ফসল হারানোর শঙ্কায় কলাপাড়ার চাষিরা
কৃষি বিভাগ
কলাপাড়ায় চাকামইয়া ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামের দুই সহস্রাধিক কৃষক পরিবারের আমন ফসল হারানোর শঙ্কায় রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।
সেখানকার লাবরখালের সঙ্গে প্রভাবশালী মহলের ব্যক্তিগত স্লুইসসহ বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়ে জোয়ারের পানিতে কৃষকের বেড়ে ওঠা আমন চারায় পচন ধরায় ফসল হারানোর এমন শঙ্কায় পড়েছেন।
প্রায় ১৫ দিন আগে ৪৪ নম্বর পোল্ডারের আনিপাড়া গ্রামের ওই স্লুইসসহ প্রায় ৩০ ফুট বেড়িবাঁধ ছিন্ন হয়ে গেছে। এখন ভাঙ্গনের পরিধি ক্রমশ বাড়ছে। সংলগ্ন প্রাইমারী স্কুলে যেতে পারছে না শিশুরা। মানুষ শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভোগান্তির যেন শেষ নেই।
শুক্রবার সকালে সরেজমিনে গেলে
কৃষকরা তাদের দুরবস্থার কথা বলেন। মো. মিলন তালুকদার জানান, ১৬/১৭ বছর আগে স্থানীয় এক বিএনপি ও এক আওয়ামী লীগ নেতা খালের সঙ্গে নদীর সংযোগ করে পানি তুলে মাছ চাষের জন্য যৌথ উদ্যোগে সরকারি বেড়িবাঁধ কেটে স্লুইস করেন।
এরপর জবরদস্তি গ্রামের মানুষকে জিম্মি করে বছরের পর বছর মাছ শিকার করেন। প্রায় এক বছর আগে এই স্লুইসটির মাটি দেবে যায়। নিচ থেকে সুড়ঙ্গ হয়ে যায়। পানি ওঠানামা করতে করতে কয়েকদিন আগে স্লুইসসহ প্রায় ৩০ ফুট প্রস্থ বেড়িবাঁধ সম্পূর্ণভাবে ভেসে গেছে। এখন প্রতিদিন জোয়ারে দুই দফা প্লাবিত হয় আমন চারা। লকলক করে বেড়ে ওঠা আমন চারা জোয়ারের পানিতে ডুবে এখন পচন ধরেছে। আর এক-দুই সপ্তাহ পরে নদীর পানি লোনা হয়ে যাবে। ওই পানি আমন খেতে ঢুকে সকল ফসল নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় কৃষকরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।
কৃষক আরিফ হাওলাদার জানান, বাঁধটি স্লুইসসহ ভেঙ্গে যাওয়ায় আনিপাড়া, গান্ধাপাড়া, কাঠালপাড়া, কাছিমখালী ও নেওয়াপাড়া গ্রামের কৃষকের শত শত একর জমির আমন ফসল পচে যাওয়ার অবস্থা হয়েছে। এখনই পচতে শুরু করেছে।
এ ছাড়া গ্রামের মানুষের যোগাযোগে সমস্যা হচ্ছে। শিশুরা স্কুলে যেতে পারছে না। ইউপি চেয়ারম্যান মজিবর রহমান হাওলাদার জানান, ওটি ব্যক্তিগত স্লুইস থাকায় সমস্যা হয়েছে। তারপরও বাঁধটি মেরামতের সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফ হোসেন জানান, জরুরীভিত্তিতে কৃষকের আমন ফসল রক্ষায় বাঁধটি মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে যারা বাঁধ কেটে ব্যক্তিগত স্লুইস করেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মহিব্বুর রহমান জানান, কৃষকের আমন ফসল রক্ষায় বিধ্বস্ত বাঁধটি মেরামতের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শীঘ্রই মেরামতের কাজ শুরু হবে।
সূত্র : জনকণ্ঠ