বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় মৌসুমি পানিফল চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের
কৃষি বিভাগ
বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় মৌসুমি পানিফল চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের। এরই মধ্যে লাভজনক এই ফল চাষ করে অনেক চাষির পরিবারে সুদিন ফিরেছে। উপজেলার পরিত্যক্ত জলাশয়জুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে পানিফলের গাছ।
জানা গেছে, অনেক বছর ধরেই এ উপজেলায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পানিফল চাষ হচ্ছে। লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছরই এ ফলের চাষ বাড়ছে। কাকডাকা ভোরে কৃষকরা অটোভ্যান-সিএনজিতে বস্তায় ভরে এই পানিফল বিক্রির জন্য নিচ্ছেন নন্দীগ্রাম পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে। লাল রঙের হাইব্রিড পানিফল প্রতি মণ ১৮০০, সবুজ রঙের তাজা পানিফল ২১০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।
চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জলাশয়ে চাষ হওয়া পানিফল স্থানীয় চাষিদের কাছে ‘পানি শিঙাড়া’ নামেও পরিচিত। এ ফলের কোনো বীজ নেই। নিচু এলাকার জলাশয়ে মৌসুমি ফসল হিসেবে পানিফল চাষ হয়। এ ফল পানিতে ভরপুর এবং তাতে প্রচুর খনিজ উপাদান থাকে। শীতকালে ফল আহরণ শেষ হলে জলাশয়ে পানিতে ফলের চারা রেখে দিই। ক্রমেই বাড়তে থাকে চারাগাছের সংখ্যা। পানির নিচের দিকে যেতে থাকে শিকড়। অল্প দিনেই লতাপাতার বিস্তার হতে থাকে। ভাদ্র মাস থেকে গাছে ফল আসতে থাকে। আশ্বিন-কার্তিক মাসে ফল বিক্রি শুরু হয়। প্রতি সপ্তাহে ফল তোলা যায়।
নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের দোহার সড়কের পাশে জলাশয়ে পানিফল চাষ করেছেন গণেশ চন্দ্র। তিনি বলেন, শখের বশে পরিত্যক্ত জলাশয়ে পানিফল চাষ করছেন। এই ফল চাষ করে ফলন ও দাম দুই-ই ভালো পাওয়া যায়। উপজেলার রণবাঘা জলাশয়ে চাষ করেছেন লাল চাঁদ। তিনি বলেন, পানিফল চাষে তার সংসারে সচ্ছলতা ফিরেছে। তার মতো অনেকেই এখন পানিফল চাষ করছেন বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আদনান বাবু বলেন, জলাশয়ে চাষ হয় বলে এটি ‘পানিফল’ নামে খ্যাত। স্থানীয় ভাষায় এটি ‘পানি শিঙাড়া’ নামেও পরিচিত। এটি পানিতে ভরপুর এবং প্রচুর খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ সুস্বাদু একটি ফল। শহর-গ্রাম সবখানেই এ ফলের চাহিদা রয়েছে। লাভজনক হওয়ায় পানিফল চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে।