শীতে গবাদি প্রাণির যত্নে যা যা করবেন…
প্রাণিসম্পদ
বিগত দশ বছরে দেশের প্রাণিসম্পদ সেক্টরে এক নীরব পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। এ সময়ে দেশে বহু সংখ্যক যুবক বিশেষ করে শিক্ষিত গ্রাজুয়েটগন সেক্টরটিতে আত্মনিয়োগ ও বিনিয়োগ করেছেন নিজেদের স্বাবলম্বী করতে।
আমাদের দেশে এখন শীতের প্রকোপ বেড়েছে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে । গ্রামের মাঠে এই শীতে একটি দৃশ্য খুব কমন, মাঠে চড়ে বেড়ানো গরুর গায়ে চটের ছালা ব কম্বল জড়ানো। খামারিরা গরুর প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা থেকে এটি করেন। যদিও গরুর দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ১০২ ডিগ্রী ফারেনহাইট যা মানুষের দেহের তাপমাত্রা হতে ৫ ডিগ্রী বেশি। মজার ব্যাপার হলো- আমাদের দেশে অধিকাংশ খামারি হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান যেই শংকর জাতের গরু পালন করেন তাদের জন্য শীতকালীন সময়ের এই ১৮-২২ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা অত্যন্ত আরামদায়ক।
আমাদের খামারিদের তাই এই শীতে গরুর দেহে চট কম্বল প্যাচানোর পাশাপাশি জরুরি তার পুষ্টিমান ও সঠিক রেশন এর ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। শীতকালীন সময়ে গরুকে এক্টু উচ্চ প্রোটিন সম্পন্ন খাবার দেয়া উচিত। এ সময় ডাল বা তেল জাতীয় খাবার দেয়া উচিত। দুগ্ধবতী গাভীকে ২০০ গ্রাম করে সয়ামিল দেয়া গেলে গরু শরীরবৃত্তীয় কাজগুলো সহজ হয়, গাভীকে ৫০-১০০ গ্রাম করে কালোজিরা দিলে গাভীর দেহে মিনারেল ও এন্টি অক্সিডেন্ট -এর পরিমান সঠিকভাবে বজায় থাকে, হিমালয়ান পিংক সল্ট গরু চেটে খেলে এই সময় মুখে লালার ঘাটতি হয়না।
শীতকালে গরুকে অবশ্যই গোসল করাবেন ও গোয়ালঘর পরিস্কার রাখবেন, যেন গরু স্যাঁতস্যাঁতে না থাকে। শীতকালে আপনার গরুকে অবশ্যই গলা ফোলা বা এইচ.এস ভ্যাক্সিন দিয়ে দেবেন।
শীতকালে বাঁছুরের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ, শিশু অবস্থায় নিউমোনিয়া হয়ে জন্মের এক মাসের মধ্যে প্রায় ৬০% বাঁছুর মারা যায়। এই সময় বাঁছুরকে শুকনো স্থানে রাখা লাগে ও কোনভাবেই যেন স্যাঁতস্যাঁতে স্থানে না থাকে ও পর্যাপ্ত পরিমানে যেন মায়ের দুধ পায়, বিশেষ করে বডি ওয়েটের ১০% অনুপাতে দুধ দিতে হবে।
যারা ছাগল পালন করেন তারা শীতে বিশেষ যত্ন নেবেন। শীতকালে কোনভাবেই ছাগলের ঘরে ঠাণ্ডা বাতাস যেন না ঢুকে রাতে যেন তাপমাত্রা কোনভাবেই ২৫ ডিগ্রীর নিচে না আসে। এজন্য প্রয়োজনে ইনফ্রারেড হিটার ব্যবহার করা যেতে পারে। শীতকালে বিশেষ করে ভোরের ঠান্ডা বাতাসে ছাগল এর মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশি, তাই এ ব্যপারে সতর্কতা অত্যন্ত জরুরি।