দিনাজপুরে গোখাদ্য হিসেবে বিক্রি হচ্ছে অপরিপক্ক গম গাছ
কৃষি গবেষনা
দেশে বাজারে গমের চাহিদা বাড়লেও কমে গেছে আবাদ। দিনাজপুরে গো খাদ্য হিসেবে অপরিপক্ক গম গাছ কেটে ফেলে সৃষ্টি করা হচ্ছে নতুন সংকট। ঘাসের পরিবর্তে গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে এসব গাছ। দিনাজপুরে ব্যাপক হারে এ প্রবণতা শুরু হওয়ায় দেশে খাদ্য নিরাপত্তার ওপর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।
কৃষিনির্ভর জেলা দিনাজপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে গমের চাষ হয়। সবুজে ছাওয়া এসব ক্ষেতের গাছে এরইমধ্যে কচি গম বেরিয়ে এসেছে। এক মাস পরই ক্ষেত থেকে গম তোলার কথা। কিন্তু বিভিন্নস্থানে গম পরিপক্ক হওয়ার আগেই গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। বিক্রি হচ্ছে গবাদিপশুর খাবার হিসেবে।
কৃষকরা জানান, গম বিক্রি করে তারা যে আয় করেন তার থেকে গাছের ঘাস বিক্রি করে এর থেকে বেশি উপার্জন করেন তারা।
দিনাজপুর জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, এ বছর ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে গম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবাদ হয়েছে মাত্র সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে। এমনিতেই গমের উৎপাদন কম, তারওপর গবাদিপশুর ঘাস হিসেবে ব্যবহার হওয়ায় সার্বিক খাদ্য নিরাপত্তার জন্য এটি হুমকি হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছে খাদ্য বিভাগ।
বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষনা ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুধু দিনাজপুর নয়, দেশের বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের মধ্যে এ প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এতে ফলন আরও হ্রাস পেতে পারে। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে কৃষি বিভাগকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মনজুরুল হক বলেন, লাভের আশায় কৃষকরা গম কেটে গরু কে খাওয়ার জন্য ঘাস হিসেবে বিক্রি করে দিচ্ছে। এজন্য আমরা বড় পরিকল্পনায় নিয়েছি এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রত্যেক উপজেলায় প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
দেশে বছরে গমের চাহিদা ৭৫ লাখ টন। কিন্তু বর্তমানে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ১২ লাখ টন। প্রতিবছর ১০ শতাংশ হারে গমের চাহিদা বাড়ছে। তাই দেশের চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে গম আমদানি করতে হয়।