বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

সোমবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানায় আকস্মিক পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রী একথা জানান।

আজ সকাল সাড়ে আটটা থেকে সাড় এগারোটা পর্যন্ত মন্ত্রী চিড়িয়াখানায় বিভিন্ন প্রাণীর খাঁচা, প্রাণী চিকিৎসা কেন্দ্র, ঔষধ সংরক্ষণ স্থান পরিদর্শন করেন এবং বিভিন্ন প্রাণীদের খোঁজখবর নেন এবং তাদের খাবার ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অবহিত হন। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এস এম ফেরদৌস আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা, জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ডা. মো. আব্দুল লতিফ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী আরো বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের বিনোদনের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান জাতীয় চিড়িয়াখানা। চিড়িয়াখানার আধুনিকায়ন করে সিঙ্গাপুর, দুবাই এর মানে উন্নীত করার জন্য আমরা মাস্টারপ্ল্যান করছি। ইতোমধ্যে কনসালটেন্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে যাদের প্ল্যান আগামী মার্চ মাসের মধ্যে পাওয়া যাবে। এ প্ল্যানের মাধ্যমে অত্যাধুনিক চিড়িয়াখানা গড়ে তোলা হবে”।

তিনি আরো বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে অবন্তিকা ও দুর্জয় নামে দুটি বাঘ শাবক, জেব্রা, জিরাফ শাবক, আফ্রিকান সিংহ, ইম্পালা,ওয়াইল্ড বিস্ট জাতীয় চিড়িয়াখানায় এবং রংপুর চিড়িয়াখানায় আরো একটি প্রাণী মারা গেছে। এসব প্রাণী কারো কর্তব্যে অবহেলা নাকি রোগ সংক্রমণে মারা গেছে, এ বিষয়গুলো দেখা ও বোঝার জন্য ইতোমধ্যে তাদের পোস্ট মর্টেম ও ভিসেরা রিপোর্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে, দুই দফা তদন্ত করা হয়েছে। আরো কিছু সুনির্দিষ্ট বিষয়ে তদন্তের জন্য পুনরায় আদেশ দেওয়া হয়েছে। চিড়খানার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত অথবা যারা খাবার সরবরাহ করে বা এর উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় যারা জড়িত তাদের দায়িত্বে গাফিলতি, অসহযোগিতা, অযোগ্যতা আছে কিনা, পশু চিকিৎসায় ভেটেরিনারি ডাক্তার দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে কিনা, অসুস্থ প্রাণীর চিকিৎসা যথাসময়ে হয়েছে কিনা, অসুস্থতার ক্ষেত্রে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোন ঘাটতি আছে কিনা এসব বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য আমরা চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করেছি”।

চিড়িয়াখানায় সম্প্রতি জন্ম নেয়া নতুন দুটি বাঘ শাবকের নিরাপত্তা ও জীবাণু থেকে সুরক্ষায় মাছি বা অন্য কোন প্রাণী যাতে বাঘের খাঁচায় প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যবস্থা নেয়ার হয়েছে বলে ব্রিফিংয়ে জানান মন্ত্রী।

ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী আরো বলেন, “চিড়িয়াখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবহিত না করে বাস্তবে কি অবস্থা আছে,স্বাভাবিকভাবে প্রাণীরা কি অবস্থায় থাকে সেটা দেখার জন্য আকস্মিক পরিদর্শনে এসেছি। খাবার সরবরাহকারী যথাসময়ে খাবার সরবরাহ করছে কিনা, সরবরাহকৃত খাবার সঠিক পরিমাণে দেয়া হচ্ছে কিনা, খাবারের মান কেমন, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দায়িত্ব পালনে যথাসময়ে প্রবেশ করছে কিনা, বিভিন্ন খাঁচায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী, ডাক্তার ও সুপারভাইজার সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে কিনা এ বিষয়গুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাওয়ার পর কারো গাফিলতি, দায়িত্বহীনতা বা অযোগ্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে”।

চিড়িয়াখানার সার্বিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে সময় মন্ত্রী বলেন, “পূর্বের চেয়ে চিড়িয়াখানায় অনেক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু উন্নয়ন আরও দরকার। সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বহীনতা আরো দরকার। যেহেতু বিষয়গুলো তদন্তাধীন এজন্য এ বিষয়ে চূড়ান্ত মতামত ব্যক্ত করা সঠিক হবে না”

মন্ত্রী আরো যোগ করেন, “চিড়িয়াখানার সব বিষয় আমরা সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণ করে দিয়েছি। অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে সেগুলো উঠে আসবে। প্রাণীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিয়মিত না হয়ে থাকলে কেন এটা হয়নি তার দায়দায়িত্ব সংশ্লিষ্টদের বহন করতে হবে। যে সকল প্রাণীর খাঁচার পরিবেশ আরো উন্নয়ন করা প্রয়োজন সেগুলো কেন করা হয়নি সে বিষয়গুলোও আমরা দেখছি। এখানে একটি প্রাণী তাৎক্ষণিকভাবে মারা গেছে। তারপরও তার পোস্টমর্টেম ও ভিসেরা রিপোর্ট দেশের দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে আমরা এনেছি। রিপোর্টে সংক্রমণের কথা বলা হয়েছে। প্রয়োজনে তৃতীয় রিপোর্ট আনা হবে এবং তাতেও আমরা সন্তুষ্ট না হলে প্রয়োজনে দেশের বাইরে রিপোর্টের জন্য পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে, চিড়িয়াখানার মতো প্রতিষ্ঠান আধুনিকীকরণ ও টেকসই করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনবোধে দেশের বাইরে পাঠিয়ে রিপোর্ট আনতে হবে। বাস্তবে খাবারের কোন ত্রুটি বা অব্যবস্থাপনা অথবা এমন কোন ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে হয়েছে যেটা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল, এ সামগ্রিক বিষয়গুলো পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আসার পর আমরা বিবেচনা করবো”।

“এক প্রাণী থেকে অন্য প্রাণীতে রোগ সংক্রমণ যাতে না হয় সে জন্য অভ্যন্তরীণভাবে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। রোগ সংক্রমণের বিষয়ে আমরা বাড়তি নিরাপত্তা ও বাড়তি চেকআপের ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রাণীদের খাবার দেবার ব্যাপারেও আমরা অতীতের চেয়ে সতর্ক। পুষ্টিসম্মত ও জীবাণুমুক্ত খাবার দেয়ার জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া যাতে চিড়িয়াখানায় আর কোনো খাবার না ঢুকে সে ব্যবস্থা আমরা নিতে যাচ্ছি।”-যোগ করেন মন্ত্রী।

জনবল সংকট নিরসনে শিগগিরই অস্থায়ী ভিত্তিতে জনবল নিয়োগের বিষয়েও জানান মন্ত্রী।
চিড়িয়াখানার যেকোন বিষয়ে ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিতে আনার জন্য এ সময় গণমাধ্যমকর্মীদের অনুরোধ জানান মন্ত্রী।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ৫, ২০২২ ৫:০৬ অপরাহ্ন
সিলেটের প্রাণিসম্পদ খাতকে উন্নত করার জন্য আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ

সিলেটের প্রাণিসম্পদ খাতকে অনেক উন্নত করার জন্য পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

শনিবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) সিলেটের টিলাগড়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি (আইএলএসটি), সিলেট এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এস এম ফেরদৌস আলম, যুগ্মসচিব ও মন্ত্রীর একান্ত সচিব ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা, সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান, সিলেট বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ডা. অমলেন্দু ঘোষ, আইএলএসটি স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. শরীফুল হক ও ডা. জসিম উদ্দিন, সিলেট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রুস্তম আলী এবং সিলেট বিভাগে কর্মরত প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় সাংবাদিকদের মন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে। সারাদেশে এখন মাছ, মাংস, দুধ ও ডিমের অভাবনীয় উৎপাদন বেড়েছে। হাওর অঞ্চলসহ দেশের যে অঞ্চলে যে জাতীয় সামগ্রী উৎপাদনের সুযোগ আছে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রশাসনের পরামর্শে সরকার সেখানে ভালো ভালো পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। হাওরাঞ্চলের বিষয়ে সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে”।

মন্ত্রী আরো যোগ করেন, “সিলেট বাংলাদেশের একটা গুরুত্বপূর্ণ জনপদ। সিলেটের উন্নয়নকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। সে গুরুত্বের একটি অংশ হিসেবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি করা হচ্ছে। এ ইনস্টিটিউট এমন একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে যে প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাণিসম্পদ খাতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি হবে। দেশে ও দেশের বাইরে এ জনশক্তির চাহিদা থাকবে। ফলে দেশের মানুষের পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা মেটানো, বেকারত্ব দূর করা ও উদ্যোক্তা তৈরির জন্য দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনশক্তি এ ইনস্টিটিউট থেকে তৈরি হবে। এটি সিলেটের প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে”।

পরে মন্ত্রী প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন বুল স্টেশন স্থাপন কার্যক্রম, সরকারি ছাগল উন্নয়ন খামার এবং সিলেট জেলা দুগ্ধ খামার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, “সিলেটের প্রাণিসম্পদ খাতকে অনেক উন্নত করার জন্য আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি। এ উন্নয়ন কিভাবে করা যায় সেজন্য আমরা সরেজমিনে পরিদর্শন করছি। দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য আমরা ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট করছি। এ দক্ষ জনশক্তি নিজেরা স্বাবলম্বী হবে, ফলে তাদের বেকারত্ব দূর হবে। সিলেটকে উন্নত করার জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সকল দপ্তরের কার্যক্রমকে আমরা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছি। এখানে গবাদিপশু উৎপাদন, ব্ল্যাকবেঙ্গল ছাগল উৎপাদন, দুগ্ধ উৎপাদন কীভাবে আরো বাড়ানো যায় সে লক্ষ্যে আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি। আমরা চাই সিলেটের প্রাণিসম্পদ খাতে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসুক”।

সম্প্রতি গাজীপুর সাফারি পার্কে জেব্রা ও সিংহী মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, “বিদেশ থেকে আনা প্রাণীদের থাকার পরিবেশ ও জলবায়ু অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশে একই নয়। এর বাইরে বর্তমানে প্রাণীদের মধ্যে কঠিন রোগ সংক্রমিত হচ্ছে। জেব্রার মৃত্যু একটা রোগের কারণে হয়েছে। একইভাবে চিড়িয়াখানায় প্রাণী মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে আমরা একাধিক ল্যাবে পরীক্ষা করেছি। সেক্ষেত্রে অবহেলার কারণে নয়, রোগ সংক্রমিত হয়ে প্রাণী মারা যাচ্ছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। তারপরও প্রাণীর মৃত্যতে আমাদের কোন ত্রুটি আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখছি। পাশাপাশি অন্য প্রাণীদের নিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত করা যায় সেজন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। কোনরকম অবহেলায় কোন প্রাণীর মৃত্যু হবে না”।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, “যাতে বন্যপ্রাণী ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট না হয়, জলবায়ু নষ্ট না হয় সেজন্য সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সমন্বিতভাবে কাজ করছে । চমৎকার একটা প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করেই আমরা সৌন্দর্য বৃদ্ধির চেষ্টা করছি”।

পরে মন্ত্রী সিলেট সার্কিট হাউসে সিলেট বিভাগে কর্মরত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মৎস্য অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন ও বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ৫, ২০২২ ৩:০৬ অপরাহ্ন
গবাদিপশুকে সুষম খাবার যে কারনে খাওয়াবেন
প্রাণিসম্পদ

গবাদিপশু পালন করে অধিক লাভ করতে সুষম খাদ্যের কোন বিকল্প নাই। সুষম খাদ্য গবাদিপশুতে আরো লাভ নিয়ে আসে। কারণ সুষম খাদ্য ছাড়া গবাদিপশু বেশি বৃদ্ধি পায় না

গবাদিপশুর সুষম খাদ্য বলতে বুঝায় যে খাদ্যে আমিষ, শর্করা, স্নেহ বা চর্বি, খনিজ লবণ, ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ ও পানি সঠিক অনুপাতে থাকে।  আমিষ বা প্রোটিন জাতীয় খাদ্য অন্ত্রে পরিপাক হয়ে অ্যামিনো অ্যাসিডে পরিণত হয়। পরে তা অন্ত্রে শোষিত হয়ে রক্তে মিশে এবং দেহের ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধি সাধন করে।

আমিষের সহায়তায় দেহের ভেতরে জৈব অনুঘটক এনজাইম তৈরি হয়। যেমন, পেপসিন, ট্রিপসিন ইত্যাদি। এসব এনজাইম খাদ্যের প্রোটিন, লিপিড ও শর্করাকে ভেঙে সহজপাচ্য পুষ্টিতে রূপান্তরিত করে যা কোষ সহজেই শোষণ ও সদ্ব্যবহার করতে পারে। পশুর দেহের রক্ত, পেশী ও সংযোজক কলার প্রধান অংশই প্রোটিনে গঠিত। খাদ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত প্রোটিন পশু দেহের শক্তি ও চর্বির উৎস হিসেবে কাজে লাগে।

শর্করা পশু দেহে কর্মশক্তি যোগায়। শর্করা খাদ্যান্ত্রে ভেঙে গ্লুকোজে পরিণত হয় যা অন্ত্রে শোষিত হয়ে রক্তে মিশে কার্যসম্পাদন করে। অতিরিক্ত শর্করা দেহে গ্লাইকোজেনরূপে জমা থাকে এবং খাদ্যে শর্করার অভাব হলে প্রয়োজনে সেই গ্লাইকোজেন কর্মশক্তি যোগায়।

স্নেহ প্রাণী দেহের টিস্যুর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। গবাদিপশুর প্রধানত তাপ ও শক্তির উৎস হিসেবে সঞ্চিত থাকে। সাধারণত গবাদিপশুর দানাদার খাদ্যে শতকরা ৪ ভাগ চর্বি জাতীয় পদার্থ থাকা প্রয়োজন।

খনিজ পদার্থ বাড়ন্ত পশুর নতুন অস্থি ও টিস্যু সৃষ্টিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই উপাদান কঙ্কালের আকৃতি ও দৃঢ়তা বজায় রাখে। পশুর লোম, ক্ষুর ও শিং গঠনে খনিজ পদার্থ প্রয়োজন। খনিজ পদার্থ যেমন- লৌহ রক্তে অক্সিজেন ও কার্বনডাইঅক্সাইড বহন করতে সহায়তা করে। আবার পটাসিয়াম পশুর দেহের তরল পদার্থের অ্যাসিড বেসের সমতা রক্ষা করে।

যেসব জৈব যৌগ খাদ্য উপাদান হিসেবে অল্প পরিমাণ দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য জরুরি তাদের ভিটামিন বলা হয়। প্রাণী দেহের জন্য পর্যাপ্ত আমিষ, শর্করা, স্নেহ ও খনিজ পদার্থ খাদ্যের সাথে সরবরাহ করেও ভিটামিন ছাড়া জীবন চালনা সম্ভব হয় না।

স্বাভাবিক টিস্যুর বৃদ্ধি, দৈহিক বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য ভিটামিন অত্যাবশ্যক। পশুখাদ্যে যদি ভিটামিন না থাকে অথবা সুষ্ঠভাবে ভিটামিন শোষিত না হয় কিংবা দেহে ভিটামিন সদ্ব্যবহার না হয় তবে সুনির্দিষ্ট রোগ হয়। যেমন, ভিটামিন ‘এ’ -এর অভাবে রাতকানা, জনন কর্মক্ষমতা হারানো, ভিটামিন ‘কে’ -এর অভাবে রক্ত জমাট বাঁধতে সমস্যা হয় এবং ভিটামিন ‘ই’ -এর অভাবে জনন অকৃতকার্যতা পরিলক্ষিত হয়।

পশুদেহের শতকরা ৭০ থেকে ৯০ ভাগ পানি। সাধারণত দানাদার খাদ্যে শতকরা ১০ ভাগ ও খড় জাতীয় খাদ্যে শতকরা ১৫ ভাগ পানি থাকে। আবার সবুজ ঘাসে পানির পরিমাণ শতকরা ৯০ ভাগ। পশুখাদ্যে প্রচুর পরিমাণ পানি থাকা সত্ত্বেও পশুকে পৃথকভাবে পানি সরবরাহ করতে হয়। কারণ পানি দেহের কোষের কাঠিন্য ও স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখে। এতে প্রাণিদেহের কাঠামো ঠিক থাকে।

পানি ছাড়া দেহে যেকোনো ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটা সম্ভব নয়। পানি দেহের এক অঙ্গ থেকে অন্য অঙ্গে বিভিন্ন পুষ্টিকারক পদার্থ সরবরাহ করে। তাছাড়া পানি দেহের অতিরিক্ত তাপ শোষণ করে। আবার পানি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাফার হিসেবেও কাজ করে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ৫, ২০২২ ১১:২২ পূর্বাহ্ন
সকলকে মানবিক ও সেবাধর্মী কাজে আত্মনিয়োগ করতে হবে- শ ম রেজাউল করিম
প্রাণিসম্পদ

নৈতিকতা ও মূল্যবোধকে প্রাধান্য দিয়ে মানবিক ও সেবাধর্মী কাজে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

শুক্রবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের লায়ন্স টাওয়ারে লায়ন্স ক্লাব অব ঢাকা গ্রিন বে-এর অভিষেক ও চার্টার নাইট ২০২২ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী ক্লাবের সদস্যদের এ আহ্বান জানান।

লায়ন্স ক্লাব অব ঢাকা গ্রিন বে-এর সভাপতি মোহাম্মদ শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লায়ন্স ক্লাবের ভাইস এরিয়া লিডার ওয়াহিদুর রহমান আজাদ ও লে. জেনারেল মোহা. হাবিবুর রহমান খান (অব.)। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্লাবের ১ম ভাইস ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সিরাজুল হক চৌধুরী ও ২য় ভাইস ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর ফারহানা নাজ।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আরো বলেন, “আমাদের সকলকে মানবিক ও সেবাধর্মী মানসিকতা নিজের মধ্যে ধারণ করতে হবে। যে মানুষের মানবিকতা আছে তার সেবার মানসিকতা থাকবেই। মানুষকে সেবা দেয়ার জন্য প্রয়োজনে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে”।

লায়ন্স ক্লাবের সদস্যদের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথি আরো যোগ করেন, “সেবাধর্মী মানসিকতা নিয়ে পরিশীলিত জীবনযাপন করতে হবে। বিনিয়োগ করতে হবে সন্তানে, যাতে সন্তান বিপথগামী না হয়ে মানবিক মানুষ হয়। পারিবারিক শিক্ষা সন্তানের আদর্শের ভিত্তি। আপনাদের আদর্শ সন্তানরাই হবে দেশের সম্পদ”।

এ সময় শ ম রেজাউল করিম আরো বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করতে হবে। সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। যার যার ধর্ম সে পালন করবে। কোন ধর্ম নিয়ে সমালোচনা করা যাবে না। মনে রাখতে হবে সকল ধর্মের মৌলিক বিশ্বাসের জায়গায় একই”।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ২, ২০২২ ৭:৩৬ অপরাহ্ন
গবাদী পশুর জুনোটিক রোগ বিষয়ে গবেষণা ফলাফল বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
প্রাণিসম্পদ

কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু,বাকৃবিঃ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) ট্রেনিং ভবনের অডিটোরিয়ামে গবাদি পশুর জুনোটিক রোগ, টিউবারকুলোসিস (টিবি) এবং ক্যামপাইলোব্যাকটেরিওসিস ঝুঁকি কমাতে একটি গবেষণা কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (০২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২ টায় ‘বাংলাদেশের নির্বাচিত কয়েকটি জেলার ডেয়রি ফার্মে জুনোটিক যক্ষা ও ক্যামপাইলোব্যাকটেরিওসিস রোগ বিষয়ক গবেষণা’ শীর্ষক ওই কর্মশালাটির আয়োজন করা হয়।

কর্মশালায় মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্পের কোঅর্ডিনেটর , প্রধান গবেষক এবং বাকৃবি মাইক্রোবায়োলজি ও হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. এস. এম. লুৎফুল কবির। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কো -প্রকল্প পরিচালক আইএলএসটি নেত্রকোনা এর প্রিন্সিপাল ড. মোহাম্মদ জাকির হোসেন।

অধ্যাপক ড. এস. এম. লুৎফুল কবির জানান, এ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা এবং ময়মনসিংহের মোট ৩০০ টি ফার্মে বিভিন্ন গবেষণা করা হয়। এসব অঞ্চলে ডেইরি ফার্মিংয়ে জুনোটিক যক্ষা ও ক্যামপাইলোব্যাকটেরিওসিস রোগের সম্ভাব্য ঝুকি চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া এ রোগ সমুহের জুনোটিক ইমপ্যাক্ট এবং ইকোনোমিক ইমপ্যাক্ট নির্ণয় করা হয়েছে। প্রকল্প থেকে প্রাপ্ত ফলাফল উক্ত জুনোটিক রোগ সমূহের নিয়ন্ত্রণে ও অর্থনৈতিক ক্ষতি কমাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। ভবিষ্যতে যক্ষা ও ক্যামপাইলোব্যাকটার জীবাণুর বিরুদ্ধে টিকা তৈরীর পরিকল্পনা করা দরকার।

তিনি আরও জানান, ক্যাম্পাইলোব্যাকটেরিওসিস ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ। এরা গবাদি পশুর ক্ষেত্রে ডাইরিয়া ও গর্ভপাত সৃাষ্ট করে। এই রোগটি আক্রান্ত গাভীর দুধ ও আক্রান্ত গাভীর মলের মাধ্যমে সুস্থ পশুতে সংক্রমিত হয়। অপরদিকে টিবিও গবাদিপশুর ব্যাকটেরিয়াজনিত একটি রোগ। রোগটির কারণে গবাদিপশুর উৎপাদন ক্ষমতা বহুলাংশে কমে যায় এবং খামারীদের আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়ায়। এমনকি এই রোগটি গবাদিপশু হতে মানুষে সংক্রমিত হয়।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি), (ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডাইরিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশ) আইসিডিডিআরবি ও কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন (কেজিএফ) যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে। তিন বছর মেয়াদী এ প্রকল্পের অর্থায়ন করেছে কেজিএফ ।

আইসিডিডিআরবির প্রধান ইনভেস্টিগেটর ড. মো. জিয়াউর রহিমের সভাপতিত্বে এবং কো -প্রকল্প পরিচালক ও বাকৃবি ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মাহমুদুল হাসান শিকদারের সঞ্চালনায় কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিএলএসের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা । বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মকবুল হোসেন, কেজিএফের পরিচালক ড. নাথু রাম সরকার, কেজিএফ এর নির্বাহী পরিচালক ড জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস,। আলোচনা করেন বাকৃবির মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান, এছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষকবৃন্দ এবং বিভিন্ন অঞ্চলের প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা ও খামারিরা উপস্থিত ছিলেন।

নাথুরাম সরকার বলেন, খামারীরা সরাসরি উপকৃত হবেন সেই পরামর্শগুলো এ কর্মশালার মাধ্যমে গ্রহণ করতে ছড়িয়ে দিতে পারি। প্রাণিসম্পদ সেক্টর এই ধরণের গবেষণার মাধ্যমে আরো এগিয়ে যাবে।
ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা বলেন, নিরাপদ খাদ্য দিবসের এই দিনে এই কর্মশালাটি খুবই গুরুত্ববহ। আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। এখন দরকার খাদ্য নিরাপত্তা। আর সে জন্য সবাই মিলে কাজ করতে হবে। খামারীদের রোগবালাই প্রতিরোধে আমাদের গবেষকরা কাজ করছেন। ভালো ভালো গবেষণা হচ্ছে। কুরবানির সময় এখন আর পশুর অভাব হয় না। বাহির থেকে পশু আমদানী করতে হয় না। এটিই প্রমাণ করে দেশে মাংস, দুধ, ডিমে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে চলেছে। বর্তমানে আমরা রপ্তানীর দিকে যেতে হবে এবং সেটি হচ্ছেও। এর পরিমাণ বাড়াতে আমরা কাজ করছি। ২০২৬ সালের পশুর রোগগুলো চিরতরে নির্মূল করার জন্য কাজ করছি।

সারাবিশ্বে যখন অর্থনীতেতে বিপর্যস্ত সেখানে বাংলাদেশ দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের গ্রামীণ কৃষি এগিয়ে চলছে। ঘরে ঘরে সবাই পশু পালন করছে। সেজন্য তাদের জন্য পশু চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে বদ্ধ পরিকর, আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ২, ২০২২ ৪:১৪ অপরাহ্ন
আজ বাংলাদেশে খাদ্যের সংকট নয়, উদ্বৃত্ত থাকছে- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ

আজ বাংলাদেশে খাদ্যের সংকট নয়, উদ্বৃত্ত থাকছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

বুধবার (০২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস ২০২২ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা জানান।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল কাইয়ুম সরকার।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আরো বলেন, “একটা সময় আমরা খাদ্য সংকট দূর করতে চেয়েছি। এখন সরকার চায় নিরাপদ ও পুষ্টিসম্মত খাদ্য নিশ্চিত করতে। পরবর্তীতে গুণগত মানের আরো সমৃদ্ধ খাদ্য সকলের পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে সরকার কাজ করবে। খাদ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করার জন্য সরকার দেশে আন্তর্জাতিক মানের ল্যাবরেটরি স্থাপন করেছে। ল্যাবরেটরিতে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম পরীক্ষা করে এর গুণগত মান ও পুষ্টিমান নিশ্চিত করা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্য হচ্ছে দেশে গর্ভবতী মা, ছোট শিশু, যুবক ও বৃদ্ধরা যেন পরিপূর্ণ পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার পায়। এভাবে সকলের জন্য নিরাপদ খাবার পৌঁছে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ২০১৩ সালে নিরাপদ খাদ্য আইন তৈরি করেছেন, যার ফলে ২০১৫ সালের নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে”

তিনি আরো বলেন, “আজ বাংলাদেশে খাদ্যের সংকট নয়, উদ্বৃত্ত থাকছে। খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষ, খামারি, উদ্যোক্তারাসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর মাঠ পর্যায় থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত কর্মকর্তারা এ কৃতিত্বের দাবিদার। এক সময় আমরা বলতাম খাদ্য ঘাটতি মেটাতে হবে। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন শুধু খাদ্য ঘাটতি নয়, খাদ্যের গুণগত মানের পরিবর্তন করতে হবে”।

তিনি আরো যোগ করেন, “খাদ্যের বড় একটি যোগান আসে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম থেকে। মাছ, মাংস ও ডিমে শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণতাই না বরং উদ্বৃত্ত অবস্থা এসেছে এবং বিশ্বে রপ্তানি করার মত পর্যায়ে আমরা পৌঁছেছি। অদূর ভবিষ্যতে দুধ উৎপাদনেও সফলতা অর্জনের লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। পাশাপাশি এ খাদ্য উপাদানগুলোর বহুমুখী ব্যবহারে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। দুধ থেকে কত প্রকার দুধ জাতীয় পণ্য তৈরি করা যায়, মাছ থেকে কত প্রকার মাছ জাতীয় পণ্য তৈরি করা যায়, থেকে কত প্রকার মাংস জাতীয় পণ্য তৈরি করা যায় সে প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি”।

শুধু সরকারি কর্তৃপক্ষের দিকে না তাকিয়ে অনিরাপদ খাদ্য তৈরি ও বিক্রি বন্ধে গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে একসাথে ভূমিকা রাখার জন্য এসময় আহ্বানও জানান মন্ত্রী।

নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার জন্য সততাকে অবলম্বন করতে হবে উল্লেখ করে খাদ্য উৎপাদন, সরবরাহ ও বিপণন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্তদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, “মুনাফা একটু কম করেন। খারাপ খাদ্য সরবরাহ করে মানুষকে মৃত্যুর মুখে পাঠিয়ে দেয়ার মতো বড় ধরনের অনৈতিকতা ও পাপের কাজ দ্বিতীয়টি নেই। পঁচা, বিষাক্ত ও মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্য খাওয়াবেন না। ভেজালমিশ্রিত খাদ্য খাওয়াবেন না। নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সততা নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ান”।

শ ম রেজাউল করিম আরো বলেন, “বঙ্গবন্ধুর সরকার আমলে যারা খাদ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে চেয়েছিল, তারা স্বাধীন বাংলাদেশকে ব্যর্থ প্রমাণ করতে চেয়েছিল। তাদের এ পরিকল্পনা সফল হয়নি। আজ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে বলা হয় উন্নয়নের ম্যাজিশিয়ান, বাংলাদেশকে বলা হয় উন্নয়নের রোল মডেল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য দেশে ও দেশের বাইরে একটি চক্র টাকা বিনিয়োগ করে, লবিস্ট নিয়োগ করে, নিজেদের প্যাডে স্বাক্ষর করে বাংলাদেশকে যাতে কেউ সাহায্য না করে সে চেষ্টা করছে। এগুলো করে লাভ হবে না। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বড় বড় অনেক রাষ্ট্র ছিল, ১৯৭৪ সালে খাদ্য ঘাটতি সৃষ্টি করে বাংলাদেশকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে চেয়েছিল, সফল হয়নি, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে বিনষ্ট করতে চেয়েছিল, সফল হয়নি।  বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশকে, উন্নয়নের প্রতিচ্ছবি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশকে শকুনি প্রবৃত্তি নিয়ে খামচে ধরার জন্য যারা যখনই আঘাত হেনেছে, তারা পরাজিত হয়েছে”।

উল্লেখ্য ‘সুস্বাস্থ্যের মূলনীতি, নিরাপদ খাদ্য ও স্বাস্থ্যবিধি’ এ প্রতিপাদ্যে দেশব্যাপী জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস ২০২২ পালিত হচ্ছে।

পরে রাজধানীর মৎস্য ভবনে মৎস্য অধিদপ্তরে নবযোগদানকৃত কর্মকর্তাদের ওরিয়েন্টেশন কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেন মন্ত্রী।

 

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ২, ২০২২ ১১:৫১ পূর্বাহ্ন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ থেকে এখন বহুমুখী পণ্য তৈরি হচ্ছে- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ থেকে এখন বহুমুখী পণ্য তৈরি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

মঙ্গলবার (০১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে আরটিভি এনআরবিসি ব্যাংক কৃষি পদক ২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন আরটিভির চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম এমপি, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, আরটিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ূন কবির বাবলু ও এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমাল। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন আরটিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশিক রহমান।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আরো বলেন, “মাছ, মাংস, দুধ, ডিমের উৎপাদনে দেশ একসময় অনেক পিছিয়ে ছিল। ভাতে-মাছে বাঙালির দেশে একটা সময় মাছের আকাল তৈরি হয়েছিল। এক সময় বলা হতো ভারত-মিয়ানমার থেকে পশু না আসলে কোরবানি হবে না। এখন দেশীয় পশু দিয়ে কোরবানির চাহিদা মিটিয়েও এক দশমাংশ পশু উদ্বৃত্ত থাকে। দেশে এখন পর্যাপ্ত মাছ ও প্রাণিসম্পদ উৎপাদন হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন খাদ্যের চাহিদা মিটছে, পুষ্টি চাহিদা মিটছে, এ খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত প্রায় এক কোটি মানুষ স্বাবলম্বী হচ্ছে, বেকারত্ব দূর হচ্ছে, গ্রামে উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে এবং গ্রামীণ অর্থনীতি সচল হচ্ছে”।

তিনি আরো বলেন, “মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ থেকে এখন বহুমুখী পণ্য তৈরি হচ্ছে। মাছ থেকে মাছ জাতীয় পণ্য, মাংস, দুধ ও ডিম থেকে বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন হচ্ছে। যা রফতানির ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।”

অনুষ্ঠানে প্রাতিষ্ঠানিক ক্যাটাগরিতে পদকপ্রাপ্ত বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা সাফল্য তুলে ধরে মন্ত্রী আরো যোগ করেন, “এই ইনস্টিটিউট বিলুপ্তপ্রায় ৩১ প্রজাতির দেশীয় মাছ বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে ফিরিয়ে এনেছে। এ মাছ যাতে আবার হারিয়ে না যায় সে জন্য লাইভ জিন ব্যাংক করা হয়েছে। এখন দেশের সব জায়গায় স্বাদু পানির দেশি মাছ, চাষের মাছ এবং সামুদ্রিক মাছ পাওয়া যাচ্ছে। ইলিশের উৎপাদন অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সবই সম্ভব হয়েছে কারণ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছেন তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দেশের কৃষি উন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাককে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়। পরে কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২টি প্রতিষ্ঠান ও ৮ জন ব্যক্তিকে কৃষি পদক প্রদান করা হয়। এর মধ্যে দেশের মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে সেরা উদ্ভাবন ক্যাটাগরিতে পদক অর্জন করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop