৪:০৮ অপরাহ্ন

শনিবার, ১৬ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ৩, ২০২৪ ১০:৫৫ পূর্বাহ্ন
ভোলায় তরমুজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা
কৃষি বিভাগ

ভোলা জেলায় চলতি মৌসুমে তরমুজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে আবাদ কার্যক্রম লক্ষ্যমাত্রার চাইতে ৪৬১ হেক্টর জমিতে বেশি হয়েছে।  জেলার সাত উপজেলায় তরমুজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। বিপরীতে আবাদ সম্পন্ন হয়েছে ১৮ হাজার ৯৬১ হেক্টর। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনকূলে থাকলে জেলায় তরমুজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনার কথা জানায় স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
জেলায় প্রতিবছরই তরমুজের ব্যাপক আকারে আবাদ হয়ে থাকে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বরিশাল-ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ভোলার তরমুজ যায়। আর গত কয়েক বছর ধরে তরমুজ’র দাম ভালো পাওয়ায় অনেক কৃষকই তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের দেয়া হচ্ছে সব ধরনের পরামর্শ সেবা। বর্তমানে মাঠে তরমুজের অবস্থাও বেশ ভালো।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী উদ্বিদ সংরক্ষণ অফিসার মো. হুমায়ন কবির বাসস’কে বলেন, জেলায় তরমুজ আবাদের মধ্যে সদর উপজেলায় হয়েছে ১ হাজার ৭০০ হেক্টর, দৌলতখানে ২২০ হেক্টর, বোরহানউদ্দিনে দেড় হাজার হেক্টর, তজুমদ্দিনে ১৩০, লালমোহনে ৩৫০, চরফ্যাশনে ১৫ হাজার হেক্টর ও মনপুরায় ৬১ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি বলেন, এসব তরমুজের মধ্যে গ্লরী, এসইআই সুপার, ড্রাগন, হানি কুইন, পাকিজা, লেনফাই, সুইট এমপিআর জাত বেশি আবাদ হয়েছে। সাধারণত আমাদের বিভিন্ন চরাঞ্চলগুলোতে তরমুজের চাষ বেশি হয়।

উপজেলা সদরের মাঝের চরের তরমুজ চাষি ফরিদ হোসেন, আবু তাহের ও তৈয়ব আলী জানান, ডিসেম্বরের শুরু থেকেই এখানে তরমুজের চাষ শুরু হয়। গত কয়েক বছর ধরে রোজার মধ্যে তরমুজের সিজন থাকে। এতে দাম ভালো পওয়া যায়। এবারো আশা করছেন প্রথম দিকের কিছু তরমুজ রোজায় বিক্রি হবে। চাষিরা হবে লাভবান। অপর চাষি হেলালউদ্দিন ও সেলিম বলেন, তারা ৪ একর জমিতে তরমুজের চাষ করেছেন। বর্তানে মাঠে তরমুজের অবস্থাও বেশ ভালো রয়েছে। আশা করছেন মার্চে তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন। বড় ধরনের বিপর্যয় না হলে তারা লাভবান হবেন বলে আশা করেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. হাসান ওয়ারিসুল কবীর বাসস’কে জানান, জেলায় চলতি বছর তরমুজের ব্যাপক আবাদ হয়েছে। রোগ-বালাইরও তেমন আক্রমণ নেই। যদি শিলা বৃষ্টি না হয় তাহলে কৃষকরা লাভবান হবেন। বিশেষ করে প্রথম দিকে যারা তরমুজের আবাদ করেছে তারা বেশি দাম পাবে। গত কয়েকবছর ধরে ভোলায় তরমুজের চাহিদা বাড়ায় অনেক কৃষকরাই উদ্বোদ্ধ হচ্ছে তরমুজ চাষে।
তিনি জানান, এখানকার রসালো মিষ্টি তরমুজ খেতে বেশ চমৎকার। এসব তরমুজ এক-দুই কেজি থেকে শুরু করে প্রায় ১৫ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়ে থাকে। আগামী এক মাস পর থেকেই তরমুজ বাজারে উঠতে শুরু করবে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চাষিদের সব ধরনের কারিগরি সহায়তা প্রদান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ৩, ২০২৪ ১০:৫১ পূর্বাহ্ন
যশোরে বিষমুক্ত বাঁধাকপি চাষে ভাগ্যবদল
কৃষি বিভাগ

যশোর জেলার সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ও হৈবতপুর ইউনিয়নে মাঠে বিষমুক্ত শীতকালীন সবজি বাঁধাকপি চাষ করে অনেক কৃষকের ভাগ্য বদলে গেছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশের বাজারেও এসব বাঁধাকপি ছড়িয়ে পড়ায় প্রতি মৌসুমেই আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। উপযুক্ত মূল্য পেয়ে দারুণ খুশি তারা। যশোর আঞ্চলিক কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছে, দেশের সবজির একটি বড় অংশ উৎপাদিত হয় যশোর জেলায়। গ্রীষ্মকালিন, আগাম শীতকালীন ও শীতকালীন এই তিন ভাগে বছরজুড়ে (১২ মাস) সবজির চাষ করেন কৃষকরা। চলতি মৌসুমে জেলায় ১৯ হাজার ৭৩৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির চাষ হয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় চাষ হয়েছে ৩ হাজার ৩০০ হেক্টর। শুধুমাত্র হৈবতপুর ইউনিয়নে ২১০ হেক্টর, চুড়ামনকাটি ইউনিয়নে ১৬৫ হেক্টর জমিতে বাঁধা কপির চাষ হয়েছে।

 

সূত্র জানায়, চুড়ামনকাটি ও হৈবতপুর ইউনিয়নে উৎপাদিত বাঁধাকপির যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন ও সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া, বিদেশে বাঁধাকপি রফতানির কাজে কৃষকদের সাহায্য করছে। কৃষকদের সুবিধার্থে চুড়মনকাটির আব্দুলপুর ও হৈবতপুরের শাহাবাজপুরে সবজি প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্র স্থাপন করেছে। সেখানে বাঁধাকপি প্যাকেটজাত করে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া তাইওয়ানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাজারে পাঠানো হচ্ছে।
সূত্রটি আরো জানায়, ২০১৮ সাল থেকে যশোরে বাঁধাকপি রপ্তানি শুরু হয়। সেবার ১৮৮ মেট্রিক টন বাঁধাকপি রপ্তানি করা হয়। এরপর ২০১৯ সালে ৩৩০ মেট্রিক টন, ২০২০ সালে ৪২৫ মেট্রিক টন, ২০২১ সালে ৫৯০.৭২৪ মেট্রিক টন, ২০২২ সালে ৫৭০ মেট্রিক টন ও ২০২৩ সালে ৬১০,৩৪২ মেট্রিক টন বাঁধাকপি রপ্তানি করা হয়।
চুড়ামনকাটি ও হৈবতপুর ইউনিয়নের সবজি চাষি শফিয়ার রহমান ও শান্তি মন্ডল জানান, চলতি মৌসুমে বাঁধাকপির বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজার মূল্য বেশি থাকায় তারা লাভবান হচ্ছেন। পোলতাডাঙ্গা গ্রামের আমিন উদ্দিন জানান, তিনি বারো মাস বিভিন্ন সবজির চাষ করেন। তবে বেশির ভাগ জমিতে আবাদ করে থাকেন বাঁধাকপির। এবারও দেড় বিঘা জমিতে শীতকালীন বাঁধা কপির চাষ করেছেন।
যশোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী জানান, চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের আব্দুলপুর, পোলতাডাঙ্গা, বাগডাঙ্গা ও চুড়ামনকাটির উত্তরপাড়া, হৈবতপুর ইউনিয়নের হৈবতপুর, শাহবাজপুরের মাঠে সবচেয়ে বেশি বাঁধা কপির চাষ হয়। এখানকার অধিকাংশ চাষি বিদেশে কপি রপ্তানি করে লাভবান হচ্ছেন। ফলে বাঁধা কপি চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার তরফদার জানান, যশোরকে সবজির রাজ্য বলা হয়ে থাকে। এখানকার সবজির মান উন্নত। বিশ্বের বাজার দখলে করে নিয়েছে যশোরের বাঁধাকপিসহ বিভিন্ন সবজি। বিষমুক্ত সবজি চাষে কৃষকদের নানা পরামর্শ দেয়া হয় বলে উল্লেখ করেন এই কর্মকর্তা।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ৩১, ২০২৪ ১:২৭ অপরাহ্ন
গোপালগঞ্জে বিনা সরিষা-১১ চাষাবাদ সম্প্রসারণে মাঠ দিবস
কৃষি বিভাগ

গোপালগঞ্জে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল বিনা সরিষা-১১ জাতের পরিচিতি ও চাষাবাদ সম্প্রসারণে মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল ৯টায় াশিয়ানী উপজেলার দক্ষিণ ফুকরা গ্রমে গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্র কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় এ মাঠ দিবসের আয়োজন করে।  মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি হিসাবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ডঃ মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।

গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. মোঃ কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাঠ দিবসে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সিএসও এবং উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রধান ড. শামসুন্নাহার বেগম, গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আঃ কাদের সরদার, অতিরিক্ত উপ পরিচালক (শস্য) সঞ্জয় কুমার কুন্ডু, কাশিয়ানী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাজী এজাজুল করিম, গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো: রবিউল ইসলাম আকন্দ, ফার্ম ম্যানেজার আলমগীর কবির বক্তব্য রাখেন। এ মাঠ দিবসের শতাধিক কিষাণ কৃষাণী অংশ নেন। অনুষ্টানটি সঞ্চলনা করেন গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৌরভ অধিকারী।

বক্তারা বলেন, বিনা উদ্ভাবিত বিনাসরিষা-১১ জাতের জীবনকাল মাত্র ৮৫ দিন। এর গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ১ দশমিক ৮ থেকে ২.১ টন। সরিষা কাটার পর কৃষক একই মাঠে বোরা আবাদ করতে পারেন। এ সময় তারা লাভজনক বিনা সরিষা-১১ আবাদের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ৩০, ২০২৪ ৯:৫৭ পূর্বাহ্ন
যশোরের ঝিকরগাছায় স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত চাষাবাদ শুরু
কৃষি বিভাগ

মিঠুন সরকারঃ গতানুগতিক কৃষিকে আধুনিক ও প্রযুক্তি নির্ভর করতে নানামূখী উদ্যোগ গ্রহণ করছে সরকার। প্রযুক্তি ব্যবহারের একেবারে তলানিতে আছেন প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষক। ফলে আধুনিক চাষের অনেক রীতিনীতি তাদের ধরা ছোয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছিল।
কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্পের মাধ্যমে আবহাওয়াবিদদের সমন্বয়ে কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার উন্নয়ন, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি মৌসুমি পূর্বাভাস, আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও পরামর্শ সেবার মান বৃদ্ধি করা এবং এই সেবা প্রান্তিকপর্যায়েনিয়মিত ও দ্রত পৌঁছে দেয়ার জন্য স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত একটি দ্রত ও কার্যকর যোগাযোগ ও বিতরণ ব্যবস্থ করা হয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ২০১৭ সালে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সমন্বয়ে ‘বাংলাদেশ ওয়েদার অ্যান্ড ক্লাইমেট সার্ভিস প্রজেক্ট’ শীর্ষক একটি প্রকল্প নেয় সরকার।
দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় পরীক্ষামূলকভাবে সাফল্য পাওয়ায় এবার যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার সুবিধাবঞ্চিত ও সীমান্তবর্তী গঙ্গানন্দপুর ও শিমুলিয়া ইউনিয়নে স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত চাষ ব্যবস্থার বাস্তবায়ন করছে উপজেলা কৃষি অফিস।

ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, ‘স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত চাষব্যবস্থা বাস্তবায়নের জন্য গঙ্গানন্দপুর ও শিমুলিয়া ইউনিয়নে ৮ টি কৃষক গ্রপের মাধ্যমে মোট ১৪৬ টি প্রদর্শণী বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্য ভার্মি কম্পোস্ট ২০ টি, ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে শাক-সবজি উৎপাদন ১০ টি , স্বল্প জীবন দৈর্ঘ ফসল, সরিষা ও গম -৩০ টি, উচ্চমূল্য ফসল উৎপাদন আদা/ হলুদ/পেঁয়াজ/রসুন- মূখী কচু (স্থানীয় উচ্চমূল্য)-২০ টি, কমিউনিটি বীজতলা -৪টি, রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে ধানের চারা রোপন- ১০ টি, পাইপ পদ্ধতিতে সেচ প্রদান-২০ টি, গুনগন মানসম্পন্ন দানা জাতীয় ফসলের বীজ উৎপাদন -৭ টি, ডাল জাতীয় ফসলের বীজ উৎপাদন -৯ টি, তেল জাতীয় ফসলের বীজ উৎপাদন -৯ টি প্রকল্প রয়েছে।

ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, ‘ আমরা প্রান্তিক কৃষকের মাঝে স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত চাষব্যবস্থা পৌঁছে দিতে পেরেছি। স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত চাষের বড় সুবিধা হলো এই প্রযুক্তির মাধ্যমে মূলত এসএমএস পাঠিয়ে কৃষকদের নানা বিষয়ে অবহিত করা হবে। বিশেষ করে ধানক্ষেতের যেকোনো সমস্যা কিংবা জমিতে কোন সময়ে সেচ প্রয়োজন, এমনকি কী পরিমাণ পানি দরকার-সেটিও জানিয়ে দেয়া হবে। এটি সম্পূর্ণ প্রযুক্তি নির্ভর হওয়ায় তৎক্ষণাৎ সমস্যার সমাধান পাওয়া যাবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২৯, ২০২৪ ৯:৫৪ পূর্বাহ্ন
পিরোজপুরে আমন চাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম
কৃষি বিভাগ

পিরোজপুর জেলায় এবার আমন চালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। চলতি বছরে আমন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ লক্ষ ২৮ হাজার ৯ শত ৩১ মেঃ টন নির্ধারণ করা হলেও উৎপাদন হয়েছে ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫ শত ০৭ মেঃ টন যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ হাজার ৫৭৬ মেঃ টন বেশি।
পিরোজপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে ২০২৩-২৪ খরিপ- ২ মৌসুমে হাইব্রীড, উফশী, স্থানীয় রোপা, স্থানীয় বোনা আমন মিলিয়ে ৬৫ হাজার ৬শত ১৪ হেক্টরে চূড়ান্ত চাষ হয়। ধান কর্তন এবং মাড়াই শেষে হাইব্রীড ৬৪৩ হেক্টরে চাল উৎপাদন হয় ২ হাজার ৩শত ৬৮ মে: টন। অনুরূপভাবে ১৩ হাজার ৩শত ১৩ হেক্টরে উফশী চাষ করে চাল পাওয়া গেছে ৩৭ হাজার ২০৩ মে: টন। স্থানীয় জাতের আমন ৪৯ হাজার ৮০৩ হেক্টরে চাষ করে চাল উৎপাদন হয়েছে ৯৫ হাজার ৬১৭ মে:টন। রোপা এবং বোনা আমন ১৮৫৫ হেক্টরে চাষ করে চাল পাওয়া গেছে ২ হাজার ৩১৯ মে:টন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ড. নজরুল ইসলাম সিকদার বাসসকে জানান কৃষি উপকরণ কৃষকের দোরগোড়ায় পৌছে যাওয়ায় এবং সহজলভ্য হওয়ায়, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং ঘূর্ণিঝড় বা জলোচ্ছাসসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের উপদেশ অনুযায়ী কৃষকরা ব্যবস্থা নেওয়ায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করা সম্ভব হয়েছে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অরুন রায় জানান, কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাগন মাঠে-মাঠে ঘুরে পাতামোড়ানো এবং পামরী পোকার দমনে আলোক ফাঁদ এবং পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহারের পরামর্শ দেয়। সে অনুযায়ী চাষীরা ব্যবস্থা গ্রহণ করায় সহজেই পোকা দমন ও বিস্তার রোধ সম্ভব হয়। এছাড়া বর্তমান সরকারের আন্তরিকতায় কৃষিতে শতভাগের কাছাকাছি যান্ত্রিকীকরণ হওয়ার ফলে কৃষি উৎপাদনের পরিমাণ ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং কৃষকরাও পূর্বের চেয়ে কৃষি কাজে উৎসাহিত হচ্ছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৮, ২০২৪ ৩:২১ অপরাহ্ন
ভাতের বিকল্প খাবার হতে পারে মিষ্টি আলু- বাকৃবি ভিসি
কৃষি বিভাগ

দীন মোহাম্মদ দীনুঃ স্বাস্থ্য সচেতনতা বিবেচনায় ধান বা ভাতের আহরণ কমিয়ে বিকল্প খাবারের চিন্তা করতে হবে। এক্ষেত্রে বাউ-৫ মিষ্টি আলু ভাতের একটি বিকল্প খাবার হতে পারে। কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের আয়োজনে ‘রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলাপমেন্ট অব বায়োফর্টিফাইড পটেটো এন্ড সুইট পটেটো ফর বাংলাদেশ এন্ড সাউথ এশিয়া’ প্রকল্পের মিষ্টি আলু উত্তোলন ও মাঠ পরিদর্শন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এমদাদুল হক চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি ১৭ জানুয়ারি ২০২৪ (বুধবার) সকাল এগারোটায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ব্রহ্মাপুত্র নদীর ওপারে চর নিলক্ষিয়ায় অবস্থিত প্রকল্প প্লটের সামনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় তিনি আরোও বলেন, বাউ-৫ মিষ্টি আলু বিটা-ক্যারোটিন এবং এন্থো সায়োনীন সমৃদ্ধ যা এন্টি ক্যান্সার হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও এজাতের আলু খরচ বিবেচনায় ধানের চেয়ে প্রায় তিনগুণ উৎপাদনশীল।

অনুষ্ঠানে প্রকল্পের পি.আই প্রফেসর ড. এ. বি. এম. আরিফ হাসান খান রবিন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৌলিতত্ত¡ ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের সাবেক প্রফেসর ড. এ. কে. এম. শামসুদ্দীন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মোঃ হারুন-অর-রশিদ, কৌলিতত্ত¡ ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ রাশেদ হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ময়মনসিংহ এর অতিরিক্ত পরিচালক ড. সুশান্ত কুমার প্রামানিক ও বাউরেসের সহযোগী পরিচালক প্রফেসর ড. চয়ন গোস্বামী।
উল্লেখ্য যে, মিষ্টি আলু উত্তোলন ও মাঠ পরিদর্শনকালে দেখা যায়, প্রতি ১০ স্কয়ার মিটার জমিতে ৩৩ কেজির বেশি বাউ-৫ মিষ্টি আলু উত্তোলন করা হয়েছে এবং যেখানে সর্বোচ্চ মিষ্টি আলুর ওজন পাওয়া যায় ১২৪২ গ্রাম। প্রকল্প পি.আই এর দেওয়া তথ্য মতে, এ আলু চাষে ভিটামিন-এ, সি, বিভিন্ন খনিজ উপাদানসহ বিটা-ক্যারোটিন এবং এন্থো সায়োনীন এর ঘাটতি পূরণ হবে এবং সেই সাথে কৃষকরা সাধারণ মিষ্টি আলুর তুলনায় প্রায় তিন গুণ লাভবান হবে। অনুষ্ঠানে সহযোগী ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আফরিনা মোস্তারি, জনসংযোগ ও প্রকাশনা দফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু এবং চর নিলক্ষিয়া ইউনিয়নের প্রায় ৪০ জন কৃষক উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৩, ২০২৪ ১১:১৬ পূর্বাহ্ন
গোপালগঞ্জে ৫,৩৪৫ হেক্টরে গম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ
কৃষি বিভাগ

গোপালগঞ্জে ৫ হাজার ৩৪৫ হেক্টরে গম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধারা হয়েছে ২২ হাজার ৪৪৯ টন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপ-পারচালক আঃ কাদের সরদার এ তথ্য জানিয়েছেন।

ওই কর্মকর্তা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) বলেন, মুকসুদপুর উপজেলার ৪ হাজার ২২৬ হেক্টর জমিতে , গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৪২৫ হেক্টর জমিতে, কাশিয়ানী উপজেলা ৪৭২ হেক্টর জমিতে, কোটালীপাড়া উপজেলার ১৩৭ হেক্টর জমিতে ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ৮৫ হেক্টর জমিতে গম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছরের নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে গোপালগঞ্জ জেলায় গম আবাদ শেষ হয়েছে। এখান থেকে অন্তত ২২ হাজার ৪৪৯ টন গম উৎপাদিত হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সঞ্জয় কুমার কুন্ডু বলেন, জেলার ৫ উপজেলায় গম আবাদ বৃদ্ধির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ৩ হাজার কৃষককে বিনামূল্যে প্রণোদনার বীজ-সার বিতরণ করা হয়েছে। প্রত্যেক কৃষককে ২০ কেজি করে গম বীজ, ১০ কেজি করে ডিএপি সার এবং ১০ কেজি করে এমওপি সার প্রদান করা হয়েছে। এসব বীজ-সার দিয়ে কৃষক ৩ হাজার বিঘা জমি আবাদ করেছেন। এ কারণে গোপালগঞ্জে গমের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলশ্রুতিতে এ জেলায় গমের উৎপাদন এ বছর বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তার বলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৪২৫ হেক্টর জমিতে গম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৭৫০ জন কৃষককে ১৫ হাজারা কেজি গম বীজ, ৭ হাজার ৫০০ কোজ ডিএপি সার ও ৭ হাজার ৫০০ কেজি ডিএপি সার দেওয়া হয়েছে। এসব গম বীজ ও সার দিয়ে কৃষক ৭৫০ বিঘা জমিতে গমের আবাদ করেছেন। সব মিলিয়ে কৃষক সদর উপজেলার ৪২৫ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ করেছেন।

গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বণগ্রামের কৃষক বালা মোল্লা (৫৬) বলেন, আগে গমে ব্লাস্ট রোগ হত। তাই গম আবাদ করে লস হত। গম আবাদ ছেড়েই দিয়েছিলাম। সরকার প্রণোদনার গম বীজ ও দিয়েছে। তাই কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল জাতের গম পেয়ে আবাদ করেছি। গত বছর হেক্টরে ৪.২ থেকে ৪.৫ টন ফলন পেয়েছিলাম । এসব গমে ব্লাস্ট রোগ নেই। তাই গমের অধিক ফলন পেয়ে লাভবান হয়েছিলাম। তাই এ বছর সরকারের প্রণোদনা পেয়ে ও নিজের খরচে ১ একর জমিতে গমের আবাদ করেছি। এ বছর ক্ষেতে গম ভালো দেখা যাচ্ছে। আশাকরি ফলন ভাল পাব।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ২, ২০২৪ ১:২০ অপরাহ্ন
গোপালগঞ্জে ৯ হাজার ৩৫ টন তেল জাতীয় ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ
কৃষি বিভাগ

ভোজ্য তেলের আমতদানী নির্ভরতা কমাতে গোপালগঞ্জে ৯ হাজার ৩৫ টন তেল জাতীয় ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এরমধ্যে ৬ হাজার ২ শ’ ২৩ টন সরিষা, ৪৮০ টন তিল, ৮২ টন সূর্যমুখী ও ২ হাজার ২শ’ ৫০ টন চিনা বাদাম উদপাদিত হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপ-পরিচালক আঃ কাদের সরদার বাসসকে বলেন, ৯ হাজার ৩৫ টন তেল ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে গোপালগঞ্জ জেলার ৫ উপজেলায় ৫ হাজার ৯শ’ ৮১ হেক্টর জমিতে তেল জাতীয় ফসল আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে ৪ হাজার ৯শ’ ৩৬ হেক্টর জমিতে সরিষা, ৪০৬ হেক্টর জমিতে তিল, ৫১ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী , ৫শ’৮৮ হেক্টর জমিতে চিনা বাদাম আবাদ করা হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, গত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে গোপালগঞ্জ জেলায় ৫ হাজার ৭শ’৪৩ হেক্টরে তেল জাতীয় ফসলের আবাদ করেন কৃষক। সেখান থেকে ৭ হাজার ৮শ’ ৩৫ টন তেল জাতীয় ফসল উৎপাদিত হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সঞ্জয় কুমার কুন্ডু বলেন, ভোজ্য তেলের আমতদানী নির্ভরতা কমাতে ও তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ বছর গোপালগঞ্জে ২৩৮ হেক্টের জমিতে তেল জাতীয় ফসলের আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। এতে জেলায় ১ হাজার ২শ’ টন তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। সরিষা আবাদে ৬ হাজার ২শ’ জন কৃষক, সূর্যমুখীতে ৫শ’ ৬০ জন কৃষক ও চিনা বাদাম আবাদে ৬শ’ ৮০ জন কৃষককে বিনামূল্যে কৃষি প্রণোদনার বীজ সার প্রদান করা হয়েছে। এসব বীজ-সার দিয়ে কৃষক ৭ হাজার ৪শ’৪০ বিঘা জমিতে তেল জাতীয় ফসলের আবাদ করেছেন। এ কারণে জেলায় তেল জাতীয় ফসলের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। আবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় তেল ফসলের উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের কৃষক রহমত শরীফ বলেন, বাজারে ভোজ্য তেলের দাম চড়া। গত বছর ১ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করেছিলাম । তাতে ১.৮ টন ফলন পেয়েছিলাম। এতে আমার ব্যাপক লাভ হয়েছির। এবছর আমি সরকারি প্রণোদনার বীজ-সার পেয়ে ১ হেক্টরে আগাম জাতের সরিষা করেছি। এখান থেকে এ বছর বাম্পার ফলন পাব। সরিষা আবাদ করে কলাই ফসলের তুলনায় আমার প্রায় দ্বিগুন টাকা লাভ হবে।

 

(বাসস)

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩ ২:৫৯ অপরাহ্ন
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে শুকনা বীজতলা তৈরিতে আগ্রহী পলাশবাড়ীর পৌরসভার কৃষক
কৃষি বিভাগ

বোরো ধানের শুকনা বীজতলা তৈরিতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন পলাশবাড়ী পৌরসভার কৃষকরা। ঘন কুয়াশা ও শীতজনীত রোগ থেকে রক্ষা পেতে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে এই প্রথম শুকনা বীজতলা তৈরী করেছেন।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শর্মিলা শারমিন জানান, শীতকালে বোরো বীজতলা নিয়ে কৃষকরা প্রতি বছরই নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হন। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে শুকনো বোরো বীজতলা তৈরিতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি। গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার পৌরসভা ব্লকের উপজেলার আমবাড়ী গ্রামের কৃষক মোঃ মিন্টু মিয়া জানান, তিনি ২৫ শতাংশ জমিতে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শর্মিলা শারমিন আপার পরামর্শে প্রথম শুকনা বীজতলা তৈরি করেছি। পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়ার কারণে শীতজনীত কোন রোগের আক্রমন নেই। মাত্র ৭ দিনে চারার বাড়বাড়তি অনেক ভাল।
পলিথিন ছাড়া সেচ,কাদার দরকার হযনা। মাত্র দুটা চাষ দিয়ে বেড করে চারা করা যায়। এতে তুলনামূলক ভাবে খরচ কম হয়। তার দেখে অনেক কৃষক শুকনা বীজতলা তৈরী করছেন। এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছাঃ ফাতেমা কাওসার মিশু জানান, এ পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করলে কোল্ড ইনজুরী থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তুলনামূলক ফলনও ভালো হয়।
শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩ ১১:৫০ পূর্বাহ্ন
টাঙ্গাইল মধুপুরে নৃ-গোষ্ঠির ঐতিহ্যবাহী বন আলু সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণে ভরপুর
কৃষি বিভাগ

বন আলু সংগ্রহ যেন নৃ-গোষ্ঠির সংসারের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ। মনের আনন্দে বা স্বাচ্ছন্দ্যে তারা তাদের দ্বিতীয় প্রধান বুনোখাদ্য আলু সংগ্রহ করতো। এসব আলু সিদ্ধ করে খেতো। সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণে ছিল ভরপুর। তাদের অন্যতম উৎসব ওয়ানগালায় সালজং দেবতা বা শস্য দেবতাকে উৎসর্গ করে বনআলু। কৃষ্টি-কালচার ও ঐতিহ্যের বন আলুর জুড়ি নেই। অতিথি কিংবা আত্মীয়-স্বজন এলে আপ্যায়নের জন্য সামনে দেয়া হতো বন আলু। এখনও বনে বিভিন্ন জাতের যত সামান্য পাওয়া যায়।
টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়ের শালবনের লাল মাটিতে ছিল হরেক প্রজাতির বুনো খাদ্য বন আলু। ছিল বুনোখাদ্যের সুবিশাল ভান্ডার। এই খাদ্যই ছিল গোটা জনপদের অভাবের সময়কার জীবন জীবিকার একটা উপাদান। এখন আর সেদিন নেই। নানাভাবে নানা কারণে প্রাকৃতিক বন ধ্বংস হওয়ায় বিলীন হচ্ছে অফুরন্ত বুনো খাদ্যের ভান্ডার। অবশিষ্ট যে বন টিকে আছে, তাতে আগের মতো নেই বন আলু।
ইতিহাস ঐতিহ্যখ্যাত টাঙ্গাইলের মধুপুর শালবন ছিল গভীর অরণ্যে ঘেরা। বনের চারপাশে ছিল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি গারো, মান্দিসহ অন্যান্যদের বসবাস। গারো সম্প্রদায়ের খামালরা (কবিরাজ) বনের নানা গাছগাছরা দিয়ে চিকিৎসা করতো। স্থানীয় বসতিরাও ভেষজ চিকিৎসা নিতো। অরণ্যচারী গারো সম্প্রদায়ের লোকেরা ভক্ষণ করতো বুনো বাহারি খাবার। বনের বিশাল খাদ্যভান্ডারে হতো তাদের অনেকেরই অন্নের জোগান। খারি গপ্পার নানা উপকরণ আহরণ হতো বন থেকেই। পুষ্টিগুণে ভরা বন আলু ছিল তাদের অভাবের সময়কার খাদ্যের মধ্যে অন্যতম নিয়ামক। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির গারোরা তাদের ভাষায় বন আলুকে থা’মান্দি বা থা’জং বলে থাকে। থা’মান্দি আচিক শব্দ। এর অর্থ বন আলু।
মধুপুর উপজেলার গায়ড়া, পীরগাছা, ধরাটি, মমিনপুর, জলছত্র, গাছাবাড়ি, ভুটিয়া ও চুনিয়াসহ বিভিন্ন গারো পল্লীতে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আবিমা অঞ্চলের গারোরা বন আলুকে তাদের গারো বা আচিক ভাষায় থা’মান্দি বা থা’জং বলে থাকে।
তাদের মতে, নৃ-গোষ্ঠির গারো সম্প্রদায়ের লোকেরাই মধুপুর শালবনে সর্ব প্রথম এসব বাহারি নানা জাতের আলুর সন্ধান পেয়েছিলেন। প্রাকৃতিক শালবনের মধুপুর, ঘাটাইল, শেরপুর, নেত্রকোনা, হালুয়াঘাটে এ আলু পাওয়া যেত। লালমাটির শালবনে প্রাকৃতিকভাবে এসব আলু জন্মায়। এ আলু ছাড়াও বনের অভ্যন্তরে পাওয়া যেত বাহারি রকমের জানা ও নাম না জানা অনেক ধরনের আলু। অরণ্যচারী গারোরা বনের চারপাশে বাস করার কারণে তারা এর প্রথম সন্ধান পান। এক সময় জুম চাষের কারণে এসব আলুর সন্ধান পেতে সহজ হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। ওই সময় ছনের ছোট ঘর বা মাচাং তুলে তারা থাকার জায়গা করতেন। ছাউনিতে বনের ছন আর বনের তারাই বাঁশ কিংবা ছোট-ছোট সরু আকারের ছোট গাছ দিয়ে সুন্দরভাবে বানাতেন ঘর। আগের দিনে খাবার সংকট হলেই যেতেন বনে। আধাবেলা আলু সংগ্রহ করলেই পরিবারের অন্নের যোগান হতো কয়েক দিনের।
তারা জানান, কার্তিক থেকে চৈত্র্য মাসে খাদ্যের জন্য তাদের অনেকেরই সংসারে অভাব থাকতো। এ সময়ে বনবাসীরা আলু তুলে খেতেন, ছুটতেন বনে। এভাবে চলতো তাদের খাবার যোগান। বনের নিচু জায়গাকে স্থানীয়ভাবে বাইদ বলে অভিহিত করে থাকেন গারোরা। এসব বাইদে ছিল প্রচুর ঝরণাধারা। ধান আবাদ ও খাবার পানি সংগ্রহ করতেন। হতো না তাদের পানিও জলের সংকট। তাদের উৎপাদিত ধানে চলত সংসার। বনের সবজি ও লতাপাতায় হতো সবজি তরকারি। ছিল না বিষ কিংবা হরমোনের বালাই। বন এলাকার গারোদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, এক সময় মধুপুরের এই বনে গাতি আলু, গারো আলু, পান আলু, গইজা আলু, দুধ আলু, শিমুল আলু, কাসাবা, ধারমচ আলুসহ বিভিন্ন ধরনের বন আলু পাওয়া যেত। এসব আলু তাদের প্রিয় খাবারের তালিকায় অন্যতম। এসব তথ্য বন এলাকা ঘুরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে।
অর্চনা নকরেক (৫০) বলেন, অনেকেই আবার স্থানীয়ভাবে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতো। এই আলু দূরের আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতেও পাঠানো হতো। বন আলুর বংশবিস্তারের জন্য আলু সংগ্রহের পর গাছগুলো আবার মাটিতে পুঁতে দিতেন গারোরা। আবার গাছ বেড়ে উঠতো। শাল-গজারিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের সঙ্গে লতার মতো জড়িয়ে থাকত। এ আলু কার্তিক-চৈত্রমাসে সবচেয়ে বেশি সংগ্রহ তোলা হতো। রোদে শুকিয়ে ঘরে তুলে রাখা হতো। প্রাকৃতিক বন কমে যাওয়ায় এখন আর আগের মতো আলু পাওয়া যায় না।
আচিক মিচিক সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক সুলেখা ম্রং বলেন, বছরের পর বছর সামাজিক বনায়নে আদা-কচুর মতো কৃষি ফসল করতে গিয়ে বন হারাচ্ছে তার ঐতিহ্য। বিদেশি প্রজাতির গাছ ভাবিয়ে তুলেছে প্রকৃতি ও পরিবেশকে। বিশাল অংশ থেকে বিদায় নিচ্ছে বহু প্রজাতির আলু, সবজি, ফল-ফসল, গুল্মলতা-পাতা। এজন্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির গারো সম্প্রদায় ও গড় এলাকার মানুষেরা পাচ্ছে না প্রাকৃতিক বুনো খাবার।
অঞ্জনা নকরেক (৪৮) বলেন, বউ হিসেবে তিনি লালমাটির এ বন এলাকায় এসেছেন প্রায় ৩০ বছর। এসেও দেখেছেন এ বনে নানা ধরনের আলু পাওয়া যেতো। নানা ধরনের শাক-সবজি পাওয়া যেতো। প্রাকৃতিক বন সংকুচিত হওয়ায় বুনো খাদ্য হারিয়ে যাচ্ছে।
আকবর হোসেন (৫০) বলেন, তাদের বাড়ির চারপাশে আগে প্রচুর আলু পাওয়া যেতো। বন থেকে আলু তুলে খেতো। আলুগুলো খেতেও স্বাদ। এখন বনে নেই আগের মতো আলু। প্রাকৃতিকভাবে প্রচুর শাক ও সবজি পাওয়া যেতো। বন কমে যাওয়ায় বনের ভেষজ, শাকসবজি, আলু বিভিন্ন বুনো খাদ্য হারিয়ে যাচ্ছে।
বৃহত্তর ময়মনসিহ ডেভেলাভমেন্ট কালচারাল ফোরামের সভাপতি অজয় এ মৃ জানায়, অভাবের সময় কার্তিক থেকে চৈত্র্য মাসে বনের আলু তোলে খেতেন। বর্তমানে প্রাকৃতিক বনে কমে সামাজিক বনায়ন বাড়ায় কমছে বন আলু। নৃ-গোষ্ঠি ছাড়া অন্য যারা আলু সংগ্রহ করেন তারা আলু তোলে আর গাছ লাগিয়ে দেয় না। ফলে কমছে বন আলু। খাদ্য হিসেবে বন আলু পুষ্টিগুণে ভরা। প্রাকৃতিক বন কমে যাওয়া, আলু উঠানোর পর গাছ পুনরায় না লাগানোর ফলে কমে যাচ্ছে বাহারি রকমের বন আলু।

 

(বাসস)

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop