দু‘টি হরিণ দিয়ে শুরু করে এখন ৬টি হরিণের মালিক রিয়াজ!
প্রাণ ও প্রকৃতি
রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া সড়কের মোহনপুর গ্রামের আলী মন্ডলের ছেলে রিয়াজ মাহমুদ(৩০) ২ বছরে দুটি হরিণ থেকে এখন ৬টি হরিণের মালিক। তিনি এখন ৬ লাখ টাকা মূল্যের ৬টি হরিণের মালিক হয়েছেন।
জানা যায়, ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স শেষ করে বিশ্ব ব্যাংকের একটি প্রকল্পে চাকরি নেন রিয়াজ। ছাত্রাবস্থায় হরিণ চাষের দিকে তার ছিলো প্রবল আগ্রহ। তাই চাকরি করলেও খুঁজতে থাকের হরিণ চাষের সুযোগ। তাই সে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ না হয়ে গেলে হরিণ পালনের প্রবল ইচ্ছা নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন তিনি।
অবশেষে বন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নিয়ে ২০১৮ সালে শখের বশে দুটি হরিণ পালন শুরু করেন। সেই দুটি থেকে এখন মোট ৬টি হরিণ হয়েছে তার খামারে। নিজ বাড়ির আঙিনায় শখের বশে হরিণ পালন করে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন রাজবাড়ীর রিয়াজ মাহমুদ। এখন তিনি স্বপ্ন দেখছেন ভবিষ্যতে এই খামারটি সম্প্রসারণ করে দুই শতাধিক হরিণ পালনের। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে সেটি সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চিত এই যুবক। আইনি জটিলতা থাকার কারণে তাকে এগোতে হচ্ছে ধীরগতিতে।
হরিণ এখন বিলুপ্তির পথে। এই প্রাণীকে টিকিয়ে রাখতে হলে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারকে। হরিণ একটি লাভজনক প্রাণী। এটিকে যদি বাণিজ্যিকভাবে পালনের জন্য সরকার আইনি প্রক্রিয়া সহজ করেন তাহলে এটি দেশের অর্থনৈতিক খাতে ভূমিকা রাখতে পারবে বলে জানানিএই তরুণ উদ্যোক্তা রিয়াজ মাহমুদ।
রিয়াজ বলেন, হরিণ যাতে সবাই পালন করতে পারে সে জন্য নীতিমালা শিথিলসহ ট্যাক্স কমানো ও লাইসেন্স গণহারে দেওয়া উচিত। হরিণের বিলুপ্তি ঠেকাতে গবাদি পশুর মতো হরিণের খামারের অনুমোদন দেওয়া উচিত। আমি নিজেই প্রতিদিন হরিণগুলোর খাবার দেয়াসহ সার্বিক যত্ন নিই।
রিয়াজ আরো জানান, বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে ২০১৮ সালে দুটি হরিণ কিনেছি বরিশালের একটি খামার থেকে। সে দুটি হরিণ থেকে এখন আমার এখানে ছয়টি হরিণ হয়েছে। যার প্রতিটির সরকারি মূল্য ৭০ হাজার টাকা। ৪৪ শতাংশ জমির উপর এই খামারটি। এটিকে সম্প্রসারণ করে এক একর জমির উপর করার ইচ্ছা রয়েছে। সরকারি অনুমতি পেলে সেটি করার স্বপ্ন দেখছি। যেখানে দুই শতাধিক হরিণ পালন করা যাবে।
কালুখালী উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. প্রদীপ কুমার সরকার জানান, হরিণ যেহেতু একটি অর্থকারী প্রাণী সেহেতু বাণিজ্যিকভাবে হরিণের খামার তৈরি করা গেলে, দেশে অর্থনৈতিকখাতে নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে। কালুখালীতে যে খামারটি রয়েছে সেটিতে আমরা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সব সময় সহযোগিতা করছি। এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান এই ভেটেনারি সার্জন।
রাজবাড়ী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ফজলুল হক জানান, বাণিজ্যিকভাবে হরিণের খামার করলে দেশের অর্থনৈতিকখাতে নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে। কালুখালীতে যে খামারটি রয়েছে সেটিতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে সব সময় সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান তিনি।