মাছের পোনা ও পানিতে একাকার পটিয়া
মৎস্য
মাছ চাষ ও রেণু উৎপাদনে ব্যাপক সাফল্য হাসি ফুটেছে পটিয়ার অনেকের মুখে। মাছের পোনা ও পানিতে একাকার চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বিস্তৃর্ণ অঞ্চল। পটিয়ায় এখন যেখানে পানি সেখানে মাছ পাওয়া যাচ্ছে।
জানা যায়, উপজেলায় ৪ হাজার ১৯৯ একরের জলায়তনের মধ্যে পুকুরের সংখ্যা ১০ হাজার ৫০০, তদ্মধ্যে আবাদী ৮ হাজার ৪০০টি। মাছের জন্য জলাশয় গুলোর পানি অতি উপযোগী হওয়ার কারণে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকাগুলোর মধ্যে হাইদগাও, কচুয়াই, কেলিশহর, খরণা, খানমোহনা, ধলঘাট, আশিয়া, জঙ্গলখাইন, হুলাইন, জিরি, কাশিয়াইশ, শিকলবাহা, শোভনদন্ডী সহ পটিয়া পৌর এলাকা এবং পশ্চিম পটিয়া কর্ণফুলী থানার অধিনে বেশ কয়েকটি এলাকার পুকুরগুলোতে পোনা চাষ করে থাকে পোনা ব্যবসায়ীরা।
সেসব এলাকা থেকে পোনা সংগ্রহ করে পৌরসদরের রেলষ্টেশন বাজারে এনে ব্যবসায়ীরা বিক্রি করে। বছরের জুন থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত পোনার বিক্রির মৌসুম হওয়ায় রেলষ্টেশনের পোনার বাজারে এ চার মাস জমজমাট থাকে বলে পোনা ব্যবসায়ীরা জানায়।
এ ছাড়া চার মাসের মৌসুম ছাড়াও সারা বছর এ বাজারে পোনা বিক্রি হয়। এক ব্যবাসায়ী জানায়, চট্টগ্রাম ছাড়াও কক্সবাজার, পার্বত্য জেলা বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ির এলাকার মাছ ও পোনা ব্যবসায়ীরা এ বাজার থেকে পোনা নিয়ে মাছ চাষ করে থাকেন। এ ছাড়া পটিয়ায় উৎপাদিত নানা প্রজাতির পোনা ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হয়।
পোনা ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, ভার করে বিক্রি করা হয় রুই, কাতলা, সরপুটি, মৃগেল, গ্লাস কাপ আর ইঞ্চি হিসেবে বিক্রি করে পাঙ্গাস, মাগুর, কই, চিতল, দেশি মাগুর, শিং মাছের পোনা।
আর এ বাজারে প্রতিদিন বারশ থেকে দেড় হাজার ভার মাছের পোনা বিক্রি হয়। রুই, কাতলা, মৃগেল-এ তিন প্রকার পোনা একসঙ্গে বিক্রি করা হয় বলে এর নাম ‘মিঁয়েইল্যা’। দুটি ডেক্সি নিয়ে হয় এক ভার।
এক টেক্সিতে চার-ছয় কেজি, আর এক ভারে হয় আট থেকে দশ কেজি পরিমাণ পোনা। প্রতি ভার চার-পাঁচ হাজার টাকা বিক্রি করা হয়।
এ ছাড়া ইঞ্চি হিসাবে বিশেষ করে চিতল মাছের পোনা একশটির মূল্য আড়াই হাজার টাকা। এভাবেই বিক্রি হয় এখানের পোনা গুলো। সব মিলিয়ে প্রতিদিন এ বাজারে প্রায় ৭৫ লাখ টাকার পোনা কেনা বেচা হয়।
এক হিসাবে দেখা দেখে প্রতিবছরে মৌসুদের চার মাসে প্রতিদিন প্রায় ৭৫লাখ হিসাব করে প্রায় শতকোটি টাকার অধিক পোনার বাণিজ্য হয় এ বাজারে।