১০:৩১ পূর্বাহ্ন

মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : জুন ২৪, ২০২২ ৫:০৬ অপরাহ্ন
লক্ষাধিক গরু ছাগল নিয়ে পানিবন্দী,দিশেহারা খামারিরা!
প্রাণিসম্পদ

দুই বছর আগে কাশিরপাড়া চর যমুনার ভাঙনে বিলীন হলে নদীতীর থেকে এক কিলোমিটার দূরে টিনের বেড়ার ঘর তুলে বসবাস শুরু করেন বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার চালুয়াবাড়ি ইউনিয়নের দুর্গম কাশিরপাড়া চরে বসবাস কৃষক মোনাহার ব্যাপারীর (৬০)।

চরে চাষাবাদের পাশাপাশি বসতবাড়িতে আছে গরুর ছোট খামার। খামারে সব মিলিয়ে গরুর সংখ্যা ৯টি।

গত শনিবার যমুনা নদীর ঢলে প্লাবিত হয় মোনাহার ব্যাপারীর বসতঘর। ঘরের উঠানে থই থই পানির স্রোত। চাল-ডাল, কাঁথা-বালিশ সঙ্গে করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঠাঁই নিয়েছেন নৌকায়। গোয়ালে বুকসমান পানি। বাঁশের উঁচু মাচা তৈরি করে খোলা আকাশের নিচে কয়েক দিন গরু বেঁধে রেখে নির্ঘুম রাত কাটান তিনি।

যমুনার ঢলের সঙ্গে লড়াই করে কুলাতে না পেরে গতকাল বুধবার সহায়–সম্বল নিয়ে ওঠেন পাকুল্যা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে।

মোনাহার জানান, ‘চার দিন থ্যাকে যমুনার জলে ভাসিচ্চিম লৌকাত রাত কাটাচ্চি। বসতঘর-গোয়ালঘরত বুকসমান পানি। গরু বান্ধিবার অ্যাকনা জায়গা নাই। দুই বিঘা জমিনত ঘাস আবাদ করচিনু, বানত শ্যাষ। খড় নাই, ভুসি নাই। লিজেরাই খাবার পাচ্চি না, গরুক খাওয়ামু কী? কয়ডা দিন পর কোরবানির হাট বসলে এই গরু ব্যাচমো।’

শুধু মোনাহার ব্যাপারী নয়, যমুনা নদীর ঢলে দুর্গম চরে বসতঘরের সঙ্গে কৃষকের গোয়ালও প্লাবিত হওয়ায় গরু-ছাগল নিয়ে দিশাহারা অবস্থা হাজারো খামারির।

সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শাহ আলম বলেন, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দুর্গত এলাকায় ৫০ হাজার গরু ও ৬০ হাজার ছাগল নিয়ে বিপাকে আছেন খামারি ও চাষিরা। যমুনার ঢলের পানিতে ১১৫ একর ঘাস তলিয়ে গেছে।

খাটিয়ামারি চরের খামারি দলিলুর রহমান গত মঙ্গলবার ৯টি গরু নৌকায় তুলে আশ্রয়ের খোঁজে যাচ্ছিলেন যমুনা নদীর চাড়ালকান্দি ঘাটে।

আগেই সহায়–সম্বলসহ পরিবারের সদস্যরা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। দলিলুর রহমান বলেন, চার দিন ধরে বসতঘরে কোমরপানি। গোয়াল ভাসছে যমুনার ঢলে। বানের ঢলে ভেসে গেছে খড়, ডুবে গেছে ঘাসের জমি। উঁচু মাচায় তিন দিন ধরে বেঁধে রাখলেও অনাহারে ছটফট করছে গোয়ালের গরু। বাধ্য হয়ে নৌকায় গরু তুলে আশ্রয়ের খোঁজে যাচ্ছেন।

উপজেলার চালুয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলী বলেন, যমুনার ঢল ও নদীভাঙনে তাঁর ইউনিয়নে ২৫০টি আশ্রয়হারা পরিবারের ৩ হাজার মানুষ এখন খুব কষ্টে আছে। ঘরহারা মানুষের নিজেদেরই মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। গোয়ালের গরু-ছাগল নিয়ে দিশাহারা অবস্থা তাঁদের।

 

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ২৪, ২০২২ ৫:২৪ পূর্বাহ্ন
গরু সুস্থ রাখার উপায়
প্রাণিসম্পদ

গরু পালন লাভজনক হওয়ায় অনেকেই এখন গরুর খামার গড়ে তুলছেন। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে ব্যাপকহারে গরু পালন করা হচ্ছে। তবে গরুর খামার করে অনেকেই লোকসানে পড়ছেন। এর প্রধান কারণ হল গরুর নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়া। খামারের গরুকে সুস্থ রাখতে যেসব কাজ করতে হবে সেগুলো খামারিদের অবশ্যই জেনে খামার পরিচালনা করতে হবে।

খামারের গরুকে সুস্থ রাখতে যেসব কাজ করতে হবে: খামারের গরুগুলোকে প্রতিদিন নির্দিষ্ট হারে সুষম খাদ্য প্রদান করতে হবে। নিয়মিত গরুগুলোকে সুষম খাদ্য প্রদান করলে গরুগুলো দ্রুত বৃদ্ধি পাবে ও রোগের দ্বারা কম আক্রান্ত হবে। খামারের প্রত্যেকটি গরুর জন্য আলাদাভাবে খাদ্য প্রদানের ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর খাদ্য প্রদান করতে হবে। খামারের গরুগুলোকে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখার জন্য খামারের চারপাশের খোলামেলা পরিবেশের ব্যবস্থা রাখতে হবে। বাইরের বাতাস ও আলো যাতে ভালোভাবে চলাচল করতে পারে সেদিকেও বিশেষ নজর দিতে হবে। আলো ও বাতাসের ব্যবস্থা রাখলে গরু সুস্থ থাকবে ও রোগের দ্বারা কম আক্রান্ত হবে।

গরুগুলোকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরিক্ষা করাতে হবে। কোন গরু অসুস্থ হয়ে গেলে রোগের ধরণ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।পালন করা গরুগুলোকে একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়াতে হবে। গরুকে নিয়মিত কৃমির ওষুধ খাওয়ালে গরুর শরীর সুস্থ থাকে ও গরু স্বাস্থ্যবান হয়।

খামারের গরুগুলোকে বাইরে বের করে খামার ভালোকরে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করতে হবে। প্রয়োজনে জীবাণুনাশক ছিটিয়ে দিয়ে জীবাণু ধ্বংস করতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে কোন ভাবেই খামার পরিষ্কার করার পানি যাতে জমে না থাকে।

খামারের গরুগুলোকে নিয়মিত গোসল করানোর ব্যবস্থা করতে হবে। নিয়মিত গরুগুলোকে গোসল করালে গরুর শরীর পরিষ্কার থাকে ও রোগ-জীবাণুর আক্রমণ কম হয়। এছাড়াও নিয়মিত গোসল করালে গরুর ত্বক মসৃণ ও চকচকে থাকে।খামারে কোনভাবেই যাতে বাইরের কোন ব্যক্তি না প্রাণী অবাধে প্রবেশ করতে না পারে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। যদি প্রবেশ করাতেই হয় তাহলে প্রবেশের আগে জীবাণুমুক্ত করাতে হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ২৩, ২০২২ ৪:৫১ অপরাহ্ন
কোরবানি উদযাপনে সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে পূর্ণ প্রস্তুতি : প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
প্রাণিসম্পদ

কোরবানি উদযাপনে সরকারের পক্ষ থেকে পরিপূর্ণ প্রস্তুতি আছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) রাজধানীর ফার্মগেটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে তাঁর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আসন্ন ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষ্যে কোরবানির পশুর চাহিদা নিরূপণ, সরবরাহ ও অবাধ পরিবহন নিশ্চিতকরণ সংক্রান্ত আন্ত:মন্ত্রণালয় সভায় মন্ত্রী এ কথা জানান।

এসময় তিনি বলেন, অন্যান্য বছরের মত এবারও কোরবানির পশুর চাহিদা নিরুপন করা হয়েছে। কোরবানির চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত পশু প্রস্তুত আছে। এবার কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ১ কোটি ২১ লক্ষ ২৪ হাজার ৩৮৯টি। ফলে কোরবানির জন্য কোনরকম সংশয়, সংকট বা আশঙ্কার কারণ নেই।

কোরবানির হাটে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হবে। রোগগ্রস্ত পশু হাটে বিক্রি করতে দেওয়া হবে না। ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ হয়রানির শিকার হবেন না, ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত সদস্য নিয়োগ করা হবে। আমরা সুন্দরভাবে আসন্ন ঈদ-উল-আযহা উদযাপন করতে চাই।

মন্ত্রী আরও বলেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য ঈদ-উল-আযহা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এটি যাতে স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে এবং পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে উদযাপন করা যায় সে লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও সরকারের অন্যান্য দপ্তর-সংস্থা কাজ করছে।

কোরবানির পশুর জন্য অতীতে পরমুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে আমাদের প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা, খামারি ও উদ্যোক্তারা সম্মিলিতভাবে কাজ করায় প্রাণিসম্পদ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। এ খাতে আমাদের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন মাংসে আমাদের স্বয়ংসম্পূর্ণতা এসেছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও কোন খামারি নিজ বাড়ি থেকে পশু বিক্রি করলে তাকে হাসিল দিতে হবে না। কোন খামারি তার পশু দূরবর্তী হাটে নিতে চাইলে, রাস্তাঘাটে জোর করে নামাতে বাধ্য করা যাবে না। এক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় সরকারের ইউনিট তথা পৌরসভা, উপজেলা বা ইউনিয়ন পরিষদ, সিটি কর্পোরেশন এ বিষয়টি নিশ্চিত করবে। হাটে আনার পথে কেউ প্রাণী বিক্রি করলে তার কাছ থেকে ইজারা গ্রাহক জোর করে চাঁদা বা হাসিল গ্রহণ করতে পারবে না। এটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। নগদ টাকা বহণ না করে বিকল্প উপায়ে স্মার্ট পদ্ধতিতে খামারিরা যাতে আর্থিক লেনদেন করতে পারে সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্ত্রী বলেন, গতবছর অনলাইন প্লাটফর্মে প্রচুর গবাদিপশু বিক্রি হয়েছিল। এ বছরও এই পদ্ধতি অব্যাহত থাকবে, যা ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্য সুখকর অবস্থা তৈরি করবে। অনলাইনে ক্রয়কৃত গরু পছন্দ না হলে টাকা ফেরত নেয়ার ব্যবস্থাও এবছর সংযোজন করা হচ্ছে। যাতে ক্রেতারা কোনভাবেই প্রতারিত না হয়।

তিনি আরও বলেন, লাভের আশায় কোরবানির অনুপযুক্ত পশু বা রোগগ্রস্ত পশু যাতে কেউ বিক্রির চেষ্টা না করে। এ বিষয়টি সকলকে তাগিদ দিতে হবে। প্রতিটি নির্ধারিত কোরবানির পশুর হাটে ভেটেরিনারি সার্জন থাকবে। গবাদিপশু কোরবানির উপযোগী কিনা বা তাদের শরীরে দূষিত পদার্থ প্রবেশ করানো হয়েছে কিনা তারা সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে।

মন্ত্রী আরও যোগ করেন, মহাসড়কে বা যেখানে হাট বসালে যান চলাচল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন কিছু যাতে না হয় এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হবে। সড়কে বা সেতুতে কোরবানির পশু পরিবাহী গাড়িকে প্রাধান্য দেওয়া হবে, যাতে রাস্তায় পশু আটকে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি না হয়। এক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হবে। অধিদপ্তরের হটলাইন ১৬৩৫৮ চালু থাকবে। পশু পরিবহনে খামারিদের সমস্যা সমাধানে এ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ কাজ করবে। পশু কোরবানির ক্ষেত্রে কোন রকম সমস্যা যাতে না হয়, সেজন্য সবধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, সিলেট-সুনামগঞ্জ অঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে গবাদিপশু কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে গবাদিপশুর খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে, চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করার বিষয়টিও চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। কোরবানির সময় যাতে ঐই অঞ্চলে দেশের অন্য অঞ্চল থেকে পশু যেতে পারে সে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, মো. তৌফিকুল আরিফ ও এস এম ফেরদৌস আলম, বিভাগীয় কমিশনারগণ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তরের উপপরিচালক মো. শেফাউল করিম, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি প্রমুখ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ২২, ২০২২ ৩:৩৯ অপরাহ্ন
রাজধানীতে “ভেটেরিনারি শিক্ষায় নারীর যাত্রা, সক্ষমতায় নতুন মাত্রা” শীর্ষক অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত
প্রাণিসম্পদ

ভেটেরিনারি শিক্ষার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে মানুষ ও প্রাণির স্বাস্থ্য রক্ষায় প্রায় সাড়ে তিন শত বছর ধরে সারা বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে ভেটেরিনারি শিক্ষা ব্যবস্থা তথা ভেটেরিনারিয়ানরা। মানুষের প্রয়োজনে আবিষ্কৃত ঔষধ থেকে শুরু করে বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি,  রোগ প্রতিষেধক টিকা এবং প্রতিকারের উপায় বের করতে ভেটেরিনারিয়ানদের অবদান অনস্বীকার্য।  পৃথিবীতে প্রাতিষ্ঠানিক ভেটেরিনারি শিক্ষার ইতিহাস বহু পুরানো। প্রায় সাড়ে তিনশ বছর আগে ফ্রান্সের লিযন শহরে ১৭৬৬ সালে পৃথিবীর প্রথম ভেটেরিনারি স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। সূচনালগ্ন থেকে আজ অবধি প্রাণিসম্পদের উন্নয়ন ও মানব স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে সারা বিশ্বের ভেটেরিনারিয়ানরা। দেশের পুরুষ ভেটেরিনারিয়ানরাদের মত নারী ভেটেরিনারিয়ানরাও যেন যুগের সাথে সমানতালে কাজ করে এগিয়ে যেতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করছে বিভিসি।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২০শে জুন ২০২২ রাজধানীর বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের প্রায় দেড় শতাধিক উচ্চ মাধ্যমিকে অধ্যায়নরত বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রীদের নিয়ে  “ভেটেরিনারিতে নারী শিক্ষার প্রসারে অবহিতকরণ” সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল BVC)। মূলত ভেটেরিনারি শিক্ষায় প্রসারে নারীদের উদ্ভুদ্ধকরণ এবং নারীরা যাতে প্রাণিসম্পদ সেক্টরে আরো বেশি  অবদান রাখতে সক্ষম হয় সে লক্ষ্যে নানা বিষয়ক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল। বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন একটি সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিলের নিবন্ধিনভুক্ত ভেটেরিনারি ডাঃ দের তথ্য থেকে দেখা যায় যে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের পর নারী ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীদের শতকরা হার কমে গেছে, ফলে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি ( APA) এর কার্যক্রমে ভেটেরিনারিতে নারী শিক্ষা প্রসারে কার্যক্রম গ্রহন করা হয়। এর প্রেক্ষিতে বিভিসি ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে নারী ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনারদের সংখ্যা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহন করে। ঢাকা মহানগরে অবস্থিত মহিলা কলেজ গুলোতে লিফলেট, পোস্টার, ব্যানার বিতরন এবং উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি গ্রহন করেছে। গত জুন-১৪-৬-২০২২ এ  প্রথমে আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের সকল ছাত্রীদের মাঝে ভেটেরিনারি শিক্ষায় উদ্বুদ্ধকরণ বিষয়ক সভার আয়োজন করে বিভিসি।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল এর সদস্য ও প্রাক্তন ভিসি, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. গোলাম শাহী আলম। মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে ভেটেরিনারি কাউন্সিল (BVC) এর ( ভারপ্রাপ্ত) রেজিস্ট্রার ডাঃ গোপাল চন্দ্র বিশ্বাস। আহ্বায়ক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের প্রাণি বিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, প্রফেসর রেহানা আকতার। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে  উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের  এক্টোপ্যারাসাইকোলজি অনুবিভাগের ড. বেগম শামছুন্নাহার আহমদ, আরো উপস্থিত ছিলেন বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যাপক প্রফেসর সাবিকুন নাহার এবং অধ্যাপক শায়লা নাসরিন।

পবিত্র কোরআন তেলওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। এর পর সনাতন ধর্মের গীতা থেকে পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের প্রাণি বিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, প্রফেসর রেহানা আকতার, তিনি আগত অতিথি এবং ছাত্রীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি সকল ছাত্রীদের ভেটেরিনারি শিক্ষায় উদ্বুদ্ধকরণ বিষয়ক এবং ভেটেরিনারি শিক্ষায় সুন্দর ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নিয়ে চমৎকার দিকনির্দেশনামূলক আলোচনা করেন।

এর পর বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের মূল আলোচক বাংলাদেশে ভেটেরিনারি কাউন্সিল (BVC) এর ( ভারপ্রাপ্ত) রেজিস্ট্রার ডাঃ গোপাল চন্দ্র বিশ্বাস। তিনি উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তার মূল আলোচনা  শুরু করেন। তিনি বলেন ভেটেরিনারি শিক্ষায় “নারীর যাত্রা,  সক্ষমতায় নতুন মাত্রা” শীর্ষক শ্লোগানের মাধ্যমে
বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীদের ভেটেরিনারি শিক্ষায় ও পেশায় উদ্বুদ্ধকরণে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের  বলেন ভেটেরিনারি শিক্ষা একটি আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা।  এই শিক্ষা গ্রহন শেষে বিসিএস লাইভস্টোক অফিসার,  ভেটেরিনারি শিক্ষক, বাংলাদেশ আর্মি, বিজিবি, পুলিশ অফিসার,  বন বিভাগ, ঔষধ প্রশাসন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর,  ব্যাংকিং সেক্টরসহ নানামুখী চাকুরির সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও বেসরকারি খাতে দুধ, মাংস, ঔষধ,  খাদ্য প্রক্রিয়াযাতকরণ ও প্রসেসিং কারখানাসহ ইত্যাদি গ্রুপ অব প্রতিষ্ঠানে প্রবেশের সুযোগ রয়েছে। মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা ভেটেরিনারি শিক্ষায় যথেষ্ট সচেতন না থাকাতে অনেকেই এই ভেট শিক্ষা গ্রহনে আগ্রহী থাকেনা। তিনি ছাত্রীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ভেটেরিনারি পেশা আপনাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার গঠনে নতুন দ্বার উন্মোচন করবে। এই পেশায় রয়েছে দেশে – বিদেশে ব্যাপক চাহিদা সেইসাথে চাকুরির পাশাপাশি প্রাইভেট প্র্যাকটিসের সুবিধা।  ইতোমধ্যে দেশে অনেক ভেটেরিনারি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।  তাছাড়াও এ পেশার পেশাগত জ্ঞান অর্জন করে দক্ষ ভেটেরিনারিয়ানরা ডেইরী, পোল্ট্রি, ল্যাবসহ বিভিন্ন ব্যবসায় যুক্ত হচ্ছে। ডাঃ গোপাল পরিশেষে বলেন বিভিসি, ঢাকাস্থ  সকল মহিলা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকে অধ্যায়নরত বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রীদের ভেটেরিনারি শিক্ষা গ্রহনে আগ্রহী, ভেটেরিনারি শিক্ষায় প্রসারে নারীদের অবহিতকরণ কার্যক্রম নিরলসভাবে কাজ করে যাবে।

এরপর বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঢাকা অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল এর সদস্য ও প্রাক্তন ভিসি, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. গোলাম শাহী আলম, তিনি তার বক্তব্য অত্যন্ত সুনিপুনভাবে ভেটেরিনারি শিক্ষার অদ্যপান্ত, ভেটেরিনারি শিক্ষা নারীরা কেন গ্রহন করবে, ভেটেরিনারি শিক্ষায় নারীদের কি সুযোগ আছে এবং এই শিক্ষায় কি সম্ভাবনা আছে উক্ত বিষয়ে অত্যন্ত জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ২১, ২০২২ ৪:৪১ অপরাহ্ন
কোরবানির পশুর বর্জ্য সুষ্ঠুভাবে অপসারণে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের আহ্বান
প্রাণ ও প্রকৃতি

স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশু কোরবানি ও কোরবানিকৃত পশুর উচ্ছিষ্টাংশ সুষ্ঠুভাবে অপসারণের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ রোধ করার জন্য সকল সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

যত্রতত্র পশু জবাই করা হতে বিরত থাকতে এবং সুনির্দিষ্ট স্থানে গর্ত করে গর্তের মধ্যে রক্ত, গোবর ও পরিত্যক্ত অংশ রেখে মাটি চাপা দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়। কোরবানির বর্জ্য অপসারণ বা কোরবানির গোশত বিতরণে পরিবেশ সম্মত ব্যাগ/পাত্র ব্যবহার এবং জবাইকৃত পশুর উচ্ছিষ্টাংশ ডাস্টবিন অথবা নির্ধারিত স্থানে ফেলার অনুরোধ জানানো হয়।

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে কোরবানিকৃত পশুর উচ্ছিষ্টাংশ সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনা ও অপসারণের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ রোধকল্পে করণীয় বিষয়ে আজ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ অনুরোধ জানানো হয়।

মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মোঃ মনিরুজ্জামান, অতিরিক্ত সচিব(পরিবেশ) সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডক্টর আবদুল হামিদ সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় কোরবানিকৃত পশুর উচ্ছিষ্টাংশ সুষ্ঠুভাবে অপসারণে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে চার লক্ষ কপি প্রচারপত্র সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগ ও জেলা কার্যালয়, জেলা প্রশাসন এবং জেলা তথ্য অফিস-সহ অন্যান্য সংস্থার মাধ্যমে দেশব্যাপী বিতরণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এছাড়াও, পরিবেশ অধিদপ্তর মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সারা দেশের মসজিদসমূহে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ ও মসজিদের ইমামদেরকে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে করণীয় সম্পর্কে জুম্মার নামাজে বক্তব্য রাখার আহবান জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের পাশাপাশি বেসরকারি চ্যানেলে ও প্রচার মাধ্যমে কোরবানির পশুর বর্জ্য সুষ্ঠুভাবে অপসারণ সংক্রান্ত বার্তা প্রচারের অনুরোধ করা হয়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ২১, ২০২২ ২:৫৬ অপরাহ্ন
কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত ভৈরবের খামারিরা
প্রাণিসম্পদ

কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে ভৈরবে দেশীয় পদ্ধতিতে স্টেরয়েড ইনজেকশনমুক্ত গরু মোটাতাজাকরণ করছেন খামারিরা। তবে গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধির প্রভাবে গরু খামারিরা নায্য দাম পাওয়া নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।

কুরবানি উপলক্ষে উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন ও পৌর শহরে ৫০টির বেশি ছোট-বড় খামারে গরু, ছাগল, মহিষ মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। এসব পশু সম্পূর্ণ দেশীয় খাবার দিয়ে পালন করেছেন খামারিরা।

২৩ বছর ধরে বিভিন্ন প্রজাতির দেশি-বিদেশি গরু মোটাতাজাকরণ করে আসছেন ভৈরবের রুজেন ডেইরি ফার্মের মালিক আশরাফুল আলম রুজেন।

তিনি জানান, চলতি বছর তার গরুর ফার্মে কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে ১৫টির বেশি গরু মোটাতাজাকরণ করেছেন। তবে তার ২৩ বছর যাবত গরু মোটাতাজাকরণের মধ্য এবছরের মতো গোখাদ্যের দাম আর কখনো বৃদ্ধি পায়নি। এই বছর গোখাদ্যের দাম যে পরিমাণ বেড়েছে তা আসলেই দুশ্চিন্তার বিষয়।

এখন ভাবছি কিভাবে বাড়তি টাকা দিয়ে গোখাদ্য কিনে গরু মোটাতাজাকরণ করে লাভবান হবো সেই চিন্তায় দিন পার করছেন তিনি। যদি গত বছর যে গরু ১ লাখ টাকা বিক্রি করছি সেই গরু যদি ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং দেড় লাখ টাকার গরু যদি দুই লাখ টাকায় বিক্রি করি তাহলে কিছুটা লাভবান হবেন বলে তার দাবি।

তিনি তার খামারের গরুকে কোনো ধরণের মুরগির খাবার খেতে দেন না। গ্রামীণ খাবার যেমন গমের ভূষি, ছোলা বুটের ভুষি, ভুট্টার ভূষি, নেপিয়ার ঘাস ও চিকন খড় খাওয়ান তিনি। তবে বর্তমান বাজারে গোখাদ্যের দাম গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। যে ভুষির এক বস্তার দাম ছিলো এক হাজার পাঁচশ টাকা এখন সেই ভুষির প্রতি বস্তার দাম তিন হাজার টাকা।

ভৈরব উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শিরিনা খাতুন জানান, এই বছর উপজেলায় ৫০টি ছোট-বড় খামারে প্রায় ১১ হাজার গরু, ছাগল মহিষ মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। তা দিয়ে এই বছর উপজেলায় যে পরিমাণ পশুর চাহিদা রয়েছে সেই কুরবানির চাহিদা পূরণ করবে। এসব খামারে পশুদের স্টেরয়েড জাতীয় কোনো ধরণের ইনজেকশন ছাড়াই মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে সব ধরনের পরামর্শ ও সেবা প্রদান করে খামারিদের সহযোগিতা প্রদান করেছেন। তবে এবছর গোখাদ্যের দাম গত বছরের তুলনায় বেশি থাকায় খামারিরা তাদের পালিত গরু, ছাগল, মহিষ ও ছাগলের নায্য দাম পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বলে তিনি জানান।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ২০, ২০২২ ২:৫৭ অপরাহ্ন
দেড় মাসের ব্যবধানে ধানের পর হারালেন গরু, দিশেহারা ফখরুল
কৃষি বিভাগ

মাত্র দেড় থেকে দুই মাস আগেই ফখরুল হারিয়েছেন জমির ধান। সেই ধকল কাটিয়ে উঠতে না–উঠতেই এই দফা বন্যায় এক রাতেই মারা গেছে প্রায় দেড় লাখ টাকা দামের তিনটি গরু।

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বাওনপুরের বাসিন্দা ফখরুল মিয়া জানান,গরু লালন–পালন করেই সংসার চলে। কি করব। তকদির মন্দ। বড় অসহায় হয়ে গেলাম।’

শনিবার বিকেলে বিশ্বনাথ সড়কে আরও অনেকের সঙ্গে জাল দিয়ে মাছ ধরার চেষ্টা করছিলেন ফখরুল। ৫০ পেরোনো একজন মানুষ তিনি।

কিছুক্ষণ পরপর জাল তুলছেন। কিছু ছোট মাছ জালে উঠছে। তা ধরে ঝোলায় রাখছেন। অনেকক্ষণ পানিতে দাঁড়ানো, বৃষ্টি ও বাতাসে ঠান্ডা লেগে কাঁপছিলেন তিনি।

ফখরুল মিয়া জানান, গত শুক্রবার থেকে পানি বাড়ছে। এই দিনই বাড়িতে বন্যার পানি উঠে যায়। তাঁর ১৪টি গরু। চারদিকে পানি থাকায় গরুগুলো সরানোর কোনো সুযোগ পাননি। গরুগুলোও পানিতে ছিল। শুক্রবার রাতেই তিনটি গরু মারা গেছে। তাঁর ধারণা, ঠান্ডা লেগেই গরুগুলো মারা যায়। গরুর শোকে মন ভেঙে যায় ফখরুলের।

মৃত গরুগুলো পানিতে ভাসিয়ে দিয়েছেন। তিনটি গরুর মূল্য আনুমানিক দেড় লাখ টাকা। এখন ১১টা গরু আছে। এগুলো নিয়েও বিপন্ন অবস্থা।

ফখরুল আরও জানান, ‘চাইছিলাম ঈদে গরু বিক্রি করি বড় মেয়ের বিয়া দিমু (বিয়ে দিব)। কিন্তু কিচ্ছু করার নাই। তকদির মন্দ। গরু মরায় মেয়েরা কান্নাকাটি করছে। কইছি, কান্দিও না। তকদিরে যা আছে, তাই অইব।’

প্রায় ১০-১২ বছর ধরে ফখরুল গরু লালন–পালন করেন। গরু বিক্রি করে যে আয় হয়, তাই দিয়েই সংসার চালান। তিন মেয়ে তাঁর। একজন স্নাতক শ্রেণিতে, একজন উচ্চমাধ্যমিকে এবং একজন এবারের মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী।

ফখরুল বলেন, ‘এ রকম পানি আর কোনো দিন দেখছি না। ঘরও পানি উঠি গেছে। চেষ্টা করছিলাম থাকার। পারতাম নায় (পারব না)। আইজ (শনিবার রাতে) হুরুত্বারে (সন্তানদের) আত্মীয় বাড়ি পাঠাই দিমু। গরু আছে। নিজে থাকমু (থাকবো)। পেনাটেনা (কচুরিপানা), খড়-পানি গরুরে খাওয়াইমু (খাওয়াব)। টিকানির চেষ্টা করা আরকি।’

দেড় থেকে দুই মাস আগের বন্যায় ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এখন চাল কিনে খেতে হচ্ছে ফখরুল ও তাঁর পরিবারকে। পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে গরু বিক্রি করে লাভের যে আশা দেখেছিলেন, এবার তাতেও ভাটা পড়ল।

 

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ১৯, ২০২২ ৪:৪৭ অপরাহ্ন
ব্রয়লার-লেয়ার মুরগী খাদ্যমূল্য ও বাচ্চার দাম বৃদ্ধি, খামারিদের ৮ দফা দাবি
পোলট্রি

পদ্মা সেতুর জাঁকজমক উৎযাপন না করে প্রান্তিক মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে  প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

‘বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারীদের দুর্দশা এবং তা থেকে মুক্তির উপায়’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করেন বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারী ঐক্য পরিষদ।

পরিষদের সভাপতি মিজান বাশারের সভাপতিত্বে ও শাহিন হাওলাদারের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কল্যান পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতিক, পরিবেশবিদ দৈনিক নিউ নেশন পত্রিকার সাবেক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সংগঠনের মহাসচিব কাজী মোস্তফা কামাল, বক্তব্য রাখেন লেখক ও পরিবেশ সাংবাদিক ইরানি বিশ্বাস,খুলনা পোল্ট্রি ফিড ফিসের এস এম সোহরাব, সভাপতি কিশোরগঞ্জ পোল্ট্রি ডিলার শরীফ উদ্দিন, পোল্ট্রি মার্কেট দাউদকান্দি ফিরোজ খান, নরসিংদী পোল্ট্রি সংগঠনের সাধারন সম্পাদক আবু নাসের সবুজ প্রমূখ।

দেশি পোল্ট্রি চাষিদের বাঁচাতে নীতিমালা প্রয়োজন বলে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, নীতিমালা না হলে সিন্ডিকেটের পাল্লায় পড়ে শিক্ষিত যুব সমাজকে ধ্বংস হতে দেয়া যাবে না।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে মানুষের গড় আয়ু ছিল ৪৬ বছর। বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৭৩ বছর । আজকে মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধির অন্যতম কারণ পুষ্টি । যেটি জোগাড় করেছেন প্রান্তিক চাষিরা, খামারিরা। এখানে বড়দের কোন অবদান নেই।

  • অনুষ্ঠানের ৮ দফা দাবি জানান, বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারি ঐক্য পরিষদের মহাসচিব কাজী মোস্তাফা কামাল।
    কোন হ্যাচারীর মালিক বাণিজ্যিকভাবে রেডি ব্রয়লার মুরগী ও লেয়ার মুরগী পালন করতে পারবে না। তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
  • খাদ্যের দাম কমাতে হবে। খাদ্য ও বাচ্চার মান প্রানীসম্পদ অধিদপ্তর কতৃক সার্বক্ষনিক মনিটরিং করতে হবে।
  • খামারিদের বিদু ্যত বিল, শিল্প হারে নিতে হবে।
    ৪. বিগত ০৭/০৩/২০১০ তারিখে সরকার কতৃক নিধারিত ১ দিনের ব্রয়লার ও লেয়ার বাচ্চার দাম ৩০ ও ৩২ টাকা হারে দিতে হবে।
  • রানীক্ষেত, গাম্বরো ও বার্ডফ্লু জাতীয় জটিল রোগের টিকা ও ঔষধ বিনামূল্যে খামারিদের দিতে হবে।
    ৬. সকল খামারিদের একটি সমিতির আওতায় এনে জামানত ছাড়া ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
  • প্রাকৃতিক দুর্ভোগে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের ভূর্তকি দিতে হবে। অথবা ইন্সুরেন্সের আওতাভুক্ত করে ক্ষতি পূরণ দিতে হবে।
  • প্রত্যেক উপজেলার প্রধান বা বড় বাজারগুলিতে খামারিদেরকে সমিতি’র অনুকূলে ২/৩ শতক জায়গা উপর মুরগী ও ডিম বিক্রির দোকান নির্মাণ কর দিতে হবে।
শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ১৯, ২০২২ ৪:২৪ অপরাহ্ন
ঈদুল আজহা: প্রস্তুত ১ কোটি ২১ লাখ পশু
প্রাণিসম্পদ

আগামী মাসে ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ১ কোটি ২১ লাখ পশু কোরবানি দেয়া হবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতর জানিয়েছে, এ সংখ্যা বিগত বছরের থেকে ৩৩ শতাংশ বেশি।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের উপব্যবস্থাপক জিনাত সুলতানা জানান, ‘গত বছর ৯০ লাখ ৮৩ হাজার পশু কোরবানি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে গরু-মহিষ ছিল ৪০ লাখ ৫৩ হাজার ও ছাগল-ভেড়া ছিল ৫০ লাখ ২৮ হাজার। মোট ৪৬ হাজার কোটি টাকার পশু বেচাকেনা হয়েছে।’

তিনি জানান, ‘যেহেতু মহামারির মরণ থাবা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে, আমরা আশা করছি, এ বছর বিক্রি আরও বাড়বে। ধারণা করা যাচ্ছে, এবারের ঈদুল আজহায় ১ কোটির ওপরে পশু বেচাকেনা হবে। ব্যবসা হবে ৫০ হাজার কোটি টাকার।’

গবাদি পশু বিক্রির সবচেয়ে লাভজনক বাজার বিবেচনা করা হয় ঈদুল আজহার মৌসুমকে। এবার কোরবানির উদ্দেশ্যে হাটে উঠবে ১ কোটি ২১ লাখ পশু। এর মধ্যে গরু-মহিষের সংখ্যা ৪৬ লাখ ১১ হাজার ও ছাগল-ভেড়ার সংখ্যা ৭৫ লাখ ১১ হাজার।

কোরবানির হাট সামনে রেখে ইতোমধ্যে ৪২ লাখ ৪০ হাজার গরু-মহিষ ও ৩৩ লাখ ৪৮ হাজার ছাগল-ভেড়া মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্যমতে, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ থেকে সিংহভাগ গবাদি পশু সরবরাহ করা হয়ে থাকে। স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানা যায়, ‘এ বছর ১ লাখ ৭২ হাজার ৭২৯টি গরুর মধ্যে ১ লাখ ১১ হাজার ৩২৫টি গরু মোটাতাজাকরণ প্রক্রিয়ার আওতায় আনা হয়েছে।’

এদিকে গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় আশঙ্কা করা হচ্ছে, এবারের কোরবানির বাজারে গবাদি পশুর দামও হবে আকাশচুম্বী। খামারিরা জানান, দেড় লাখ টাকা দামের একটি গরুর পেছনে কম করে হলেও ৭০-৭৫ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে।

খাবারের দামের ব্যাপারে খামারিরা জানান, এক বছরের মাথায় গোখাদ্যের দাম বস্তাপ্রতি ২০০-৪০০ টাকা বেড়ে গেছে। এতে স্বভাবতই বাড়বে কোরবানির পশুর দাম।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ১৯, ২০২২ ২:১৫ অপরাহ্ন
আসন্ন ঈদ, খরচ বাড়ছে গরু পালনে!
প্রাণিসম্পদ

কোরবানির বাজার ধরতে প্রস্তুত যশোরের খামারিরা। ভালো দামের আশায় খামারের পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি ব্যক্তিপর্যায়েও অনেক গরু লালনপালন করা হচ্ছে।

খামারিরা বলছেন, প্রাকৃতিক ও সুষম খাদ্য দেয়ায় এ বছর খরচ বেশি হয়েছে।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর মধ্যে যশোর গরু হৃষ্টপুষ্টকরণে বেশ এগিয়ে। বিশেষ করে ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ হওয়ায় খামার স্থাপনের মাধ্যমে এ জেলায় গরু পালন বেড়েছে।

এ বছর জেলার ৮টি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ১১ হাজার ছোট-বড় খামারে দেশি পদ্ধতিতে পালন করা হচ্ছে হাজার হাজার গরু-ছাগল। পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি ব্যক্তিপর্যায়েও হৃষ্টপুষ্ট করা হয়েছে অনেক গরু। দিন-রাতের অবিরাম পরিচর্যা এবং প্রাকৃতিক ও সুষম খাদ্য দিয়ে মোটাতাজা করা গরু-ছাগল এখন বিক্রির জন্য প্রস্তুত।

তাই আসন্ন ঈদের বাজারে ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন খামারিরা। তারা বলছেন, খামারে যে গরু রয়েছে, তার সর্বোচ্চ মূল্য তিন লাখ টাকা এবং সর্বনিম্ন মূল্য এক থেকে দেড় লাখ টাকা। এবার করোনার প্রভাব কম থাকায় ভালো মুনাফার আশা করছেন। তারা কোনো ধরনের ইনজেকশন বা ওষুধ খাওয়াননি। গরুকে খুদের ভাত, ফল ও ভুসি খাওয়ান। গরু সুস্থভাবে রাখার চেষ্টা করেন।

খামারিদের দাবি, এ বছর গরু পালনে খরচ বেড়েছে। তবে বর্তমান বাজারদর অব্যাহত থাকলে এবং ভারত থেকে গরু না এলে তারা লাভবান হবেন। এ বিষয়ে খামারিরা জানান, গরুর খাদ্যের দাম অনেক বেশি। তারা আশা করেন, বাজারমূল্য এমন থাকলে এবং ভারত থেকে গরু না এলে লাভবান হবেন।

জেলায় এ বছর চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি গরু ও ছাগল পালন করা হয়েছে। এসব প্রাণীর মাংস শতভাগ নিরাপদ বলে জানান যশোর জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কর্মকর্তা ডা. রাশেদুল হক। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের চাহিদা পূরণ করতে পারব। এর মধ্যে ৪ থেকে ৫ হাজার গরু আমাদের উদ্বৃত্ত থাকবে। এই কোরবানির ঈদে আমরা গবাদি পশু নিয়ে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হব না।’

প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্যমতে, কোরবানির জন্য জেলায় ৯৬ হাজার গরু-ছাগল প্রস্তুত করা রয়েছে। যার মধ্যে ৩০ হাজারের বেশি গরু এবং সাড়ে ৬৫ হাজার ছাগল।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop