কয়েক দফা বৃষ্টিতে হালদায় ডিম ছেড়েছে মা মাছ
মৎস্য
কয়েক দফা বৃষ্টি হওয়ায় প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হাটহাজারীর হালদা নদীতে ডিম ছেড়েছে রুই জাতীয় মা মাছ। মঙ্গলবার (২৫ মে) দিবাগত রাতে হালদা নদীর কয়েকটি স্পটে নমুনা ডিম ছাড়ে কার্প জাতীয় মা মাছ।
ডিম সংগ্রহকারীরা জানান, মঙ্গলবার কয়েক দফা বৃষ্টি হওয়ায় ডিম ছাড়ার অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। এরপরও এদিন মা মাছগুলো পুরোদমে ডিম ছাড়েনি।
জানা যায়, গত কয়েকদিন থেকে নৌকা, জাল, বড় পাতিলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে ডিম সংগ্রহকারীরা নদীর পাড়ে প্রস্তুত ছিলেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে তাদের জালে ‘নমুনা ডিম’ (ডিম ছাড়ার উপযুক্ত পরিবেশ আছে কিনা সামান্য ডিম ছেড়ে পরীক্ষা করে মা মাছ) আস্তে থাকে। বজ্রসহ বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সাধারণত মা মাছগুলো ডিম ছাড়ে। অনুকূল পরিবেশ তৈরি হলে শিগগিরই মা মাছগুলো পুরোদমে ডিম ছাড়বে।
মূলত হালদার কাগতিয়ার আজিমের ঘাট, খলিফার ঘোনা, পশ্চিম গহিরা অংকুরী ঘোনা, বিনাজুরী, সোনাইর মুখ, আবুরখীল, খলিফার ঘোনা, সত্তারঘাট, দক্ষিণ গহিরা, মোবারকখীল, মগদাই, মদুনাঘাট, উরকিচর এবং হাটহাজারী গড়দুয়ারা, নাপিতের ঘাট, সিপাহির ঘাট, আমতুয়া, মার্দাশা ইত্যাদি এলাকায় ডিম পাওয়া যায় বেশি।
স্থানীয় ডিম সংগ্রহকারীরা জানান, সাধারণত চৈত্র থেকে বৈশাখ মাসে অমাবস্যা, পূর্ণিমা ও অষ্টমী তিথিতে প্রবল পাহাড়ি ঢল ও শীতল আবহাওয়ায় কার্প জাতীয় মাছ নদীতে ডিম ছাড়ে। নমুনা ডিম মা মাছের প্রাকৃতিক প্রজননের জন্য প্রস্তুতের আভাস। আর মা মাছ আগে নমুনা ডিম ছেড়ে পরীক্ষা করে নদীতে ডিম ছাড়ার অনুকূল পরিবেশ আছে কি-না। অনুকূল পরিবেশ তৈরি হলেই মা মাছ ডিম ছাড়বে। পাহাড়ি ঢল, ব্রজসহ বৃষ্টি, ঠাণ্ডা আবহাওয়া, পূর্ণিমা, অমাবস্যার তিথিতে মূলত মা মাছ ডিম ছাড়ে। হ্যাচারিপোনার চেয়ে হালদার পোনা দ্রুত বর্ধনশীল বলে এ পোনার কদর সারাদেশে।
হালদা গবেষক অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া জানান, বেশ কিছু স্থানে মা মাছ নমুনা ডিম ছাড়ছে। মা মাছ যদি পরিবেশ অনুকূল অর্থাৎ ডিম ফুটাতে পারবে মনে করে তাহলে সকালের ভাটায় ডিম ছাড়বে।’ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রাত প্রায় আড়াইটায় হালদা নদীর পাড়ে তিনি সুখবরের আশায় অপেক্ষায় ছিলেন বলে জানা গেছে।
হাটহাজারী উপজেলা মৎস্য অফিসার জানান, আমরা সার্বক্ষণিক ডিম সংগ্রহকারীদের সাথে যোগাযোগ রাখছি। ডিম সংগ্রহের পর হ্যাচারিতে পরিচর্যার ব্যাপারে আমাদের টিম সক্রিয় আছে বলে জানান তিনি।