ডিজেলের দাম বৃদ্ধিতে দুশ্চিন্তায় কৃষক ও মৎস্যজীবীরা
কৃষি বিভাগ
নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার কৃষক আবুল কাসেম। দিনভর পরিশ্রম করে জমির পরিচর্যা করছেন। আর কিছুদিন পরই এই জমিতে দিতে হবে সেচ। কিন্তু হঠাৎ ডিজেলের দাম বাড়ায় দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন। সেচ থেকে শুরু করে পরিবহন পর্যন্ত সব কিছুতেই গুনতে হবে বাড়তি টাকা।
এমন শঙ্কা সব কৃষকেরই। বোরো ধানের আবাদে সেচ পাম্প ও পাওয়ার টিলারের মূল জ্বালানিই ডিজেল। আবার এখন শীতের সবজি উঠছে। বেশি ভাড়া দিতে হবে এসব সবজি পরিবহনে।
ডিজেলের দাম বাড়ায় দুশ্চিন্তায় কৃষক ও মৎস্যজীবীরা। উৎপাদন খরচ ও বাজার নিয়ে শঙ্কায় তারা। খরচ বেড়ে যাবে পুকুরে সেচ দেয়া ও মাছ ধরার নৌকা চালাতে।
তেলের দাম লিটার প্রতি ১৫ টাকা বাড়লেও ফসল উৎপাদন ব্যায় বাড়বে ত্রিশ শতাংশ, আর এতে কৃষি অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন কৃষক ও ক্ষেতমজুর নেতারা।
শীতের আগমনেই মাঠে আলু চাষে নেমেছেন নওগাঁর চাষিরা। এরমধ্যেই ডিজেলের দাম বৃদ্ধির খবরে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে চাষিরা। সাধারণত এক বিঘা জমিতে আলু চাষে খরচ হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। কিন্তু তেলের দাম বৃদ্ধিতে সেই খরচে যোগ হলো বিঘাপ্রতি আরও ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। আর বাড়তি এই খরচ নতুন দুশ্চিন্তার জন্ম দিয়েছে উৎপাদকদের মনে।
কৃষকের ওপর চাপ কমাতে মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা চলছে বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ আসাদুল্লাহ বলছেন, চলতি বোরো মৌসুমে সেচে কত খরচ বাড়ে সেটা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ৩০ ভাগ জমিতে সেচ দেয়া হয় বিদ্যুতের মাধ্যমে। বাকি অংশে সেচ দেয়া হয় ডিজেলচালিত যন্ত্র দিয়ে। চলতি মৌসুমে আলু ছাড়াও আবাদ হচ্ছে সরিষা, গম, পেঁয়াজ ও শাক-সবজি। উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিতে শুরুতেই দেখা দিয়েছে মূলধনের অভাব। অসহায় হয়ে পড়েছেন অনেক চাষি।
যান্ত্রিক কৃষি ব্যবস্থা অনেকটা নির্ভর করে ডিজেলের ওপর। সরকারি হিসেবে দেশে ডিজেলের চাহিদার ১৬ শতাংশ ব্যবহৃত হয় কৃষি খাতে। বর্তমানে ডিজেলের দাম বৃদ্ধি উৎপাদন খরচ বাড়াবে, যার মাশুল গুনতে হবে ভোক্তাদের।