সিরাজগঞ্জের তাড়াশে তিন হাজার বিঘা চাষের জমিতে জলাবদ্ধতা
কৃষি বিভাগ
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ফসলি মাঠে অপরিকল্পিত পুকুর খনন ও কালভার্টের মুখ বন্ধের কারণে তিন হাজার বিঘা জমিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় চলতি বছর উপজেলার এসব জমিতে আবাদ করতে পারছেন না কৃষক।
কৃষি বিভাগ স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে তিন ফসলি এসব জমি অনাবাদি পড়ে থাকার আশঙ্কা প্রকাশ করছে। চলতি মৌসুমে এরই মধ্যে প্রায় তিন হাজার বিঘা জমিতে আবাদ করা সম্ভব হবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উপজেলার তাড়াশ সদর ইউনিয়নের তাড়াশ পূর্ব মাঠ, সোনাপাতিল, জাহাঙ্গীরগাতী, সোলাপাড়া, বোয়ালিয়া, মাধবপুর, মথুরাপুর, বিদুমাগুড়াসহ কয়েকটি মাঠে প্রায় তিন হাজার বিঘা ফসলি জমিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
ভুক্তভোগী কৃষক তাড়াশ সদর গ্রামের নজরুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, রাজিব আহমেদ জানান, তিন-চার বছর ধরে উপজেলাজুড়ে অসংখ্য পুকুর খনন করা হয়েছে। বিভিন্ন সেতু ও কালভার্টের মুখ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় চলতি মৌসুমে ফসল আবাদ করতে পারছেন না তারা।
বোয়ালিয়া গ্রামের মীর জাহিদুল ইসলাম বকুল জানান, অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন করায় মাঠজুড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এবারে চাষিরা রোপা আউশ ধান রোপণ করতে না পারায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। দ্রুত পানি নিস্কাশন করা না হলে আবাদি জমিগুলো পতিত থেকে যাবে।
উপজেলার মাধবপুর গ্রামের মো. মনসুর রহমান জানান, এলাকার প্রায় ৩ হাজার বিঘা জমি জলাবদ্ধতার কারণে অনাবাদি হয়ে পড়েছে। উপজেলার সদর ইউনিয়নে জলাবদ্ধতার পরিমাণ বেশি। অপরিকল্পিত পুকুর খনন করার সময় মাটি দিয়ে ভিটা ও খাল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এমনকি পানি নিষ্কাশনের পথ ব্রিজের তলা মাটি দিয়ে বন্ধ করেছে। ফলে বিভিন্ন এলাকাজুড়ে প্রায় ৩ হাজার বিঘা জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
ভুক্তভোগী কয়েকজন চাষি জানান, এই জমিগুলোতে ধান চাষ করে তাদের সারা বছরের ভাতের ব্যবস্থা হতো। এবারের জলাবদ্ধতার কারণে ধান রোপণ সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সারা বছর কিভাবে খাবারের ব্যবস্থা হবে তা ভেবে উদ্বিগ্ন।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার লুনা জানান, সরজমিনে পরিদর্শন করে উপজেলাজুড়ে জমি জলাবদ্ধতা নিরশনের জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছি। আর অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন বন্ধ করতে কৃষকদের সচেতন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।