২:২৫ পূর্বাহ্ন

বৃহস্পতিবার, ১ মে , ২০২৫
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : এপ্রিল ১৭, ২০২৫ ১০:০১ পূর্বাহ্ন
গরমে পোল্ট্রির যত্ন নিবেন যেভাবে
পোলট্রি

প্রাণীজ আমিষের বড় একটা অংশ আসে পোল্ট্রি শিল্প হতে। প্রায় অর্ধ কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা এই শিল্পের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। তাই এ শিল্পের সুদৃঢ় ভবিষ্যত চিন্তা করে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। গরম কাল এ পোলট্রি খামারের বিশেষ যত্ন না নিলে কমে যেতে পারে ব্রয়লারের ওজন বৃদ্ধি এবং লেয়ার খামারের ডিম সংখ্যা। সে কারণেই নিচের টিপসসমূহ খামারি ভাইদের খুবই কাজে লাগবে:

পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও এর প্রভাব: ঘর্মগ্রন্থি না থাকার কারণে মোরগ-মুরগির অতিরিক্ত গরম অসহ্য লাগে। এতে উত্পাদন ক্ষমতা ব্যাহত হয়। অতিরিক্ত তাপে এদের পানি গ্রহণ, শ্বাস-প্রশ্বাস, শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। অপরদিকে থাইরয়েড গ্রন্থির আকার, রক্তচাপ, নাড়ির স্পন্দন, রক্তে ক্যালসিয়ামের সমতা, খাদ্য গ্রহণ, শরীরের ওজন ও ডিমের উত্পাদন হ্রাস পায়। ১৫ হতে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এদের উত্পাদন সর্বোচ্চ। ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে প্রতি ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে শতকরা ৪ ভাগ হারে পানি গ্রহণ বৃদ্ধি পায়। ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার পর হতে ডিমের সংখ্যা না কমলেও প্রতি ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে ডিমের ওজন শতকরা এক ভাগ হারে কমে যায়। ২৬.৫ সেলসিয়াস ডিগ্রি তাপমাত্রার পর হতে মোরগ-মুরগির খাদ্যের রূপান্তর ক্ষমতা হ্রাস পায়। ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে প্রতি ডিগ্রি তাপ বৃদ্ধিতে ২ হতে ৪ শতাংশ খাবার গ্রহণ কমে যায়। ৩৬ হতে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা মোরগ-মুরগির জন্য অসহনীয় এবং ৩৮ ডিগ্রির পর মৃত্যু হার খুব বৃদ্ধি পায়।

তাপজনিত ধকল প্রতিরোধে করণীয়: খামারের আশে পাশে ছায়াযুক্ত বৃক্ষ রোপণ এবং ঘর পূর্ব-পশ্চিমে হওয়া বাঞ্চনীয়। তবে আধুনিক খামার ব্যবস্থাপনায় বায়োসিকিউরিটির কথা চিন্তা করে গাছপালা রোপণের প্রতি অনুত্সাহিত করা হয়ে থাকে। গরমে পোল্ট্রি শেডে প্রত্যক্ষ সূর্যালোক পরা যাবে না। অত্যধিক গরম প্রতিরোধে প্রয়োজনে শেডের ছাদে/বা টিনের চালায় দিনে দু’তিন বার পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। টিনের নিচে চাটাই/হার্ডবোর্ড দিয়ে সিলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। অনেক সময় মুরগি যখন হাঁ করে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয় তখন ঘরে সেপ্র মেশিন দিয়ে কুয়াশার মত করে পানি ছিটিয়ে দেওয়া যেতে পারে। পানির ড্রিংকার ও ফিডারের সংখ্যা বাড়াতে হবে। ঘন ঘন ড্রিংকারের পানি পাল্টাতে হবে। গরমে বাতাসের আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ার কারণে শেডের মেঝে অনেক সময় স্যাঁতসেঁতে হয়ে লিটার দ্রুত ভিজে যায়। ফলে রোগের আক্রমণও বাড়ে। সেজন্য প্রতিদিন সকালে ব্রয়লার শেডের লিটার উলোট-পালোট করা প্রয়োজন। লিটারে গুঁড়ো চুন ব্যবহার করলে খুব ভাল ফল পাওয়া যায়। শেড হতে শেডের দূরত্ব ৩০ ফুটের অধিক হলে ভাল হয়। শেডে মোরগ-মুরগির ঘনত্ব বেশি হলে তা কমিয়ে দিতে হবে। বাতাসের অবাধ চলাচল শেডের ভেতরের তাপমাত্রা শীতল রাখতে সাহায্য করবে এবং পোল্ট্রির জন্য ক্ষতিকর অ্যামোনিয়া গ্যাস মুক্ত রাখবে। শেডে স্টেন্ড ফ্যানের ব্যবস্থা করতে হবে।

গরমে পোল্ট্রি খামারে খাবার ব্যবস্থাপনা: ঠাণ্ডা ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে হবে। যেহেতু তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে এদের খাদ্য গ্রহণ কমে যায়, সেহেতু প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা মেটাতে ৮ হতে ১০ ভাগ শক্তি কমিয়ে প্রোটিন, খনিজ লবণ ও ভিটামিন বাড়িয়ে দিতে হবে। প্রতি লিটার পানিতে ১০-১২ গ্রাম গ্লুকোজ ও মুরগি প্রতি ১০ গ্রাম ভিটামিন সি পানির সঙ্গে মিশিয়ে দিলে ভাল ফল পাওয়া যায়। এছাড়া প্রাকৃতিক বিটেইনে ধনাত্মক ও ঋনাত্মক আছে যা কোষের মধ্যে পানি ধরে রাখতে সাহায্য করে। ফলে হিট স্ট্রোকের হাত থেকে এরা রক্ষা পায়। গরমে পোল্ট্রির অ্যামাইনো এসিডের চাহিদা বেড়ে যায়। বিটেইনে মিথাইল মূলক বিদ্যমান, যা মিথিওনিন ও কলিনের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে। গরমে প্রয়োজনে একদিনের বাচ্চার জন্য পানিতে আখের গুড়, ভিটামিন সি অথবা ইলেকট্রোলাইট যুক্ত স্যালাইন পানি দিতে হবে।

লেখক: ডা. সুমন তালুকদার (রুনু) , সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

শেয়ার করুন

প্রকাশ : এপ্রিল ১৫, ২০২৫ ৯:৫৫ পূর্বাহ্ন
মুরগিকে হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচানোর উপায়…
পোলট্রি

বর্তমান সময়ে মুরগি পালনে খামারীরা বেশ হিমসিম খাচ্ছেন । বিশেষ করে দিনের বেলা তাপমাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে প্রায় ৩৮-৪১ ডিগ্রি হয়ে যাচ্ছে। আর এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য পোলট্রি খামারিরা নানাবিধ সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছেন। প্রায় দেখা যায় যে ব্রয়লার এ ২৫-৩০ দিন বয়সে বা লেয়ার মুরগি দুপুর বেলায় খুব হাপাতে থাকে, হঠাৎ করে লাফ দিয়ে উঠে মারা যায়। খামারিরা এটাকে হিট স্ট্রোক নামেই জানেন।

এরকম আবহাওয়ায় খুব কম সময়ের ব্যবধানে একটি ১০০০ সেডে ২০০-৩০০ মুরগি মারা যাওয়ার অনেক রেকর্ড আছে। এ অবস্থায় পোল্ট্রি খামারীরা
বিটেইন, স্যালাইন, ভিটামিন সি ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকেন। অনেক সময় এসব প্রয়োগ করেও মৃত্যু হার কমানো সম্ভব হয় না। ফলে খামারীদের আর্থিক অপচয় ঘটে থাকে।

তবে কিছু আধুনিক টেকনোলজি আছে যা প্রয়োগ করে খামারে অতিরিক্ত গরমে মৃত্যু হারের পরিমান কমানোর পাশাপাশি বাড়তি খরচ ৮০-৯০% কমানো সম্ভব।

আসুন অত্যন্ত সহজ এ পদ্ধতি সম্পর্কে জানি
১.  পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল এর ব্যবস্থা করতে হবে।

২.  লিটারে গ্যাস রাখা যাবে না ( গ্যাস হলে স্টান ফ্যান এর ব্যবস্থা করুন )

৩.  লিটার তুলনা মুলক কম দিবেন ।

৪.  পরিমানের চেয়ে ঘরে মুরগি কম রাখুন।

৫.  পানিতে ভিটামিন জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

৬.  মুরগীর গায়ে পানি স্প্রে করে দিতে পারেন।

৭.  অল্প সময় পরপর পানি পরিবর্তন করুন।

৮.  টিনের চালে পাটের চট দিয়ে পানি স্প্রে করুন।

৯.  শেডের উপর ভিজা চট দিয়ে রাখলে এবং শেড এ সিলিং ফ্যান থাকলে শেড তাড়াতাড়ি ঠান্ডা হয়।

১০.  সকাল ১১ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত খাদ্য সরবরাহ বন্ধ রাখতে হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ১৮, ২০২৫ ১০:১৩ পূর্বাহ্ন
পোল্ট্রি খাতে কর্পোরেট নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করতে না পারলে প্রান্তিক খামারি থাকবে না
পোলট্রি

বাংলাদেশের পোল্ট্রি খাত দেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লক্ষাধিক প্রান্তিক খামারি, যারা স্বল্প পুঁজিতে ডিম ও মুরগি উৎপাদন করে মানুষের প্রোটিন চাহিদা পূরণে অবদান রাখছেন, এই খাতের মূল চালিকাশক্তি। কিন্তু কর্পোরেট গ্রুপগুলোর পরিকল্পিত আধিপত্য বিস্তারের কারণে পোল্ট্রি খাত আজ গভীর সংকটে পড়েছে।

কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো ফিড, ডে-ওল্ড চিক (ডিওসি), ওষুধ এবং বাজার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে একচেটিয়া আধিপত্য স্থাপন করছে, যা প্রান্তিক খামারিদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এছাড়া, কিছু অসাধু কর্মকর্তার দায়িত্ব অবহেলার কারণে পোল্ট্রি খাত আরও বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে। কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহযোগিতা করার নামে তারা এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে, যা প্রান্তিক খামারিদের অস্তিত্বকে বিপন্ন করছে।

বর্তমানে কর্পোরেট গ্রুপগুলোর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণের কারণে প্রান্তিক খামারিরা ন্যায্য বাজারমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। উৎপাদন খরচ ক্রমাগত বাড়ছে, অথচ বাজারে প্রতিযোগিতার অভাবে তারা তাদের পণ্যের জন্য ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। এর ফলে খামারিরা একে একে তাদের খামার বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন।

যদি এই অবস্থা অব্যাহত থাকে, দেশের ডিম ও মুরগির উৎপাদনে বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি হবে। কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে ডিম ও মুরগির দাম নিজেদের ইচ্ছেমতো নির্ধারণ করবে, যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে।

বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন দৃঢ়ভাবে মনে করে, দেশের পোল্ট্রি খাতকে রক্ষা করতে হলে প্রান্তিক খামারিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

এ জন্য আমাদের প্রস্তাব:

পোল্ট্রি বোর্ড গঠন : পোল্ট্রি খাতকে রক্ষা করতে হবে।

কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ রোধে দ্রুত কার্যকর নীতিমালা প্রণয়ন করা।

প্রান্তিক খামারিদের জন্য সহজ শর্তে জামানতবিহীন ঋণ, প্রযুক্তি এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

বাজারে দামের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং ফিড ও ডিওসির মূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা।

অসাধু কর্মকর্তাদের দায়িত্ব অবহেলা বন্ধে দায়িত্বশীল নজরদারি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

পোল্ট্রি খাত কেবল একটি শিল্প নয়; এটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা এবং অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। তাই এই খাতকে কর্পোরেট নিয়ন্ত্রণ থেকে রক্ষা করতে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। প্রান্তিক খামারিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা সুসংহত হবে এবং সাধারণ মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে।

 

শুভেচ্ছান্তে,
মোঃ সুমন হাওলাদার
সভাপতি, বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জানুয়ারী ৪, ২০২৫ ৩:৫০ অপরাহ্ন
সোনালি মুরগির খামারে ডিমের উৎপাদন বাড়াতে যা করবেন
পোলট্রি

সোনালি মুরগির খামারে ডিমের উৎপাদন বাড়ানোর কৌশল খামারিদের ভালোভাবে জানতে হবে। বর্তমান সময়ে ব্যাপকহারে মুরগির খামার গড়ে উঠেছে। খামারে অনেকেই সোনালি মুরগি পালন করে থাকেন। অনেকেই ডিম উৎপাদনের জন্য সোনালি মুরগি পালন করে থাকেন। খামারে লাভবান হওয়ার জন্য ডিম উৎপাদন বাড়ানো জরুরী।

সোনালি মুরগির খামারে ডিমের উৎপাদন বাড়ানোর কৌশলঃ
মুরগির খামার নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। খামারের ভেতরে যাতে স্যাঁতস্যাঁতে ভাব না সৃষ্টি হয়। খামারটি সব সময় শুকনো রাখার চেষ্টা করতে হবে।

সোনালি মুরগি পালনে ডিম উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য সবার আগে খাদ্য ব্যবস্থায় দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। খাদ্য প্রদানের ভিত্তিতে মুরগির ডিমের উৎপাদন নির্ভর করে থাকে। তাই সোনালি মুরগিকে সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্য প্রদান করতে হবে। সোনালি মুরগি পালনে ডিমের উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য লেয়ারের মতই আলোকসূচি মেনে চলতে হবে। এক্ষেত্রে আলোকসূচিতে কিছুটা কম-বেশি হতে পারে।

সোনালি মুরগির খামারে সব সময় আলো ও বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এজন্য খামারটি খোলামেলা স্থানে হলে ভালো হয়। খামারে লক্ষ্য করুন কোন মুরগিগুলো ডিম দিচ্ছে আর কোন গুলো দিচ্ছে না। যেগুলো থেকে ডিম পাচ্ছেন না সেগুলোকে আলাদাভাবে পরিচর্যা করতে হবে।

খামারে খাদ্যের পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। খামারের ভেতরে কিছু দূর পর পর পানির পাত্র দিতে হবে। খামারে নিয়মিত ভ্যাকসিন দিতে হবে। সময়মতো মুরগিকে কৃমিমুক্ত করতে হবে। মাঝে মাঝে মুরগির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ২৯, ২০২৪ ৬:০৪ অপরাহ্ন
ব্রয়লার পালনে সমস্যা ও করণিয়
পোলট্রি

ব্রয়লার লালন পালনে খামারি ভাইয়েরা মাঝে মধ্যেই নানা রকম সমস্যায় পড়েন। সময় মতো এসব সমস্যা কাটিয়ে ওঠার জন্য খামারিকে চৌকস না হয়ে উপায় নেই। একজন চৌকস খামারি হিসেবে ব্রয়লার পালনে যেসব বিষয়ে নজর রাখতে হবে চলুন সেটা জেনে নিই।

ব্রয়লার পালনে সমস্যা :
ব্রয়লার পালনে খামারি ভাইয়েরা যেসব সমস্যায় পড়েন সেগুলো হলো

১. গামবোরো রোগ,
২. ওজনে পার্থক্য (একই বয়সের বাচ্চা কিছু দিন পর ছোট-বড় হওয়া)
৩. সমন্বয়হীন বাজার ব্যবস্খা,
৪. খামারিদের ওষুধ ব্যবহারের প্রবণতা।

পামবোরো রোগ :
খামারি ভাইয়েরা গামবোরো রোগ নিয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন। গামবোরো ভাইরাসের কারণে হয়। এই রোগের কার্যকরী কোনো চিকিৎসা নেই। তবে সময়মতো টিকা দেয়া থাকলে রোগ হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। এই রোগের আক্রমণ যদি ঘটেই থাকে তাহলে উন্নত ব্যবস্খাপনার মাধ্যমে মৃত্যুহার কিছুটা কমানো যায়। এই রোগে আক্রান্ত মুরগি খাদ্য ও পানি খাওয়া বìধ করে দেয়, পালক উসকো-খুসকো দেখায়। সাদা পাতলা ও দুর্গìধযুক্ত পায়খানা করে। শরীর খুব দুর্বল হয়ে পড়ে, হাঁটতে পারে না। অবশেষে মারা যায়। তবে এই রোগে মৃত্যুহার ৩০ ভাগের বেশি হয় না। থাইয়ের গোশতে রক্তের ছিটা দেখা যায়। একই বয়সের বাচ্চা প্রথমে বড় এবং পরে ছোট হয়ে যায়, বাচ্চা কাটলে ভিতরে রক্তের ফোঁটা দেখা যায়।

চিকিৎসা :
এই রোগের কার্যকরী কোনো চিকিৎসা নেই। প্রতিরোধ ব্যবস্খাই একমাত্র উপায়। গামবোরো রোগ দেখা দিলে মুরগির ঘরে খাদ্য ও পানির পাত্র বাড়াতে হবে। কারণ এই রোগে খাবারের প্রতি অরুচি হওয়ায় না খেয়ে দুর্বল হয়ে মুরগি মারা যায়। তাই খাদ্য ও পানি পাত্র এমনভাবে দিতে হবে যাতে ঘুরলেই খাদ্য পায়। এই রোগে অরুচি, ডিহাইড্রেশন এবং মুরগি না খেয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে বলে পানিতে ভিটামিন সি, স্যালাইন ও গ্লুকোজ মিশিয়ে খাওয়ালে ভালো ফল পাওয়া যায়।

ছোট-বড় হওয়া :
প্রায়ই দেখা যায় একই ব্যাচে একই বয়সের ব্রয়লার বাচ্চা কিছু দিন পর কতকগুলো বেশ ছোট হয়ে গেছে। এর জন্য দৃশ্যমান অদৃশ্যমান অনেক কারণ জড়িত। যেমনন্ধ কৌলিকাত্ত্বিক কারণ, পরিবেশগত ও ব্যবস্খাপনাগত কারণ। দৃশ্যমান বা পরিবেশগত কারণের মধ্যে প্রথম থেকেই প্রয়োজনের তুলনায় কম খাদ্য ও পানির পাত্র থাকা। কারণন্ধ প্রথম সপ্তাহে বিশেষ করে এক-তিন দিন বয়স পর্যন্ত বাচ্চার চলাচল সীমিত থাকে এবং খাদ্য না চেনার কারণে খাদ্য খাওয়ায় তেমন প্রতিযোগিতা থাকে না। তাই এই সময়ে যেসব বাচ্চা এক বা দুই দিন খাদ্য ভালোভাবে খেতে পারে না সেগুলোই দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে পরে খাদ্য খাওয়া প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ে ছোট হয়ে যায়। পুরুষ বাচ্চার দৈহিক বৃদ্ধি স্ত্রী বাচ্চার চেয়ে ২০-২৫ ভাগ বেশি হওয়ায় স্ত্রী বাচ্চা ছোট হয়। মিশ্রিত গ্রেডের বাচ্চা এক সাথে পালন করা। বিভিন্ন বয়সের মুরগির ডিম এক সাথে ফুটানো হলে পুলের ডিমের বাচ্চা ছোট হয়। ব্রুডিং পিরিয়ডে কাáিক্ষত তাপ না পাওয়া।

প্রতিকার :
মিশ্রিত গ্রেডের বাচ্চা না কিনে একই এ বা বি গ্রেডের বাচ্চা কিনতে হবে। বাচ্চা ছোট-বড় দৃশ্যমান হওয়ার সাথে সাথে আলাদা করে বিশেষভাবে যত্ন নিতে হবে। কাáিক্ষত পরিমাণ খাদ্য ও পানির পাত্র দিতে হবে।

খামারিদের ওষুধ ব্যবহারের প্রবণতা :
রোগ চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম এ কথাটা মুরগি পালনের ক্ষেত্রে বেশি যুক্তিযুক্ত। অনেক খামারি জেনে না জেনে রোগ প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন ওষুধ খাওয়ান, যা মোটেও ঠিক না। অসুখ না হলে ওষুধ খাওয়ানো ঠিক নয়। রোগ প্রতিরোধের জন্য সময়মতো টিকা দিতে হবে। সুস্খ মুরগিকে রোগ প্রতিরোধের নামে ওষুধ খাওয়ানোর ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায় এবং বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। এমনকি রোগ প্রতিরোধ শক্তিও কমে যেতে পারে। তাই প্রতিরোধের জন্য ওষুধ না খাইয়ে সময় মতো টিকা দিতে হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ২১, ২০২৪ ১১:৪৫ অপরাহ্ন
ব্রিডার্স ফার্মগুলোর লোকসানের দাবি মিথ্যা: বিপিএ
পোলট্রি

মুরগির বাচ্চা ও খাদ্য উৎপাদনকারী সংগঠন ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের ৭৫০ কোটি টাকা লোকসানের দাবি মিথ্যা বলে মনে করছে প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। গতকাল শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফার্মগুলোর ৭৫০ কোটি টাকা লোকসানের কথা বললেও কোন হিসাব তুলে ধরেনি ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন। বরং মুরগির বাচ্চার সংকট এবং পোল্ট্রি ফিড ও মুরগির বাচ্চার অতিরিক্ত দামের কারণে প্রান্তিক খামারীদের ডিম ও মুরগির উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। যেখানে ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা উৎপাদন খরচ ২৮ থেকে ৩০ টাকা। সেখানে অযৌক্তিকভাবে তাদেরকে ব্রয়লার মুগরির বাচ্চার দর নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে ৫২ টাকা। লেয়ার মুরগির বাচ্চা সর্বোচ্চ ৫৭ টাকা সরকার নির্ধারণ করে দিলেও কোম্পানি সব সময় মুরগির বাচ্চার সংকট তৈরি করে অধিক দামে বিক্রয় করেছে। তারা লেয়ার মুরগির বাচ্চা ৭০ থেকে ৮০ টাকার নিচ্ছে বিক্রি করছে না। তবুও তারা লোকসানের গল্প শোনাচ্ছে এগুলো সরকারের খতিয়ে দেখা উচিত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিপিএ’র সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, কোম্পানিগুলো মিথ্যা লোকসানের গল্প বলে বাজারে বার বার সিন্ডিকেট করছে। সরকারের উচিৎ কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া। সরকারিভাবে ফিড মিল হ্যাচারি না থাকার কারণে ৮-১০টি কোম্পানির কাছে দেশের পোল্ট্রি খাত নির্ভরশীল। এ কারণে ডিম মুরগির বাজারে মাঝে মাঝে অস্থিরতা দেখা দেয়। এই কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর কাছে সরকার, প্রান্তিক খামারি ও ভোক্তা সবাই জিম্মি হয়ে পড়েছে।

সুমন হাওলাদার বলেন, সাভারে একটি ফিড মিল চালু করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত সেই ফিড মিল চালু করেনি সরকার। যতদিন সরকার নিজস্ব ফিড মিল এবং হ্যাচারি চালুর ব্যবস্থা না করবে, ততদিনে এই সিন্ডিকেট বন্ধ হবে না। একদিকে প্রতিষ্ঠানগুলো অতিরিক্ত মুনাফা করছে, অন্যদিকে লোকসানের গল্প শুনিয়ে সরকারের নজর ভিন্ন দিকে নিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি সরকার থেকে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছে। তাদের কারসাজির কারণে দেশের প্রান্তিক খামারীদের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় দেউলিয়া হচ্ছে খামারীরা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কর্পোরেট কোম্পানির মুরগির বাচ্চা উৎপাদনকারী ফার্মগুলো নিজেদের বিপুল মুনাফার তথ্য লুকিয়ে মিথ্যা লোকসানের দাবি তুলেছে। এর মাধ্যমে তারা সরকারকে বিভ্রান্ত এবং বাজারে একচেটিয়া প্রভাব বিস্তার করে প্রান্তিক খামারিদের নিঃস্ব করার অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। আগামীতে ফিড ও মুরগির বাচ্চার দাম বাড়ানোর পায়তারা করছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৫, ২০২৪ ১১:১৮ অপরাহ্ন
দাবি না মানলে ১ জানুয়ারি থেকে ডিম-মুরগি উৎপাদন বন্ধ: বিপিএ
পোলট্রি

প্রান্তিক পোলট্রি খামারিদের স্বার্থ রক্ষায়, করপোরেট কোম্পানির সিন্ডিকেট বন্ধ করার দাবিতে ১ জানুয়ারি থেকে সারা দেশে প্রান্তিক পোলট্রি খামারে ডিম–মুরগি উৎপাদন বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। আজ রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রান্তিক খামারিদের স্বার্থ রক্ষায় বিপিএর পক্ষ থেকে সরকারকে প্রান্তিক পোলট্রি শিল্পের এ খাতের সমস্যার সমাধানের দাবিগুলো বারবার বলার পরেও সরকার প্রান্তিক খামারিদের দিকে নজর দিচ্ছে না। উল্টো করপোরেট সিন্ডিকেটকে সহযোগিতা করছে সরকার। ডিম-মুরগির বাজারের স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে প্রান্তিক খামারিদের রক্ষায় সরকারের প্রতি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।’

এতে বলা হয়, ‘সরকারের কাছে বারবার দাবি জানানোর পরেও সরকার সিন্ডিকেটের ব্যবস্থা না নিয়ে তাদের সহযোগিতা করছে। প্রান্তিক সময় এদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে না, আমাদের দাবিগুলো সরকার যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করে, তবে আমরা ১ জানুয়ারি ২০২৫ থেকে দেশের সকল জেলা ও উপজেলায় প্রান্তিক খামার বন্ধের কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হব।’

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘দেশের পোলট্রিশিল্পে প্রান্তিক খামারিরা যাতে টিকে থাকতে পারে, বিপিএর পক্ষ থেকে সরকারের কাছে সে আবেদন করা হয়। বর্তমানে করপোরেট কোম্পানির আধিপত্য ও সিন্ডিকেটের কারণে দেশের মুরগি ও ডিমের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, যার ফলে প্রান্তিক খামারিরা ক্ষতির মুখে পড়ছে। এই সংকট দেশের খাদ্যনিরাপত্তা, কর্মসংস্থান এবং অর্থনীতির জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করছে।’

এতে আরও বলা হয়, ‘বর্তমানে প্রায় ৫০ লাখ লোকের কর্মসংস্থানও এই সংকটের কারণে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যদি সরকারের পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে পোলট্রি খাতে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে এবং প্রান্তিক খামারিরা তাদের উৎপাদন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে, যা জাতীয় অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।’

বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন সরকারের কাছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দাবি তুলে ধরেছে যা প্রান্তিক খামারিরা টিকিয়ে রাখতে, খাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে অত্যন্ত জরুরি। দাবিগুলো হলো—

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অক্টোবর ২১, ২০২৪ ৫:৫১ অপরাহ্ন
বাকৃবিতে বিশ্ব ডিম দিবস পালিত
পোলট্রি

কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনুঃ ডিমের গুণগত মান সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব ডিম দিবস ২০২৪ পালিত হয়েছে। এবারের প্রতিপাদ্য- ‘ডিমে পুষ্টি ডিমে শক্তি, ডিমে আছে রোগমুক্তি’।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের আয়োজনে দিবসটি পালন উপলক্ষে সোমবার (২১ অক্টোবর ২০২৪ ) সকাল ৯টা ৩০মিনিটে বাকৃবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাচ্চাদের ডিম খাওয়ানো হয় এবং একটি বর্নাঢ্য র‍্যালী পশুপালন অনুষদীয় গেইট থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাস পদক্ষিন শেষে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কেন্দ্রে এসে শেষ হয়।পরে দিবসটি পালনে পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. বাপন দে’র সভাপতিত্বে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কেন্দ্রে সকাল ১১.০০ টায় অনুষ্ঠিত ‘বিশ্ব ডিম দিবস ২০২৪ উদযাপন ‘অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ.কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া। এছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শহীদুল হক, পশু পালন অনুষদীয় ডীন প্রফেসর ড. মো: রুহুল আমীন, বাউরেস পরিচালক প্রফেসর ড. মো: হাম্মাদুর রহমান, ইউজিসি প্রফেসর ড. এস.ডি. চৌধুরী, ডীন ভেটেরিনারি অনুষদ প্রফেসর ড. মো: আবদুল আউয়াল ,শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও ডীন মাৎসবিজ্ঞান অনুষদ প্রফেসর ড. মো: রফিকুল ইসলাম সরদার। এছাড়াও অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ ব্রিডার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মো: মাহাবুবুর রহমান, বাংলাদেশ এনিম্যাল হাজবেন্ড্রি সোসাইটির প্রেসিডেন্ট মো: মাহাবুব হাসান।অনুষ্ঠানে তনুশ্রী চৌধুরীর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ড.সুবাস চন্দ্র দাস ,মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর ড. মো: শওকত আলী এবং কি-ডিসকাসেন্ট হিসেবে ইউজিসি প্রফেসর ড. এস.ডি. চৌধুরী বিস্তৃত আলোচনা করেন। ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ.কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া তার বক্তব্যে ডিমের উৎপাদন ও বিপণনের বিকাশে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট (আর এন্ড ডি) এর প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করে বলেন ” ডিম হচ্ছে সহলভ্য প্রকৃতপক্ষে একটি ব্যালেন্সড খাবার”। তিনি এই খাতে সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিবাদন জানন। এছাড়া তিনি স্কুলের বাচ্চাদের প্রতিদিনের টিফিনে অবশ্যই অন্ততপক্ষে ১টা ডিম রাখার পরামর্শ দেন। তিনি ডিমের উচ্চ খাদ্যমানকে কাজে লাগাতে সহনীয় মূল্যের মধ্যে ডিম এবং আলু-সবজিসহ একটি সুস্বাদু ডিমের মেন্যু প্যাক সবার জন্যে বাকৃবির টিএসসি কেন্টিনে রাখার ব্যাপারে ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা এবং পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের প্রতি আহবান জানান। তিনি তাঁর বক্তব্যে আমদানিকৃত ডিম নয় বরং ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পুর্নতা অর্জনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক , শিক্ষার্থী ,আমন্ত্রিত অতিথি ,কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন ।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অক্টোবর ১৭, ২০২৪ ৯:৫২ পূর্বাহ্ন
বৃহস্পতিবার কাপ্তান বাজারে ও শুক্রবার তেজগাঁও পাইকারি বাজারে সরকারি দামে ডিম বিক্রি শুরু
পোলট্রি

ডিমের বাজারের চলমান অস্থিরতা দূর করতে আজ থেকে শুরু হচ্ছে সরকারি দামে ডিম বিক্রির বিশেষ কার্যক্রম। রাজধানীতে অবস্থিত ডিমের প্রধান দুই পাইকারি বাজার- তেজগাঁও ও কাপ্তান বাজারে প্রতিদিন ২০ লাখ ডিম সরবরাহ করার মাধ্যমে ডিমের দামে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ঢাকায় এ কার্যক্রম শুরু করা হলেও সারাদেশেই এর প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ডিম উৎপাদনকারি দেশের অপেক্ষাকৃত বড় খামারগুলো এ ডিম সরবরাহ করবে বলে জানিয়েছে, এ কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক ‘বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল’ (বিপিআইসিসি)। বৃহস্পতিবার ভোর ৪টায় ‘জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর’ এর মহাপরিচালক জনাব মো. আলীম আখতার খান, রাজধানীর কাপ্তান বাজারে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে বিপিআইসিসি’র যুগ্ম-আহ্বায়ক জনাব মসিউর রহমান বলেন- সরকার কর্তৃক নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি করতে আমরা প্রতিশ্রæতিবদ্ধ। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও পোল্ট্রি স্টেকহোল্ডারগণ একত্রে বসে ডিমের যৌক্তিক উৎপাদন খরচসহ উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে ডিমের মূল্য নির্ধারণ করেছে। সাম্প্রতিক সময়ের পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিজনিত বন্যার কারণে দেশের প্রায় এক চতুর্থাংশ জেলার পোল্ট্রি খামারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলে দৈনিক প্রায় ৬০-৭০ লাখ ডিমের উৎপাদন কমে যায়; ফলশ্রæতি চাহিদা ও যোগানের মাঝে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হয়। জনাব মসিউর বলেন- দেশের এ সংকটকালীন সময়ে একটি মহল অতিরিক্ত মুনাফা লোটার চেষ্টা করলে ডিমের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। দেশ ও মানুষের বৃহত্তর স্বার্থে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাথে একাত্ম হয়ে পোল্ট্রি শিল্পের কেন্দ্রিয় সংগঠন ‘বিপিআইসিসি’ আগামী ১৫দিনের যে বিশেষ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে তাতে খামার থেকে প্রতিটি ডিম ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১২টাকায় পাওয়া যাবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, সরকারের বাজার তদারকি সংস্থা, ডিম উৎপাদনকারি বড় খামারি ও পাইকারি আড়ৎদারদের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠা- এ উদ্যোগকে সফল করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এ উদ্যোগের অপর একজন সমন্বয়ক ‘ব্রিডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ (বিএবি) এর সভাপতি জনাব মাহাবুবুর রহমান বলেন- খামার  থেকে ভোক্তার হাতে ডিম পৌঁছাতে ৭ হাত বদল হয়। সাম্প্রতিক সময়ে ডিমের দাম বৃদ্ধির কারণে বেশ কিছু এলাকায় কিছু অপেশাদার লোকজনও ডিমের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এতে হাত বদলের সংখ্যা আরও বেড়েছে। যত হাত বদল হবে, দাম ততই বাড়বে। তাই আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে- হাত বদলের সংখ্যা যতটা সম্ভব কমিয়ে আনা। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহায়তায় আমরা সে চেষ্টাই করছি।

বিপিআইসিসি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে- গত ১৫ অক্টোবর সকালে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে এবং দুপুরে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে পৃথক দু’টি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন সন্ধ্যাতেই বিপিআইসিসি’র উদ্যোগে ডিম উৎপাদনকারি বড় খামারিদের সাথে যোগাযোগ করে একটি অনলাইন সভা আহŸান করা হয়। পরেরদিন ১৬ অক্টোবর- বড় খামারি এবং তেজগাঁও এবং কাপ্তান বাজারের পাইকারি আড়ৎদারদের প্রতিনিধি সমন্বয়ে আরও একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়- যেখানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রাজধানী ঢাকায় ডিমের সরবরাহ ও বিপণন সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়। পরবর্তীতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সাথে আলোচনাসাপেক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ভোর থেকে রাজধানীর কাপ্তান বাজারে সরকারি দামে ডিম বিক্রির কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সময় স্বল্পতার কারণে তেজগাঁও পাইকারি বাজারে যথাসময়ে ডিমের চালান পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছেনা; তাই শুক্রবার থেকে তেজগাঁও বাজারের কার্যক্রম শুরু হবে। এ কার্যক্রমে ডিম সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- কাজী ফার্মস, ডায়মন্ড এগস লিঃ, প্যারাগন পোল্ট্রি, পিপলস পোল্ট্রি এন্ড হ্যাচারি, নারিশ পোল্ট্রি, ভিআইপি শাহাদত পোল্ট্রি, নর্থ এগ লিঃ, নাবিল এগ্রো, আর.আর.পি, রানা পোল্ট্রি, চাঁদ এগ্রো, কৃষিবিদ পোল্ট্রি, চিত্রা এগ্রো, আমান পোল্ট্রি এবং মেগা পোল্ট্রি। আশাকরা হচ্ছে- আফিল এগ্রো এবং প্রাণ এগ্রোও পরবর্তীতে এ কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : অক্টোবর ৬, ২০২৪ ৯:১৯ পূর্বাহ্ন
আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে মুরগির রোগ প্রতিরোধে যা করবেন
পোলট্রি

আমাদের দেশের ডিম ও মাংসের চাহিদা পূরণ করার জন্য এখন বিপুল সংখ্যক পোলট্রি তথা মুরগির খামার গড়ে উঠেছে। আবহাওয়া বা ঋতু পরিবর্তনজনিত কারণে খামারে অনেক সময় প্রভাব পড়ে থাকে। আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে মুরগির রোগ প্রতিরোধে করণীয় কি কি রয়েছে সেগুলো খামারিদের ভালোভাবে জেনে রাখা দরকার।

আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে মুরগির রোগ প্রতিরোধে করণীয়:
আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে খামারে বাচ্চা আসার সময় বক্স মর্টালিটি হয়। আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে ব্রুডিং অব্যবস্থাপনাজনিত কারণে মুরগির বাচ্চা মারা যায়।

লেয়ার মুরগির খামারের ক্ষেত্রে প্রোডাকশন কিছুটা কমে যায়। শীতকালের মত কম জায়গায় বেশি মুরগি পালনের ফলে মুরগির ওজন কম আসে।

খামারে পর্দা ব্যবস্থাপনার কারণে গ্যাস জমে এবং মুরগির চোখে এ্যামোনিয়া বার্ন হয়, এসসাইটিস দেখা দেয়। খামারে হঠাৎ মুরগির মড়ক দেখা দিতে পারে এবং খামারিদের লোকসান হয়ে থাকে।

আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত সমস্যায় করণীয়:
আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত সমস্যায় প্রথম এবং সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে বায়োসিকিউরিটিতে।খামারের মুরগি অসুস্থ হলে সব ঔষধ বন্ধ করে পরিস্কার পানি দেয়া এবং দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে চিকিৎসা প্রদান করতে হবে।

সঠিক ভাবে এলাকা উপযোগী ভ্যাকসিনেশন শিডিউল মেনে চলা।ব্রুডিংয়ের সময় মুরগীর অবস্থা বুঝে তাপ দেয়া। যেমন বাচ্চা ব্রুডারের নিচে গাদাগাদি করলে তাপ বাড়িয়ে দেয়া।

হঠাৎ অনেক বেশী মড়ক দেখা দিলে অতিদ্রুত পার্শ্ববর্তী ল্যাবে পরীক্ষা করানো।মুরগির খামারে সবসময় জীবাণুমুক্ত পানি সরবরাহ করতে হবে। রাতের বেলা কোন মতেই যেন পানি গ্যাপ না পড়ে তার দিকে খেয়াল রাখা। যদি গ্যাপ পড়ে যায় এবং পাত্র খালি হয়ে যায় তা হলে পরের বার পানি দেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই পানির পাত্র বাড়িয়ে দিতে হবে।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop