১:২৭ পূর্বাহ্ন

মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : নভেম্বর ১১, ২০২২ ৬:৩৬ অপরাহ্ন
যুবকদের গ্রামে গিয়ে অনাবাদী জমিতে চাষ করতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
কৃষি বিভাগ

দেশের কোথাও যেন এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না থাকে, সেজন্য নিজ গ্রামে গিয়ে যুবদের অনাবাদি জমি কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, তরুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের সমৃদ্ধি। আজকের যুবকদের দেশ গড়ার কাজে মনোযোগী হতে হবে। যেহেতু ইউক্রেন যুদ্ধ, স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) পাল্টা স্যাংশন। আমাদের আমদানি কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই আত্মনির্ভরশীল হতে হবে। যুবদের বলবো, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। নিজের গ্রামে গিয়ে প্রতিটি জমিকে কাজে লাগাতে হবে। চাষ করতে হবে, যেটাই হোক।

শুক্রবার (১১ নভেম্বর) যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত যুব মহাসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় যুবলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কোনোদিন যাতে দুর্ভিক্ষ না হয়, সেজন্য সব জমিতে চাষ নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতি থেকে বিরত থাকতে হবে। অন্যদেরও বিরত রাখতে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। আজকের যুব সমাজকে জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার কাজ করতে হবে।

আওয়ামী লীগ যুবদের কর্মসংস্থান দিয়েছে, বিএনপি হত্যা করেছে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, অনেকে নাকি আমাদের উন্নয়ন চোখে দেখে না। চোখ থাকতে অন্ধ হলে দেখবে কি করে? আমরা কত যুবকের কর্মসংস্থান তৈরি করেছি। আর জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া? সবই তো একই ইতিহাস। হাজার হাজার যুব নেতাদের হত্যা করেছেন।

তিনি বলেন, যুবলীগ আমাদের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে অবস্থান আছে (অংশ নিয়েছে)। যুবক থাকলে কাজ করার অনেক সুবিধা। উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে যুবদের সম্পৃক্ত করতে যুবলীগ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তরুণরাই পারে দেশকে গড়ে তুলতে।

মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। এতে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও জাহাঙ্গীর কবির নানক। সঞ্চালনা করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : নভেম্বর ১১, ২০২২ ২:৪৩ অপরাহ্ন
অনাবৃষ্টিতে সাতক্ষীরার আমনে ধ্বস
কৃষি বিভাগ

সময় মতো বৃষ্টি না হওয়ায় শুকিয়ে গেছে সাতক্ষীরা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার আমন ধানের ক্ষেত। বেঁশো পোকা ও মাজরা পোকার আক্রমণে ব্যাহত হয়েছে ফলন।

সাতক্ষীরা খামারবাড়ি সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় ৮৯ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে ৮৮ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টরে হাইব্রিড ধান তিন মেট্রিক টন, উফসি ২.৭০ মেট্রিক টন ও স্থানীয় এক দশমিক ৬৫ মেট্রিক টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

জানা যায়, সাতক্ষীরা সদরের কাশেমপুর, শিবপুর, জগন্নাথপুর, নেবাখালি, পায়রাডাঙা, যোগরাজপুর, দেবনগর, ছাতিয়ানতলা, মুকুন্দপুর, মাঠপাড়া, শাল্যে, মাছখোলাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে দেখা গেছে বৈশাখ মাসের শেষের দিক থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকরা অধিকাংশ বিলে শ্যালো মেশিনের পানি দিয়ে আমন ধানের বীজতলা তৈরি করেছেন। পরবর্তীতে দেরিতে স্বল্প মাত্রার বৃষ্টি হলেও তা ধান চাষের জন্য উপযোগী ছিল না। ফলে অনেকেই শ্যালো মেশিনের পানি দিয়ে বেশি বয়সের ধানের চারা লাগিয়েছেন। বৃষ্টি না হওয়ায় বা কম বৃষ্টির কারণে ধান গাছ বাড়েনি। কোথাও কোথাও ধান গাছের উচ্চতা এক ফুটেরও কম। শীষে ধান নেই।

আবার যেসব ধান গাছ বড় হয়েছে সেসব ধানের শীষ চিটায় ভর্তি। আবার চিটাতে বা ধানে কালো রং এর মাজরা বা বেঁশো পোকার আক্রমণের দাগ। ধান না হওয়ায় ও গাছের বৃদ্ধি না হওয়ায় কাটা খরচ বাঁচাতে খেতে গরু ও ছাগল লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেকেই ধান গাছ কেটে বস্তায় ভরে বাড়িতে গরু ছাগলের খাওয়ানোর জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। অনেকে ধান গাছ তড়িঘড়ি করে কেটে সরিষা চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন। গত বছর যে সব জায়গায় জলাবদ্ধতা ছিল না সেসব জায়গায় বিঘা প্রতি ১৪ থেকে ১৫ বস্তা ধান হয়েছে। এবার সেইসব জায়গায় ধান হবে দুই থেকে তিন বস্তা করে। শ্যালো মেশিনের পানির বিল, সার ও কীটনাশকের দোকানের বকেয়া পরিশোধ করতে পারবেন না কৃষকরা। এমনকি সরকারি প্রণোদনা না পেলে আগামী বছরে কৃষকরা আমন চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।

একই এলাকার কৃষক মুনসুর আলী ও আজগার আলী জানান, বৃষ্টি না হওয়ায় তারা কৃষি বিভাগের শরনাপন্ন হয়েছেন। কোন সদুত্তর মেলেনি। বাধ্য হয়ে শ্যালো মেশিনের পানি দিয়ে চাষ করেছেন। বেশি টাকা দিয়ে সার ও কীটনাশক কিনতে হয়েছে। এরপরও তাদের ১৪ বিঘা জমির মধ্যে আট বিঘা জমিতে একেবারেই ধান নেই। প্রায় শুকনা ধান গাছ কেটে বস্তায় ভরে গরু ছাগলের জন্য বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। শ্যালো মেশিনের বকেয়া পানির বিল, সার ও কীটনাশকের বকেয়া বিল পরিশোধ করবেন কি করে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

জানতে চাইলে শিবপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম জানান, তার ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার একর আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় ও লবণাক্ততার কারণে ৫ থেকে ৬’শ বিঘা জমিতে ধান হয়নি বললেই চলে। কৃষি বিভাগ চাষিদের পাশে না দাঁড়ালে আগামীবার তারা ধান চাষে বিরত থাকতে পারে।

সাতক্ষীরা খামারবাড়ির উপ-পরিচালক জামাল উদ্দিন জানান, আমন ধান পুরোপুরি বৃষ্টি নির্ভরশীল। পরিমাণের তুলনায় দেরিতে বৃষ্টি হলেও তা অপ্রতুল। সদর উপজেলার জগন্নাথপুর, শিবপুর, কাশেমপুর, নেবাখালিসহ কিছু স্থানে সামান্য কিছু জমিতে ধানের ফসল ভালো হয়নি। বৃষ্টি দেরিতে হওয়ায় ও লবণাক্ততা এর মূল কারণ। কৃষি বিভাগ সম্পূরক সেচের ব্যবস্থা করায় অনেককে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা গেছে। দ্রুত ধান কেটে আগাম সরিষার চাষের প্রণোদনার ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে কৃষকদের। তা ছাড়া ওইসব জমিতে ইরি ও সবজি চাষ করে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। ঢাকা টাইমস

শেয়ার করুন

প্রকাশ : নভেম্বর ৯, ২০২২ ৫:৩৮ অপরাহ্ন
এক মাসেই ২০০ গরুর মৃত্যু
কৃষি বিভাগ

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় গরুর লাম্পি স্কিন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। উন্নত চিকিৎসা না পাওয়ায় প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে গরু। এর মধ্যে উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নেই মারা গেছে ২০০টিরও বেশি গরু। এতে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন স্থানীয় খামারিরা।

জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা জানান, মাসখানেক আগে তিরনইহাট ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে দেখা দেয় গরুর লাম্পি স্কিন রোগ। মুহূর্তেই তা পুরো ইউনিয়নে ছড়িয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত ২০০ গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। পাশের বাংলাবান্ধা ইউনিয়নেও ৬৫টি গরুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।

খামারিরা জানান, শুরুতে গরুর সারা শরীরে বসন্তের মতো গুটি গুটি ওঠে। তারপর হাঁটু, গোড়ালি ও গলা ফুলে যায়। জ্বর ও প্রচণ্ড ব্যথায় খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দেয় আক্রান্ত গরুগুলো। পরে তাদের মৃত্যু হয়।

তিরনইহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসাইন বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে অন্তত ২০০ গরু লাম্পি স্কিন রোগে মারা গেছে।’

পঞ্চগড় সদর প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শহিদুল ইসলাম জানান, ‘লাম্পি স্কিন রোগ হলে গ্রামের মানুষ প্রথমেই গ্রাম্য পশু চিকিৎসকদের কাছে যান। তাঁরা প্রথমেই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করেন। এতে গরুর অবস্থা আরো খারাপ হয়। আমাদের এখানে আনা হয় রোগের তৃতীয় পর্যায়ে। প্রশিক্ষণ নিয়ে যাঁদের খামার করার কথা ছিল—তাঁরাই এখন পশু চিকিৎসা করছেন। এটাই এখন বড় সমস্যা। তাঁদের কারণেই ক্ষতি হচ্ছে বেশি।’

তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রতন কুমার ঘোষ বলেন, ‘তেঁতুলিয়ায় লাম্পি স্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণে এসেছে।’

পঞ্চগড় জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুর রহিম বলেন, ‘ঢাকা থেকে মেডিক্যাল টিম এসে তেঁতুলিয়ায় কাজ করেছে।’

শেয়ার করুন

প্রকাশ : নভেম্বর ৮, ২০২২ ৪:৫২ অপরাহ্ন
গমের ফলন বাড়াতে যা করবেন
কৃষি বিভাগ

গম আমাদের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ফসল। এটি চাষে পানির দরকার হয় কম। হেক্টরপ্রতি পানি লাগে ১৫ একর ইঞ্চি।গমে রোগ-বালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণও কম। ফলে খুব বেশি কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। তবে গমের ফলন বাড়াতে কিছু করণীয় আছে।

১. উঁচু ও মাঝারি দো-আঁশ মাটিতে গম চাষ ভালো হয়।২. বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ নির্বাচন করতে হবে। ৩. গম উচ্চ ফলনশীল জাতসমূহের বপনের উপযুক্ত সময় নভেম্বর মাসের ১৫-৩০ তারিখ পর্যন্ত।৪. বীজ গজানোর হার ৮০ ভাগ বা তার বেশি হলে প্রতি শতকে আধা কেজি বীজ বপন করতে হবে। ৫. গজানোর হার ৮০ ভাগের কম হলে প্রতি ১ ভাগ কম গজানোর জন্য বিঘাপ্রতি ১৩০ গ্রাম করে অতিরিক্ত বীজ বপন করতে হবে।৬. বপনের আগে প্রতি কেজি বীজের সঙ্গে ৩ গ্রাম হারে প্রোভেক্স-২০০ ডব্লিউ পি মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।৭. লাইনে বা ছিটিয়ে গম বীজ বপন করা যায়। ৮. লাইনে বপনের জন্য জমি তৈরির পর ছোট লাঙল দিয়ে ৮ ইঞ্চি দূরে দূরে সারি তৈরি করে ২ ইঞ্চি গভীরে বীজ বপন করতে হয়।৯. স্থানীয় কৃষি অফিস বা মাঠকর্মীর পরামর্শে সঠিক মাত্রায় সার ব্যবহার করতে হবে।১০. উত্তরাঞ্চলের মাটিতে মাঝে মাঝে গমে চিটা দেখা যায়। এর ফলে ফলন কমে যায়। ১১. অনুমোদিত মাত্রায় জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে বিঘা প্রতি ৮০০ গ্রাম বরিক এসিড বা ১ কেজি ৩০০ গ্রাম বোরাক্স প্রয়োগ করে চিটা দূর করা যায়।

১২. বীজ বপনের পর ১০-১২ দিন পর্যন্ত পাখি তাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।১৩. নিয়মমাফিক সেচ ও আগাছা দমনের ব্যবস্থাপ করতে হবে। ১৪. গম ক্ষেতে ধানের মতো ঢালাওভাবে সেচ দেওয়া যাবে না। নালা বা ফিতা পাইপের মাধ্যমে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে। ১৫. সঠিক সেচ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফলন ৫৮% পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব।

১৬. বপনের ২৫-৩০ দিনের মধ্যে প্রথম সেচের পর একটি নিড়ানি দিলে ফলন প্রায় ১০-১২ ভাগ বাড়ে।১৭. গম ক্ষেতে কখনোই কলা গাছ বা বরইয়ের কাঁটা টানা, মই দেওয়া যাবে না।১৮. গমের প্রধান দুটি রোগ হচ্ছে পাতার মরিচা রোগ ও পাতার দাগ রোগ। এ ছাড়া মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা দিতে পারে। ১৯. সঠিক পরামর্শে সঠিক মাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগ করলে রোগ-বালাই দূর করা সম্ভব।

২০. ক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণ হলে ফাঁদ পেতে, গর্তে পানি ঢেলে বা বিষটোপ দিয়ে ইঁদুর দমন করা যেতে পারে।২১. গম পেকে গেলে বা হলুদ হলে কাটতে হবে। রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে সকালের দিকে কেটে দুপুরে মাড়াই করতে হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : নভেম্বর ৭, ২০২২ ৮:৪৩ পূর্বাহ্ন
দেশে ১৫ লাখ ৭৩ হাজার ৪শ’ ৮৫ মেট্রিক টন’ খাদ্য মজুদ রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
কৃষি বিভাগ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে তাদের নিজেদের জন্য খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং যেকোনো সংকট মোকাবেলায় রপ্তানি বৃদ্ধির পাশাপাশি আমদানি পণ্যের ওপর নির্ভরতা কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমদানি পণ্যের উপর নির্ভরতা কমাতে হবে এবং আমাদের সকলেরই এ চেষ্টা করা উচিত।’

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা গতকাল সন্ধ্যায় একাদশ জাতীয় সংসদের ২০তম অধিবেশনে তাঁর সমাপনী ভাষণে এ আহ্বান জানান।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ সময় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের খাদ্য উৎপাদন আরো বাড়াতে হবে। নিজেদের উৎপাদনটাকে ধরে রাখতে হবে। আর আমদানীকৃত পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে। সেই চেষ্টাই আমাদের করতে হবে। সাথে সাথে রপ্তানী বাড়াতে হবে এবং যেজন্য তাঁর সরকার বিভিন্ন দেশে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বিশ্ব মন্দার মধ্যেও তাঁর সরকার অর্থনীতিটাকে ধরে রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এ জন্য সকলকে কৃচ্ছতা সাধন করতে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ও পানির ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ারও আহ্বানও জানান তিনি। তিনি প্রতিটি পরিবারকে এ বিষয়ে সচেতন হবার আহবান জানান। কেননা ইউরোপের অনেক উন্নত দেশে রেশনিং চলছে এবং এই শীতে বিদ্যুৎ ব্যবহার সীমিত রাখতে তারা নতুন পরিকল্পনা করছে। কাজেই আমাদের সাশ্রয়ী হতে হবে এবং আগে থেকেই যে কোন অবস্থার জন্য তৈরী থাকতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এই মুহূর্তে যে জিনিসটার খুব বেশি প্রয়োজন নেই সেই বিলাস দ্রব্য আমদানী আমাদের কমাতে হবে। আর এর ওপর আমাদের ট্যাক্সও বসাতে হবে বেশি করে।’

বিদেশি ঋণ প্রসঙ্গে বিরোধী দলের উপনেতার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আমাদের মোট সরকারি ঋণ জিডিপির ৩৬ শতাংশ। আর বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ জিডিপির ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর অন্তত এতটুকু বলতে পারি আমরা কোন দিনও ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হইনি। আমরা নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করে যাচ্ছি। আমরা ঋণ খেলাপি (লোন ডিফল্টার) হইনি কখনো। আর ভবিষ্যতেও ইনশাল্লাহ হবনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাপী বিপর্যস্ত অর্থব্যবস্থা থেকে বাংলাদেশ আলাদা নয়। বাংলাদেশকেও তার ফল ভোগ করতে হচ্ছে এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মূল্যস্ফীতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। মুদ্রার বিপরীতে ডলারের মূল্যবৃদ্ধি এই সংকটকে আরো ঘণীভূত করেছে। কারণ প্রতিনিয়ত ডলারের দাম বেড়ে যাচ্ছে। কাজেই আমাদেও মত তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলো যাদের খাদ্য পণ্য, জ্বালানি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানী করতে হচ্ছে তারাও সংকটে পড়েছে। এরপরেও আমি বলবো আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

দেশের মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করে তাদের চাহিদা সরকার পূরণের চেষ্টা করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারপরেও চাপ রয়েছে কেননা পণ্য উৎপাদনেও ভতুর্কির পরিমাণ অস্বাভাবিক রকম বেড়ে গেছে।
তাঁর সরকার করোনার মধ্যে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট দিতে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাথাপিছু আয় হয়েছে ২ হাজার ৮শ ২৪ মার্কিন ডলার যেটা বিএনপি আমলে (২০০৫-০৬) অর্থবছরে ছিল ৫৪৩ মার্কিন ডলার। পাশাপাশি বাজেটে উন্নয়ন খাতে সরকার ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করতে সক্ষম হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বাজেটের খাত ওয়ারি বরাদ্দের পরিমান বিশ্ব মূল্যস্ফীতির কারণে বেড়ে গেছে উল্লেখ করে বেশ কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতে আমাদের ভর্তুকি ধরা ছিল ১৭ হাজার কোটি টাকা, আজকে সেখানে অতিরিক্ত চাহিদা তৈরী হয়ে প্রয়োজন হয়েছে ৩২ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা। সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ দিতে গেলে এই ভতুর্কি দিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জ্বালানি তেলে অতিরিক্ত ভতুর্কি লাগছে ১৯ হাজার ৫শ’ ৫৮ কোটি টাকা। খাদ্য আদমানীতে অতিরিক্ত ভতুর্কির প্রয়োজন হচ্ছে ৪ হাজার কোটি টাকা। টিসিবি বা অন্যান্য জনবান্ধব কর্মসূচিতে ভর্তুকি লাগছে ৯ হাজার কোটি টাকার। কেননা এক কোটি মানুষকে বিশেষ কার্ড দিয়ে সরকার স্বল্পমূল্যে খাদ্য পণ্য সরবরাহ করছে। সারও কৃষি পণ্য আমদানীতে অতিরিক্ত ভর্তুকি লাগছে ৪০ হাজার ২শ’ ৪৭ কোটি টাকার। তার মানে এক লাখ ৫ হাজার ১০৫ কোটি টাকার শুধু ভর্তুকির চাহিদা বেড়েছে।
সরকার প্রধান এ সময় বিশ্ব বাজারে পণ্য মূল্য বৃদ্ধির কিছু উদাহরণ টেনে বলেন, ডিজেলের ব্যারেল প্রতি মূল্য ১৩২ ডলার বা তার বেশি থেকে প্রায় ১৭০ হয়েছে। গ্যাস সরবরাহে নভেম্বর মাসে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি ঘন মিটারেই ১০ টাকা ৬০ পয়সা হারে ভর্তুকি গুণতে হচ্ছে। এলএনজিকে প্রতি ঘনমিটারে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে ৪৮ টাকা। সেভাবে ইউরিয়া সার ৭৫ টাকায় ক্রয় করে ২২ টাকায়, টিএসপি ৫৯ টাকায় করে কৃষক পর্যায়ে ২২ টাকায় এবং অন্যান্য সারও এভাবে উচ্চমূল্যে ক্রয় করে ন্যায্যমূল্যে কৃষক সরবরাহ করতে ভর্তুকি বহুগুণে বেড়ে গেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত এক বছরে বিশ্ব বাজারে চিনি, মশুরডাল সহ অন্যান্য খাদ্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ। যার অধিকাংশই আমাদের আমদানী করে স্থানীয় চাহিদা মেটাতে হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে একই সময়ে চাল, গম, আটার মুল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ। আন্তর্জাতিক পণ্য পরিবহনের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ।

প্রধানমন্ত্রী এত কিছুর পরও দেশে ‘১৫ লাখ ৭৩ হাজার ৪শ’ ৮৫ মেট্রিক টন’ খাদ্য মজুদ রয়েছে বলেও দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেন।
‘কাজেই আমাদের চিন্তার কিছু নাই। ইতোমধ্যে ৫ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন চাল আগাম আমদানীর পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এজন্য ভারত, মিয়ানমার, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া সকল দেশের সঙ্গেই আলোচনা চলছে এবং কিছু চুক্তিও হয়েছে’ বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে ৯ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানীর কার্যক্রম চলছে এবং চুক্তিকৃত চাল, গম ইতোমধ্যেই দেশে আসা শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে রাশিয়া তার বাধাটা সরিয়ে নেওয়ায় ইউক্রেনসহ ঐ অঞ্চল থেকে পণ্য আমদানী শুরু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী রিজার্ভ নিয়ে বিরোধী দলের উপনেতার বক্তব্য প্রসংগে বলেন, উনি একটি হিসাব দেখিয়েছেন যেখানে শুধু খরচটাই দেখিয়েছেন। কিন্তু আয়টা যুক্ত করেননি। আমাদের কিছু আয় আছে .সেটাও বাস্তব।

তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরে জুলাই-অক্টোবরে রপ্তানী আয় বেড়েছে ১৬ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৭ শতাংশ বেশি। আর একই সময়ে (চলতি অর্থবছরে জুলাই-অক্টোবরে) প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) এসেছে ৭ দশমিক ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা গত বছরের এই সময়ের চেয়ে ২ শতাংশ বেশি। একই সময়ে আমদানী ঋণপত্র খোলা হয়েছে ২২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১১ দশমিক ৭ কম। কেননা যখন ডলারের দাম কম ছিল তখন ঋণপত্র খোলার দায়টা এখন আমাদের নিতে হচ্ছে। কারণ এখন ডলারের দাম বেড়ে গেছে। সেটা পরিশোধটাও অতিরিক্ত চাপ। তবে, অতীতের ঋণপত্র খোলার যে ঘাটতি বা চাপ সেটা ২০২২ সালের ডিসেম্বর নাগাদ শেষ হয়ে যাবে বলেও তিনি আশার কথা বলে উল্লেখ করেন। জানুয়ারি ২০২৩ থেকে ডলারের সংকট নিরসনেও তাঁর সরকার বিশেষ ভাবে দৃষ্টি দিয়েছে বলেও তিনি জানান।
রিজার্ভের হিসাব প্রসংগে তিনি বলেন, ৯৬ সালের ২৩ জুন সরকার গঠনের সময় তিনি রিজার্ভ পেয়েছিলেন ২ দশমিক ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তাঁর সরকার ক্ষমতায় এসেই সেই রিজার্ভকে প্রায় ৪ বিলিয়নের কাছাকাছিতে উন্নীত করে। এরপর দ্বিতীয়বার সরকারে আসে ৬ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে, তখন রিজার্ভ ছিল ৫ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ৮ জানুয়ারী ২০১৪ তারিখ যখন টানা দ্বিতীয় এবং মোট তৃতীয় বারের মত আওয়ামী লীগ সরকারের আসে তখন রির্জার্ভ বেড়ে দাঁড়ায় ১৭ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ আওয়ামী রীগ সরকার ৫ বিলিয়ন থেকে ১৭ বিলিয়নে উন্নীত করেছে। এরপর চতুর্থ দফা এবং টানা তৃতীয় দফায় সরকার গঠনের সময় ৭ জানুয়ারি ২০১৯ রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়ায় ৩২ দশমিক ০৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয় এবং ৩০ জুন ২০২০ তারিখে ৩৬ দশমিক ০৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়।

তিনি আরো বলেন, ৩০ জুন ২০২১ তারিখে ৪৬ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ৩০ জুন ২০২২ তারিখে তা ৪১ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়ায়। করোনার সময় আমদানী-রপ্তানীসহ অন্যাস্য ব্যয় প্রায় বন্ধ থাকায় তা প্রায় ৪৮ বিলিয়নে উঠে গিয়েছিল। পরবর্তী আমদানী বৃদ্ধি এবং সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বস্তবায়ন এবং ক্যাপিটাল মেনিারিজ আমদানীর ফলে রিজার্ভ কিছুটা কমে বর্তমান ৩ নভেম্বর ৩৫ দশমিক ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে এসে দঁড়িয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের যে রিজার্ভ আছে সেই রিজার্ভে অন্তত ৫ মাসের আমদানী করা সম্ভব। আন্তর্জাতিক মানদন্ডে যদি ৩ মাসের আমদানী পরিমান রিজার্ভ থাকে তাহলে সেটাই যথেষ্ট। এটা হলো বাস্তবতা।

 

 

শেয়ার করুন

প্রকাশ : নভেম্বর ৬, ২০২২ ৮:২৭ অপরাহ্ন
আমিষ নিশ্চিতে পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার: খাদ্যমন্ত্রী
কৃষি বিভাগ

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, নিরাপদ প্রাণিজ আমিষ নিশ্চিতকরণে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।

রবিবার ( ০৬ নভেম্বর) নওগাঁর নিয়ামতপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প’র আওতায় ভেড়া ও ভেড়ার গৃহ উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ভেড়ার পালন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সদস্যদের সাবলম্বী হতে এবং দেশের প্রাণিজ আমিষের চাহিদাপূরণে ভূমিকা রাখবে।

সাধন চন্দ্র বলেন, শুধু ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য নয়, পিছিয়ে পড়া সকল জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক সুরক্ষা বলয়ের আওতায় নানারকম ভাতা দিয়ে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। এতে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাদ্য উৎপাদনে গুরুত্ব দিয়ে প্রতি ইঞ্চি জমি চাষের আওতায় আনার নির্দেশনা দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, কৃষকের বিষয়টি অনুধাবন করে উৎপাদন বাড়াতে মনোযোগী হতে হবে।

দেশে সারের পর্যাপ্ত মজুত আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সরকার সার আমদানিতে ৪৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে।

এছাড়া জনগণকে দেশের উন্নয়নে সরকারের পাশে থাকার আহ্বান জানান তিনি।

নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফারুক সুফিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডা. মো. ইয়ামিন আলী,উপজেলা চেয়ারম্যান ফরিদ আহম্মেদ, নওগাঁ জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার মো. মহির উদ্দিন বক্তব্য দেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : নভেম্বর ৬, ২০২২ ৪:২২ অপরাহ্ন
বরিশালের বাবুগঞ্জে বিনাধান-১৭ বিষয়ক মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত
কৃষি বিভাগ

নাহিদ বিন রফিক (বরিশাল): বরিশালে বিনা উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল ধানের চাষ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিনাধান-১৭ বিষয়ক মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (৬ নভেম্বর) উপজেলার পূর্ব রহমতপুরে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) উদ্যোগে এই মাঠ দিবসের আয়োজন করা হয়।

এ উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আয়োজক প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম।

বিনার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. ছয়েমা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি (ভার্চুয়ালি) ছিলেন বিনার মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মনজুরুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মোসাম্মৎ মরিয়ম এবং উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মামুনুর রহমান।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিনার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. সোহেল রানা, এসও নাজমুন নাহার পপি, কৃষি তথ্য সার্ভিসের কর্মকর্তা নাহিদ বিন রফিক, উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা নুরুন্নাহার, প্রদর্শনী চাষি কাজী নজরুল ইসলাম রিয়াজ, বাবুল হাওলাদার প্রমুখ।
প্রধান অতিথি কৃষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, বরিশালের জোয়ার-ভাটার এলাকার অধিকাংশ কৃষক আমনের স্থানীয় ধানের জাত চাষ করেন।

এগুলোর জীবনকাল অনেক বেশি। তাই শস্যবিন্যাস অনুসরণ করাটাই অনেক সময় দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়। এসব স্থানে দরকার স্বল্প মেয়াদী জাত ব্যবহার। আর বিনাধান -১৭ এমনই একটি জাত। এর জীবনকাল মাত্র ১১৫ দিন। বিঘা প্রতি ফলন ২৮ থেকে ৩০ মন। রোগবালাইয়ের ক্ষেত্রে যথেষ্ট প্রতিরোধি।

এছাড়া ইউরিয়া সার শতকরা ৩০ ভাগ কম লাগে। জাতটি খরাসহিষ্ণু। ধান কাটার পর সরিষা চাষ করা যায়। এসব সুবিধার জন্য দক্ষিণাঞ্চলে এ জাতটি বেশ উপযোগী। তাই এর আবাদ স¤প্রসারণ করা জরুরি।

অনুষ্ঠানের আগে ধানের নমুনাশস্য কর্তন করা হয়। এর গড়ফলন হয়েছে প্রায় ৫.৫ টন। মাঠদিবসে অর্ধশতাধিক কৃষক অংশগ্রহণ করেন

শেয়ার করুন

প্রকাশ : নভেম্বর ৫, ২০২২ ৯:১০ অপরাহ্ন
পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত দিনাজপুরের চাষিরা
কৃষি বিভাগ

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। প্রতিবছর দেশে পেঁয়াজ উৎপাদিত হয় চাহিদার ৫৭ শতাংশ। দেশি পেঁয়াজের চাহিদা ও বাজারে ভালো দাম পাওয়া যায় বলে পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, কৃষকরা অন্যান্য রবিশষ্যের পাশাপাশি জমির একাংশে পেঁয়াজ রোপন করছেন। পেঁয়াজ চাষে প্রতি বিঘা জমিতে সার, গোবর ও বীজসহ মোট ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়। আশ্বিন মাসে পেঁয়াজ রোপনের পর তা অগ্রহায়ন মাসেই বাজারজাত করতে পারবেন কৃষকরা। ফলন ভালো হলে বিঘাপ্রতি ১ লাখ টাকার পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান চাষিরা।

কৃষক জহিরুল ইসলাম জানান, সারাবছর দেশি পেঁয়াজের চাহিদা থাকে। আমরা বেশি বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন করলে বিদেশ থেকে আর আমদানি করতে হবে না। আমরা পেঁয়াজ চাষে লাভবান হলে আরো বেশি করে উৎপাদন করতে পারবো। লাভবান হওয়ার লক্ষ্যে আমাদের এলাকার প্রায় অনেকেই পেঁয়াজ চাষ করছে।

বিরামপুর উপজেলা কৃষি অফিসার নিক্সন চন্দ্র পাল জানান, শীত মৌসুমে বিরামপুরে ১২৫০ হেক্টর জমিতে রবিশস্য চাষ হচ্ছে। তার মধ্যে ৪ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চাষ করছেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের সবধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : নভেম্বর ৫, ২০২২ ৯:০১ অপরাহ্ন
আগাম শিমের বাম্পার ফলনে বগুড়ার কৃষকের মুখে হাসি!
কৃষি বিভাগ

শিম শীতকালীন সবজি হলেও বর্তমানে গ্রীষ্মে শিমের আগাম চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। বগুড়ার পল্লী মঙ্গল ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে আগাম জাতের শিমের চাষ করা হয়েছে। এবছর আগাম জাতের শিমের বাম্পার ফলন ও বাজারদর ভালো পাওয়ায় খুশি চাষিরা। বাজারদর ভালো থাকলে আগামীতে আরো বেশি জমিতে আগাম জাতের শিমের চাষ করবেন বলে জানায় কৃষকরা।

জানা যায়, বগুড়ার শাজাহানপুর, শিবগঞ্জ, শেরপুর, কাহালু ও গাবতলী উপজেলায় এরই মধ্যে শীতের আগাম জাতের শিমে ভরে উঠেছে মাঠ। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে সারি সারি শিম গাছ। কৃষকরা গাছ থেকে শিম তুলে বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতি কেজি শিম ৮০-৯০ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি করতে পারলেও কীটনাশকের দাম অনেক বেশি বলে জানায় কৃষকরা।

কৃষক কু্দ্দুস জানান, আগাম জাতের শিম চাষ করে আমি লাভবান হয়েছি। এই জাতের শিম গাছ থেকে ছয় মাস পর্যন্ত শিম পাওয়া যায়। ৭০-৮০ হাজার টাকা শিম বিক্রি করতে পারবো। তবে বাজারদর ভালো থাকলে লাখ টাকাও বিক্রি হতে পারে।

বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক দুলাল হোসেন জানান, এবছর বগুড়া জেলায় ২ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করা হয়েছে। আশা করছি এবছর প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন আগাম সবজির ফলন পাওয়া যাবে। বাজারদর ভালো থাকায় কৃষকরা আগাম সবজি চাষে ঝুঁকছেন। আগামীতে আরো বেশি জমিতে আগাম সবজির চাষ হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : নভেম্বর ৫, ২০২২ ৮:৪২ অপরাহ্ন
লালমনিরহাটে প্রথমবারের মতো চাষ হচ্ছে সুপারফুড ‘চিয়া বীজ’
কৃষি বিভাগ

প্রথমবারের মতো লালমনিরহাটে চাষ হচ্ছে সুপারফুড চিয়া বীজ। আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার ৯ কৃষক ২১৩ শতাংশ জমিতে চিয়া বীজ চাষ করেছেন। আশানুরূপ ফলনের প্রত্যাশা করছেন তারা।

আদিতমারী উপজেলার জামুরটারী গ্রামের কৃষক আবু ফরহাদ জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে তিনি এই নতুন ফসল ১১ শতাংশ জমিতে চাষ করেছেন। কৃষি বিভাগ বীজ সরবরাহ করেছে এবং চাষ পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়েছে।

‘এর আগে এই ফসল কোনোদিন দেখিনি। কৃষি বিভাগ থেকে জেনেছি, এই ফসল মানব শরীরের জন্য খুবই উপকারী। বাজারে এই ফসলের মূল্য অনেক বেশি। ভালো ফলন ও বাজার সুবিধা পেলে আগামীতে আরও বেশি জমিতে এই ফসল চাষ করব’, বলেন তিনি।

কালীগঞ্জ উপজেলার হরবানিনগর গ্রামের কৃষক মোজাম্মেল হক জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে তিনি ৩৩ শতাংশ জমিতে চিয়া বীজ চাষ করেছেন। আশানুরূপ ফল পাবেন বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘চিয়া বীজ হলো সুপারফুড। উৎপাদিত চিয়া বীজ আমি নিজে খাব এবং বিক্রিও করব। বাজার সুবিধা পেলে কৃষকরা লাভবান হবেন। ফলে তারা আগামীতে আরও বেশি জমিতে এই বীজ চাষে আগ্রহ পাবেন।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চিয়া বীজ মধ্য আমেরিকার একটি উদ্ভিদ। পুদিনার একটি প্রজাতি। বিভিন্ন পোষক পদার্থের উপস্থিতির জন্য এটিকে সুপারফুড বলা হয়। প্রতি বিঘা জমিতে চিয়া বীজ উৎপাদন করতে খরচ হয় ১২-১৫ হাজার টাকা। বীজ উৎপাদন হয় ৭০-৮০ কেজি। প্রতি কেজি বীজ বিক্রি হয় ৭০০-১০০০ টাকা দরে। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে চিয়া বীজ বপন করতে হয়। ফলন ঘরে তোলা যায় মার্চের শেষ থেকে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে। চিয়া বীজ উৎপাদনে জৈবসারের ব্যবহার বেশি করতে হয়।

বিভিন্ন গবেষণার সূত্র উল্লেখ করে কৃষি বিভাগ জানায়, শর্করা, ফাইবার, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাসসহ একাধিক খনিজ পদার্থ রয়েছে চিয়া বীজে।

এ ছাড়া, একাধিক ভিটামিন ও প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট রয়েছে চিয়া বীজে। রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডও। ফলে শরীরে পাচনতন্ত্র ও মেটাবলিজমের জন্য অত্যন্ত উপকারী চিয়া বীজ।

চিয়া বীজে ফাইবারের পরিমাণ থাকে অনেক। প্রয়োজনীয় ফাইবার পাওয়া যায় এই বীজ থেকে। ফাইবারের প্রাধান্যের কারণে হজম প্রক্রিয়া ভালো থাকে।

চিয়া বীজ পাচন প্রক্রিয়া ঠিক রাখায় কমতে পারে ওজনও। এ ছাড়াও, শরীরে অতিরিক্ত চর্বি কমাতেও সহায়ক। চিয়া বীজ খেলে শরীরে কোলেস্টেরলের সমস্যা কমে। রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এই বীজ।

ফল বা দইয়ের মতো বিভিন্ন ধরনের খাবারের সঙ্গে খেতে হয় এই বীজ। পানিতে ভিজিয়ে রেখেও খাওয়া যায়। শরবতে ব্যবহার করা যায়। লেবুর রসের সঙ্গে বা দুগ্ধজাত পদার্থের সঙ্গে মিশিয়েও খাওয়া যায়।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামীম আশরাফ জানান, ‘লালমনিরহাটের মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আশানুরূপ চিয়া বীজ উৎপাদনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। প্রথমবারের মতো এই বীজ উৎপন্ন হচ্ছে জেলায়। কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে এবং সহযোগিতা করা হচ্ছে। আগামীতে আরও বেশি কৃষককে চিয়া বীজ উৎপাদনে আগ্রহী করা হবে।’

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop