৬:৪৮ অপরাহ্ন

রবিবার, ১২ জানুয়ারী , ২০২৫
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : এপ্রিল ২০, ২০২১ ৮:২৮ অপরাহ্ন
বাঙ্গিকে নিয়ে তর্কের শেষ নেই, দিনশেষ বাঙ্গি ভক্তের অভাব নেই!
কৃষি বিভাগ

।।সুলতান মাহমুদ আরিফ।।
বাঙ্গিকে বলা চলে একটি রাজকীয় ফল বটে। কারণ এই বাঙ্গির চাষ নিয়ে ধারণা করা হয় এটির জন্ম ইরান বা আফগানিস্তানে। আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়াতেও এই ফলের চাষ হয় ব্যাপক। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সোস্যাল মিডিয়াতে ব্যাপক তোলপাড় এই বাঙ্গি আর তরমুজ নিয়ে। আমরা খাদকরা যতই তোলপাড় করি বাঙ্গি বড় নাকি তরমুজ বড় এটা নিয়ে। কিন্তু ঠিকই ভ্যান গাড়িতে দেখা যায় তরমুজ আর বাঙ্গির কত অন্তরঙ্গ সম্পর্ক। দেখে মনে হবে না এদের নিয়েই চলছে সোস্যাল মিডিয়াতে আলোচনা আর সমালোচনার ঝড়।

কেউ বলে বাঙ্গি গরিবের খাবার আর তরমুজ হলো বড় লোকের খাবার। এটা নিয়ে চলছে ভার্সুয়াল যুদ্ধ। কেউবা নিরপেক্ষতার দিক থেকে বলে বাঙ্গি আর তরমুজের মাঝে যদি হয় গরিব আর বড় লোক সম্পর্ক, তাহলে দুটোর দাম এক হয় কিভাবে। বাজারে তরমুজের দাম যা আবার বাঙ্গির দামও তা। উভয়টা বাজারে বিক্রি হচ্ছে কেজি ৫০ টাকা করে। আবার একই ভ্যানে তালমিলিয়ে আছে দু‘জন পরম আদরে। তাহলে কেন এত বিভেদ! প্রশ্ন তুলছেন নিরপেক্ষ সমাজ।

মাহমুদুল হাসান নামক একজন পোস্ট দিয়েছেন, বাঙ্গি ছাড়া আমার ইফতার চলে না…. বাঙ্গির মতো উপকারী ফল দ্বিতীয়টি মিলে না। খাও বাবা খাও… বাণীতে জনৈক আন্টি🙃

তুহিন পারভেজ বিপ্লব নামক একজন ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন, তুই ভালো জমিতে জন্মানোর চান্স পাস নাই, তাই তুই বাঙ্গি!
— তরমুজ।

মাশরিকুল আলম নামক একজন পোস্ট দিয়েছেন, বয়ফ্রেন্ডের কথায় কতোকিছু মুখে নেয় আবার বাপ-মা বাঙ্গি খাইতে কইলেই সমস্যা৷

রাকিব নাম একজন আক্ষেপ করে বলেন, কেও ই বাঙ্গি খায় না তাইলে এত বাঙ্গি যায় কই??

সোহাগ নামক একজন পোস্ট দিয়েছেন, বাঙ্গি আমার অপছন্দের একটা ফল। তবের বাঙ্গির ফ্লেবারটা অসাধারণ। এবার ভাবছি বাঙ্গি কিনবো এবং জুস বানিয়ে খাবো। জুস খাওয়ার পর আমার অনুভূতি কি, তা জানাবো।

একজনতো কড়াকড়ি জানিয়ে দিয়েছেন- ওগো তুমি যদি বাঙ্গি পছন্দ না করো তবে, শুনে রাখো তোমার আর আমার সম্পর্ক এখানেই শেষ।

এছাড়াও এটা নিয়া গত কয়েকদিন ধরে ফেসবুকে পক্ষে-বিপক্ষে নানা আলোচনা আর সমালোচনা।

তবে, যে যায় বলেন না কেন, বাঙ্গির চাহিদা কিন্তু কম না। বাজারে হরহামেশ চলছে বাঙ্গির বেচা-কেনা। আজ বাড্ডাতে তরিকুল নামক এক তরমুজ এবং বাঙ্গি বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি বাঙ্গি এবং তরমুজ উভয়টা সমান দামেই বিক্রি করছেন।বরং সুযোগ পেলে বাঙ্গি ৫টাকা বেশিও বিক্রি করছেন বলে জানান তিনি।

আরেকজন ব্যবসায়ী জানান, দু‘টোর চাহিদা ই অনেক। সবাই বাঙ্গিও নিচ্ছে আবার তরমুজ নিচ্ছে। দিনশেষে মাশাআল্লাহ আমার বাঙ্গি এবং তরমুজ কোনটায় থাকে না।

অতএব বাঙ্গিকে নিয়ে যারা গরিব বলে পোস্ট দিচ্ছেন তারা বাজার ঘুরে এসে পোস্ট দেয়া দরকার। বাজারে গেলেই তবে বুঝা যায় বাঙ্গি আর তমুজের কি মিলবন্ধন আর সমদামের অবস্থান।

বাঙ্গিকে নিয়ে যতই হাস্যকর পোস্ট কিংবা আলোচনা আর সমালোচনা বয়ে যাক না কেন, বাঙ্গি প্রেমিকরা বাঙ্গির ভালোবাসা থেকে এক চুলও নড়বে না বলে অনেকেই জানিয়েছেন সোস্যাল মিডিয়াতে। বাঙ্গিযে কেবল মৌসুমী ফসল এমনটি নয়। বাঙ্গিতে আছে অনেক গুণাগুণ।

কাঁচা বাঙ্গি সবজি হিসেবে রান্না করে খাওয়াতে আছে অসাধারণ মজা। বাঙ্গিতে আছে আমিষ, ফ্যাটি অ্যাসিড ও খনিজ লবণ।

এছাড়া মূত্রস্বল্পতা কিংবা ক্ষুধামান্দ্য দূর করতে পারে এই বাঙ্গি। বাঙ্গিকে বলা হয় এটি অনেকটা শসাগোত্রীয় ফল। কারণ এটির গাছ দেখতে অনেকটা শসাগাছের মতো লতানো। এটি একটি স্বতন্ত্র স্বাদের ফল।এই ফলের ওজন এক থেকে চার কেজি পর্যন্ত হতে পারে।

জানা যায়, আমাদের দেশে প্রধানত বেলে ও এঁটেল বাঙ্গি নামক দু‘জাতের বাঙ্গি দেখা যায়। বেলে বাঙ্গির শাঁস নরম। খোসা খুব পাতলা, শাঁস খেতে বালু বালু লাগে। তেমন মিষ্টি নয়। অন্যদিকে, এঁটেল বাঙ্গির শাঁস কচকচে, একটু শক্ত এবং তুলনামূলকভাবে মিষ্টি।

আমিরুল আলম খান তার ‘বাংলার ফল’ বইয়ে উল্লেখ করেছেন, প্রতি ১০০ গ্রাম বাঙ্গি থেকে পাওয়া যায় ২৫ ক্যালরি পুষ্টিগুণ। ভেষজ গুণ আছে বাঙ্গির।

তবে সবচেয়ে মজার বিষয় হলো এ ফলে কোনো চর্বি নেই। যাদের ওজন নিয়ে বিশেষ চিন্তা তারা এ ফল বেশি বেশি খেতে পারেন নির্দ্বিধায়। বরং দেহের ওজন কমাতে, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে বাঙ্গির ভূমিকা অপরিহার্য।

আর বাঙ্গির এত গুণাগুণ দেখে আমার মনে হয় যারা ঝড় তুলছেন বাঙ্গির বিপক্ষে তারা নিরবে, লুকিয়ে কিংবা রাতের আঁধারে ঠিকই বাঙ্গির প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন হরহামেশ। তা না হলে সত্যি- বাজারের এত বাঙ্গি যাচ্ছে কই!!?

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৯, ২০২১ ৭:৫৪ অপরাহ্ন
ধান নিয়ে বিপাকে কৃষক, কেটে ঘরে তুলে দিলো ছাত্রলীগ
কৃষি বিভাগ

শ্রমিক দিয়ে বহু কষ্টে ১৭ কাঠা জমিতে ধান লাগিয়েছিলেন বয়সের ভারে নুয়ে পড়া গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার করপাড়া ইউনিয়নের হাটবাড়িয়া গ্রামের কৃষক রজব মুন্সী(৭০)। জমিতে ভালো ফলনও হয়েছে তার। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসার আগেই জমির ধান কেটে ঘরে তুলতে চাইলেও করোনার কারণে শ্রমিক না পেয়ে যখন হতাশ। ঠিক তখনই বৃদ্ধ কৃষকের দুঃচিন্তা কমাতে এগিয়ে আসলো গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ।

সোমবার (১৯ এপ্রিল) সকালে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্লার নেতৃত্বে ৩০ সদস্যের একটি দল কৃষক রজব মুন্সীর ১৭ কাঠা জমির ধান কেটে দেন। পরে তারা সেই ধান মাড়াই করে ঘরে তুলে দেন।

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্লা জানান, করোনা পরিস্থিতি কারণে এখন ধান কাটা শ্রমিকের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এতে কৃষকরা তাদের জমির ধান ঘরে তুলতে পারছেন না। আমরা খবর পেলেই কৃষকের জমির ধান কেটে দিবো। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কৃষকদের পাশে থাকবেন বলেও তিনি জানান।

কৃষক রজব মুন্সী জানান, করোনার কারণে জমির ধান কাটার জন্য শ্রমিক পাচ্ছিলাম না। এতে ধান নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমার জমির ধান কেটে মাড়াই করে ঘরে তুলে দিয়েছে। জমির ধান নষ্ট হবার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ায় আমি খুশি। আমি দোয়া করি আল্লাহ যেন এদের ভালো করে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৮, ২০২১ ৩:৫১ অপরাহ্ন
খুলনায় দরিদ্র পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে সবজি বিতরণ
কৃষি বিভাগ

করোনা সংক্রমণ রোধে সারাদেশে চলছে কঠোর লকডাউন। আর এই লকডাউন এবং পবিত্র রমজানে মাস উপলক্ষে খুলনায় কর্মহীন হতদরিদ্রদের মধ্যে শুরু হয়েছে বিনামূল্যে সবজি বিতরণ।

শনিবার (১৭ এপ্রিল) মহানগরীর চার নম্বর ওয়ার্ডের দৌলতপুর দেয়ানা যশোর মোড় এলাকায় মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র পরিবারের মধ্যে সবজি বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক মো. শফিকুর রহমান পলাশ।

মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক মো. শফিকুর রহমান পলাশ বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে দেশব্যাপী চলছে কঠোর লকডাউন। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। কর্মহীন ও দরিদ্র এসব মানুষের জন্য সহায়তার হাত বাড়িয়েছে খুলনা মহানগর যুবলীগ। যার ধারাবাহিকতা লকডাউন চলাকালীন সময় প্রতিটি ওয়ার্ডে বিনামূল্যে সবজি, ইফতার ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। ৪ নম্বর ওয়ার্ড দিয়ে শুরু হওয়া এ কার্যক্রম প্রতিটি ওয়ার্ডে পর্যায়ক্রমে শুরু হবে।

খুলনা মহানগর যুবলীগের আয়োজনে সরকারি বিএল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও মহানগর যুবলীগের সদস্য মেহেদী হাসান মোড়লের উদ্যোগে সবজি বিতরণ কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নুর ইসলাম, দৌলতপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, চার নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওহিদুজ্জামান, চার নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু আসলাম মোড়ল, মহানগর যুবলীগের সদস্য অভিজিৎ চক্রবর্তী দেবু, আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুজ্জামান খোকন, শেখ শহিদুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম বাপ্পী, সাফায়েত হোসেন, হাবিব মোড়ল, মাহবুব মোড়ল, সাবেক ছাত্রনেতা বাচ্চু মোড়ল, পলাশ মন্ডল, আসাদুজ্জামান আসাদ, নওরজ জাহান আদর, যুবলীগ নেতা ইবাদ মোড়ল, আরিফ মোড়ল, ইব্রাহিম মোড়ল, শেখ নাদিম, সুমন দাস, ছাত্রনেতা রিপন মোড়ল, লিপু মোড়ল, নাজিম হোসেন ইমু, আল আমিন প্রমুখ।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৭, ২০২১ ২:০৫ অপরাহ্ন
একদিনের ব্যবধানে অর্ধেকে নামল সবিজর দাম
কৃষি বিভাগ

রাজধানীর বাজারগুলোতে অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পর একদিনের ব্যবধানে বেগুন, ঢেঁড়স ও শসার দাম কমেছে। বেগুনের দাম কেজিতে ৫০ টাকার ওপরে কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে। ঢেঁড়স ও শসার দাম কমেও প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। একদিনে এ দুটি পণ্যের দাম কেজিতে ৩০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।

শনিবার (১৭ এপ্রিল) সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মান ও বাজার ভেদে বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা। গতকাল শুক্রবার বেগুনের কেজি বিক্রি হয় ৮০ থেকে ১২০ টাকা।

বেগুন, ঢেঁড়স ও শসার পাশাপাশি কিছুটা দাম কমেছে পাকা টমেটো, ধুন্দুল, পটল, শিম, বরবটির। এসব সবজির দাম কেজিতে ১০ টাকার মতো কমেছে। কেজি ৯০ টাকায় উঠে যাওয়া শসার দাম কমে এখন ৫০ থেকে ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ঢেঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, যা গতকাল শুক্রবার ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা।

বেগুন, শসা, ঢেঁড়সের এমন দরপতনের ব্যবসায়ীরা নূর আলী বলেন, ‘রাজধানীর বাসিন্দাদের বড় অংশ শুক্রবার বাজার করেন। এ কারণে শুক্রবার সবজির দাম একটু বেশি থাকে। রোজার প্রথম শুক্রবার হওয়ায় গতকাল সবজির দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গিয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘গতকাল এক কেজি বেগুন ১২০ টাকা বিক্রি করেছি , আজ ৬০ টাকা কেজি বিক্রি করছি, তারপরও ক্রেতা কম। একই অবস্থা শসা ও ঢেঁড়সের। ঠান্ডা সবজি হিসেবে পরিচিত ঢেঁড়সের চাহিদা রোজায় একটু বেশি থাকে। চাহিদা বেশি হওয়ায় গতকাল ঢেঁড়সের কেজি ৮০ টাকা বিক্রি হয়েছে। আজ তা দাম কমে ৫০ টাকায় নেমেছে। আর গতকাল ৯০ টাকা কেজি বিক্রি করা শসা আজ ৬০ টাকা বিক্রি করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সবজির দাম নির্ভর করে আড়তের ওপর। আড়ত থেকে কম দামে সবজি কিনতে পারলে আমরাও কম দামে বিক্রি করি। ঠিক তেমনি আড়তে দাম বাড়লে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। আজ আড়ত থেকে সব সবজিই গতকালের থেকে কম দামে কিনতে পেরেছি। এ কারণে কম দামে বিক্রি করতে পারছি।’

কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী মিলন ব্যাপারী বলেন, ‘গতকালের তুলনায় আজ সবজির সরবরাহ বেশি। কিন্তু চাহিদা কম। এ কারণে সবজির দাম কমেছে। সরবরাহ কম সবজির দাম আবার বেড়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘শুক্রবার বাজারে ক্রেতার চাপ বেশি থাকে, এটা সবাই জানে। যে কারণে সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়ে যায়। গতকাল রোজার প্রথম শুক্রবার হওয়ায় ক্রেতাদের চাপ অনেক বেশি ছিল। এ কারণে দামও বাড়ে বেশি হারে।’

এদিকে, গতকাল ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া সজনে ডাটার দাম কমে ৬০ থেকে ৭০ টাকায় নেমে এসেছে। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, যা গতকাল ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, যা গতকাল ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা।’

দাম কমার এ তালিকায় রয়েছে পাকা টমেটো, ধুন্দুল, লাউ, পটল। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, যা গতকাল ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। গতকাল ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ধুন্দুলের দাম কমে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। গতকাল ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পটলের দাম কমে ৪০ টাকায় নেমেছে।

মালিবাগ হাজীপাড়া বৌবাজারে ব্যবসায়ী জাকির বলেন, ‘আড়তে আজ সব ধরনের সবজির দাম কমেছে। এ কারণে আমরাও কম দামে বিক্রি করতে পারছি। আড়তে দাম আরও কমলে আমরাও আরও কম দামে বিক্রি করতে পারবো। তবে রোজায় সবজির দাম আরও কমার সম্ভাবনা কম। বরং আমাদের ধারণা সবজির দাম আবার বেড়ে যাবে।’

বাজারটি থেকে সবজি কেনা আমেনা বেগম বলেন, ‘দাম কমার পরও এখনও সব ধরনের সবজির দাম বেশি। টমেটো ছাড়া এখনও তো ৫০ টাকার নিচে সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। এতো দাম দিয়ে সবজি কিনে খাওয়া আমাদের মতো খেটে খাওয়া মানুষের জন্য খুব কষ্টের।’ সূত্র: জাগো নিউজ

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৭, ২০২১ ১১:১৪ পূর্বাহ্ন
রংপুরে ছাগল পাটক্ষেত খাওয়ায় কৃষককে গলাটিপে হত্যা
পাঁচমিশালি

ছাগল পাটক্ষেত খাওয়ার জেরে রংপুরের গঙ্গাচড়া থানাধীন খলেয়া ইউনিয়নের ঠাকুরপাড়ায় এক কৃষককে গলাটিপে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে ওই এলাকার আকিজ গ্রুপের একটি জমির পাটক্ষেত ছাগল খাওয়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত কৃষকের নাম নিবারণ রায় (৪৫)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিবারণ রায়ের ছাগল পাটক্ষেতে ঢুকে ক্ষেত খায়। পরে আকিজ গ্রুপের কেয়ারটেকার কৃষ্ণ রায়ের স্ত্রী কল্পনা রানী সেখানে এসে ঝগড়া শুরু করেন। একপর্যায়ে বাড়ি থেকে তার স্বামী কৃষ্ণকেও ডেকে আনেন। পরে কেয়ারটেকার কৃষ্ণ ধারালো অস্ত্র দিয়ে নিবারণের ছেলে সন্তোষকে হাতে কোপ দেন এবং সেখানে থাকা কৃষক নিবারণকে মাটিতে ফেলে গলাটিপে ধরেন। একপর্যায়ে নিবারণের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

খবর পেয়ে গঙ্গাচড়া মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যায়।

গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুশান্ত কুমার সরকার বলেন, এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত কৃষ্ণ ও তার স্ত্রী কল্পনা রানী পলাতক। থানায়ও এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরো পড়ুন:  দিনাজপুরে আলুর বাম্পার ফলনেও হাসি নেই কৃষকের

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৪, ২০২১ ১০:৪৯ পূর্বাহ্ন
অসহায় সবজি বিক্রেতাকে ভ্যান কিনে দিলেন ওসি
পাঁচমিশালি

করোনায় পুরো দেশ কোণঠাসা হয়ে আছে। জীবন বাঁচাতে সরকার দিয়েছে লকডাউন। তবে লকডাউনে নিম্ন আয়ের মানুষের অবস্থা আরো শোচনীয়। আর এই অবস্থায় একটি ভ্যান কিনে দিয়ে গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া এলাকার অসহায় এক সবজি বিক্রেতার পাশে দাঁড়ালেন পুলিশ কর্মকর্তা ওসি মো. কামরুল ফারুক।

মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে তার কাছে ভ্যানটি হস্তান্তর করেন বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল ফারুক। ভ্যানটি পেয়ে খুবই খুশি হয়েছেন সবজি বিক্রেতা মো. সাইফুল ইসলাম (৩৭)।

সবজি বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম জানান, গাজীপুর মহানগরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভোগড়া মধ্যপাড়া এলাকার নায়েব বাড়িতে থেকে তিনি এলাকায় সবজি বিক্রি করেন। পাঁচ সদস্যের পরিবারে তিনি একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তিনি অতিকষ্টে খেয়ে না খেয়ে ধারদেনা করে সম্প্রতি কিস্তিতে একটি পুরাতন ভ্যান কেনেন। সারাদিন সবজি বিক্রি করে যে আয় হয় তা থেকে তিনি কোনো রকমে সংসার খরচ মেটান এবং ভ্যানের কিস্তির টাকা শোধ করতেন। এতে কোনোমতে চলে যাচ্ছিল তার সংসার।

একমাস আগে তার ভ্যানটি বাসার পাশ থেকে খোয়া যায়। এতে করোনাকালে তিনি অনেকটাই কর্মহীন হয়ে চরম হতাশার মধ্যে পড়েন। ধারদেনা করে সংসার চালাতে থাকেন। বিষয়টি তিনি বাসন থানার ওসির কাছে জানালে তিনি মঙ্গলবার একটি ভ্যানের ব্যবস্থা করে দেন। ভ্যানটি পেয়ে তিনি খুশি হয়েছেন।

ওসির এমন মানবিক দৃষ্টান্ত দেখে মুগ্ধ সাইফুল বলেন, ‘সব পুলিশ এক নন। পুলিশে এখনও ভালো ও সৎ কর্মকর্তা রয়েছেন।’

পরিবারের অবস্থা দেখে এবং মানবিক দিক বিবেচনায় সাইফুল ইসলামকে একটি ভ্যান কিনে দিয়েছি। এতে করোনাকালে তার সংসার চালানো কিছুটা সহজ হবে আশা প্রকাশ করছেন বাসন থানার ওসি মো. কামরুল ফারুক।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৪, ২০২১ ৪:৫১ পূর্বাহ্ন
পার্বত্য আদিবাসীদের নববর্ষ উদযাপন
পাঁচমিশালি

সুলতান মাহমুদ আরিফ: প্রকৃতি নির্ভর আদিবাসী বলতেই উৎসব প্রিয় এক জনগোষ্ঠীকে বুঝানো হয়। বলা চলে,আদিবাসীরা জন্ম থেকেই বিভিন্ন উৎসবে মেতে থাকে সারা জীবন। এমনকি আদিবাসীরা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের পরও মৃত দেহ নিয়ে মেতে উঠে উৎসবে। যার নাম অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া। মধ্যকথা আদিবাসীরা সামাজিক কালচার এবং ধর্মীয় মনোভাব এই দু‘টোর সংমিশ্রণে সারাজীবন উৎসবমুখর থাকে।

বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামে ১২টি আদিবাসীদের বসবাস। তাদেরমধ্যে কেউ বৌদ্ধ, হিন্দু, খৃস্টান আবার কেউবা জড়-উপাসক। আর এরা সবাই তাদের নিজ নিজ ধর্ম আর সংস্কৃতির ধারা মোতাবেক তাদের স্ব স্ব উৎসবগুলো পালন করে থাকে।

উপজাতীয় উৎসবগুলো বেশির ভাগ ঋতুর সাথে সম্পর্কিত। ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে তাদের উৎসবের মহড়া বেজে উঠে। আদিবাসীদের দেহ মনে ঋতু পরিবর্তনে এক আনন্দের বার্তা জেগে উঠে। বিশেষ করে পুরাতন বছরের বিদায় এবং নতুন বছরকে বরণ করে নেয়া যেন তাদের রক্তের সাথে মিশে থাকা এক মহানান্দ। কেবল পার্বত্য আদিবাসী না, পৃথিবীর বহু জাত এবং আদিবাসীরা পুরাতন বছরের বিদায়ের দিনক্ষণ এবং নতুন বছরের শুভ পদার্পনের দিনটিকে বেশ আনন্দময় করে পালন করে থাকে।

বাংলাদেশেও চৈত্র-সংক্রান্তি ও নববর্ষ একটি প্রাচিনতম ঐতিহাসিক ঋতুধর্মী উৎসব। বাংলাদেশে এই নববর্ষ তথা বাংলা নতুন বছরের আগমণে নানা রকম উৎসব হয়ে থাকে।  উৎসবগুলোর মাঝে অন্যতম হলো, হালখাতা, গরুর লড়াই, বলি খেলাসহ নানাবিদ আয়োজনের পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীরা এই দিবসকে পালন করে আরো ভিন্ন আঙ্গিকে আর ভিন্ন পরিক্রমায়।

তাদের উলেখযোগ্য কয়েকটা গুরুত্ববহ উৎসব হল:
মারামা আদিবাসীরা পালন করেন‘সাংগ্রাই’, চাকমা এবং তঞ্চঙ্গ্যা উপজাতির রয়েছে ‘বিজু’, ত্রিপুরা ও উসুই আদিবাসীরা পালন করেন ‘বৈসুক’। এছাড়াও ম্রো ও খুমীরা পালন করেন ‘ক্লুবং প্রাং’ উৎসব।

বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রগুলোতেও এসব উৎসব একইভাবে পালন করে সেই সকল উপজাতীয় জনগোষ্ঠীরা। তবে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে অহমীয়া বাঙ্গালি আর পার্বত্য চট্টগ্রামের মাঝে যেন এক মিলবন্ধনের দৃশ্যপট অবলোকন করা যায়।

নিম্নে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে পালিত হওয়া উপরে উল্লেখিত ৪টি উৎসব নিয়ে আলোকপাত করা হল।

১.মারামা আদিবাসীদের সাংগ্রাই’ উৎসব
মারমা আদিবাসীদের নববর্ষকে ঘিরে অন্যতম উৎসব হলো “সাংগ্রাই উৎসব”। পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে বরণে তারা এই উৎসব পালন করে থাকে। এই উৎসব তারা প্রধানত ৪ দিনব্যাপী পালন করে থাকে। পুরাতন বছরের শেষ তিনদিন আর নতুন বছরের প্রথম দিন।

আর এই চার দিনকে মারমা‘রা তাদের ভাষায় নামকরণ করছেন, যথাক্রমে: সাংগ্রাই আকিয়ানিহ, সাংগ্রাই আক্রানিহ, সাংগ্রাই আতানিহ এবং লাছাইংতারা।

পুরাতন বছরের শেষের তিন দিনের প্রথম দিনকে মারমা ভাষায় বলা হয় ‘সাংগ্রাই আকানিয়াহ’। এই দিনে মারমা আদিবাসীদের পরিস্কার পরিচ্ছন্ন পোষাক পরে মিছিল করতে করতে তাদের বৌদ্ধমূর্তিকে নদীর ঘাটে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তারা বৌদ্ধ মূর্তিকে চন্দন পানি অথবা দুধ দিয়ে গোসল করায়। তারপর আবার মূর্তিগুলোকে বাড়ি কিংবা মন্দিরে নিয়ে রাখে।

পুরাতন বছরের শেষ ২দিনকে বলা হয় যথাক্রমে-‘সাংগ্রাই আক্রাইনিহ এবং সাংগ্রাই আতানিহ’। এই দু‘দিনে মারমাদের মাঝে যেন নেমে আসে আনন্দের বন্যা। এই দু‘দিন তাদের পাড়ায় পাড়ায় চলে ‘পানি খেলা’ উৎসব আনন্দ। এই দু‘দিনে তারা একেঅপরকে পানি দিয়ে ভিজানোর মাধ্যমে পুরাতন বছরের সকল ব্যর্থতা আর নতুন বছরকে স্বচ্চতার অবয়বে বরণ করে নিতে চাই। এরপর আসে নতুন বছরের প্রথম দিন ‘লাছাইতারা’। এই দিনকেও তারা খুব আনন্দে গ্রহণ করে নেয়। তবে মারমাদের এই দিনে কোন পানি উৎসব হয় না।

সাংগ্রাই উৎসব যেন মারমাদের মনের মাঝে এক অন্যরকম আনন্দের ঢেউ খেলে যায়। মারমা আদিবাসী মেয়েরা এই ৪দিনের সাংগ্রাই উৎসব শুরুতে আগে বৌদ্ধমন্দিরগুলো পানি দিয়ে ধুয়ে মুছে পরিস্কার করে নেয়। নিজেদের ঘরবাড়িগুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখে। মারমা আদিবাসী সাংগ্রাই উৎসবে যেভাবে আনন্দ আর সাজ গোঁজ করে, বছরের আর কোন দিনে তাদের এমন সাজ দেখা যায় না।

এই সাংগ্রাই উৎসব কেবল পার্বত্য চট্টগ্রাম না, প্রতিবেশি রাষ্ট্র মায়ানমারসহ ভিবিন্নদেশে পালিত হয়।

২.চাকমা আদিবাসীদের ‘বিঝু’ উৎসব
নববর্ষকে বরণ করে নিতে চাকমারা পালন করে ‘বিঝু’ উৎসব। এই বিঝু উৎসব চলে তিনদিন ধরে বিভিন্ন আনন্দের মধ্য দিয়ে। প্রতি বছর এই সময় চাকমা জনপদে বি-ঝু-বি-ঝু এক ধরণের পাখির কলকাকলির মত আওযাজ স্মরণ করিয়ে দেয় নতুন বছরের আগমনী বার্তা। ঘরে ঘরে সাড়া পড়ে যায় আনন্দের সমারোহ। সবাই মাতোয়ারা থাকে তিনদিন ব্যাপি বিঝু উৎসব পালনে।

চাকমারা পর্যায়ক্রমে তিনদিন এই উৎসব পালন করে থাকে। মারমাদের মত চাকমাদেরও এই তিনদিনের রয়েছে নিজস্ব নাম। চাকমাদের এই উৎসবের প্রথম দিনকে বলা হয় ‘ফুল বিঝু’ আর দ্বিতীয় দিনকে বলা হয় ‘মূল বিঝু’ এবং তৃতীয় দিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখের দিনকে বলা হয় ‘গোজ্যাই পোজ্যা’।

নিম্নে চাকমাদের এই তিনদিন উৎসবের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়া হল-
ফুল বিঝু: চাকমাদের ভাষায় চৈত্রের শেষ দু‘দিনের প্রথম দিনকে বলা হয় ‘ফুল বিঝু’। এই দিনটাকে ফুল বিঝু বলার রহস্য উম্মোচনে কেউ কেউ বলেন, এই দিনে চাকমারা নদীর ঘাটে গিয়া জলদেবী গংগার উদ্দেশ্যে ফুল দিয়ে পূজা করে বিধায় এই দিনকে বলা হয় চাকমাদের ভাষায় ‘ফুল বিঝু’। এই দিনটা চাকমাদের কাছে খুবই পবিত্র একটা দিন। এই দিনে চাকমা যুবক-যুবতীরা নদী থেকে পানি এনে বুড়া-বুড়িদের গোসল করিয়ে তাদের কাছ থেকে আশীর্বাদ নিয়ে থাকে। পবিত্র মন নিয়ে সবাই বৌদ্ধ মন্দিরে গিয়ে রাতে পূজা আর্চনা করে থাকে। রাতে তারা আবার প্রদীপ পূজাও করে থাকে। এছাড়াও আরো বিভিন্ন আনন্দ উৎসবে তারা এই দিনটাকে পালন করে থাকে।

মূল বিঝু: পুরাতন বছরের তথা চৈত্রের শেষ দিনকে চাকমারা বলে ‘মূল বিঝু’। চাকমারা এই দিনে প্রায় পাঁচ পদের তরকারী দিয়ে বানায় পাচন তরকারী উৎসব। এই দিনে চাকমারা বিভিন্ন ধরণের পিঠা তৈরী করে। সকাল থেকেই প্রতিটা ঘরে চলে তাদের ভোজন উৎসব। চাকমাদের এই দিনে কেউ কাউকে নিমন্ত্রণ করে না। সবাই সবার মত করে বাড়ি বাড়ি ঘুরে খাওয়া উৎসবে যোগদান করে আনন্দ করে। এই দিনে তারা মদ পরিবেশন করে থাকে। মেয়েরা তাদরে কোমরে বোনা রাঙা খাদি জড়িয়ে এদিক সেদিক ঘুরে বেড়ায়। বলা চলে অনেক আনন্দ আর উৎসবের মধ্য দিয়ে তারা এই দিনটা তথা পুরাতন বছরকে বিদায় জানায়। এদিন কেবল আনন্দ করা ছাড়া তারা আর কোন কাজ করে না।

গোজ্যাই পোজ্যা দিন: নতুন বছরের প্রথম তথা পহেলা বৈশাখকে চাকমারা বলে গোজ্যাই পোজ্যা দিন। চাকমাদের ভাষায় গোজ্যা পোজ্যা অর্থ গড়াগড়ি করা। অতীতে এই দিনে চাকমারা প্রচুর মদ পান করতো। এই দিনের ধারণা ছিলো এটি বছরের প্রথম দিন, তাই এই দিনে যদি ভালো খাওয়া হয়, বছরের প্রতিটা দিন ভালো খাওয়া হবে। তাই তারা এই দিনে প্রচুর ভোজনের আয়োজন করে। তারপর বিছানায় গড়াগড়ি করে থাকে। এই দিনে তারা হাসি তামাশায় কাটিয়ে দেই। অনেকে আবার বৌদ্ধমন্দিরে গিয়ে এই দিনে ধর্মকর্মে ব্যস্ত থাকে।

৩.ত্রিপুরা আদিবাসীদের ‘বৈইসুক/বৈইসু’ উৎসব
পার্বত্য চট্টগ্রামের ত্রিপুরা আদিবাসী সমাজে পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে স্বাগতম জানানোর উৎসবকে বলা হয় ‘বৈইসুক/বৈইসু’। এই উৎসব তারা তিনদিন পর্যন্ত পালন করে থাকে। এই দিনে তারা হাসি আর আনন্দের পাশাপাশি শিবের আশীর্বাদ কামনা করে থাকে। তাদের ধারাবাহিক তিনদিনকে তাদের ভাষায় বলা হয় ‘হারি বৈইসুক, বিসুমা এবং বিসিকাতল’।

হারি বৈসুক: চৈত্র-সংক্রান্তির পূর্বের দিনকে তারা ‘হারি বৈইসুক’ হিসাবে পালন করে। এই দিনে তারা তাদের সকল গবাদি পশুদের গোসল করায়। আবার অনেকে বিভিন্ন রকমের ফুলের মালা দিয়ে তাদের গবাদি পশুদের সাজিয়ে রাখে। খুব ভোরে নদীর ঘাটে গিয়ে তারা দেবতার উদ্দেশ্যে ফুল দিয়ে আসে এই দিনে।

বিসুমা: চৈত্র-সংক্রান্তির দিনকে ত্রিপুরা আদিবাসীরা ‘বিসুমা’ দিবস হিসাবে পালন করে থাকে। এই দিনে খুব প্রত্যুষে তারা তাদের বাড়ি-ঘর এক ধরণের কচুই পানি দিয়ে পরিশুদ্ধ করে থাকে। প্রত্যেক বাড়িতে বাড়িতে তারা বিভিন্ন ধরণে পিঠা উৎসব করে থাকে। এই দিনে বিশেষ মুখরোচক খাদ্য হল ‘পচন’ (হাঙ্গর মাছের শুটকিসহ পাঁচ পদের তরকারি দিয়ে এই পচন রান্না করা হয়)। তারা এই দিনে ঘরে ঘরে মদও তৈরী করে থাকে। অতিথিদের এসব পিঠা, পচন আর মদ দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। এই দিনে তারা সবাই রাগ-অভিমান ভুলে গিয়ে আন্তরিকতার মায়াজালে আবদ্ধ হয়ে পড়ে।

বিসিতকাল: নববর্ষের প্রথম দিনকে ত্রিপুরা আদিবাসীরা ‘বিসিতকাল’ নামে পালন করে থাকে। এ দিনে সকাল থেকে তাদের ঘরে ঘরে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠে সবাই। প্রত্যুষে নব দম্পতিরা কিংবা ত্রিপুরা যুবক-যুবতিরা নদীর ঘাট থেকে পানি এনে তাদের গুরুজনদের গোসল করানোর মাধ্যমে আশীর্বাদ নিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়।

উপরোক্ত এই তিন আদিবাসী উৎসব যদিও ভিন্ন ভিন্ন। তথাপি পুরো পার্বত্য জেলায় এই তিনটা উৎসব তথা মারমাদের ‘সাংগ্রাই’ চাকমাদের ‘বিঝু’ আর ত্রিপুরাদের ‘বৈইসুক‘কে এক সাথে বলা হয় ‘বৈসাবি’। বিশ্লেষণে দেখা যায়, এখানে ‘বৈ’ এসেছে ত্রিপুরা আদিবাসী ‘বৈইসুক’ থেকে, ‘সা’ এসেছে মারাম আদিবাসী ‘সাংগ্রাই’ থেকে আর ‘বি’ এসেছে চাকমা আদিবাসী ‘বিঝু’ থেকে।

বছরের শেষ দু‘দিন আর নতুন বছরের প্রথম দিনই মূলত তাদের বর্ষবরণ উৎসব ‘বৈসাবি’ পালন করা হয়। আর এই বৈসাবি উৎসবে বান্দরবান, রাঙ্গামাটি এবং খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় নেমে আসে আনন্দের মহড়া। এই তিন আদিবাসী উৎসবকে ঘিরেই মূলত পালিত হয় নববর্ষ উদযাপনের চিত্র।

এছাড়াও নতুন বছরকে বরণ আর পুরাতন বছরকে বিদায়ে আরো একটি আদিবাসী উৎসবমুখর আয়োজন করে থাকে। তারা হলেন ‘ম্রো ও খুমী’ আদিবাসীরা। তারা এই দিনে ‘ক্লুবং প্লাই’ নামক উৎসব পালন করে। চৈত্র মাসের শেষ দিন তারা ফুল-পূজা করে। বনের নানা রঙের ফুল এনে তারা তাদের বাড়ি ঘরসহ নিজেরাও সাজে। ১লা বৈশাখে তারা বুড়ো-বুড়ীদের স্নান করায়। তারপর তারা পচন রান্না করে। এই দিনে তারা নৃত্যগীত অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। যুবতীরা এই দিনে দাঁতে প্রাকৃতিক রঙ লাগিয়ে নৃত্যগীত অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। আর যুবকরা তাদের ‘প্লু’ তথা বাঁশী বাজিয়ে আনন্দে মেতে উঠে।

সুলতান মাহমুদ আরিফ
শিক্ষার্থী এবং গণমাধ্যমকর্মী।
[email protected]

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৩, ২০২১ ৭:২১ অপরাহ্ন
দেখা গেছে চাঁদ, কাল থেকে রোজা
পাঁচমিশালি

রমজানে চাঁদ দেখা গিয়েছে। সেই সুবাদে বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে রমজান মাসের গণনা শুরু হবে, অর্থাৎ প্রথম রোজা শুরু কাল থেকেই।

মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে ১৪৪২ হিজরি সনের পবিত্র রমজানের চাঁদ দেখা গেছে।তাই আগামীকাল বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে শুরু হচ্ছে মুসলমানদের সিয়াম সাধনার মাস।

মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) বাদ মাগরিব ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

আগামী ৯ মে রোববার দিবাগত রাতে পবিত্র লাইলাতুল কদর পালিত হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ৯, ২০২১ ৬:১৬ অপরাহ্ন
সিরাজগঞ্জে দুধ-ডিম-মাংসের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রের উদ্বোধন
পাঁচমিশালি

সিরাজগঞ্জে ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, নিরাপদ প্রাণিজ পুষ্টি হবে সবার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জনসাধারণের প্রাণিজ পুষ্টি নিশ্চিতকল্পে ​করোনা পরিস্থিতিতে ন্যায্যমূল্যে ভ্রাম্যমাণ দুধ, ডিম ও সোনালী মুরগীর মাংস বিক্রয় কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার (৯ এপ্রিল) বেলা ১১টায় সিরাজগঞ্জ শহরের বাজার স্টেশন এলাকার স্বাধীনতা স্কয়ারে এই বিক্রয় কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. শেখ মো. আজিজুর রহমান।

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের আয়োজনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিচালক (বাজেট) ডা. মোহাম্মাদ আলী, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আক্তারুজ্জামান ভুইঁয়া, সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হারুন অর রশিদ, প্রাণি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. মৌসুমী খাতুন, তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সোহেল আহমেদ, কামারখন্দ উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবু সাঈদ প্রমুখ।

উদ্বোধনের আগে মহাপরিচালককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান জেলা প্রাণি সেবা কল্যাণ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহমুদুল হাসান মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মো. ইউসুফ আলী।

বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ) ও বাংলাদেশ পোল্ট্রি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএফএ) বাস্তবায়নে এবং প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি), প্রাণিসম্পদ অধিদফতর, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় সারাদেশের ন্যায় সিরাজগঞ্জ জেলা ও উপজেলা সদরগুলোতে ১০ দিনব্যাপী মোট ৪৪টি ন্যায্যমূল্যের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্র চালু করা হয়েছে।

এ কেন্দ্রগুলোতে ফার্মের মুরগির ডিম ২৬ টাকা হালি, ফার্মের গরুর দুধ ৫০ টাকা প্রতি কেজি ও সোনালী মুরগির মাংস প্রতি কেজি ২৫০ টাকা মূল্যে বিক্রি করবে বলে ‍জানা যায়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ৮, ২০২১ ৪:৩৭ অপরাহ্ন
মেহেরপুরে দুই ছাগল চোরকে গণপিটুনি দিয়েছে জনতা
পাঁচমিশালি

মেহেরপুরের গাংনীর সাহারবাটি গ্রামে দুই ছাগল চোরকে ধরে গণপিটুনি দিয়েছে সাধারণ জনগণ। পরে তারা পুলিশে সোপর্দ করেছেন ওই দুই ছাগল চোরকে।

বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আটকরা হলেন, মেহেরপুর শহরের মল্লিকপাড়ার ইকবাল আলীর ছেলে আকাশ (২২) ও শাহাদত হোসেনের ছেলে শামীম (২০)।

অভিযোগের ভিত্তিতে দুজনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেন জানান গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)।

গাংনী থানার ওসি (তদন্ত) সাজেদুল ইসলাম জানান, গাংনীর সাহারবাটি গ্রামের মুক্তি নামে এক নারীর বাড়ির পাশ থেকে তার দুটি বড় খাসি ছাগল চুরি করে আকাশ ও শামীম একটি ইজিবাইকযোগে পালিয়ে আসছিলেন। স্থানীয় লোকজন তাদের দু’জনকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশকে জানায়।

সংবাদ পেয়ে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে। এছাড়া চুরি যাওয়া ছাগলসহ ইজিবাইকটি জব্দ করে থানায় নিয়ে আসে।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রহমান জানান, চোর এবং ছাগল থানায় আনা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop