৪:১৬ পূর্বাহ্ন

সোমবার, ১৮ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : এপ্রিল ২৮, ২০২১ ১১:১২ পূর্বাহ্ন
চলছে তীব্র দাবদাহ: সুস্থ থাকবেন যেভাবে
প্রাণ ও প্রকৃতি

বাংলাদেশে সপ্তাহ খানেক ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলছে তীব্র দাবদাহ। এর মধ্যে আবহাওয়া অধিদফতরের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যে বলা হয়েছে, ২৬শে এপ্রিল ঢাকায় গত ২৬ বছরের রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়েছে।

ওইদিন রাজশাহীতে তাপমাত্রা ছিল ৪১.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় ১৯৯৫ সালে সর্বশেষ ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছিল তাপমাত্রা। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, এই তীব্র তাপমাত্রা চলতি সপ্তাহের শেষ পর্যন্ত চলবে।

কিন্তু এই প্রচণ্ড গরমে দেখা যায় শিশু ও বৃদ্ধসহ নানা বয়সের মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। সতর্ক না হলে সাধারণ পানিশূন্যতা, বদহজম থেকে হিটস্ট্রোকের মতো সমস্যায়ও পড়তে পারেন যে কেউ।

কিন্তু তীব্র গরমে সুস্থ থাকার কী উপায়?

গরমে সুস্থ থাকতে করণীয় সম্পর্কে জানতে ঢাকার আহসানিয়া মিশন জেনারেল হাসপাতালের সাবেক চিকিৎসক ডা. মাসুমা নাওয়ার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক খালেদা এদিবের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তাদের পরামর্শের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে এই প্রতিবেদন

তাপ ব্যবস্থাপনা
মানবশরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকে, কিন্তু তার জন্য সুদিং বা শীতল তাপমাত্রা হচ্ছে ২০ থেকে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। আর বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মানবশরীরের সহ্যসীমার মধ্যে থাকে। কিন্তু তাপমাত্রা এবং বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ এর চেয়ে বেশি হলে মানবশরীর সহ্য করতে পারে না।তখন নানারকম অস্বস্তি ও সমস্যা দেখা যায়।

এমনকি তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে মানুষের হিটস্ট্রোক হবার আশংকা বেড়ে যায়। ফলে যখন গরম বাড়ে তখন তাপ ব্যবস্থাপনাই হবে প্রধান কাজ, অর্থাৎ কিভাবে গরম কম লাগবে সেটি দেখতে হবে।

পানি এবং পানিজাতীয় খাবার খেতে হবে
শরীরের পানিশূণ্যতা ঠেকাতে এ সময় প্রচুর পানি এবং পানিজাতীয় খাবার খেতে হবে। পানি, স্যালাইন, ফলের রস, সরবত, ডাব এ ধরণের পানীয় শরীরে আর্দ্রতা যোগায়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পানিশূন্যতার বিষয়টিকে খুবই গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ পানিশূন্যতার ফলে স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে।পানি ও পানি-জাতীয় খাবারের পাশাপাশি পানি রয়েছে এমন প্রচুর সবজি ও ফল খাওয়া উচিত।

তরমুজ, আনারস, জাম্বুরা, আপেল এমন ফল শরীরের গরমের ভাব কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া প্রচুর সবজি খেলে পরিপাকক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়। তাতে শরীরের অস্বস্তি কমে।

সূর্যের আলো থেকে দূরে থাকতে হবে
দিনের যে সময়ে তাপমাত্রা বেশি থাকে সে সময় সরাসরি রোদে না যাওয়া বা অতিরিক্ত পরিশ্রম না করা। বাংলাদেশে সাধারণত সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সূর্যের আলো সবচেয়ে প্রখর থাকে। সূর্যের আলোতে যেতে হলে ছাতা, টুপি, পায়ে জুতা-স্যান্ডেল ব্যবহার করুন। চোখ নিরাপদ রাখতে সানগ্লাস ব্যবহার করুন। কোথাও যাওয়ার আগে সঙ্গে পানি অবশ্যই নেবেন।

ভাজাপোড়া এবং জাঙ্ক ফুড বাদ
তীব্র গরমে ভাজাপোড়া মুখরোচক খাবার, কিংবা জাঙ্ক ফুড শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। বার্গার, পটেটো চিপস বা পিৎজার মতো খাবারে প্রচুর ক্যালরি, সোডিয়াম ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। ফলে একদিকে যেমন গরম বেশি লাগে, তেমনি মুখে অরুচি এবং বদহজমের আশংকা তৈরি হয়।ফলে এ ধরনের খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। সেই সঙ্গে ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

ঢিলেঢালা ও সুতি কাপড়
বিশেষজ্ঞরা গরমে হালকা, ঢিলেঢালা ও হালকা রঙের সুতি কাপড় পরার পরামর্শ দেন। এ ধরণের কাপড়ে তাপ শোষণ হয় দ্রুত এবং বাতাস আসাযাওয়া করতে পারে, ফলে গরম কম লাগে।

ঘর ঠাণ্ডা রাখা
ঘর যাতে ঠাণ্ডা থাকে এবং ঘরে যাতে বাতাস প্রবেশ করতে পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে। দিনের বেলায় ঘরে আলো কম থাকলে ঘর ঠাণ্ডা থাকে। ঘরের মধ্যে গাছ থাকলে তা তাপ শুষে নেয়। পাকা মেঝে হলে বারবার ঘর মুছে দিলে ঘর ঠাণ্ডা থাকে।

যেসব অসুস্থতা হতে পারে
প্রচণ্ড গরমে সাধারণত অতিরিক্ত ঘামের কারণে পানিশূন্য হয়ে পড়ে মানুষের শরীর। পানিশূন্যতার কারণে দ্রুত দুর্বল হয়ে যায় মানুষের শরীর। এছাড়া বদহজম ও পেট খারাপ এবং পানি-বাহিত নানা ধরণের রোগ বালাই হতে পারে এ সময়। রোটাভাইরাসসহ বিভিন্ন ভাইরাসজনিত পাতলা পায়খানা হতে পারে।মাথা ঘোরা এবং বমিভাব, কারো ক্ষেত্রে বমিও হতে পারে। এধরণের অসুস্থতা সাধারণত একটু সতর্ক হলে এড়িয়ে চলা সম্ভব।

কিন্তু অতিরিক্ত গরমে যদি কারো শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, দুর্বলতা, মাথা ঝিমঝিম-ভাব হয় কিংবা মাথা ঘুরে পড়ে যায়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সূত্র: বিবিসি বাংলা

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২৬, ২০২১ ১১:২৮ পূর্বাহ্ন
লাল ও মিষ্টি তরমুজ চেনার উপায়
প্রাণ ও প্রকৃতি

এই গরমে যেন তরমুজ না হলে চলেই না। তরমুজ মানেই যেন একটু প্রশান্তি। তবে এর মাঝে যদি হয় লাল টুকটুকে তরমুজ তাহলেতো আরো মজা আর দারুণ স্বাদ। তাছাড়া গরমে তরমুজের জুস অনায়াসেই দেহে প্রশান্তি এনে দেয়। দেখা যায় অনেকেই বাজার থেকে এমন তরমুজ কিনে আনেন, যা কাটার পর লাল বা মিষ্টি কোনোটিই হয় না।

এই তরমুজ কিনতে গিয়ে যদি ঠকে যান তবে মন খারাপতো হবেই। এই জন্য জানতে হবে লাল এবং মিষ্টি তরমুজ কিনার উপায়।
নিম্মে লাল ও মিষ্টি তরমুজ চেনার কয়েকটি উপায় উল্লেখ করা হলো:

১. তরমুজের মাথার দিক খেয়াল করুন। যদি দেখেন হলুদ রঙ ধরেছে, তাহলে বুঝবেন তরমুজ পাকা।

২. তরমুজ হাতে নিয়ে দেখুন। যদি ভেতরটা ফাঁপা মনে হয়, তাহলে বুঝবেন তরমুজ এখনো কাঁচা রয়েছে। পাকা তরমুজে প্রচুর         রস থাকে। ফলে তরমুজ ভারি হয়।

৩. তরমুজের গায়ে টোকা দিন। অতিরিক্ত ভারি আওয়াজ (ঠন ঠন আওয়াজ) হলে বুঝবেন তরমুজ বেশি পেকে গেছে।

৪. তরমুজের আকৃতি খেয়াল করুন। যদি তরমুজ পুরো সমান হয়, তাহলে বুঝবেন পাকা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

৫. খুব বড় বা খুব ছোট তরমুজ না কিনে মাঝারি আকারের তরমুজ কেনাই ভালো।

৬. বাইরের উজ্জ্বল রঙ দেখে বিভ্রান্ত হবেন না। পাকা তরমুজ সাধারণত গাঢ়, কালচে হয় দেখতে। চকচ‌কে উজ্জ্বল রং হ‌লে সে‌টি কাঁচা তরমুজ।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২৫, ২০২১ ৪:২৪ অপরাহ্ন
হাওরে ধানের ঝুঁকি কমাতে আগাম জাতের ধানের চাষে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে: কৃষিমন্ত্রী
কৃষি বিভাগ

কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, হাওরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ধান হয়, যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এ ধান খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, কোন কোন বছর আগাম বন্যার কারণে নষ্ট হয়ে যায়। এ ঝুঁকি কমাতে আমরা কাজ করছি। ১৫- ২০ দিন আগে পাকে এমন জাতের ধান চাষে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, শ্রমিক সংকটের কথা চিন্তা করে, দ্রুততার সাথে ধান কাটার জন্য হাওরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কম্বাইন হারভেস্টার ও রিপার দেয়া হচ্ছে।
কৃষিমন্ত্রী আজ রবিবার কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার সাদরের হাওরে ‘বোরো ধান কর্তন উৎসব’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। মিঠামইন উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। পরে কৃষিমন্ত্রী ধান কাটার উদ্বোধন করেন ও ধান কাটার যন্ত্র ‘কম্বাইন্ড হারভেস্টার ও রিপার’ কৃষকের মাঝে বিতরণ করেন।
কৃষকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, হাওরের বিস্তীর্ণ জমিতে বছরে মাত্র একটি ফসল বোরো ধান হয়। এ ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে হবে। আমাদের বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে উচ্চফলনশীল জাতের ধান যেমন ব্রিধান ৮৯, ৯২ উদ্ভাবন করেছে। আমরা আপনাদেরকে এসব উন্নত জাতের হাইব্রিড ধানের বীজ দিব। আপনার এগুলো চাষে এগিয়ে আসবেন।
তিনি আরও বলেন, হাওরে চাষযোগ্য জাতের ধানের জাত উদ্ভাবনের জন্য হাওরে ‘ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের’ আঞ্চলিক গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলমান আছে।
কৃষিমন্ত্রী ড. রাজ্জাক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কৃষি ও কৃষকবান্ধব। আজকে দিগন্তবিস্তৃত হাওরে সোনার ধানের যে অপরূপ হাসি দেখা যাচ্ছে, দেশের কৃষকের মুখেও সে রকম অমলিন হাসি ধরে রাখতে চায় সরকার। সেজন্য, সরকার কৃষিকে লাভবান ও কৃষকের জীবনমান উন্নত করতে অত্যন্ত উদারভাবে কৃষকদেরকে সার,বীজ,সেচসহ বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছে। উৎপাদন খরচ কমানো ও কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ত্বরান্বিত করতে ৭০% ভর্তুকিতে কম্বাইন হারভেস্টার, রিপারসহ বিভিন্ন যন্ত্র কৃষকদেরকে দিচ্ছে।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও রাষ্ট্রপতিপুত্র রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম, বিএডিসির চেয়ারম্যান ড. অমিতাভ সরকার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: আসাদুল্লাহ, ব্রির মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবীর, বারির মহাপরিচালক ড. নাজিরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কিশোরগঞ্জের উপপরিচালক মো: ছাইফুল আলম, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহসভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সুইট প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, এ বছর কিশোরগঞ্জ জেলায় বোরো আবাদ হয়েছে এক লাখ ৬৬ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে হাওরে এক লাখ দুই হাজার ৫০০ হেক্টর ও নন- হাওরে ৬৪ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। এখন পর্যন্ত (২৪ এপ্রিল) হাওরের ৫৩% ও নন-হাওরের ৩৯% জমির ধান কর্তন হয়েছে। এবছর জেলায় সাত লাখ ১১ হাজার ৫৮০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২৩, ২০২১ ৯:২৯ অপরাহ্ন
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় কার্বন নিঃসরণ কমাতে হবে
প্রাণ ও প্রকৃতি

সমীরন  বিশ্বাস :বিশ্বব্যাংকের হিসাবে জলবায়ুজনিত প্রভাবে ২০০৫ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে প্রতি বছর বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদন শতকরা তিনভাগ করে কমার আশঙ্কা রয়েছে। সম্মিলিতিভাবে ৪৫ বছরে যার আর্থিক মূল্য দাঁড়াবে তিন হাজার ৬০০ কোটি মার্কিন ডলারের সমান।  বিশ্বব্যাপী কার্বন নি:সরন কমিয়ে আনার লক্ষ্যে উন্নত দেশগুলোকে আরো অধিকতর মনোযোগী হতে হবে।পৃথিবীর বৈশ্বিক উষ্ণতা দৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখতে উন্নত দেশগুলোকে কার্বন নি:সরন কমাতে অবিলম্বে একটি কর্মপরিকল্পনা গ্রহন কার জরুরী।

 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উদ্যোগে ২২ ও ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়েছে  লিডার সামিট অন ক্লাইমেট। এতে বাংলাদেশ, চীন, রাশিয়া ও ভারতসহ ৪০ দেশের নেতারা এতে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তন সমাধনে সম্মিলিত প্রচেষ্টার উপর জোর দিতে হবে। সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব।

ইতি মধ্যে ‘ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম’ – সিভিএফ এবং ভি২০ (ভালনারেবল টুয়েন্টি) এর সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। জলবায়ু ঝুকিপূর্ন দেশগুলোর স্বার্থ সমুন্নত রাখাই প্রধান লক্ষ্য এই ফোরামের।এছাড়া গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশনের দক্ষিন এশিয়ার আঞ্চলিক অফিস বাংলাদেশে যে কারনে স্থানীয় ভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের সংঙ্গে খাপ খাওয়ানোর বিষয়টি প্রধান্য পাচ্ছে।

কার্বন নি:সরন কমাতে সুপারিশমালা:
১. অভিযোজন ও প্রশমনের মধ্যে ৫০:৫০ ভালসাম্য বজায় রাখতে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুকিপূর্ন সম্প্রদায় গুরোর ক্ষয়-ক্ষতি পৃরনে বিশেষ দৃষ্টি দেয়া।
২. বেসরকারী প্রতিষ্ঠান গুলোকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অর্থায়নে বিশেষ ভাবে ছাড় দেয়া।
৩. গ্রীন অর্থনীতি ও কর্বন প্রশমন প্রযুক্তিগুলোর ওপর দৃষ্টি দেয়া এবং প্রযুক্তি বিনিময় করা।

 

প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফিরে আশা একটি বড় ইতিবাচক দিক এবং বিশ্ব সম্প্রদায়কে সফলতার আশা জাগায়।
ইতি মধ্যে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দূর্যোগ মোকাবেলায় টেকসই জলবায়ু সহনশীল ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বিভিন্ন পদক্ষপ গ্রহন করা হয়েছে ।জলবায়ু পরিবর্তন সহনীয় টেকসই পদক্ষপ গ্রহনে বাংলাদেশ, কৃষি, জ্বালানি, শিল্প, ও পরিবহন খাতের পাশাপাশি নতুন খাত অন্তর্ভুক্ত করে বাংলাদেশ কার্বন নি:সরনে পদক্ষেপ নিয়েছে।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশব্যাপি ৩০ মিলিয়ন গাছের চারা রোপনের পরিকল্পনা করা হয়েছে ।কম-কার্বনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রোসপারিটি প্ল্যান’ প্রণয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

লেখক : সমন্বয়কারী, সিসিডিবি, ঢাকা।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২৩, ২০২১ ৩:৫৩ অপরাহ্ন
গ্রীষ্মের দাবদাহে ঝিনাইদহ যেন সেজেছে বসন্তের সাজে
প্রাণ ও প্রকৃতি

তানজির রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঋতু চক্রের আবর্তনে নয়নাভিরাম ফুলের এক বর্ণিল আয়োজন নিয়ে আমাদের প্রকৃতিতে আবারো হাজির হয়েছে গ্রীষ্মকাল। ফুলের কথা উঠলে আগে আসে ঋতুরাজ বসন্তের কথা। কিন্তু গ্রীষ্মেও ফোটে নানা রঙের বাহারি ফুল। প্রচণ্ড দাবদাহে কিছুটা হলেও প্রশান্তির পরশ বুলিয়ে দেয় এসব ফুল।

বৈশাখ মাসের প্রথম ভাগেই পাওয়া যায় কয়েকটি বাহারি ফুল। কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, জারুল, সোনালু, স্বর্ণচাঁপা, ভাঁট, গন্ধরাজ, উদয়পদ্ম, গুলাচি, লালসোনাইল ইত্যাদি গ্রীষ্মের প্রধানফুল হলেও পালান, দুরন্তলতা, শ্যামটিউলিপ, মে ফ্লাওয়ার, অনন্তলতা, পাদাউক, সোনালী শাপলা, বেলি, জহুরিচাঁপা, বনপারুল, কার্ডওয়েল লিলিসহ কয়েকজাতের লিলি ও এই সময়ে প্রকৃতিতে শোভাবর্ধন করে থাকে। তবে এগুলোর মধ্যে একইগোত্রের কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, ও কনকচূড়ার রয়েছে আলাদা রূপ ও বৈশিষ্ট্য। সামাজিক বনায়নের আয়ত্তায় লাগানো বিভিন্ন ফুলের গাছ শোভা বর্ধন করছে ঝিনাইদহের বিভিন্ন রাস্তা-ঘাট ও নদীর তীর।

ঝিনাইদহের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় কৃষ্ণচূড়ার সমাহার,কালীগঞ্জের কাঠালবাগান এলাকায় দেখা মেলে বেগুনী জারুল ফুলের। মোবারকগঞ্জ সুগার মিলের ভিতর শোভা পাচ্ছে রাধাচূড়ার মায়াবী সৌন্দর্য, বিভিন্ন বাসা বাড়ির দুয়ার ঘিরে রয়েছে মাধবীলতা আর তার মনমাতানো সুগন্ধ।

প্রকৃতিগত কারণে নানা গাছপালা আর ফুল-ফলের অপার সৌন্দর্যে ঝিনাইদহের সুখ্যাতি বেশ প্রাচীন। অন্যান্য ঋতুর মতো গ্রীষ্মের ফুলে সাজানো থাকতো প্রকৃতির কোলজুড়ে। কিন্তু কাল পরিক্রমায় দিন দিন কমে আসছে গ্রীষ্ম রাঙানো এসব ফুল গাছ। সরকারী ও ব্যক্তি উদ্যোগে ফলজ ও কাঠ গাছের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির ফুলগাছ রোপনের ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। নইলে যান্ত্রিকতা আর ব্যস্ততার ভীড়ে একসময় খর্ব হবে প্রকৃতির সৌন্দর্যের ভারসাম্য।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২৩, ২০২১ ২:৩৮ অপরাহ্ন
তরমুজের বাজারে ক্রেতা সংকট
প্রাণ ও প্রকৃতি

করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হঠাৎ ঊর্ধ্বগতিতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কুমিল্লার তরমুজ ব্যবসায়ীরা। তরমুজের ভরা মৌসুম হলেও বিক্রি করতে না পারায় লোকসান গুনতে হচ্ছে জেলার অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর।

বাজারে তরমুজের পাইকার নেই বললেই চলে। স্থানীয় বাজারেও ব্যবসায়ীরা তরমুজ উঠাতে পারছেন না। কেউ কেউ আবার বাজারে নিয়ে গেলেও ক্রেতা সংকটে আবার বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন তরমুজ ব্যবসায়ীরা।

তনু মিয়ার। কুমিল্লার নগরীর পুলিশ লাইন এলাকার ফল ব্যবসায়ী, ১২ বছর ধরে তিনি এই এলাকায় তরমজু ব্যবসা করে আসছেন। গত মৌসুমে করোনার কারণে দোকানপাট বন্ধ ছিলো। এবার তাই রোজা ঘিরে ১ লক্ষ ২০ হাজার দুটি তরমুজের চালান বরিশাল থেকে নিয়ে আসেন। গত কয়েকদিনে মাত্র ১০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করছেন তিনি। ক্রেতা না থাকার এরইমধ্যে চালানের প্রায় ৪০ হাজার টাকার তরমুজ পচে গেছে। বাকিগুলোতেও দ্রুত পচন ধরবে।

জেলার দাউদকান্দি উপজেলার কয়েকজন তরমজু চাষিরা জানান, মৌসুমের এ সময়টায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা এসে তরমুজ কেনার জন্য তাঁদের বাড়িতে ভিড় জমাতেন। অথচ করোনার কারণে এখন একজন ক্রেতাও পাওয়া যাচ্ছে না। কৃষকের কাছে তরমুজ কিনতে আসা তো দূরে থাক, তাঁদের খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছে না।

রাজগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী মাসুদ মিয়া বলেন, ‘বর্তমানে আমার দোকানে প্রায় ২ই লাখ টাকার তরমুজ রয়েছে। কিন্তু কঠোর লকডাউনের কারণে ক্রেতা সংকটে সব তরমুজ অবিক্রিত পড়ে আছে।’

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২১, ২০২১ ৮:৫৬ অপরাহ্ন
মরিচের ফুল ঝরে পড়ার কারণ ও তার প্রতিকার
প্রাণ ও প্রকৃতি

মরিচ একটি ভিটামিন সি মসলা জাতীয় ফসল। কাঁচামরিচ সবজি ও সালাদ হিসেবে এবং বিভিন্ন ধরনের ভাজি ও তরকারিতে ব্যবহৃত হয়।মরিচ ছাড়া আমাদের চলেই না! বাংলাদেশে জনপ্রিয় একটি ফসল মরিচ।  মরিচ চাষ করে চাষিরা ব্যাপক লাভবান হচ্ছে, আবার  চাষিরা ব্যাপক ক্ষতির সমুক্ষিন হচ্ছে বেশ কয়েকটি কারণে ।

মরিচ উৎপাদনে রোগবালাই একটি প্রধান প্রতিবন্ধক।এর মধ্যে অন্যতম মরিচের ফুল ঝরে যাওয়া।এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে ফলন অনেক বৃদ্ধি পায়।একটি ভুল ধারণা হলো বোরন সার এর অভাবেই গাছে ফুল ঝরে যাওয়া। কিন্তু না, আরো অনেক কারণ রয়েছে  ফুল ঝরার । চলুন জেনে নেয়া যাক মরিচের ফুল ঝরার কারণ  এবং এর প্রতিকার।

মরিচের ফুল যেসব কারণে ঝরে পড়ে:

১) দিনের তাপমাত্রা ৩০℃ এর বেশি হলে এবং রাতের তাপমাত্রা ১৬℃ এর  নিচে হলে ।
২) অতিবৃষ্টি হলে।
৩) গাছের গোড়ায় পানি জমে থাকলে ।
৪) ফুল এর পরাগায়ন হতে না পারলে।
৫) ফুল আসা গাছে মাটিতে সার প্রয়োগ করলে ।
৬) NPK এর পরিমাণ কমে গেলে।
৭) শোষক জাতীয় পোকা( সাদামাছি, জাব , জ্যাসিড)  যাদের খালি চোখে সহজে দেখা যায় না তাদের আক্রমণে ফুল ঝরে যায়।
৮) মাটিতে যদি বোরণ সার না দেয়া হয় তাহলেও ফুল ঝরে যাবে।

রোগের প্রতিকার

১) গাছের মাটি বেলে দোয়াশ হতে হবে এবং মাটির পানি নিষ্কাশন ক্ষমতা ভালো থাকা জরুরি।  গোড়ায় যেন পানি জমে না থাকে।
২) অতি পরিমানে কীটনাশক স্প্রে করলে উপকারী পোকা মারা যায়, তখন পরাগায়ন হয় না।
৩) সুষম পরিমানে সার প্রয়োগ।
৪) জাব পোকা, জ্যাসিড পোকা, সাদা মাছি, ইত্যাদি শোষক পোকার আক্রমণ রোধে ইমিডাক্লোপ্রিড স্প্রে  ১মিলি/লিটার হারে স্প্রে করতে হবে ।
৫) হরমোন স্প্রে করা যেমন জিব্রেলিক এসিড অথবা ট্রায়াকন্টোনল ৭ দিন পর পর ৩-৪ বার।
তাছাড়া অন্যান্য ফল গাছের ফুল ঝরে পড়ার জন্য শোষক পোকা,অতি বৃষ্টিপাত , সার ব্যবস্থাপনা, বোরন সার এর ঘাটতি, পরাগায়ন এর অভাব, উপকারী পোকার মৃত্যু দায়ী।

মোঃ রিয়াজুল ইসলাম ইশমাম
বিএসসি ইন এগ্রিকালচার( চলমান)
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
ই-মেইল: [email protected]

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২১, ২০২১ ৪:০৬ অপরাহ্ন
বিহঙ্গদ্বীপে সংরক্ষিত বনে গরু চরাতে বাধা দেওয়ায় পিটিয়ে জখম
পাঁচমিশালি

বলেশ্বর নদে জেগে ওঠা বিহঙ্গদ্বীপে বনবিভাগের সংরতি বনাঞ্চলে গরু চরাতে বাধা দেওয়ায় বনবিভাগের বনরী (ওয়াসার) ছগিরকে (৫২) পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ ওঠেছে একই এলাকার শাহিন মিয়ার বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) বিকেল ৬টার দিকে পাথরঘাটা উপজেলার সদর পাথরঘাটা ইউনিয়নের রুহিতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

বনবিভাগের তত্বাবধায়নে ওই বৃদ্ধকে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আহত ছগিরের বাবার নাম মৃত তাছেন উদ্দিন।

আহত বনরী ছগির জানান, বিহঙ্গদ্বীপে বন বিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে গরু চরানো নিষিদ্ধ হওয়া সত্বেও একই এলাকার হযরত আলীর ছেলে শাহিন মিয়া দীর্ঘদিন ধরে গরু ছেড়ে বনাঞ্চল নষ্ট করে। আমি অনেকবার তাকে নিষেধ করলেও মানেনি। এ কারণে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে মঙ্গলবার বিকেলে বাড়ি থেকে ইফতারি নিয়ে বিহঙ্গদ্বীপে ডিউটিতে যাওয়ার পথে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পথরোধ করে আমাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখম করেন।

পাথরঘাটা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি শোনা মাত্রই আমরা আহতকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিচ্ছি। আমরা অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিবো।

এখন পর্যন্ত এ রকমের কোন অভিযোগ পাইনি। পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাবুদ্দিন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২১, ২০২১ ২:৪৬ অপরাহ্ন
মৌমাছির কামড়ে কৃষকের মৃত্যু
প্রাণ ও প্রকৃতি

মৌমাছির কামড়ে গোপাল কিশোর পাল (৫৫) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।বুধবার (২১ এপ্রিল) সকালে এ ঘটনা ঘটে। মৃত গোপাল উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা পালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয়রা জানান, বুধবার সকালে দিন মজুর নিয়ে নিজের ক্ষেতে কাজ করতে যান। দিন মজুরদের কাজে লাগিয়ে পাশের আরেকটি ক্ষেত দেখতে যান।সেখানে বাঁধা দুটি গরু মারামারি করার সময় মৌমাছির চাকে আঘাত লাগে। এতে চাক ভেঙে যায়। এ সময় চাকের মৌমাছি এসে গোপালকে কামড়াতে থাকে।

চিৎকার করে দৌড়াতে থাকলে লোকজন তাকে উদ্ধার করে । সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২১, ২০২১ ২:৩৫ অপরাহ্ন
সৌন্দর্যের ফুল এখন গবাদি পশুর খাবার
প্রাণ ও প্রকৃতি

কিছুদিন আগেও মাঠের পর মাঠ বাতাসে দোল খাচ্ছিল লিলিয়াম, গাঁদা, রজনীগন্ধা, গোলাপ ও গ্লাডিয়াসসহ নানা জাতের ফুল। এসব এলকার কৃষকরা ফুলের রঙে রঙিন স্বপ্নে বিভোর ছিল।

এছাড়া ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা, লাউতলা ও কালীগঞ্জ মেইন বাসস্ট্যান্ড দুপুর গড়ালে ফুলে ফুলে ভরে যেত। এসব বাজারে প্রতিনিদন দূর-দূরান্ত থেকে ফুল কিনতে পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা ভিড় জমাতেন।ফুলচাষি আর ব্যাপরীর হাকডাকে মুখরিত থাকতো এসব এলাকা।তবে করোনার কারণে সে দৃশ্য পাল্টে গেছে।এসব স্থানে এখন আর কাউকে দেখা যাচ্ছে না। জেলার বড় ফুলের হাট গান্না বাজারও ফুলচাষি আর বিক্রেতার অভাবে খাঁ খাঁ করছে।

প্রায় লক্ষ টাকা খরচ করে তিন বিঘা জমিতে গাঁদা আর দুই বিঘা জমিতে রজনীগন্ধা চাষ করেছিলেন কলিগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের শাহপুর ঘিঘাটি গ্রামের হোসেন আলী। সবে মাত্র ফুল উঠা শুরু হয়েছিল। সপ্তাহে গড় ৩০-৪০ হাজার টাকার ফুল বিক্রিও করছিলেন তিনি। আরও তিন মাস ফুল বিক্রি হতো। কিন্তু লকডাউনে সব বন্ধ হয়ে গেছে।

হোসেন আলী জানান, লকডাউনে ফুল বিক্রি করতে না পারায় দুই বিঘা গাঁদা ও এক বিঘা জমির রজনীগন্ধা ফুল তুলে ফেলেছেন।কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তা অনিশ্চিত জেনেই অধিকাংশ জমির ফুল তুলে ফেলেছেন তিনি।

দুই বিঘা জমিতে গাঁদা ফুল চাষ করেছিলেন একই এলাকার কৃষক আনোয়ার হোসেন। এক সপ্তাহ ধরে বেচাকেনা বন্ধ থাকায় জমিতেই নষ্ট হচ্ছে ফুল। এদিকে ফুল তুললে গাছ মরে যাচ্ছে। গাছ থেকে একবার ফুল তুলতে প্রায় চার হাজার টাকা খরচ হয়। পকেটের টাকা খরচ করে এভাবে ফুলগাছ বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে ফুল গাছ তুলে ফেলতে হচ্ছে।

জেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এবছর ঝিনাইদহের ছয় উপজেলায় ১৭৩ হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয়েছিল। এরমধ্যে গাঁদা ১১৩ ও রজনী ২৪ হেক্টর, বাকি জমিতে অন্যান্য ফুল চাষ হয়েছে। গেল বছর এ জেলায় চাষ হয়েছিল ২৪৫ হেক্টর। প্রতিবছর সব থেকে বেশি ফুলের চাষ হয় সদর উপজেলার গান্না ও কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নে।

গত বছরের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর অঘোষিত লকডাউন শুরু হয়। ফলে ফুল বিক্রিতে ধ্বস নামে।এতে ফুলচাষিদের ব্যাপক লোকসান হয়।বিক্রি করতে না পারায় ফুলক্ষেত গরু ছাগল দিয়ে খাইয়েছিল।করোনার প্রভাব কিছুটা কমার পর চাষিরা নতুন করে ফুল চাষ শুরু করে। সেই ক্ষতি পুষিয়ে উঠার স্বপ্নে সবেমাত্র ফুল বিক্রি শুরু হয়।কিন্তু এবারো সেই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।

কালীগঞ্জ উপজেলা ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের শাহপুর ঘিঘাটি গ্রামের ফুলচাষি আনোয়ার হোসেন জানান, প্রায় ৭০ হাজার টাকা খরচ করে ফুল চাষ করেছিলাম। কিন্তু করোনা সব মাটি করে দিল।

ফুলচাষি শফিকুল ইসলাম জানান, গত বছর করোনার আগে প্রায় দুই বিঘা জমিতে গরম জাতের গাঁদা ফুল ছিল। লকডাউনে পরিবহন বন্ধ থাকায় বাজারে ফুল নিতে পারিনি। ফলে সব গাছ কেটে ফেলি। এতে লোকসান হয় দেড় লক্ষ টাকার মত। এবার সে ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে গাঁদা ফুল চাষ করেছিলাম। কিন্তু আবারো স্বপ্ন ধুলিষ্যৎ হয়ে গেল।

জানা যায়, ১৯৯১ সালে ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের সৌখিন কৃষক ছব্দুল শেখ সর্বপ্রথম ফুল চাষ করেন। ওই বছর মাত্র ১৭ শতক জমিতে চাষ করে ৩৪ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করেন। এরপর এলাকায় ফুল চাষ বিস্তার লাভ করতে থাকে। সেখান থেকে শুরু হয়ে বর্তমানে জেলার হাজার হাজার কৃষক ফুলচাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। একই সঙ্গে কর্মসংস্থান হয়েছে নারী-পুরুষের।

সব থেকে বেশি ফুলচাষ হওয়া বালিয়াডাঙ্গা ও গান্না এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষকরা পকেটের টাকা খরচ করে ক্ষেত থেকে ফুল তুলে ফেলে দিচ্ছে। অনেকে ফুল গবাদি পশুর খাবার হিসাবে ব্যবহার করছেন।

ত্রিলোচনপুর গ্রামের ফুলচাষি লিটন হোসেন জানান, এবছর আমার দুই বিঘা জমিতে লাল ও হলুদ গোলাপের চাষ ছিল। এছাড়া প্রায় পাঁচ বিঘা জমিতে রয়েছে বিদেশি ফুল জারবেরা। এখান থেকে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার গোলাপ ও দুই হাজার জারবেরা তুলতাম। প্রতিটি ফুল গড় ৫ টাকা করে বিক্রি হত। কিন্তু করোনার কারণে কোনো বিক্রি নেই। এদিকে ফুল গাছে থাকলে গাছ নষ্ট হয়ে যায় তাই বাধ্য হয়ে খরচ করে ফুল তুলে ফেলে দিচ্ছি। এতে লাভের পরিবর্তে লোকসান হচ্ছে।

সদর উপজেলার গান্না বাজার ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দাউদ হোসেন জানান, ফুলের ভরা মৌসুমে করোনার হানায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কবে নাগাদ ফুল বেচাকেনা হবে তাও অনিশ্চিত। ফলে কৃষকরা বাধ্য হয়ে ফুল গরু ছাগল দিয়ে খাওয়াচ্ছে।

ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিফতরের উপ পরিচালক মো. আজগর আলী জানান, করোনার কারণে ফুলচাষিরা চরম বিপদে পড়েছে। তারা ফুল বিক্রিও করতে পারছেন না। আবার ক্ষেতে রাখতেও পারছেন না। বাধ্য হয়ে গরু ছাগল দিয়ে খাওয়াচ্ছে। ফুলচাষ দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখলেও দ্রুত পঁচনশীল হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছে এ অঞ্চলের কৃষকরা।

সূত্রঃ জাগো নিউজ

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop