কোয়েল পাখির খামারে সংসারে স্বচ্ছলতা
পোলট্রি
কোয়েল পাখির খামার করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন এবং অনেকের সংসারে ফিরেছে আর্থিক স্বচ্ছলতা। কম মূল্যে, স্বল্প জায়গায়, কম খাদ্যেই কোয়েল পাখির খামার করা যায়। কোয়েল পাখির ডিম ছাড়াও কোয়েল পাখি মাংসের জন্যও বিক্রি করে আয় করা যায়। এছাড়াও রোগ বালাই কম এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অন্য পোল্ট্রির চেয়ে বেশি হওয়ায় লাভজনক এই কোয়েলের খামার দিনাজপুরে দিন দিন বাড়ছেই। কোয়েল পালন করে স্বনির্ভর কর্মসংস্থান তৈরির মাধ্যমে বেকার সমস্যা দূর করা সহজ হয়।
গত ৪ মাস আগে প্রথম ৪০টি কোয়েল পাখি নিয়ে খামার গড়ে তোলেন দিনাজপুর সদরের উলিপুরের আসাদুজ্জামান লিটন। বর্তমানে তার খামারে ছোট-বড় নিয়ে ৩৬০টি কোয়েল রয়েছে। এখন প্রতিদিন ডিম পাওয়া যায় ১৬০-১৭০টি। লিটন ১ হাজার কোয়েলের খামার গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বাজারে কোয়েল পাখি বড়গুলো বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০০ টাকা এবং ডিম পাইকারী ২৫০ টাকা ‘শ’। আর খুচরা বিক্রি প্রতি হালি ১২ টাকা। একটি কোয়েল পাখি প্রকারভেদে ৩৫-৬০ টাকায় বিক্রি হয়। একটি কোয়েল পাখি ৫০-৫৫ দিনের মধ্যে ডিম পাড়ে।
কোয়েলের মাংস ও ডিম অত্যন্ত সুস্বাদু এবং গুণগতভাবে উৎকৃষ্ট। ডিমে কোলেস্টেরল কম এবং প্রোটিনের ভাগ বেশি। তাই ডিমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
খামারীরা বলেন, বাঁশ-কাঠ দিয়ে খাঁচাতেও এই কোয়েল পাখি পালন করা যায়। আবার ঘরের মধ্যে মেঝেতে পালন করা যায়। এক্ষেত্রে ঘরে আলো বাতাস পর্যাপ্ত চলাচল থাকতে হবে। মেঝেতে কোয়েল পাখির বিছানা হিসেবে সাধারণত ধানের তুষ, কাঠের গুঁড়া, ধান বা গম মাড়াই করার পর বের হওয়া শুকনো খড়ের টুকরো ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে।
খামারী আসাদুজ্জামান লিটন জানায়, গত ৪ মাস আগে বাজার থেকে প্রথম ৪০টি কোয়েল পাখি কিনে আনি। বর্তমানে ছোট ১১০টি এবং বড় ২৫০টি কোয়েল পাখি রয়েছে। এখন বড় কোয়েল পাখিগুলো থেকে প্রতিদিন ১৬০-১৭০টি ডিম পাওয়া যায়। প্রতি মাসে এসব কোয়েল পাখির খাবারে খরচ হয় সাড়ে ৬ হাজার টাকা। শুধুমাত্র ডিম বিক্রি থেকেই পাওয়া যায় ১২ হাজার টাকা।
তিনি আরও জানান, শীতের দিনে কোয়েলের থাকার জায়গাটি একটু গরম রাখতে হয় এবং যত্ন নিতে হয়। কোয়েল পাখির রোগ বালাই কম। বাড়ীতে বসেই যে কেউ একটু যত্ন নিলে কোয়েল পাখি বা তার ডিম বিক্রি করে অনায়াসে লাভ করা সম্ভব। তাছাড়া মুরগির তুলনায় কোয়েলের দেহের মাংসের ওজন আনুপাতিকহারে বেশি হয়। কোয়েলের বেঁচে থাকার হার মুরগির তুলনায় বেশি। এ কারণে লাভজনক এই কোয়েল পালনে যে কেউ স্বাবলম্বী হতে পারবেন।