মাছের সংকট, শামুক নিধনে ব্যস্ত মৎস্য চাষিরা!
মৎস্য
পানি কমে যাওয়ায় চলনবিলে দেখা দিয়েছে মাছের সংকট। সিরাজগঞ্জের তাড়াশে শামুক নিধন করে জীবিকা নির্বাহী করছেন মৎস্যজীবীরা। উপজেলার নদী-খাল-বিল থেকে বিনা বাধায় এসব শামুক নিধন ও বেচাকেনা চলছে। ছোট-বড় বিভিন্ন প্রকারের এসব শামুক হাঁস ও মাছের খাদ্য হিসেবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে।
জানা যায়, তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ, সগুনা, মাগুড়া বিনোদ, বারুহাস, ইউনিয়নের ছোট ছোট নদী, খাল, বিল ও ডোবা থেকে ছোট ছোট শামুক ধরছে স্থানীয়রা। জলাশয়ের পানি কমে যাওয়ায় খুব সহজেই শামুক ধরছেন তারা। এদিকে পানি কমে যাওয়ায় চলনবিলে মাছের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। স্থানীয় মৎস্যজীবীরা মাছ না পাওয়ায় শামুক ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে- চলনবিলের শামুক হাঁস ও মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। স্থানীয় খামারিদের চাহিদা মিটিয়ে কুষ্টিয়া, নোয়াখালী, বরিশাল, বাগেরহাট, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খামারিদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে এই শামুক।
তাড়াশের কামারশন গ্রামের লোকমান সরদার, সিদ্দিক, রফিক, রবি ও কুশাবাড়ি গ্রামের ইয়ানুস আলীসহ অনেক মাছ চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের মতো বিল অঞ্চলের বহু মানুষের সংসার চলে মাছ ধরে। কিন্তু এ বছর ভরা বর্ষায়ও বিলে পানি কম। অল্প পানিতে মাছের দেখা মিলছে না। বাধ্য হয়ে শামুক ধরে বিক্রি করছেন তারা।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, বিলের শামুক ধরতে ভোর রাতে বেরিয়ে পড়েন মৎস্য চাষিরা। দুই থেকে তিনজন মই জাল টেনে দুপুরের মধ্যেই এক নৌকা শামুক সংগ্রহ করেন। কামারশন গ্রাম এলাকার তাড়াশ-গুরুদাসপুর মৈত্রী সড়কের পাশেই চলছে শামুক বেচা-কেনা। শ্যালো মেশিনের নৌকায় শামুক ভরে বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন মাছ চাষিরা।
স্থানীয় শামুকের ব্যাপারী আব্দুল কাদের রিন্টু জানান, তিনি প্রতিদিন কামারশন ও কুন্দইল ঘাটের দুই থেকে আড়াই হাজার বস্তা শামুক কিনে থাকেন। অনরূপভাবে হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কের আট নম্বর সেতুর পাশে ও নাদোসৈয়দপুর খেয়াঘাটসহ বিল অঞ্চলের বেশ কয়েকটি স্থানে শামুক বেচা-কেনা হচ্ছে।
তাড়াশ ডিগ্রি কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মর্জিনা ইসলাম জানান, প্রাকৃতিকভাবে শামুক পানি পরিষ্কার করে। যা মাছসহ অধিকাংশ জলজ প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য। তাছাড়া অতিরিক্ত পরিমাণে শামুক নিধন হলে চলনবিলের জমির মাটির ক্যালসিয়াম কমে ফসলহানির আশঙ্কাও রয়েছে।