১৭টি দিয়ে শুরু করে ৬০টি ছাগলের মালিক পলাশবাড়ীর রতন
প্রাণিসম্পদ
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী পলাশবাড়ী পৌরসভার হরিণমাড়ী গ্রামে গড়ে ওঠা সেভ গট ফার্মের মালিক রতন। বেকার যুবক রতন অনেকটা শখের বসে ১৭ টি ছাগল দিয়ে শুরু করেছিলেন খামার। এখন তার খামারে ছাগলের সংখ্যা ৬০ টি । যার বাজার মূল্য প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা। তার খামারে রয়েছে বিদেশি প্রজাতির ছাগল। রতনের সফলতা দেখে অনেকেই ছাগলের খামার করতে তার কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন।
জানা যায়, রতন তার বসত বাড়ির পাশেই গড়ে তুলেছেন ছাগলের বিশাল খামার। অল্প খরচে লাভ বেশি হওয়ায় শখের ছাগল পালন এখন তার পেশা। জানাযায়, ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে শখের বসে ১৭ টি ছাগল কিনে লালন-পালন শুরু করেন । আড়াই বছরের মধ্যে ছাগল বৃদ্ধি হতে হতে এখন ছাগল দাড়িয়েছে ৬০ টি-তে। যমুনা পাড়ি, তোজাপাড়ি, হরিয়ান ও ব্লাক বেঙ্গল প্রজাতির ছাগল কিনে ম্যাচিং পদ্ধতিতে খামার গড়ে তোলেন তিনি । এখন খামারে ৫ থেকে ৬ প্রজাতির ৬০ টি ছাগল রয়েছে তার। খামারে গিয়ে দেখাযায়, রতন নিজেই ছাগলের খাওয়ানো পরিচর্যা থেকে শুরু করে ছাগলের সবকিছু দেখাশুনা করছেন । তবে এ কাজে তাকে সহযোগিতা করছেন তার স্ত্রী । এছাড়াও বাড়ির পাশের পতিত জমিতে আবাদ করেছেন বিদেশী ঘাস । যা ছাগলের জন্য উৎকৃষ্টমানের খাবার। ঘাস দিয়েই ছাগলের খাবারের বেশিরভাগ চাহিদা মেটাচ্ছেন।
রতন জানান, আমি অনেকটা শখের বসেই এই খামার গড়ে তুলি। আড়াই বছর আগে প্রথমে ১৭ টি ছাগল দিয়ে শুরু করি। এখন আমার খামারে ৬০ টি ছাগল রয়েছে। সামনে আরো পরিকল্পনা আছে খামার বৃদ্ধি করার। সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ ও সরকারি সাহায্যে সহযোগিতা পেলে আমি আরো বেশি সফলতা লাভ করতাম। উপজেলা পশু হাসপাতালের দুই চারটে ট্যাবলেট ছাড়া আমি কিছুই পাইনি। সরকারি প্রণোদনার টাকাও পাইনি। প্রশিক্ষণের জন্য কত ঘুরেছি, পাইনি।
রতন আরো জানান, এই একটি মাত্র প্রাণী যার বছরে দু’বার প্রজনন ক্ষমতা রয়েছে। প্রতিবার প্রজননে একাধিক বাচ্চা দেয়। রোগ-বালাইও কম হয়। বছরে একবার পিপিআর, গডপক্স ভ্যাকসিন দিলেই আর কোনও ওষুধ লাগে না। দুই চারটে বড়ি লাগলেও লাগতে পারে। অল্প খরচে বেশি আয় করা সম্ভব।
তিনি বলেন,যেখানে একটি বিদেশি গাভি পালন করলে প্রতিদিন ৩০০ টাকার খাবার খায়। আর সেখানে ৩০০ টাকা হলে প্রতিদিন ৩০টি ছাগলকে খাওয়ানো যায়। ছাগলের খাদ্য হিসেবে খাওয়ানো হয় গম, ভুট্টা ও ছোলা বুটের গুড়ো সেই সঙ্গে সয়াবিন ও খড়ের ছন। যা ছাগলের জন্য খুবই পুষ্টিকর। এছাড়াও দেশের বাজারে ছাগলের বেশ চাহিদার পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশ ভারতেও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই ছাগল রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করা সম্ভব।
পলাশবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আলতাফ হোসেন জানান , ছাগল পালন করে মোটামুটিভাবে সফল হয়েছেন রতন । আমরা নিয়মিত তার ওই ছাগলের খামার পরিদর্শনের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ওষুধ ও সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি। এখন অনেকেই ছাগলের খামার গড়ে তুলতে পরামর্শের জন্য আমাদের কাছে আসছেন। তাদেরকে সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।