ফেনীতে মিলল সাদা রঙের বিরল প্রজাতির সাপ
প্রাণ ও প্রকৃতি
সাদা রঙের বিরল প্রজাতির একটি সাপ খুঁজে পেয়েছে চট্টগ্রামের একদল শিক্ষার্থী। ফেনী থেকে উদ্ধারের পর সাপটিকে নিয়ে গবেষণা করছেন তারা। এর মধ্যে দু’বার সাপটি খোলস পাল্টে সাদা রঙে রূপ নিয়েছে। জলঢোড়া প্রজাতির সাপটি প্রথম পর্যায়ে এলভিনো বলে মনে হলেও পরবর্তীতে চোখের রংসহ নানা উপসর্গের মাধ্যমে এটি দুর্লভ লিউসস্টিক সাপ বলেই ধারণা তাদের। বিশ্বে এমন সাপ পাওয়ার তেমন নজির নেই।
গত ১৫ই নভেম্বর ফেনীর ছাগলনাইয়া এলাকার একটি বাসা থেকে সাদা রঙের এই সাপটি উদ্ধার করেন এক শিক্ষার্থী। এরপর তারা এটিকে চট্টগ্রামে এনে গবেষণা শুরু করেন। বিশেষ করে গত দুই মাসে এই সাপটি দুবার খোলস পরিবর্তনের পাশাপাশি গায়ের রংও পরিবর্তন এনেছে, যা সচরাচর সাপের ক্ষেত্রে হয় না। প্রথম থেকেই সাপটি জলঢোড়া বলেই নিশ্চিত ছিলেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু গায়ের রঙের পার্থক্যের কারণে এটি তাদের আকর্ষণের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশের সহকারী পরিচালক ইসমাইল মিথুন জানান, এ সাপটিকে ধরার পর প্যাকিং করে প্রথমে বাসাই রাখা হয়। পরে অবজারভেশনের জন্য চট্টগ্রামে পাঠানো হয়।
স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশের মেম্বার ফরহাদুল ইসলাম জানান, সাপের এ পরিবর্তনটা হয়েছে পিগমেন্টেশনের জন্য।
সাপ গবেষকদের মতে, কয়েকটি দেশে আগে কোবরাসহ কয়েক প্রজাতির সাপের মধ্যে এ ধরনের লিউসস্টিক সাপ পাওয়া গেলেও জলঢোড়া প্রজাতির মধ্যে এই ধরনের কোনো নজির নেই।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবদুল ওয়াহেদ চৌধুরী জানান, জলঢোড়ার এটি একটি ভিন্ন প্রজাতি। এখন পর্যন্ত ফেনী থেকে উদ্ধার হওয়া সাপটিই এই অঞ্চলের একমাত্র জলঢোড়া প্রজাতির মধ্যে লিউসস্টিক বৈচিত্র্যের। বর্তমানে বিরল প্রজাতির এই সাপটিকে ইঁদুরের পাশাপাশি ছোট আকৃতির মাছ’ও খাবার হিসেবে দেওয়া হচ্ছে।
স্নেক রেসকিউ টিমের পরিচালক সিদ্দিকুর রহমান রাব্বী বলেন, পর্যবেক্ষণের পরে দেখা যাচ্ছে সাপটি আবার মোল্টিং করে এবং তার রংটা আরও ফ্যাকাশে হয়। যেটা সম্পূর্ণ লিউসস্টিকের বৈশিষ্ট্য।
রেসকিউ টিমের অন্য এক মেম্বার আরশাদ নাফিজ জানান, যে কোনো একটি সংরক্ষিত জায়গায়, যেখানে এ সাপটির নিরাপত্তা বজায় থাকবে যেখানে তাকে রিলিজ করা হবে।
গত এক বছরে ৫শ’র বেশি সাপকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থান থেকে উদ্ধার করে বন বিভাগের সহায়তা জঙ্গলে অবমুক্ত করেছে শিক্ষার্থীদের সংগঠন স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশ। সাদা রঙের জলঢোড়া প্রজাতির এই সাপটিকেও গবেষকদের মতামত নিয়েই অবমুক্ত করার অপেক্ষায় রয়েছে তারা।