৩:৪৫ অপরাহ্ন

শনিবার, ৩১ মে , ২০২৫
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : মে ২৪, ২০২৫ ৮:১৮ অপরাহ্ন
গাজীপুরে নদী ও জলাভূমি সিম্পোজিয়াম ২০২৫ অনুষ্ঠিত
কৃষি বিভাগ

কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনুঃ শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় গাজীপুর শহরের পিটিআই অডিটোরিয়ামে নদী ও জলাভূমি সিম্পোজিয়াম ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন শিল্প কারখানার ব্যবহৃত পানি রিইউজ করতে বাধ্য করতে নানাবিধ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
উপদেষ্টা রেজওয়ানা আরও বলেন, শীঘ্রই তুরাগ নদীর পুনরুদ্ধার শুরু হবে৷ গাছা খাল, লবনদহ, পুকুর উদ্ধার ও সম্প্রতি দখল হওয়া বনভূমি উদ্ধার কাজ ইতোমধ্যে শুরু করেছি ।

বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা, বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক ও নদীপক্ষ এর যৌথ আয়োজনে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুরুতেই বিষয়বস্তুর ওপর তথ্যবহুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মনির হোসেন ।
মুহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, গাজীপুরের উপর দিয়ে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, শীতলক্ষ্যা, বানার , চিলাই, লবণদহ, শালদহ, গোয়ালী, তুরাগ, বংশী, বালু, গোয়াল্লার, পারুলীসহ আরো কয়েকটি ছোট নদ-নদী। রয়েছে অনিন্দ সুন্দর বোলাই, মকশ বিলসহ কয়েকটি স্বাদু পানির জলাধার। দখলে দূষণে বিপর্যস্থ থাকা সত্ত্বেও এখনো এসব নদী-নদী ও জলাধার নিজ জেলাতো বটেই আশাপাশের অঞ্চলগুলোর সমাজ সংস্কৃতিতে প্রভাব রেখে চলেছে।
এসময় নদী ও জলাভূ’মি সিম্পোজিয়াম থেকে ১৬ টি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়৷ সেটির বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষেরে চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান, গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. জাবের সাদেক, বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন ও রপ্তানীকারক সমিতিরি সভাপতি মো. রাশেদুল করিম মুন্না প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের মুক্ত আলোচনায় দর্শকসারি থেকে আমন্ত্রিত অংশীজন নানাবিধ প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন । অনুষ্ঠানে সরকারি-বেসরকারি প্রায় ৪ শতাধীক বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যাক্তিবর্গ এতে অংশ নেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মে ২১, ২০২৫ ৩:০৯ অপরাহ্ন
পটুয়াখালীতে মুগ ডালের অধিক ফলন
কৃষি বিভাগ

বিস্তীর্ণ সবুজের ফাকে ফাকে কালো সোনার হাতছানি। যেদিকে দুচোখ যায় মাঠের পরে মাঠ এখন শুধু পাকা মুগডাল। এ অবস্থায় ক্ষেত থেকে দলবেধে ডাল তুলে বস্তায় ভরে বাড়ির উঠানে শুকিয়ে সংরক্ষণ করার পাশাপাশি বাজারজাত করার জন্য প্রস্তুত করছে কৃষক।

কৃষি অফিস বলছে, দেশের ৪৫ শতাংশের বেশি মুগ ডাল উৎপাদিত হয় পটুয়াখালী জেলায়। এই অঞ্চলের মাটি ডাল চাষের জন্য উপযোগী। এবার অনুকূল আবহাওয়া এবং আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করায় জেলায় মুগ ডালের অধিক ফলন হয়েছে। এখানকার উৎপাদিত মুগডাল জাপান, কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে।

চলতি বছর অনুকূল আবহাওয়া এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ না হওয়ায় একর প্রতি ২৭০০ থেকে ২৮০০ কেজি পর্যন্ত ফলন পাওয়া যাবে । এছাড়া গত বছর প্রতি মণ মুগ ডাল ৩০০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও এবার ৩৮০০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাই কৃষক এই তীব্র গরমের মধ্যেও কষ্ট করে রোদে পুরে খেত থেকে ডাল তুলছেন।

উন্নতমানের বীজ, অনুকূল আবহাওয়া থাকায় এ বছর জেলায় মুগডালের অধিক ফলন হয়েছে। কিন্তু এ বছর তাপমাত্রা বেশি থাকায় কৃষক ক্ষেত থেকে ডাল ঘরে তুলতে পারছে না। বৃষ্টি হলে ক্ষেতেই নষ্ট হবে ডাল এমন দুশ্চিন্তায় কৃষকরা। হাতে টাকা থাকলেও মিলছেনা কোন দিনমজুর। তাই সকাল-বিকেল পরিবার পরিজন নিয়ে মুগডাল ক্ষেত থেকে ঘরে তুলছেন কৃষক।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক কৃষিবিদ মো. নজরুল ইসলাম বলেন,  মুগডাল চাষে আমরা কৃষকদের সকল ধরনের সহযোগীতা করে থাকি। যেহেতু বর্তমানে তাপমাত্রা বেশি সেজন্য আমরা কৃষককে ফজরের নামাজের পরে এবং বিকেলে  ডাল উঠাতে এবং ছাতা ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছি।

এ বছর জেলায় ৮৮ হাজারের বেশি হেক্টর জমিতে মুগডাল চাষ হয়েছে। উৎপাদন হবে  ১ লক্ষ ১১ হাজার ১শ ১৪ মে.টন,ডাল  যা গত বছরের চেয়ে ২০ হাজার মে.টন বেশি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মে ১৫, ২০২৫ ১০:২২ অপরাহ্ন
আকাশমনি-ইউক্যালিপটাস গাছ নিষিদ্ধ ঘোষণা
কৃষি বিভাগ

দীন মোহাম্মদ দীনুঃ পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছের চারা রোপণ, উত্তোলন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে এ আদেশ দেওয়া হয়।

মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব তুষার কুমার পাল স্বাক্ষরিত এই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এসব প্রজাতির গাছ মাটি থেকে অত্যধিক পানি শোষণ করে। ফলে মাটির আর্দ্রতা কমে যায় এবং শুষ্ক বা মৌসুমী জলবায়ু যুক্ত এলাকায় এটি মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়। এই গাছের পাতায় থাকা টক্সিন গোড়ায় পড়ে মাটিকে বিষাক্ত করে তোলে, যার ফলে উর্বরতা নষ্ট হয়। এগুলোর চারপাশে অন্য কোনো গাছ সহজে জন্মাতে পারে না বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়। এতে আরও বলা হয়, এটি স্থানীয় জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি, কারণ বহু দেশীয় গাছ, পোকামাকড় ও পাখি এই গাছে বাসা বাঁধে না বা খাদ্য খুঁজে পায় না।

এতে আরও বলা হয়েছে, পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের স্বার্থে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার পূরণে সরকারি, বেসরকারি সংস্থা ও ব্যক্তি পর্যায়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির জন্য এই গাছগুলো রোপণ, উত্তোলন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।
ওই প্রজাতির গাছের চারা রোপণের পরিবর্তে দেশীয় প্রজাতির ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা রোপণ করে বনায়ন করার আহ্বান জানানো হয়েছে প্রজ্ঞাপনে। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মে ১৫, ২০২৫ ৮:৪৫ পূর্বাহ্ন
নারায়ণগঞ্জে লিচুর অধিক ফলনে খুশি লিচু চাষীরা
কৃষি বিভাগ

লাল-গোলাপি রসালো লিচু বাগানে বাগানে ঝুলছে।বাগান থেকে বাজারে আসছে টসটসে পাকা লিচু। খোসা ছাড়িয়ে মুখে দিয়েই লিচুপ্রেমীরা পাবেন অমৃত স্বাদ। ট্রাকভর্তি এই লিচু যাবে দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। বলছি ইতিহাস ও ঐতিহ্যে ঘেরা জেলার সোনারগাঁয়ের বিখ্যাত কদমি লিচুর কথা।

বৈশাখের শেষ সময়ে সোনারগাঁয়ের  লিচু প্রথম বাজারে আসে। আগাম বাজারজাত হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের তুলনায় সোনারগাঁয়ের লিচুর চাহিদা থাকে অনেক বেশি। সুস্বাদু ও সুমিষ্ট হিসেবে রসালো এই লিচু সারাদেশে বেশ পরিচিত। আগাম জাতের হওয়ায় বর্তমানের  সারাদেশের ৫০ শতাংশের অধিক লিচুর চাহিদা পূরণ করছে এই অঞ্চলের লিচু বলে দাবি করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ তারেক। এছাড়াও স্থানীয় চাষিরা জানান, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে।

সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, সোনারগাঁয়ে এই বছর ৮৫টি গ্রামে ১০৭ হেক্টর জমিতে লিচুগাছ রয়েছে। বাগান আছে ২৮২ টি। ধারণা করা হচ্ছে এই বছর প্রায় ৭২০ মেট্রিক টন লিচু ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। যা থেকে প্রায় সাত কোটি টাকা বিক্রি হতে পারে ।

সোনারগাঁয়ে কদমি লিচুর পাশাপাশি , মোজাফফরপুরী, চায়না-৩, এলাচি ও পাতি জাতের লিচু চাষ হয় । এই উপজেলার  ৮৫টি গ্রাম লিচুর জন্য প্রসিদ্ধ। তবে সোনারগাঁ পৌরসভার গোয়ালদী, হরিষপুর, দুলালপুর, পানাম গাবতলী, খাসনগর দীঘিরপাড়, চিলারবাগ, ইছাপাড়া, দত্তপাড়া, হাতকোপা, অজুন্দী, বাগমুছা, গোবিন্দপুর, লাহাপাড়া, বালুয়াদীঘিরপাড় ও বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের হাড়িয়া, হামছাদী, দামোদরদী, পঞ্চবটী, মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া ও গোহাট্টা এলাকায় সবচেয়ে বেশি উৎকৃষ্ট মানের লিচু চাষ হয়।

জনশ্রুতিতে জানা যায় , সোনারগাঁয়ের গাবতলী এলাকায় প্রায় দুইশত বছর আগে এক সাধু দুটি লিচু গাছ রোপণ করেছিলেন। সেই গাছের লিচুর স্বাদ এতটাই অমৃত ছিল যে এই ফলের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশের এলাকায়। পরে এখান থেকেই এই লিচুর কলম করে রোপণ করা হয়। যা থেকে পুরো উপজেলায় এই লিচুর বিস্তার ঘটে। সাধুর গাছকে ঘিরে একটি এলাকার নাম হয়ে উঠে সাধুরবাগ।

সাধুরবাগ সহ উপজেলায় বিস্তৃত একাধিক  লিচুর বাগান ঘুরে দেখা মিলে  বাগানিরা লিচু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। কেউবা আবার লিচু বাগানে পাহারা দিচ্ছেন। বানর ও কাকের থেকে লিচু রক্ষায় নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। বাগানিদের পাশাপাশি তাদের পরিবারের সদস্য সহযোগিতা করছেন। বাগানিরা গাছ থেকে লিচু ছিড়ে বাজারে বিক্রি করার জন্য  বিভিন্ন সরঞ্জাম সংগ্রহ করছেন। কেউ আবার রশি দিয়ে লিচু একসঙ্গে আঁটিবাঁধা ও প্যাকেটিং এর কাজে ব্যস্ত।  উৎপাদন ভালো হওয়ায়  উৎসব আমেজে পরিবার নিয়ে কাজ করছেন বাগানিরা।

গাবতলী এলাকায় লিচু ব্যবসায়ী আউয়াল মিয়া বলেন, “আমি আগামী ৩ বছরের জন্য তিনটা বাগান ইজারায় নিয়েছি। গাবতলী,  ষোলপাড়া ও কৃষ্ণপুর এলাকায় আমি বাগান ইজারায় নিয়েছি। এখন পর্যন্ত লিচু বাগানের পরিচর্যা ও অন্যান্য খরচ বাবদ আমার পাঁচলক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। গতবছর লিচু বিক্রি করে আমার সাড়ে লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু এই বছর আশা করছি সেই ক্ষতি পুষিয়ে লাভ হবে।  আমরা ইতিমধ্যে ভালো বিক্রি করছি। এছাড়াও আমার বাগানের লিচু এই বছর দেশের বাহিরে রপ্তানি করা হচ্ছে।

জানা যায়,  বাগান থেকেই  কদমী লিচু প্রতি শত ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা এবং পাতি লিচু সহ অন্যান্য লিচু শ’ প্রতি  ৪০০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে । দীঘিরপাড় এলাকার লিচু চাষী সাগর ইসলাম বলেন, “আমরা পাইকারদের কাছে কদমী লিচু হাজারে পাঁচ থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করি। পাতি লিচুর দাম এর চেয়ে কিছুটা কম। গত বছরের তুলনায় এ বছর ফলন ভালো হয়েছে এই উপজেলায়।  সব চাষীরা আনন্দের সঙ্গে লিচু সংগ্রহের কাজ করছে। আমাদের বাড়ির মানুষেরাও আমাদের সহায়তা করতেছে। এ বছর ভালোই বিক্রি করতে পারব।

সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন,  সোনারগাঁয়ে ১০৭ হেক্টর জমিতে প্রায় ৭২০ টন লিচুর উৎপাদনের  হবে আশা করছি। তাবপ্রবাহ কম হলে প্রায় ৭৪০ টন লিচুর ফলন হতো। এ বছর গত কয়েক বছরের তুলনায় অবাক করার মতো ফলন হয়েছে। আমাদের নির্দেশনা অনুযায়ী যারা বাগানে ব্যবস্থা নিয়েছে, সেসব বাগানে ব্যাপক ফলন হয়েছে। এখানের লিচু দেশের বাহিরেও রপ্তানি হচ্ছে। এ বছর প্রায় সাত কোটি টাকা মূল্যের লিচু বিক্রি হবে আশা করছি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মে ৬, ২০২৫ ৩:০৮ অপরাহ্ন
বাকৃবিতে ‘নিরাপদ ও পুষ্টিকর ধান উৎপাদনের জন্য প্রজনন ও পানি ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তির উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত
কৃষি বিভাগ

দীন মোহাম্মদ দীনু, বাকৃবি: বাংলাদেশের অনেক এলাকার ভূগর্ভস্থ পানি আর্সেনিক দ্বারা দূষিত। অবিরাম জলাবদ্ধতার অধীনে ধান চাষ করলে চালের মধ্যে এই বিষাক্ত উপাদানের মাত্রা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যেতে পারে। ৩ দিন জলাবদ্ধতা ও ৪ দিন নিষ্কাশন (3F4D) ভিত্তিক একটি পরিবর্তিত পর্যায়ক্রমিক সেচ কৌশল চালের মধ্যে অজৈব আর্সেনিকের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম। তিনি মঙ্গলবার (৬ মে ২০২৫)সকাল ১০ ঘটিকায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ‘নিরাপদ ও পুষ্টিকর ধান উৎপাদনের জন্য প্রজনন ও পানি ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তির উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আায়োজনে মৃত্তিকা বিজ্ঞান মাঠ গবেষণাগারে অনুষ্ঠিত মাঠ দিবসে এসব তথ্য জানান।


বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় জাইকার কারিগরি সহায়তায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন উল্লেখিত প্রকল্পটি চালের আর্সেনিক হ্রাসে যেমন ফলপ্রসূ, ফলনেও নেই এর কোনো কমতি।
প্রকল্প পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার পরিচালক, প্রফেসর ড. মো. মোশাররফ উদ্দীন ভূঁঞা,বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ময়মনসিংহ অঞ্চল ,ড. সালমা লাইজু।বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ড. আবু জোফার মো: মোসলেহ উদ্দিন ,উপ-প্রকল্প পরিচালক, প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন সুমন,প্রকল্প সমন্বয়কারী, জাইকা, বাংলাদেশ , রিউচি কাটসুকি, মো. সোহেল রানা ,সিফাত সুলতানা পিএইচডি ফেলো, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলেন , 3F4D পদ্ধতিতে উৎপাদিত চালে অজৈব আর্সেনিকের মাত্রা অবিরাম জলাবদ্ধতার তুলনায় সর্বোচ্চ ৪০% পর্যন্ত কমে। তারা আরও বলেন এখানে উল্লেখযোগ্য হলো, ধানের ফলন অপরিবর্তিত থাকে। পাশাপাশি, এই পদ্ধতির মাধ্যমে সেচের জন্য ব্যবহৃত পানি ৬৫-৮০% পর্যন্ত সাশ্রয় সম্ভব বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. মো. রফিকুল ইসলাম আরও উল্লেখ করেন, “এই গবেষণার ফলাফল প্রমাণ করে যে, সীমিত সম্পদেও কৃষকরা 3F4Dপদ্ধতি ব্যবহার করে ফলন ব্যাহত না করেই নিরাপদ চাল উৎপাদন করতে পারেন”। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. মো. মোশাররফ উদ্দীন ভূঁঞা বলেন ,গবেষকদের দেয়া তথ্যমতে এই আবিষ্কার শুধু আর্সেনিকের ঝুঁকি কমাতেই নয়, বরং সেচের পানির চাহিদাও ব্যাপকভাবে হ্রাস করবে ,ফলে ভূগর্ভস্থ পানিদূষণপ্রবণ অঞ্চলে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও টেকসই ধান উৎপাদনে এটি বাস্তবভিত্তিক সমাধান হিসেবে এটি বিবেচিত হতে পারে বলে আমি প্রত্যাশা করছি ।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মে ৫, ২০২৫ ৯:১৭ পূর্বাহ্ন
বান্দরবানে জুম চাষীদের মধ্যে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ
কৃষি বিভাগ

বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলায় আজ ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে খরিপ-১ ও খরিপ-২ মৌসুমে তিল, আউশ, আনারস ও আমন ফসলের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধি লক্ষ্যে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ৪টি ইউনিয়নের ৩৩০ জন জুম চাষীর মধ্যে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।

রোববার বেলা ১১ টায় উপজেলা পরিষদের প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জুম চাষীদের হাতে এসব উপকরণ তুলে দেয়া হয়।

এ সময় থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল- ফয়সাল, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা বিশ্বজিত দাশ গুপ্ত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ২৫০ জন জুম চাষী কৃষককে আউশ ধানের উপকরণ হিসেবে জনপ্রতি উফশী ধানের বীজ ৫ কেজি, ডিএপি সার ১০ কেজি, এমওপি সার ১০ কেজি প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও ৮০ জন জুম চাষী কৃষককে জনপ্রতি পাহাড়ী কালো ও সাদা রংঙের তিল এক কেজি, ডিএপি সার ১০ কেজি, এমওপি সার ৫ কেজি প্রদান করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মে ৪, ২০২৫ ৯:৫৮ পূর্বাহ্ন
ভুট্টা চাষে অধিক লাভের আশায় কৃষকের চোখে খুশির ঝিলিক
কৃষি বিভাগ

ভুট্টা এখন এই জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসলে পরিণত হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার এবং সরকারি সহায়তার ফলে চলতি মৌসুমে জেলা জুড়ে ভুট্টার অধিক ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা। বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে মাথা উঁচু করে নিজেদের প্রাচুর্যের কথাই যেন ঘোষণা করছে ভুট্টার কচি শিষ ও সবুজ পাতারা। তাই দেখে কৃষকদের চোখেও খুশির ঝিলিক।

সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার পাঁচটি উপজেলা ছাড়াও তিস্তার চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাপকভাবে ভুট্টার আবাদ হচ্ছে। এক সময় যেসব জমিতে আগাছা ছাড়া কিছুই হতো না, সেসব অনাবাদি ও পরিত্যক্ত জমিতেও এখন দুলছে সবুজ ভুট্টার গাছ।

জানা যায়, ভুট্টা চাষে খরচ তুলনামূলক কম ও ফলন বেশি। পাশাপাশি বাজারে চাহিদা ও দাম দুটোই ভালো থাকায় কৃষকদের মধ্যে এই ফসল চাষে আগ্রহ বাড়ছে। বিশেষ করে গবাদিপশুর খাদ্য তৈরিতে ভুট্টার ব্যাপক ব্যবহার থাকায় বছরজুড়েই এর চাহিদা থাকে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর লালমনিরহাট জেলায় দুই মৌসুমে ৩৯ হাজার ৯৫৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। এ থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৪৬,৮৫৫ মেট্রিক টন। বীজ বপনের ২৫-৩০ দিনের মধ্যে প্রথম সেচ ও আগাছা দমন এবং ৫০-৫৫ ও ৭০-৭৫ দিনের মাথায় আরও দুটি হালকা সেচ দিলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। এছাড়া, ভুট্টায় রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণও তুলনামূলক কম।

মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের চাষি ওসমান গনি (৫২) বাসসকে বলেন, ‘এবার এক একর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ১৫-১৮ হাজার টাকা। বাজারে প্রতি মণ ভুট্টা ১১’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, ফলে বিঘা প্রতি ১৮-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ করা সম্ভব।’

তিস্তা পাড়ের কৃষক আলমগীর মিয়া (৪৫) বলেন, ‘ভুট্টা গাছের সব কিছুই কাজে লাগে। পাতা গবাদিপশুর খাদ্য, আর ডাঁটা ও মোচা লাকড়ি হিসেবে ব্যবহার করি। দাম ও চাহিদা ভালো থাকলে আগামী বছর আরও বেশি জমিতে ভুট্টা চাষ করব।’

বড়বাড়ী ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল হাকিম (৫৫) বলেন, ‘ভুট্টা চাষ লাভজনক হওয়ায় এবারও দেড় বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। আশা করছি, ভালো ফলনের পাশাপাশি ভালো দামও পাব।’

লালমনিরহাট সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খন্দকার সোহায়েল আহমেদ বলেন, ‘ভুট্টা একটি লাভজনক ফসল। কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে এবং চাষে সব ধরণের সহায়তা দিতে আমরা প্রস্তুত।”

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. সাইখুল আরিফিন বলেন, ‘লালমনিরহাটে এখন ভুট্টা একটি গুরুত্বপূর্ণ ও লাভজনক অর্থকরী ফসলে পরিণত হয়েছে। কৃষকদের আরও উৎসাহিত করতে এবং সাফল্য ধরে রাখতে কৃষি বিভাগ সর্বাত্মক সহায়তা দিচ্ছে, যা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।’

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২৭, ২০২৫ ৯:৩০ পূর্বাহ্ন
বোরো ধানের ফলন সন্তোষজনক : কৃষি উপদেষ্টা
কৃষি বিভাগ

কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, দেশে বোরো ধানের ফলন সন্তোষজনক। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বোরো ধান কাটা সম্পন্ন হবে।

আজ মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার আড়িয়াল বিলে ধান কাটা ও মাড়াই পরিদর্শন ও কৃষকদের সাথে মতবিনিময়কালে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

এসময় শিল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান ও জেলার পদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ একথা জানানো হয়।

কৃষি উপদেষ্টা বলেন, আড়িয়াল বিল প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যসম্পন্ন এলাকা। এখানকার জীব বৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষায় সকলকে সচেষ্ট থাকতে হবে। আড়িয়াল বিল ও সংলগ্ন অঞ্চলের পানি নিষ্কাশন এবং ফসল পরিবহনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। উপদেষ্টা কৃষকদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনেন ও সেগুলো সমাধানের আশ্বাস দেন।

আড়িয়াল বিলে বিমান বন্দর নির্মাণ প্রতিরোধে আন্দোলনকারী কৃষকদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারে কৃষকরা অনুরোধ করলে উপদেষ্টা তাদের মামলা প্রত্যাহারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। অবৈধ মাটি ব্যবসা বন্ধে টহল চৌকি স্থাপনে কৃষকরা অনুরোধ করলে উপদেষ্টা জরুরি ভিত্তিতে টহল চৌকি স্থাপনে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।

কৃষকদের সাথে মতবিনিময়ে শিল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, আড়িয়াল বিলের পরিবেশ রক্ষায় এলাকাবাসী সহযোগিতা করবেন। মুন্সিগঞ্জের উন্নয়নের জন্য প্রকল্প নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের কাজ যেন যথাযথ ভাবে হয়। দেশে যেন খাদ্যের অভাব না হয় এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয় সরকার সেভাবে কাজ করছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ২২, ২০২৫ ৯:২৪ পূর্বাহ্ন
মিষ্টি আলু চাষে মানিকগঞ্জ তার হারানো গৌরব ফিরে পেতে শুরু করেছে
কৃষি বিভাগ

মিষ্টি আলু চাষের হারানো গৌরব ফিরে পেতে শুরু করেছে মানিকগঞ্জ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলায় মোট ১২২ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলুর চাষ হয়েছে, যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি। এর আগে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ১১৬ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৪’শ ৭ মেট্রিক টন। কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ক্ষেত থেকে মিষ্টি আলু তোলা শেষ হতে চলেছে। বাজারে মিষ্টি আলুর উচ্চমূল্য পেয়ে কৃষকরা খুশি।

ডিএই সূত্র আরো জানায়, একসময় মানিকগঞ্জ জেলা মিষ্টি আলু চাষের জন্য বিখ্যাত ছিল।  সেসময় জেলায় প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলুর চাষ করা হত। কিন্তু উৎপাদকরা তাদের পণ্যের কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে মিষ্টি আলু চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এভাবে আস্তে আস্তে জেলায় মিষ্টি আলুর চাষ কমে আসে।

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কুশেরচর গ্রামের একজন বয়স্ক মিষ্টি আলু চাষি আব্দুল জলিল (৭০) বলেন, ‘কয়েক বছর আগেও প্রতি মণ মিষ্টি আলু ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি করতে হত। বাজারে বিক্রি করে উৎপাদন খরচও আমরা পেতাম না। এখন মিষ্টি আলু অন্যতম সেরা সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি মিষ্টি আলু ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মৌসুমের শুরুতে বাজারে আগাম চাষের কাটা মিষ্টি আলুও প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।’

হরিরামপুর উপজেলার চর হরহারদিয়ার আরেক মিষ্টি আলু চাষি আব্দুল হক (৭৫) বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের আগে আমরা উপজেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে আমাদের বালুকাময় জমিতে প্রচুর পরিমাণে মিষ্টি আলু চাষ করতাম। স্বাধীনতার পরও বিস্তীর্ণ এলাকার দারিদ্র্য পীড়িত মানুষ খাদ্য সংকটের জন্য কষ্ট ভোগ করত। তখন মিষ্টি আলুই ছিল তাদের প্রধান খাদ্য।’  অতীতের স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বলেন, আমার পরিবার প্রায় পাঁচ বিঘা জমিতে মিষ্টি আলু চাষ করত এবং নিজেদের চাহিদা মেটানোর পর উদ্বৃত্ত আলু বাজারে বিক্রি করত। কিন্তু ন্যায্য মূল্য পেত না। প্রতি মণ আলু মাত্র ৫ থেকে ৬ টাকায় বিক্রি হতো। তখন আধুনিক চাষ পদ্ধতি শুরু হয়নি। গৃহস্থরা তখন জীবিকা নির্বাহের জন্য ওইসব জমিতে আউশ ও আমন চাষ করত।

বৃদ্ধ কৃষক আব্দুল হক বলেন, প্রবল পদ্মা নদীর ভাঙ্গনে হরিরামপুর উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নের ৫টি ইউনিয়নই গ্রাস করে ফেলেছিলো। ফলে এই পাঁচ ইউনিয়নের বাসিন্দারা আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে। এতে সব ধরনের ফসলের চাষাবাদও বন্ধ হয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘দুই দশক পর আমরা আবার পরীক্ষামূলকভাবে মিষ্টি আলু চাষ শুরু করেছি’।

জেলার দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া গ্রামের মিষ্টি আলু চাষি ৭২ বছর বয়সী আব্দুল ওহাব মোল্লা বলেন, ‘বাজারে এর চাহিদা লক্ষ্য করার পর আমরা দীর্ঘদিন পর আলু চাষ শুরু করেছি। এখন এটি একটি জনপ্রিয় খাদ্য পণ্য এবং সবজিও বটে।’

ঘিওর উপজেলার তেরশ্রী গ্রামের আরেক মিষ্টি আলু চাষি আলী আসগর বলেন, ‘মিষ্টি আলু চাষ করা সহজ এবং এর জন্য কোনও সার ও সেচের প্রয়োজন হয় না।’

বেউথা বাজারের মিষ্টি আলু ক্রেতা ৩৫ বছর বয়সী আব্দুল আজিজ বলেন, ‘আমরা মিষ্টি আলু সবজি হিসেবে ব্যবহার করি এবং মিষ্টি আলু অন্যান্য সবজির সাথে মিশিয়ে দিলে সবজি এবং সবজি খিচুড়ি আরও সুস্বাদু হয়ে ওঠে।’

ডিএই অফিস সূত্র জানায়, বেলে এবং আধা-বালি জমি মিষ্টি আলু চাষের জন্য উপযুক্ত। জেলার কিছু মানুষের কাছে মিষ্টি আলু একটি ভালো খাদ্যদ্রব্য। মিষ্টি আলু অনেকের কাছে ভালো খাদ্য হিসেবে জনপ্রিয়।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ৯, ২০২৫ ৯:১৭ পূর্বাহ্ন
সুনামগঞ্জের হাওরে বোরো ধানকাটা উৎসবের সম্ভাব্য তারিখ পহেলা বৈশাখ
কৃষি বিভাগ

সুনামগঞ্জ জেলায় ৬ এপ্রিল হাওরের বোরো ফসল সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে কর্তন এবং কৃষকের গোলায় তোলা পর্যন্ত করণীয় নির্ধারণ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সভায় সুনামগঞ্জ জেলায় হাওরের বোরো ধানকাটা উৎসবের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী পহেলা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল)।

রোববার দুপুর ১২টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে  আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া।

সভায় জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া জানান, এবারের বোরো ধানকাটা উৎসবে কৃষি উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।

তিনি জানান, এবারের বোরো মৌসুমে ধান কাটার জন্য ৯৫০ টি কম্বাইন্ড হার্ভেষ্টার মেশিন, ১৭২টি রিপার মেশিন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে পাশ্ববর্তী জেলা থেকেও আরও ধান কাটার মেশিন আনা হবে। ধানকাটার জন্য দেড় লক্ষাধিক শ্রমিক রয়েছেন। এছাড়াও ১৫ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত জেলার বালু-পাথর মহালগুলো বন্ধ রেখে শ্রমিকদের ধান কাটা শ্রমিক হিসেবে কাজে লাগানো হবে।

জেলা প্রশাসক বলেন, যদি আবহাওয়া অনুকুলে থাকে তবে চলতি এপ্রিল মাসের মধ্যেই জেলার সবক’টি হাওরে বোরো ফসল কর্তন করে কৃষকের গোলায় তোলা সম্ভব হবে। তারপরও যদি অকাল বন্যা ও অন্যকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয়, তা মোকাবেলার জন্য জেলা প্রশাসন সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করবে। ইতিমধ্যেই জেলার ১২ টি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সমর কুমার পাল-এর সঞ্চালনায় এ সভায় বোরো ধান কাটা ও মাড়াই সম্পের্কে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন জেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোস্তফা ইকবাল আজাদ।

মোস্তফা ইকবাল আজাদ জানান, জেলায় এ বছর ২ লাখ ২৩ হাজার ৫০২ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৭ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ধান, একলাখ ৫৪ হাজার ৯৮২ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ধান, ৯৭০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় ধান আবাদ করা হয়েছে। সম্ভাব্য ধান উৎপাদন ধরা হয়েছে ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮০ মেট্রিক টন ধান। এর ফলে ৯ লাখ ২১ হাজার ৪১৩ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হবে। উৎপাদিত চালের আনুমানিক মূল্য দাঁড়াবে সাড়ে চারহাজার কোটি টাকা।

জেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-২ মো. এমদাদুল হক সভায় জানান, জেলার ১২টি উপজেলার ৫৩টি হাওরে এবার জেলায় ৫৯৪ কিলোমিটার বাধে ৬৯৩টি পিআইসির মাধ্যমে ফসল রক্ষা বাধের কাজ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জেলা পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন সভাপতি আবু নাছার, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মোমতাজুল হাসান আবেদ, সুনামগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবে সভাপতি লতিফুর রহমান রাজু, জেলা ক্যাব-এর সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক মোহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী, সাংবাদিক পংক দে, এমরানুল হক চৌধুরী, গিয়াস চৌধুরী, মো. ওসমান গনী, শহীদ নুর আহমেদ প্রমুখ।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop