১২:৫৬ অপরাহ্ন

সোমবার, ১৮ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : ডিসেম্বর ২০, ২০২২ ৯:৩৩ পূর্বাহ্ন
পাহাড়ি অঞ্চলে গোলমরিচ চাষে লাভবান কৃষকরা
কৃষি বিভাগ

চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে গোলমরিচ চাষে লাভবান হয়েছেন কৃষকরা। স্থানীয় কৃষকরা আমদানি নির্ভর গোলমরিচ চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। গোলমরিচ চাষ করে তারা একদিকে লাভবান হয়েছেন, অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রাও সাশ্রয় হচ্ছে।

জানা যায়, বর্তমানে জেলার মীরসরাই ও ফটিকছড়ির অনাবাদী ৬০ একর পাহাড়ি জমিতে দু’শ চাষি বাণিজ্যিকভাবে গোলমরিচ চাষ করে ভালো ফলনও পেয়েছেন। ২০১৭ সালে চারা রোপণের তিন বছর পর ২০২০ সালের শেষের দিকে ফলন পেতে শুরু করেছে কৃষক।

চলতি বছর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান, রাঙ্গামাটি এবং খাগড়াছড়ি জেলায় গোলমরিচ চাষ শুরু করেছে চাষিরা। এর ফলে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে গোলমরিচ রপ্তানি করাও সম্ভব বলে মনে করছেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা।

চাষিরা বলেন, রোপণের তিন বছরের মধ্যে ফলন দেওয়া শুরু হয়। পঞ্চম বছর থেকে ফলন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছে। যা এক টানা ২৫ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত ফলন হয়। প্রতিটি খুঁটি থেকে বছরে কমপক্ষে চার কেজি কাঁচা গোলমরিচ পাওয়া যায়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৯, ২০২২ ১:১৩ অপরাহ্ন
এসিআই ফ্লোরা ও সালফক্স লাকী কুপন ড্র অনুষ্ঠিত
কৃষি বিভাগ

এসিআই ফ্লোরা ও সালফক্স লাকী কুপন ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রতি রাজধানী তেঁজগাঁও এর এসিআই সেন্টারে এ ড্র অনুষ্ঠিত হয়। এসিআই ফরমুলেশনস লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুষ্মিতা আনিস উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন। জানা গেছে, প্রতিটি আঞ্চলিক কেন্দ্র থেকে প্রতিনিধি হিসেবে ১২ জন পরিবেশক স্বশরীরে উপস্থিত ছিলেন, যারা ঐ অঞ্চলের ফ্লোরা এবং সালফক্স ব্যবসায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এছাড়া লাকী কুপন ড্র অনুষ্ঠানে জুম ভিডিও কল এবং ফেসবুক লাইভ এর মাধ্যমে প্রায় ৭০০ এর অধিক সম্মানীত ডিলার ও রিটেইলারদের সহ এসিআই ফর্মুলেশনস লিমিটেড-এর ফিল্ড পর্যায়ের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীরা সংযুক্ত ছিলেন।

ফ্লোরা এবং সালফক্স লাকী কুপন ড্র সিজন-৪-এর ফ্লোরা-এর প্রথম পুরস্কার ইয়ামাহা ১২৫ সিসি মোটর সাইকেল জিতে নেন দিনাজপুর রিজিয়নের রাণীশংকৈল টেরিটরির পরিবেশক মেসার্স বিসমিল্লাহ ট্রেডার্স এবং সালফক্স এর প্রথম পুরস্কার ১২৫সিসি হিরো হুন্ডা জিতে নেন যশোর রিজিয়নের ফকিরহাট টেরিটোরির পরিবেশক মেসার্স ভাই ভাই কৃষি স্টোর। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়ার সময় এসিআই ফরমুলেশনস লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুষ্মিতা আনিস বলেন, দিন দিন আমাদের জনসংখ্যা বেড়েই চলেছে কিন্তু কমে যাচ্ছে আবাদি জমির পরিমাণ। খাদ্য নিরাপত্তা আমাদের দেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তাই অল্প আবাদি জমি দিয়ে এই বিশাল জনগোষ্ঠীর খাদ্য যোগান দেয়া সরকারের পাশাপাশি আমাদেরও একটি বড় দায়িত্ব। সে লক্ষ্যে সঠিক ভাবে ফ্লোরা ও সালফক্সকে কৃষক ভাইদের ব্যবহার করানোর মাধ্যমে দেশের খাদ্য উৎপাদনে বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে।

অনুষ্ঠানে চিফ অপারেটিং অফিসার ডা. মুক্তার আহমেদ সরকার পরিবেশকদের উদ্দেশ্যে বলেন, সর্ববৃহৎ কৃষি সমন্বয়কারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এসিআই সব সময় আপনাদের মাধ্যমে কৃষকের হাতে আধুনিক টেকনোলোজি তুলে দিয়ে, কৃষি ও কৃষকের এবং সর্বোপরি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় ভূমিকা রেখে আসছে।

এসিআই ক্রপ কেয়ার-এর জেনারেল ম্যানেজার (মার্কেটিং) জনাব মোঃ আবদুর রহমান-এর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে পরিবেশকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন এসিআই ক্রপ কেয়ার-এর জেনারেল ম্যানেজার, রিসার্চ এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট মি: সুবির চৌধুরী, জেনারেল ম্যানেজার সেলস জনাব মোঃ হুমায়ুন কবির, ডেপুটি মাকেটিং ম্যানেজার জনাব মোশাররফ হোসেন ভূঁঞা, ডেপুটি ম্যানেজার-সেলস্ এন্ড ডিমান্ড জেনারেশন জনাব আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৯, ২০২২ ৯:২৯ পূর্বাহ্ন
বছরে প্রায় ৭ লাখ টাকার সবজি বিক্রি করেন কৃষক রুবেল
এগ্রিবিজনেস

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে ফুলকপি চাষ করে সফল হয়েছেন তরুণ কৃষক রুবেল। ফুলকপি ছাড়াও শীতকালীন বিভিন্ন সবজিরও বাম্পার ফলন হয়েছে। তার সফলতা দেখে অনেকেই বিভিন্ন সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। অনেক কৃষকই তার পরামর্শ নিয়ে ক্ষেতে-খামারে সবজির আবাদ করেছেন। রুবেল আহমেদ শায়েস্তাগঞ্জের বাগুনীপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে। তার বাবাও কৃষক ছিলেন। বাবার কাছ থেকেই কৃষি কাজে হাতেখড়ি রুবেলের। তিনি প্রতি বছর ৫-৭ লাখ টাকার বিভিন্ন সবজি বিক্রি করেন।

কৃষক রুবেল আহমেদ জানান, ৫০ শতাংশ জমিতে তিনি ৬ হাজার ফুলকপি চারা রোপণ করেন। আবহাওয়া ভালো হওয়ায় প্রতিটি গাছেই ভালো ফলন এসেছে। একেকটি ফুলকপি এক থেকে দেড় কেজি হয়ে থাকে। তিনি জানান, ফুলকপি চাষে তার খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। এরইমধ্যে ৭০ হাজার টাকার ফুলকপি বিক্রি করেছেন। আশা করছেন, বাকি ফুলকপি বিক্রি করে আরও ১ লাখ টাকা পাবেন।

এ ছাড়াও তিনি প্রায় ৩ একর জমিতে টমেটো, বেগুন, শিমসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন। এসব ফসলের পরিচর্যায় নিয়মিত ৪-৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এতে শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছেন তিনি।

শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সুকান্ত ধর জানান, ‘রুবেল আহমেদ এখন অনেকেরই অনুপ্রেরণা। তার সফলতা দেখে অনেকেই বিভিন্ন সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এ বছর রবি মৌসুমে উপজেলায় ৭৭৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাক-সবজি চাষ হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ১৫০ হেক্টর বেশি।’

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৯, ২০২২ ৯:২০ পূর্বাহ্ন
বৃষ্টি না থাকাতে কৃষকদের যে পরামর্শ দিলো ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট
কৃষি বিভাগ

আগামী কয়েকদিন দেশে বৃষ্টির কোনো পূর্বাভাস নেই। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী এসময় বৃষ্টি না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তাই এসময় ধান উৎপাদন ব্যবস্থাপনার বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)।

ব্রি’র পরামর্শগুলো হলো
বোরো ধানের বীজতলা তৈরি অব্যাহত রাখুন। বীজ ভেজানোর আগে ভালোভাবে ২-৩ ঘণ্টা রোদে শুকিয়ে নিন। বীজতলা তৈরির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। অংকুরিত বীজতলায় ছিটানোর পর জমিতে যেন অতিরিক্ত পানি না থাকে।

এ সময় বীজতলায় থ্রিপস এবং বাদামি গাছফড়িংয়ের আক্রমণ হতে পারে। থ্রিপস আক্রান্ত চারার পাতা এক পার্শ্ব থেকে মুড়িয়ে শুই এর মতো সোজা হয়ে যায় এবং পরে শুকিয়ে যায়। সেচসহ ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করলে থ্রিপসের আক্রমণ কমে যায়। তবে শতকরা ২৫ ভাগ পাতা ক্ষতিগ্রস্ত হলে ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ২ মি.লি মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

বাদামি গাছফড়িং এবং গ্রিন মিরিড বাগের সহাবস্থান থাকলে মিরিডবাগ, বাদামি গাছফড়িংয়ের ডিম প্রাকৃতিকভাবে নষ্ট করে ফেলবে। তবে মিরিডবাগ না থাকলে বাদামি গাছফড়িং দেখামাত্রই দমনের ব্যবস্থা নিতে হবে।

এক বিঘা জমিতে চারা রোপণ করার জন্য ১২৫ সেমি প্রস্থ, ১০ মিটার দৈর্ঘ্য ও দুটি বিছানার মধ্যে ৩০ সেমি ফাঁক দিয়ে ছয় থেকে আটটি সমতল বীজতলা প্রস্তুত করতে হবে। এক বিঘা জমিতে চারা রোপণ করার জন্য প্রায় ৫ কেজি বীজ প্রয়োজন।

বীজ সম্ভাব্য বৃদ্ধির পর্যায়ে থাকলে, চারা গাছ হলদে হয়ে গেলে প্রতি বর্গ মিটারে ৭ গ্রাম ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া প্রয়োগের পর চারা সুবজ না হলে সালফারের অভাব হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়। তখন প্রতি বর্গ মিটারে ১০ গ্রাম জিলাম সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগের পর বীজ তলায় পানি ধরে রাখা উচিত।

বীজ বপনের পর ৪-৫ দিন পানি দ্বারা নালা ভর্তি করে রাখা উচিত। এতে মাটি নরম থাকে, গজানো বীজ নষ্ট হয় না এবং বীজতলা শুকায় না। ৪-৫ দিন পর ছিপছিপে পানি রাখলে বাড়-বাড়তি ভালো হয়। চারা বৃদ্ধির সাথে সমন্বয় রেখে পানির পরিমাণ বাড়ানো যায়। বেশি পানি রাখলে চারা লম্বা ও দুর্বল হয়।

চারা অবস্থায় বীজ তলায় থ্রিপস, সবুজ পাতাফড়িং এবং বাদামি গাছফড়িংয়ে আক্রমণ হতে পারে। থ্রিপস আক্রান্ত চারার পাতা একপাশ থেকে মুড়িয়ে শুই এর মতো সোজা হয়ে যায় এবং পরে শুকিয়ে যায়। সেচসহ ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করলে থ্রিপসের আক্রমণ কমে যায়। তবে শতকরা ২৫ ভাগ পাতা ক্ষতিগ্রস্ত হলে ম্যালাথিয়ন৫৭ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ২ মি.লি মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। বীজতলার আশপাশের জমিতে টুংরো রোগের উপস্থিতি দেখা গেলে সবুজ পাতাফড়িং হাতজাল বা কীটনাশক প্রয়োগের মাধ্যমে দমন করতে হবে।

এছাড়া কোনো এলাকায় তীব্র শীত হলে বীজতলায় ৩-৫ সেন্টিমিটার পানি ধরে রাখা এবং স্বচ্ছ পলিথিনের ছাউনি দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখতে হবে। শৈত্যপ্রবাহের সময় বীজতলা স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢেকে দিলে, বীজতলায় পানি সকালে বের করে দিয়ে আবার নতুন পানি দিলে, প্রতিদিন সকালে চারার উপর জমাকৃত শিশির ঝরিয়ে দিলে চারা ঠান্ডার প্রকোপ থেকে রক্ষা পায় এবং স্বাভাবিকভাবে বাড়তে পারে।

এছাড়া প্রয়োজনীয় সাহায্য ও পরামর্শের জন্য নিকটবর্তী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছে ব্রি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৮, ২০২২ ১১:২১ অপরাহ্ন
জামালপুরে মরিচের বাম্পার ফলন, দামে হতাশ চাষিরা!
কৃষি বিভাগ

মরিচের বাম্পার ফলনেও খুশি হতে পারছেন না জামালপুরের চরাঞ্চলের কৃষকরা। প্রায় প্রত্যেক কৃষকের জমিতে মরিচের ব্যাপক ফলন হলেও বাজারদর কম থাকায় কৃষকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। অপর দিকে মরিচ চাষের জন্য সার ও কীটনাশকের দাম গত বছরের তুলনায় বেড়ে যাওয়ায় মরিচ উৎপাদনে কৃষকের খরচও বেড়েছে।

জানা যায়, জামালপুর চরাঞ্চল গুলোর মধ্যে আদ্রা, জামিরা, ছাতারিয়া, মানিকপটল, আদারভিটা, কুলকান্দি, হাজিপুরসহ প্রায় ২ শতাধিক গ্রামে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকরা বিঘা প্রতি ৪০ মণ করে মরিচের ফলন পেয়েছেন। কৃষকরা তাদের জমিতে মরিচ গাছের পরিচর্যা করছেন। কেউ কেউ আবার মারিচ তুলে তা বাজারজাত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

মেলান্দহের চাষি সুরুজ মিয়া বলেন, আমি এবছর ২ বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের মরিচ চাষ করেছি। মরিচ চাষে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বিঘা প্রতি ৪০ মণ মরিচ পেয়েছি। আর এই মরিচ ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পেরেছি।

কালিবাড়ি, হাজরাবাড়ী, আরামনগর, আদ্রা, বাউশি, শ্যামনগর বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষকরা সেখানে প্রতিমণ মরিচ ১২০০-১৩০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন।

সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া গ্রামের কৃষক মঈনুল উদ্দিন বলেন, এবছর আমার ৬ বিঘা জমিতে মরিচের আবাদ করেছি। মরিচ চাষে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এই মরিচ ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পেরেছি। লাভ তো হয়ইনি বরং আসল চলে গিয়ে আরো লোকসানে পড়েছি।

মেলান্দহ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল বলেন, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া ভালো থাকায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। এই উপজেলার ঝাউগড়া ইউনিয়নের ৫টি চরে প্রায় ১২০০ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ করা হয়েছে। আমরা চাষিদের মরিচ চাষে সব ধরনের সহযোগীতা করছি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৮, ২০২২ ১১:১৭ অপরাহ্ন
কচুর ব্যাপক ফলনে কৃষকের মুখে হাসি!
কৃষি বিভাগ

কৃষি নির্ভর মেহেরপুর জেলার কচুর লতির দেশ জুড়ে সুনাম রয়েছে। এখানকার প্রান্তিক চাষিরা কচুর লতি চাষে নিজেদের ভাগ্য বদল করেছেন। এই জেলায় এবারই প্রথম কন্দাল জাতের লতি কচুর বাণিজ্যিক চাষাবাদে সফলতা পেয়েছেন চাষিরা।

কৃষি বিভাগের সূত্রমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে লতি কচুর চাষ হচ্ছে। লতিকচু ও কন্দাল জাতের লতিকচু একই হলেও কন্দাল জাতে ফলন বেশি হয়। তাই কৃষকরা এই জাতের কচু চাষে আগ্রহী হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

দিঘিরপাড়া গ্রামের বাবু মিয়া বলেন, আমি ৩ বিঘা জমিতে কচুর লতি চাষ করেছি। কচু চাষ করেই ছেলে মেয়ের পড়াশোনার খরচ সহ সংসার চালাই। জমি স্যাতস্যাতে হওয়ায় এখানে ধান চাষ করলে ফলন হয় না। তাই কচু চাষ করি। এবছর জমিতে কচুর ভালো ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার কচু বিক্রি করেছি। এছাড়াও ৫ হাজার টাকার চারা বিক্রি করেছি।

কচুর লতি চাষি গোলাম হোসেন জানান, কচু চাষ করলে এর থেকে বের হওয়া লতি বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করা যায়। বাজারে কচু, কচুর লতি ও এর ফুলের চাহিদা থাকায় ভালো দাম পাওয়া যায়। তাই প্রতি বছর কচু চাষির সংখ্যা বাড়ছে।

সদর উপজেলার কৃষি অফিসার নাসরিন পারভীন জানান, বাংলাদেশে দেশে বেশ কয়েক প্রকার কচুর লতির জাত রয়েছে। এর মধ্যে পানি কচু -১ এবং বারি পানি কচু -২ উল্লেখযোগ্য। স্বাদের কারণে বাজারে চাহিদাও বেশ। চাষিরা বসতবাড়ির আশেপাশে স্যাতস্যাতে জমিতে সহজেই লতিকচু চাষ করে থাকে। এতে করে একদিকে যেমন পুষ্টিচাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে তেমনি অন্যদিকে চাষিরাও লাভবান হচ্ছেন মেহেরপুরের লতিকচু ভবিষ্যৎতে দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৮, ২০২২ ১১:০৭ অপরাহ্ন
বিষমুক্ত সবজি চাষ করছেন গদখালীর ৫০০ কৃষক
কৃষি বিভাগ

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী ইউনিয়নের ৫০০ কৃষক বিষমুক্ত সবজি নিশ্চিত করতে একসঙ্গে কাজ করছেন। এতে দারুণ সফলতা পেয়েছেন কৃষকরা। তাদের চাষাবাদ ঘিরে গদখালীকে বিষমুক্ত সবজি চাষের ‘মডেল’ বলছেন কৃষি কর্মকর্তারা। নিজের বাঁধাকপি ক্ষেতে সেচের পানি যাতে ঠিকঠাক যায় সেদিকে নজর দিয়ে নালা কাটছিলেন মনিরুল ইসলাম। অপরপাশে তার স্ত্রী মর্জিনা বেগম ক্ষেতের মাটি আলগা আর ঘাস নিংড়ে দিচ্ছিলেন। এ দৃশ্য গদখালী ইউনিয়নের বারবাকপুর গ্রামের ফসলি মাঠের। মনিরুল-মর্জিনা দম্পতি ১২ শতাংশ জমিতে বাঁধাকপি, ১২ শতাংশ জমিতে পটল চাষ করেছেন। এই সবজি ক্ষেতের বিশেষত্ব হলো এখানে রাসায়নিক সার ও রাসায়নিক বালাইনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে না। সম্পূর্ণ জৈবসার ও জৈব বালাইনাশক এবং ক্ষতিকর পোকা দমনে ব্যবহার করা হচ্ছে হলুদ ফাঁদ পদ্ধতি।

ঝিকরগাছা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ‌‘পরিবেশবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের’ আওতায় সারা দেশের ২০ ইউনিয়নে কাজ চলছে। এর মধ্যে গদখালী ইউনিয়নও রয়েছে। গদখালী ইউনিয়নে ২০টি গ্রুপের কাজ চলছে। প্রতি গ্রুপে ২৫ জন কৃষক রয়েছেন। সবমিলে কৃষকের সংখ্যা ৫০০ জন।

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, হলুদ ফাঁদ বা সেক্স ফেরোমন পদ্ধতি ব্যবহার করায় কৃষকের পেস্টিসাইডের খরচ বেঁচে যাচ্ছে। উৎপাদন খরচ কমছে। মাটির গুণাগুণ ভালো থাকছে, উৎপাদিত হচ্ছে বিষমুক্ত সবজি।

বারবাকপুর গ্রামের মাঠে বেগুন ও টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেতে পলি মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করতে দেখা গেছে কৃষকদের। পলি মালচিং পদ্ধতি—লম্বা একটা পলিথিনের মাঝে গর্ত করে তার ভেতরে সবজি ইত্যাদি রোপণ করা। এর ফলে জমিতে অতিরিক্ত সেচ লাগে না, গাছ প্রয়োজনীয় রস মাটি থেকে সংগ্রহ করে। এতে আগাছা তেমন একটা হয় না।

বারবারপুর এলাকায় দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘পলি মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো ও বেগুন চাষ করা হচ্ছে। কৃষিতে আধুনিকায়নের প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে এসব ব্লকে। বিষমুক্ত ফসল উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় এসব মাঠে ৯ গ্রুপে ২২৫ কৃষকের বিভিন্ন ধরনের ফসল প্রদর্শনী করা হয়েছে। রবি মৌসুমে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শসা, বেগুন, লাউ, টমেটো, করলা, ব্রকলি ইত্যাদি ফসল কীভাবে নিরাপদ উপায়ে চাষাবাদ করা যায়, তা এখানে হাতে-কলমে দেখানো হয়েছে।’

এসব ফসল সম্পূর্ণ নিরাপদ, কেননা এখানে কোনও রাসায়নিক সার কিংবা কীটনাশক ব্যবহার করা হয়নি উল্লেখ করে আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘জৈবসার বিশেষ করে কেঁচো কম্পোস্ট আবাদের জন্য খুবই উপকারী। এই ব্লকে কৃষকরা চার হাজার ৪০০ রিংয়ের মাধ্যমে প্রতি বছর প্রায় ১৮৫ মেট্রিক টন কেঁচো সার তৈরি করছেন। এখানকার প্রায় প্রতি বাড়িতে নারীরা কেঁচো সার তৈরি করেন এবং তারা সেগুলো ক্ষেতে ব্যবহার করেন।’

বিভিন্ন জৈবসার ও বালাইনাশক তৈরির পদ্ধতি কৃষকদের শেখানো হয়েছে জানিয়ে এই কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘গ্রামের গাছগাছালি থেকে ছত্রাক ও বালাইনাশক তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে কৃষকদের। যেমন দুই কেজি নিমের পাতা বেটে এক লিটার পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখার পর চার লিটার পানি মিশিয়ে তা ছাঁকতে হবে। এরপর সেটি আগুনে জ্বালিতে এক লিটার পরিমাণ করে ফেলতে হবে। এই এক লিটার নিমের রসের সঙ্গে ৯ লিটার পানি মিশিয়ে স্প্রে করলে শোষক পোকা, ছিদ্রকারী পোকা সহজেই দমন করা সম্ভব। তেমনি, ২০ মি.লি পেঁয়াজের রসে দুই লিটার পানি মিশিয়ে স্প্রে করলে গাছের যেকোনও পচারোগ দমন হয়ে যাবে। এমন করে প্রায় ১৭-১৮টি পদ্ধতিতে পোকা ও ছত্রাক দমন সম্ভব।’

গদখালীকে নিরাপদ ফসল উৎপাদনের মডেল বানাচ্ছি জানিয়ে ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য হলো—নিরাপদ উপায়ে বা জৈবিক উপায়ে ফসল উৎপাদন। দেশে বর্তমানে প্রধান আলোচিত বিষয় হলো—ফুড সিকিউরিটি ও ফুড সেফটি। ইতোমধ্যে আমরা ফুড সিকিউরিটি অর্জন করেছি, এখন ফুড সেফটির বিষয়টির ওপর জোর দিচ্ছি।’

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৬, ২০২২ ৯:০৭ অপরাহ্ন
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে কমলো কাঁচা মরিচের দাম
কৃষি বিভাগ

কাঁচা মরিচের দাম কমেছে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে। গত সপ্তাহের ৭০ টাকা কেজি দরের কাঁচা মরিচ এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে। কমেছে ডিমের দামও। প্রতি হালি ডিমের দাম ৪০ টাকা থেকে এখন ৩৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে অন্য সব পণ্যের দাম আগের মতোই রয়েছে। বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা চালের দাম কেজিতে বেড়েছে তিন টাকার মতো। গত সপ্তাহে মোটা চাল ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে একই চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা করে।

রমজান মাস ঘনিয়ে আসায় চাহিদা বাড়ছে ছোলার। গত সপ্তাহে ৮৫ টাকা কেজি দরে ছোলা বিক্রি হয়েছে। এ সপ্তাহে কিছুটা দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। একইভাবে দেশি পেঁয়াজের দাম ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা। গরুর কলিজাও বিক্রি হচ্ছে একই দামে। তবে খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা কেজি। শুক্রবার ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ১৬০-১৭০ টাকা, তবে অন্যান্য দিনে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা করে বিক্রি হয়। এছাড়া লাল কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকা কেজি দরে। আর পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-২৯০ টাকা কেজি, যা অন্যান্য দিনে বিক্রি হয় ২৭০ টাকা কেজি দরে।

মাছের বাজারে চিংড়ি  বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫৫০ টাকা, বোয়াল ৬০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০ টাকা, রুই মাছ ২৮০ টাকা, কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতের সবজির সরবরাহ পর্যাপ্ত। এরপরও কিছু কিছু সবজির দাম নতুন করে বেড়েছে। শসা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি।

ফুলকপি ২৫ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুলা ২০ টাকা, পাকা টমেটো ৮০ থেকে ৯০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৩০ টাকা কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৩, ২০২২ ২:২১ অপরাহ্ন
এক যুগ গবেষণা শেষে ৬ জাতের নতুন প্রজাতির ধান উদ্ভাবন
কৃষি গবেষনা

দীর্ঘ ১২ বছরের চেষ্টায় সংকরায়ণ বা ইম্যাসকিউলেশন ও পলিনেশন করে ৬ ধরনের নতুন ধান উদ্ভাবনের দাবি করেছেন খুলনার বটিয়াঘাটার গঙ্গারামপুর গ্রামের কৃষক আরুনি সরকার।

স্থানীয় কৃষকরা নতুন জাতের ধানগুলো চাষ করছেন। নতুন এ ধানের স্বীকৃতির জন্য তিনি সরকারের কাছে আবেদন করেছেন।

আরুনির স্বপ্ন ছিল বিলুপ্তপ্রায় স্থানীয় আমন ধানের নতুন জাত উদ্ভাবন করবেন। যার মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষকদের দরিদ্রতা রোধ হবে এবং অধিক ফলন হবে। তার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।

আরুনি সরকারের উদ্ভাবিত ধানগুলো উপকূলীয় অঞ্চলের স্থানীয় আমন ধানের থেকে আরও বেশি লবণাক্ততা ও জলাবদ্ধতা সহিষ্ণু, ফলনও ভালো। তুলনামূলক কম কীটনাশক ও সার প্রয়োগ করতে হয় এ জাতের ধান চাষে।

আরুনি সরকার জানান, ‘গবেষণায় দেখা গেছে, নতুন ধরনের ৬টি ধানের ফলন তাদের মাদার ও ফাদার ধানের তুলনায় বেশি। ওই ৬ ধরনের ধান স্থানীয় ও উচ্চফলনশীল ধানের চেয়েও ভালো ফলন দিচ্ছে।’

নতুন ধানগুলোর গাঁথুনি ঘন, শীষ লম্বা ও দুর্যোগসহিষ্ণু হয়েছে বলে জানান তিনি।

খুলনা মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্রের জৈষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, ‘আরনি দাবি করেছেন, তার উদ্ভাবিত ধান আরও বেশি লবণসহিষ্ণু যা আড়াই থেকে ৩ ডিএস পর্যন্ত লবণ সহিষ্ণু। তাছাড়া এসব ধান ১০-১৫ দিন পর্যন্ত জলাবদ্ধতায় টিকে থাকতে পারে। সাধারণত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে চাষ হওয়া হাইব্রিড কিংবা উচ্চফলনশীন আমন মৌসুমের ধান ৫-৬ দিন পানির নিচে থাকলে পচে যায়।’

খুলনার বটিয়াঘাটার কাতিয়ানাংলা গ্রামের কৃষক আইয়ুব আলীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৯ সাল থেকে তিনি জমিতে কাটারিভোগ ও চাপশাইল ধান চাষ করেন। সে সময়ে তিনি ৫০ শতকের প্রতি বিঘায় পেতেন প্রায় ১৬ মণ ধান। গত বছর আরুনি উদ্ভাবিত ‘আলো ধান’ চাষ করে প্রতি বিঘায় প্রায় ২৪ মণের মতো ফলন পেয়েছেন।

খুলনা অঞ্চলের স্থানীয় আমন ধানের জীবনকাল সর্বোচ্চ ১৭০ পর্যন্ত হয়ে থাকে। যেমন, বিআর ২৩-এর জীবনকাল ১৫৪ দিন আবার ‘জটাই বালাম’-এর জীবনকাল ১৪৫ দিন। কিন্তু আরনি উদ্ভাবিত এই দুই ধানের সমন্বয়ে উদ্ভাবিত ‘আলো ধান’-এর জীবনকাল দেখা গেছে ১৩৫ দিন। তেমনিভাবে দেখা গেছে ‘মৈত্রী ধান’ বা ‘গঙ্গাধান’-এর জীবনকাল ফাদার- মাদার-এর চেয়ে ১০ থেকে ১২ দিন কম।

এ ছাড়া নতুন উদ্ভাবিত ধানগাছগুলো তুলনামূলক মোটা হওয়ায় বাতাসে পড়ে যাওয়ার ভয় নেই বলে জানান আরুনি সরকার।

খুলনা অঞ্চলে গত ২ বছর আগে যখন ‘কারেন্ট’ পোকার আক্রমণে অধিকাংশ খেতের ধান নষ্ট হয়ে যায়, তখন আরুনির ধানে কোনো পোকা লাগেনি। যা দেখে আশপাশের কৃষকদের আগ্রহ আরও রেড়ে যায়।

তার উদ্ভাবিত নতুন এই ধানগুলো হলো—’আলো ধান’, ‘লোকজ ধান’, ‘আরুনি ধান’, ‘গঙ্গা ধান’, ‘মৈত্রী ধান’ ও ‘লক্ষ্মীভোগ’ ধান। স্থানীয় কৃষকরা এই ধানগুলোর নামকরণ করেছেন।

স্থানীয় জাতের জটাই বালাম (মাদার) ও বিআর তেইশ (ফাদার) জাতের ইম্যাসকুলেশন ও পলিনেশন বা মিশ্রণে যে ধান তৈরি হয়েছে, সেটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘আলো ধান’। এটি প্রতি বিঘায় ২৪ মণ পর্যন্ত উৎপাদিত হতে পারে। সাহেবকচি ও কাঁচড়া জাতের মিশ্রণে তৈরি ধানের নাম ‘লোকজ ধান’। এটি প্রতি বিঘায় ২৩ দশমিক ৮৬ মণ পর্যন্ত উৎপাদন হয়েছে বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা।

এ ছাড়া চাপশাইল ও কুমড়াগইর জাতের সংকরায়ণে তৈরি ধানের নাম রাখা হয়েছে ‘আরুনি ধান’। এই ধানের উৎপাদন সবচেয়ে বেশি ২৪ দশমিক ১৫ মন প্রতি বিঘায়।

এ ছাড়া বেনাপোল ও ডাকশাইল ধানের মিশ্রণে তৈরি হয়েছে ‘গঙ্গা ধান’। এর ফলন হয়েছে প্রতি বিঘায় ২১ দশমিক ২৫ মণ। বিআর–২৩ (মাদার) ও জটাই বালাম (ফাদার) জাতের ধানের মিশ্রণে তৈরি ধানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মৈত্রী ধান’। এর উৎপাদন ২২ দশমিক ৭৫ মণ। বজ্রমুড়ি ও কুমড়াগইর ধানের মিশ্রণে তৈরি হয়েছে ‘লক্ষ্মীভোগ ধান’। এর উৎপাদন প্রতি বিঘায় ২২ মণ পর্যন্ত হতে পারে।

আরুনি সরকার ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা লোকজ-এর অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতায় পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার গুলিসাখালি রিসোর্স সেন্টারে আমন ধানের সংকরায়ণ বিষয়ে ৬ দিনের প্রশিক্ষণে অংশ নেন। ফিলিপাইনের কৃষিবিজ্ঞানী ও গবেষক বংকায়া বান তাদের প্রশিক্ষণ দেন।

প্রশিক্ষণ শেষে বাড়ি ফিরে আরুনি বিলুপ্তপ্রায় স্থানীয় আমন ধানের জাতগুলোর মধ্যে ১০টিকে মাদার এবং ১০টি জাতকে ফাদার হিসেবে নিয়ে কাজ শুরু করেন। প্রথম বছরই কৃত্রিম সংকরায়ণের মাধ্যমে ১০ ধরনের ধানের বীজ (এফ-১) তৈরি করেন। পরের বছর থেকে ওই বীজগুলো খেতে রোপন করে নির্ধারণের কাজ করেন তিনি। দীর্ঘ ১০ বছর গবেষণা শেষে ৬ ধরনকে উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য চাষাবাদ উপযোগী হিসেবে স্থানীয় কৃষকরা স্বীকৃতি দেন এই ৬ প্রকার ধানকে। ইতোমধ্য এই ধান চাষ করা শুরু করেছেন স্থানীয় কৃষকরা।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাগ্রোটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম জানান, ‘আরনি সঠিক পথেই এগুচ্ছেন। আরুণি যে কাজটি করেছেন, আমরা তাকে সংকরায়ণ পদ্ধতি বলে থাকি।’

অধ্যাপক মনিরুল আরও বলেন, ‘তাকে এখন জাতীয় বীজ প্রত্যয়ন বোর্ডের নিকট আবেদন করতে হবে এর স্বীকৃতি পাবার জন্য। আরুনি তার কাজটুকু করে দেখিয়েছেন এখন সরকারের বিরিকে এগিয়ে আসতে হবে।’

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) পরিচালক ডক্টর মোহাম্মদ শাহজাহান কবীর জানান, ‘নিশ্চয়ই সে সঠিক পদ্ধতি মেনে গবেষণা করেছেন। দেখার বিষয়, অধিক ফলনের বৈশিষ্ট্য ধারাবাহিকভাবে থাকে কি না। কখনো কখনো আমরা দেখি দুবছর পর বৈশিষ্ট্য চেঞ্জ হয়ে যায়। আমি বিরির সাতক্ষীরার গবেষকদের বলবো তার উদ্ভাবিত ধান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখার জন্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই কৃষকের উদ্ভাবিত ধানকে কীভাবে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া যায় তা ভেবে দেখব। আসলে কৃষকরাই আমাদের পথ দেখান।’

ইতোমধ্যেই দাকোপ-বটিয়াঘাটা অঞ্চলের কৃষকরা আরুনি উদ্ভাবিত ৬টি জাতের ধান চাষাবাদ শুরু করেছেন। ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণ হচ্ছে এই জাতগুলো। চলতিবছর এ অঞ্চলের ৫৮ জন কৃষক ২ শতাধিক বিঘা জমিতে আরুনি উদ্ভাবিত ধানগুলো চাষ করেছেন। যে ধানের ফলন ভালো, লবণাক্ততা ও জলাবদ্ধতা সইতে পারে, তুলনামূলক কম কীটনাশক ও সার প্রয়োগ করতে হয়। ফলে কৃষকরা এই ধান চাষে ঝুঁকছেন।

সূত্র : দ্য ডেইলি স্টার

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১২, ২০২২ ৬:৫৮ অপরাহ্ন
লক্ষ্মীপুরে সুপারির ব্যাপক ফলন, দামে খুশি চাষিরা!
কৃষি বিভাগ

লক্ষ্মীপুরে দিন দিন সুপারির চাষ বাড়ছে। গত বছরে এই জেলায় প্রায় ৬শত কোটি টাকার সুপারি বিক্রি হয়। এখানকার উৎপাদিত সুপারি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে। চলতি বছরে এই জেলার উৎপাদিত সুপারি বিক্রি প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানায় কৃষি বিভাগ।

জানা যায়, সারি সারি গাছে ঝুঁলছে সুপারি। অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত জেলার সুপারির হাটগুলো জমজমাট থাকে। কৃষকরা গাছ থেকে সুপারি সংগ্রহ করে বিক্রি ও সংরক্ষনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সুপারি চাষে লাভবান হওয়ায় প্রতি বছর এই অঞ্চলে নতুন নতুন সুপারির বাগান তৈরী হচ্ছে। কৃষকরা সুপারি চাষে ঝুঁকছেন।

চলতি মৌসুমে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় সুপারির আকার ছোট হয়েছে। ফলন গত বছরের তুলনায় কম হলেও সুপারির ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা।

কৃষকরা জানান, ৬৪ কুড়ি সুপারি ২৫০০-৩২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব সুপারি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশেও রপ্তানি হয়।

লক্ষ্মীপুরের জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. মো. জাকির হোসেন জানান, সুপারি থেকে কোনো কিছু করা যায় কিনা সেই গবেষনা করা দরকার। সুপারি চাষ লাভজনক হওয়ায় এই অঞ্চলের কৃষকরা ব্যাপকভাবে সুপারির চাষ করেন। জেলায় এ বছর ৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সুপারির চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ২০০ হেক্টর বেশি।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop