মরা পদ্মায় চলছে বিষ দিয়ে অবাধে মাছ শিকার!
মৎস্য
গোয়ালন্দের উজানচর মরা পদ্মা নদীতে বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ স্থানীয় লোকমান গায়েনের নেতৃত্বে বিল্লাল হোসেন, আতিয়ার মন্ডল, মতি ডাঃ, শামসুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন এ মাছ ধরার সাথে জড়িত।
জানা গেছে, মরা পদ্মা নদীর (উজানচর বদ্ধকোল) নতুন ব্রীজের উত্তরে সোনালী হ্যাচারীজ এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে পানিতে বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার করছে অসাধু চক্রটি। তারা বিশাল জলাশয়কে বাঁশ-খুটি ও লম্বা পলিথিন দিয়ে খন্ড খন্ড করে ছোট করে নেন। অতঃপর রাতের বেলায় তাতে বিষ প্রয়োগ করেন। অল্প সময়ের মধ্যে জলাশয়ের মাছ মরে ভেসে উঠতে থাকে। এরপর তারা বেড় জাল দিয়ে সহজেই সে মাছ সংগ্রহ করে। পরে রাতের আঁধার থাকতেই সে মাছ স্থানীয় বাজার ছাড়াও বিভিন্ন বাজারে পাঠিয়ে বিক্রি করে । এভাবে চক্রটি লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
এদিকে রাতের বেলায় মাছ ধরার পরও বহু মরা মাছ নদীতে থেকে যায়। স্থানীয় লোকজন সকাল থেকে সারাদিন সে মাছ সংগ্রহ করে থাকে।
স্থানীয় শাহজাহান শেখ (৪০), জাহিদুল ইসলাম (২০), হৃদয় (১৬), সোহেল রানা (৩০)সহ অনেকেই জানান, তারা এ জলাশয় হতে গত কয়েকদিন ধরে মরে ভেসে ওঠা বড় বড় বোয়াল, রুই, কাতল, শোল, গজার, আইড়, বাইনসহ বিভিন্ন মাছ সংগ্রহ করেছেন। এ ছাড়া নানা জাতের প্রচুর ছোট মাছ মরে ভেসে আছে। তবে সেগুলো কেউ নেয় না। এর বেশীর ভাগই পচা। পানিতে বিষ দেয়ার কারনে এভাবে মাছ মরে ভেসে ওঠে বলে তারা জানান।
জলাশয়টির একাংশে বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে থাকা সৌখিন মৎস্য শিকারী হাবিবুর রহমান, রাশেদ শেখ, আরজু মিয়া, হাবু শেখ, সোহেল রানাসহ অনেকেই বলেন, জলাশয়ে বিষ দিয়ে যারা এভাবে মাছ শিকার করছে তারা দেশের শত্রু। মাছের সাথে সাথে তারা জলাশয়ের সাপ, ব্যাঙ, কুইচ্যা, কাকড়া, শামুক-ঝিনুকসহ সকল জলজ প্রানীকেও হত্যা করছে।
তারা বলেন, এখন প্রায় প্রতিটি মাছের পেটে ডিম। আর কিছুদিন পরই সকল মাছ ডিম ছাড়বে। কিন্তু এই মূহুর্তে এভাবে মাছ শিকারের কারনে আগামীতে জলাশয়ে মাছের আকাল সৃষ্টি হবে।
অভিযুক্তদের মধ্যে লোকমান গায়েন মুঠোফোনে জানান, “তিনি উজানচর ও দক্ষিণ দৌলতদিয়া মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি। পুরো বদ্ধ জলাশয়টি তিনি ১৪২৭-১৪৩০ সনের জন্য সরকারিভাবে লিজ নিয়েছেন। সরকারি কোষাগার ছাড়াও নানা জায়গায় দিয়ে তার মোট ৭ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা ব্যায় হয়েছে। জলাশয়ে মাছ চাষ করা ও ধরা তার অধিকার।” তবে বিষ দিয়ে মাছ শিকারের নামে সকল মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রানী ধ্বংস করার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রসঙ্গ এড়িয়ে তিনি বলেন,”ভাই, আমি এখন একটু ব্যাস্ত আছি, আপনার সাথে পরে কথা বলব”।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আজিজুল হক খান মামুন জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। জলাশয়ে বিষ প্রয়োগের বিষয়টি প্রমানিত হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।সূত্র:যায়যায়দিন