রংপুরে গো-খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে বিপাকে খামারি
প্রাণিসম্পদ
রংপুরে গরুর খাবারের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন খামারিরা। পশুখাদ্য কিনতে না পেরে গরুকে শুধু খড় খাওয়াতে হচ্ছে। অনেকে আবার গরু বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
গত এক মাসে ভুসি, খৈল, চিটাগুড়ের দাম প্রতি কেজিতে ২ থেকে ৮ টাকা এবং বস্তাপ্রতি ফিডের দাম দু’শ টাকা বেড়েছে বলে খামারিরা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে রংপুর ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লতিফুর রহমান মিলন বলছেন, গো-খাদ্যের তৈরির অন্যতম উপাদান ‘সোয়াবিন দানা’। কিন্তু সেই সোয়াবিন এখন ভারতসহ অন্যান্য দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এতে করে গো-খাদ্য উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। আর সেই সুযোগ নিয়ে গো-খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ধাপে ধাপে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে করে বিপাকে পড়েছেন খামারিরা।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এসএম আসিফুল ইসলাম বলেন, “যেখানে আমাদের দেশেই সোয়াবিনের সংকট সেখানে এই পণ্যটি কীভাবে বাইরে রপ্তানি হচ্ছে এটা আমার বোধগম্য নয়।”
খামারি হুমাউন কবির জানান, গত এক মাসে ২৫ কেজির বস্তা প্রতি ফিডের দাম দুইশ টাকা বেড়েছে। সরিষা ও তিলের খৈল, চালের খুদ, চিটাগুড়ের দামও প্রতি কেজিতে ২ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে। এক মাস আগে এক বস্তা মোটা ভুসির দাম ছিল ১১০০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকায়। এক বস্তা ফিডের দাম ৯০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা, সরিষা কৈলের দাম ১০০ থেকে ১০৮ টাকা, চালের খুদের দাম ৩০ থেকে ৩৩ টাকা বেড়েছে।
তিনি বলেন, খড়ের দাম বেশি, ঘাসের দাম বেশি। কিন্তু গরুকে তো খাওয়াতে হবে। এই প্রাণীগুলোকে তো না খাইয়ে রাখা সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে শুধু খড় খাওয়া হচ্ছে। এভাবে গো-খাদ্যের দাম বাড়লে আমাদের পক্ষে খামার পরিচালনা করা সম্ভব নয়।
তবে খড়ের দামও আগের চাইতে বেড়েছে বলে চিলমন এলাকার আরেক খামারি লতিফুল ইসলাম জানান।
তিনি বলেন, গরুর প্রধান খাদ্য ধানের খড়। এক মাস আগে এক হাজার মুঠার দাম ছিল ৪ হাজার টাকা। এখন তা কিনতে হচ্ছে ৬ হাজার টাকায়। অনেকে গরু বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে আমারও গরুর খামার তুলে ফেলতে হবে। খামারিদের কথা চিন্তা করে সরকারকে গো-খাদ্যের উপর নজর বাড়ানো দরকার।
এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সিরাজুল হক বলেন, “গো-খাদ্য হিসেবে খামারিদের দানাদার খাবারের উপর চাপ কমিয়ে ঘাস উৎপাদনের দিকে মনোযোগ বাড়ানো উচিত।”
রংপুর জেলায় নিবন্ধিত এক হাজার ৬৮৮টি এবং ২৩৫টি অনিবন্ধিত খামারে প্রায় ১৩ লাখ ৭৮ হাজার গরু লালন-পালন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।