৮:২৩ অপরাহ্ন

রবিবার, ২২ ডিসেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • ৩ মৌসুমেই করতে পারেন কলা চাষ
ads
প্রকাশ : ডিসেম্বর ৬, ২০২২ ১১:৫০ পূর্বাহ্ন
৩ মৌসুমেই করতে পারেন কলা চাষ
কৃষি বিভাগ

কলা উপকারী ফল। সকাল-সন্ধ্যার নাস্তায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কলার চারা বছরে ৩ মৌসুমে অর্থাৎ প্রথমত আশ্বিন-কার্তিক, দ্বিতীয়ত মাঘ-ফাল্গুন এবং তৃতীয়ত চৈত্র-বৈশাখ মাসে রোপণ করা যায়। তাহলে আসুন জেনে নেই কলা চাষের নিয়ম-

মাটি
কলা চাষের জন্য পর্যাপ্ত রোদযুক্ত ও পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা সম্পন্ন উঁচু জমি উপযুক্ত। উর্বর দো-আঁশ মাটি কলা চাষের জন্য উত্তম।

গর্ত তৈরি
জমি ভালোভাবে গভীর করে চাষ করতে হয়। দুই মিটার দূরে দূরে ৬০*৬০*৬০ সেন্টিমিটার আকারের গর্ত খনন করতে হয়। চারা রোপণের মাসখানেক আগেই গর্ত খনন করতে হয়। গর্তে গোবর ও টিএসপি সার মাটির সাথে মিশিয়ে গর্ত বন্ধ করে রাখতে হয়।

রোপণ
কলার চারা বছরে ৩ মৌসুমে অর্থাৎ প্রথমত আশ্বিন-কার্তিক, দ্বিতীয়ত মাঘ-ফাল্গুন এবং তৃতীয়ত চৈত্র-বৈশাখ মাসে রোপণ করা যায়।

চারা রোপণ
রোপণের জন্য ‘অসি তেউড়’ উত্তম। অসি তেউড়ের পাতা সরু, সূচালো এবং অনেকটা তলোয়ারের মত, গুড়ি বড় ও শক্তিশালী এবং কাণ্ড ক্রমশ গোড়া থেকে উপরের দিকে সরু হয়। তিন মাস বয়স্ক সুস্থ তেউড় রোগমুক্ত বাগান থেকে সংগ্রহ করতে হয়। সাধারণত খাটো জাতের গাছের ৩৫-৪৫ সেন্টিমিটার ও লম্বা জাতের গাছের ৫০-৬০ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের তেউর ব্যবহার করা হয়।

সার
কলা চাষের জন্য প্রতি গর্তে গোবর-আবর্জনা সার ১৫-২০ কেজি, টিএসপি ২৫০-৪০০ গ্রাম, এমপি ২৫০-৩০০ গ্রাম এবং ইউরিয়া ৫০০-৬৫০ গ্রাম করে দিতে হবে।

সার প্রয়োগ
সারের ৫০% গোবর জমি তৈরির সময় এবং বাকি ৫০% গর্তে দিতে হয়। এসময় অর্ধেক টিএসপি গর্তে প্রয়োগ করা হয়। রোপণের দেড়-দুই মাস পর ২৫% ইউরিয়া, ৫০% এমপি ও বাকি টিএসপি জমিতে ছিটিয়ে ভালোভাবে কুপিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। এর দুই-আড়াই মাস পর গাছপ্রতি বাকি ৫০% এমপি ও ৫০% ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হবে। ফুল আসার সময় অবশিষ্ট ২৫% ইউরিয়া জমিতে ছিটিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।

পরিচর্যা
চারা রোপণের সময় মাটিতে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা না থাকলে তখনই সেচ দেওয়া উচিত। এছাড়া শুষ্ক মৌসুমে ১৫-২০ দিন অন্তর সেচ দেওয়া দরকার। বর্ষার সময় কলা বাগানে যাতে পানি জমতে না পারে তার জন্য নালা থাকা আবশ্যক। মোচা আসার আগে গাছের গোড়ায় কোন তেউড় রাখা উচিত নয়। মোচা আসার পর গাছপ্রতি মাত্র একটি তেউড় বাড়তে দেওয়া ভালো।

কলা সংগ্রহ
রোপণের পর ১১-১৫ মাসের মধ্যেই সাধারণত সব জাতের কলা পরিপক্ক হয়ে থাকে। এতে প্রতি হেক্টরে ১২-১৫ টন ফলন পাওয়া যায়।

পানামা রোগ
এটি ছত্রাক জাতীয় মারাত্মক রোগ। এর আক্রমণে প্রথমে বয়স্ক পাতার কিনারা হলুদ হয়ে যায় এবং পরে কচি পাতাও হলুদ রং ধারণ করে। পরবর্তীতে পাতা বোটার কাছে ভেঙে গাছের চতুর্দিকে ঝুলে থাকে এবং মরে যায়। কিন্তু সবচেয়ে কচি পাতাটি গাছের মাথায় খাড়া হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। অবশেষে গাছ মরে যায়। কোন কোন সময় গাছ লম্বালম্বি ভাবে ফেটেও যায়। অভ্যন্তরীণ লক্ষণ হিসেবে ভাসকুলার বান্ডেল হলদে-বাদামি রং ধারণ করে।

প্রতিকার
আক্রান্ত গাছ গোড়াসহ উঠিয়ে পুড়ে ফেলতে হবে। আক্রান্ত গাছের তেউড় চারা হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।

বানচি-টপ
এ রোগের আক্রমণে গাছের বৃদ্ধি হ্রাস পায় এবং পাতা গুচ্ছাকারে বের হয়। পাতা আকারে খাটো, অপ্রশস্থ এবং উপরের দিকে খাড়া থাকে। কচি পাতার কিনারা উপরের দিকে বাঁকানো এবং সামান্য হলুদ রঙের হয়। অনেক সময় পাতার মধ্য শিরা ও বোটায় ঘন সবুজ দাগ দেখা যায়। পাতার শিরার ঘন সবুজ দাগ পড়ে।

প্রতিকার
আক্রান্ত গাছ গোড়াসহ উঠিয়ে ফেলতে হবে। গাছ উঠানোর আগে জীবাণু বহনকালী ‘জাব পোকা’ ও ‘থ্রিপস’ কীটনাশক ওষুধ দ্বারা দমন করতে হবে। সুস্থ গাছেও কীটনাশক স্প্রে করতে হবে।

সিগাটোকা
এ রোগের আক্রমণে প্রাথমিকভাবে ৩য় বা ৪র্থ পাতায় ছোট ছোট হলুদ দাগ দেখা যায়। ক্রমশ দাগগুলো বড় হয় ও বাদামি রং ধারন করে। এভাবে একাধিক দাগ মিলে বড় দাগের সৃষ্টি করে এবং তখন পাতা পুড়ে যাওয়ার মতো দেখায়।

প্রতিকার
আক্রান্ত গাছের পাতা পুড়ে ফেলতে হবে। প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি টিল্ট ২৫০ ইসি অথবা ১ গ্রাম ব্যাভিস্টিন মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর গাছে ছিটাতে হবে।

বিটল পোকা
কলার পাতা ও ফলের বিটল পোকা কলার কচি পাতায় হাঁটাহাঁটি করে এবং সবুজ অংশ নষ্ট করে। ফলে সেখানে অসংখ্য দাগের সৃষ্টি হয়। অতিরিক্ত আক্রমণে গাছ দুর্বল হয়ে যায়। কলা বের হওয়ার সময় হলে পোকা মোচার মধ্যে ঢুকে কচি কলার উপর হাঁটাহাঁটি করে এবং রস চুষে খায়। ফলে কলার গায়ে দাগ হয়। এসব দাগের কারণে কলার বাজারমূল্য কমে যায়।

প্রতিকার
পোকা-আক্রান্ত মাঠে বার বার কলা চাষ করা যাবে না। কলার মোচা বের হওয়ার সময় ছিদ্রবিশিষ্ট পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করে এ পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। প্রতি ১ লিটার পানিতে ১ গ্রাম সেভিন ৮৫ ডব্লিউ পি মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ২ বার গাছের পাতার উপরে ছিটাতে হবে। ম্যালথিয়ন বা ডায়াজিনন ৬০ ইসি বা লিবাসিড ৫০ ইসি ২ মিলি হারে ব্যবহার করতে হবে।

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop