বীজ বুনেই মাথায় হাত মুন্সীগঞ্জের আলুচাষিদের
কৃষি বিভাগ
ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে গত কয়েকদিন ধরে সারাদেশে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে শঙ্কায় পড়েছেন মুন্সীগঞ্জের আলুচাষিরা। রবি ও সোমবারের বিরতিহীন বৃষ্টিপাতে অধিকাংশ আলুর জমিতে পানি জমে গেছে। জেলার মোট কৃষিজমির প্রায় অর্ধেক জমিতে আলু চাষ করা হয়। ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৪০ ভাগ জমিতে আলুচাষ সম্পন্ন হয়েছে।
কৃষকরা জানান, আবহাওয়ার পুর্বাভাস পেয়েই কৃষকরা এখনও লক্ষ্যমাত্রার সব জমিতে বীজ রোপণ করেননি। তা না হলে অন্যান্য বছর আরও ১০-১২ দিন আগেই জেলার সব জমিতে আলু রোপণ সম্পন্ন হয়ে যায়।
আলুচাষি মাসুদুর রহমান তার মোট জমির প্রায় ৫০ ভাগ জমিতে আলু রোপণ করেছেন। তিনি বলেন, প্রায় ১৪৫ শতাংশ জমিতে আড়াই লাখ টাকা ব্যয়ে চাষ করেছি। আবহাওয়া খারাপ হতে পারে জেনে পুরো জমিতে এখনও বীজ বপন করিনি। কিন্তু, যতটুকু চাষ সম্পন্ন করেছি তার অবস্থা এখন খারাপ। নালা কেটে পানিও সরাতে পারছি না। কারণ, পানি কেটে অন্যের জমিতে দিলে সে জমির মালিক আপত্তি করবে। এখন মনে হয় পুনরায় চাষ করতে হবে। কারণ, বৃষ্টি থামারও কোনও লক্ষণ দেখছি না।
আরেক আলুচাষি ওবায়দুল্লাহ বলেন, আলু চাষ করা আমাদের নেশা। লাভ ক্ষতি যাই হোক আমরা চাষ করি। এখন বৃষ্টির কারণে সব আলুবীজ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। নালা কেটে পানি সরানোর উপায় নেই। আবার অনেক জমিতে আলুবীজ বৃষ্টির পানিতে ভেসে উঠছে। কাজেই নতুন করে চাষ করা ছাড়া উপায় নেই।
মুন্সীগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক খুরশিদ আলম জানান, মুন্সীগঞ্জে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৭ হাজার ৯০০ হেক্টর। এর মধ্যে ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে আলু রোপণ হয়েছে। যেসব জমিতে ১০-১২ দিন আগে আলু চাষ হয়েছে, সেসব জমিতে ইতোমধ্যে আলুর গাছ গজিয়ে গেছে। এই জমিগুলোতে শুধু নালা কেটে জমে থাকা পানি বের করে দিতে হবে এবং একটি ছত্রাকনাশক ছিটাতে হবে। তাহলে আলুগাছের কোনও ক্ষতি হবে না। যেসব জমিতে ২-৩ দিন আগে বীজ বপন করা হয়েছে, সেসব জমিতে পুনরায় আলু রোপণের প্রয়োজন নেই। শুধু নালা কেটে পানি বের করে দিতে হবে।
তিনি জানান, যদি মঙ্গলবারের (৭ ডিসেম্বর) বৃষ্টি থেমে যায় তাহলে কিছুটা শঙ্কা দূর হবে। আর যদি না থামে তাহলে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হবে। তবে জেলায় আলুচাষের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা এখনও নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে সপ্তাহখানেক সময় লাগবে।
তবে, দুর্যোগে কৃষকের ক্ষতি হলে সরকারের পক্ষ থেকে কোনও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা এখনও করা হয়নি। সরকার যদি ব্যবস্থা নেয় তাহলে কৃষকদের কাছে তা পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানা তিনি।