বৃষ্টিতে দুবলার চরের কোটি টাকার শুটকি নষ্ট
এগ্রিবিজনেস
ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’-এর প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে সুন্দরবনের দুবলার চরে কোটি টাকার শুটকি নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া উত্তাল ঢেউয়ে টিকতে না পেরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ নৌকায় রেখে জেলেরা সাগর ছেড়ে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সমুদ্র মোহনা থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আহরণ শেষে তা রোদে শুকিয়ে শুটকি প্রক্রিয়া করেন জেলেরা। এই শুটকি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি হয়। চরের অভ্যন্তরে ১৩টি মৎস্য আহরণ, প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাতকরণ কেন্দ্র নিয়ে গঠিত দুবলার জেলে পল্লী। এখানে প্রায় ৩০ হাজার জেলে অবস্থান করছেন। এবার তাদের ১০ থেকে ১৫ মেট্রিক টন শুটকি নষ্ট হয়ে গেছে বলে জেলেরা দাবি করেছেন।
আলোরকোলের শুঁটকি ব্যবসায়ী মো. বাশার ও বোরহান উদ্দিন জানান, বৃষ্টিতে চাতাল ও মাচার সব মাছ পচে গেছে। সাগরের অবস্থা খুবই খারাপ। ঝড়ো বাতাস হচ্ছে। তিন দিন ধরে মাছ ধরাও বন্ধ রয়েছে। সাগরে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে চরের বেশির ভাগ জায়গা পানিতে ডুবে গেছে।
দুবলার চরের আরেক জেলে আব্দুল গফুর বলেন, গত তিনদিনে আমরা যে মাছ পেয়েছি, সেটা শুকাতে পারি নাই। এমন অবস্থা থাকলে এই মাছ গুলো নষ্ট হয়ে যাবে।
দুবলা ফিশারমেন গ্রুপের সভাপতি মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ দাবি করেছেন, তিন দিনের বৃষ্টিতে ১০টি চরের কমপক্ষে তিন কোটি টাকার মাছ নষ্ট হয়েছে। এসব চরে এক হাজারেরও বেশি মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলার বিভিন্ন খালে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে। মাছ নষ্ট হওয়া এবং মাছ ধরতে না পারায় বড় ধরনের লোকসানে পড়বে মহাজনরা।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলা জেলে পল্লী টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রহ্লাদ চন্দ রায় বলেন, তিন দিন ধরে ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। এতে শুঁটকির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে, মহাজনরা আড়াই থেকে তিন কোটি টাকার ক্ষতির কথা বললেও এখন পর্যন্ত সঠিক হিসাব জানা সম্ভব হয়নি। আবহাওয়া স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত মাছ ধরার কোনো সুযোগ নেই।
বনবিভাগের খুলনা রেঞ্জের বন সংরক্ষক মিহির কুমার বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় দুবলার জেলে পল্লীতে জেলেদের অনেক শুটকি মাছ নষ্ট ও পচে গেছে। তাছাড়া এখন নতুন করে সাগরে মাছ ধরতে নামতে পারছে না তারা।