২০২০-২১ অর্থ বছরে কাপ্তাই হ্রদ থেকে মাছ উৎপাদন ১২ হাজার ৩০৮
মৎস্য
২০২০-২১ অর্থ বছরে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদ থেকে ১২ হাজার ৩০৮ মেট্রিকটন মাছ উৎপাদন হয়েছে। স্থানীয়দের চাহিদা পূরণ করার পরও দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা। আর রাজস্ব আদায় হয়েছে ১২ কোটি ১১ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) তথ্য অনুযায়ী, জেলার চারটি মৎস্য অবতরণ ঘাট থেকে গত এক বছরে ৬ হাজার ৭৮০ মেট্রিকটন মাছ গিয়েছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।
বিএফডিসি সূত্রে জানা যায়, জলবিদ্যুৎ উৎপাদনকে প্রাধান্য দিয়ে ষাটের দশকে প্রমত্তা কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দিয়ে নির্মাণ করা হয় কাপ্তাই হ্রদ। কিন্তু শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদন নয়, বর্তমানে এই হ্রদের মৎস্য খাতও এলাকার অর্থনীতিতে বিশাল ভ‚মিকা পালন করছে। ১৯৬৫-৬৬ অর্থ বছরে মাত্র ১২০৬.৬৩ মেট্রিকটন মৎস্য উৎপাদনের মাধ্যমে রাঙ্গামাটি কাপ্তাই হ্রদে বাণিজ্যিকভাবে মাছের উৎপাদন শুরু হয়। বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদের মাছ জেলা ও জেলার বাইরে কেজিপ্রতি প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জানা যায়, একসময় কাপ্তাই হ্রদে রুই, কাতল, মৃগেল, কালিবাউস ও মহাশোলসহ কার্প জাতীয় মাছের উৎপাদন ছিল প্রায় ৮১.৩৫ শতাংশ। যা ক্রমশ হ্রাস পেয়ে ৪ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। অন্যদিকে ছোট মাছ বিশেষ করে চাপিলা, কাচকি, মলার উৎপাদন বেড়ে ৯০ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে।
বিএফডিসি সূত্র অনুযায়ী, কার্প জাতীয় মাছের উৎপাদন বেশি থাকলে রাজস্ব আদায় আরও বেশি হতো। বাণিজ্য করা সম্ভব হতো অন্তত ৫০০ কোটি টাকার। বর্তমানে কাচকি, মলা, চাপিলা মাছ থেকে সরকারি রাজস্ব নেয়া হয় ১৭ টাকা আর কার্প জাতীয় মাছ থেকে রাজস্ব নেয়া হয় ৩০ টাকা।
রাঙ্গামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক উদয়ন বড়–য়া বলেন, ‘আমরা হ্রদের মাছ সরকারি রাজস্ব মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে দিই। কার্প জাতীয় মাছে পেলে দামও বেশি পাই।’
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএফডিসির) রাঙ্গামাটি অঞ্চলের ব্যবস্থাপক লে. কমান্ডার তৌহিদুল ইসলাম জানান, প্রতিনিয়ত কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে একদিকে যেমন সরকারি রাজস্ব পাওয়া যাচ্ছে তেমনি স্থানীয় মানুষের আমিষের যোগানও দেয়াও সম্ভব হচ্ছে। পাশাপাশি এই এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে হ্রদের মাছ ব্যাপক ভ‚মিকা রাখছে।
তিনি আরও বলেন, ‘রাজস্বের হিসাবে বর্তমানে হ্রদের মাছ দিয়ে ৩০০ কোটি টাকার বাণিজ্য হচ্ছে। বর্তমানে যেসব প্রকল্প চলমান রয়েছে তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন সম্ভব হলে ভবিষ্যতে এই বাণিজ্য আরো কয়েকগুণ বাড়বে।’