সিকৃবিতে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স উপর সেমিনার অনুষ্ঠিত
প্রাণিসম্পদ
‘হোক সচেতনতার বিস্তার, চাই অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স থেকে নিস্তার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) পালিত হয়েছে বিশ্ব এন্টিম্যাক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহ ২০২১।গত শনিবার সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সম্মেলন কক্ষে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শাহ জাহান মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান সিকদার। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাঃ মোঃ রুস্তম অালী, জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার,সিলেট; ডাঃ প্রেমানন্দ মন্ডল, সিভিল সার্জন,সিলেট; সিকৃবির জীবপ্রযুক্তি ও জিনপ্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ডঃ মোঃ মেহেদী হাসান খান ।এছাড়া আরো উপস্থিত অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়ক ও সিকৃবির মাইক্রোবায়োলজি ও ইমিউনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ সুলতান আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষকমন্ডলী, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষকবৃন্দ, এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীবৃন্দ।
অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান সিকদার, জাতীয় টেকনিক্যাল এডভাইজার,ওয়ান হেলথ।
এসময় বক্তারা বলেন, সারা বিশ্বে অ্যান্টিমাইক্রোবাইয়াল রেসিসট্যান্স একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। জীবাণুসমূহ অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেই চলছে। জীবাণুগুলো অনেক রকম অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি প্রতিরোধী হয়ে পড়েছে। ফলে কম বা বেশি দামি সব ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক সংক্রমণ চিকিৎসায় অকার্যকর হয়ে পড়ছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। এতে করে এ ধরনের রোগজীবাণু ব্যক্তির জন্য প্রাণঘাতী হওয়া ছাড়াও সমাজে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করতে পারে। তাই এ সংক্রান্ত সচেতনতা তৈরির বিকল্প নেই।
বিশেষজ্ঞদের মত চিকিৎসক ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা ঠিক নয়। এটির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার ক্ষতিকর। অ্যান্টিবায়োটিক ঠান্ডা বা ভাইরাসজনিত রোগে কোনো কাজ করে না। যদি ভাইরাসজনিত রোগে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয়, তবে বিপজ্জনক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এ ধরনের চিকিৎসা চলতে থাকলে অর্থাৎ অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার যথার্থ না হলে এমন একটা সময় আসবে যখন ব্যাকটেরিয়াকে মারা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
ড. মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান সিকদার বলছেন, দেশে রোগীরা ওষুধের দোকান থেকে মুখস্থ অ্যান্টিবায়োটিক কিনে নিয়মবহির্ভূতভাবে সেবন করে থাকেন। ফলে ওষুধটির যথার্থ প্রয়োগ না হওয়ায় জীবাণুগুলো ধীরে ধীরে রেজিসট্যান্স হয়ে পড়ছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে অ্যান্টিবায়োটিক বা অন্য কোনো ওষুধ কিনতে হলে চিকিৎসককের পরামর্শপত্র দেখাতে হয়। চিকিৎসক ছাড়া অন্য কারও ওষুধ দেওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। কিন্তু দেশে অ্যান্টিবায়োটিকের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা অন্য ওষুধের সঙ্গে এর কোনো ইন্টারঅ্যাকশন আছে কি না তা সাধারণ জনগণের অজানা। অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে গিয়ে অনেকে অন্যান্য সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই সচেতনতা খুবই জরুরি। ওষুধটির এবং বিস্তার এড়াতে সাধারণ জনগণ, ভেটেরিনারিয়ান, স্বাস্থ্যকর্মী এবং নীতিনির্ধারকদের মধ্যে সেরা অনুশীলনকে উৎসাহিত করা দরকার।
উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তারা এন্টিবায়োটিকের যথাযথ ব্যবহারের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন এবং এন্টিম্যাক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স এর কুফল সর্ম্পকে জনগণকে সচেতন করার উদ্দেশ্যে ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের পাঠ্যসূচীতে এন্টিম্যাক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স সংযুক্ত করার লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করেন।