দামুড়হুদায় ভারত সুন্দরী কুল চাষে লাভবান চাষি আব্দুস সামাদ
এগ্রিবিজনেস
ভারত সুন্দরী কুল আবাদ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন তরুণ চাষি আব্দুস ছামাদ। আব্দুস সামাদ দামুড়হুদা উপজেলার দেউলী-চিৎলা হাসপাতাল মাঠে তিন বিঘা জমিতে উন্নত জাতের এ কুলের আবাদ করেছেন।
জানাগেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা সদরের চিৎলা গ্রামের বজলু রহমানের ছেলে আ. সামাদ (৩২) এইচএসসি পাস করে আর লেখোপড়া করেননি। পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন কৃষিকাজ। ভাবতে থাকেন কি চাষ করলে ভালো লাভবান হওয়া যাবে। বিশ্বস্ত সূত্রে তিনি জানতে পারেন ভারত সুন্দরী কুল চাষ করে লাভবান হওয়া যাবে। যশোরের এক নার্সারি থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচে চারা নিয়ে এসে প্রাথমিকভাবে তিন বিঘা জমিতে এ জাতের কুলচারা লাগান। অল্প সময়ে চারাগুলো বেড়ে ওঠে। তিন মাসের মধ্যেই ফুল ও ফল ধরা শুরু করে। এখন প্রতিদিন ২-৩ মণ করে কুল তুলে চুয়াডাঙ্গার আড়তে বিক্রি করছেন।
ইতোমধ্যে তিনি প্রায় তিন লাখ টাকার কুল বিক্রি করেছেন। আরও দুই লাখ টাকার কুল বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি। কুল গাছের ওপরে নেট জাল টাঙিয়ে দিয়েছেন যাতে পাখিরা কুল নষ্ট করতে না পারে। অপরদিকে, গাছের কলম করতে শুরু করেছেন।
ইতোমধ্যে বিক্রির জন্য ৫ হাজার চারা প্রস্তুত করেছেন। সুস্বাধু মিষ্টি এ কুল গাছে কোনো কাটা নেই। সহজেই পরিচর্যা ও কুল তোলা যাচ্ছে। আর দুমাস পরেই কুল তোলা শেষ হলে গাছের ডাল কেটে দেয়া হবে। সাথে সাথে গাছের চারাও কমিয়ে দেয়া হবে। জমিতে এখন ৯ শতাধিক গাছ রয়েছে। আগামী বছরে অর্ধেক গাছ থেকে আরও বেশি কুল ধরবে বলে আশা করছেন তিনি। ইতোমধ্যে কুল গাছের ফাঁকে ফাঁকে সাথী ফসল হিসেবে উন্নত জাতের তরমুজের চারা রোপণ করেছেন। তিন বিঘা জমিতে পরিচর্যার জন্য রক্ষণাবেক্ষণ, কুল তোলা, চারা কলম করার জন্য ৪-৫ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছেন। কুলের চারা লাগানোর আগে জমিতে রাসায়নিক সারের পাশাপাশি জৈব সার দিয়েছিলেন তিনি। আর কোনো সার দিতে হয়নি তাকে। সব খরচ বাদ দিয়ে তিনি ২ লাখ টাকা লাভ করবেন। পাশাপাশি চারা তৈরি করে বিক্রিও করবেন।
কুলচাষি আব্দুস সামাদ জানান, বাবার সাথে সহযোগী হিসেবে চাষ শুরু করেছিলাম। কিন্তু ওইসব চাষে লাভ করতে পারিনি। বিকল্প হিসেবে উন্নত জাতের ভারত সুন্দরী কুল চাষ করে লাভের মুখ দেখছি। আমার বাবার এক ইঞ্চি জমি পতিত থাকবে না। প্রতিটি জমিই চাষের আওতায় আনা হবে।
দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান মনির জানান, চাষিরা যে ফসল চাষ করে লাভ হবে সেই ফসলই আবাদ করবে। আর এসব ফসলের উপর পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এজন্য মাঠ পর্যায়ে আমাদের কর্মকর্তারা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তবে সামাদের মতো অন্য তরুণ, যুবকেরা এরকম উন্নত জাতের কুল চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারেন।