করোনায় কর্মহীন, করোনাতেই উদ্যোক্তা ছয় তরুণ
কৃষি বিভাগ
বৈশ্বিক মহামারি করোনা কর্মহীন করেছে অনেক মানুষকে। সুনামগঞ্জ শহরতলির লালপুর গ্রামের ছয় তরুণ তাদের উৎকৃষ্ট উদাহরণ। কর্ম হারিয়ে তারা ভাবতে থাকেন কী করা যায়। অল্প পুঁজি নিয়ে শুরু করেন সূর্যমুখী ফুলের চাষ। গড়ে ওঠে বাগান। নাম দিয়েছেন ‘স্বপ্ন ছোঁয়া সানফ্লাওয়ার গার্ডেন’। এখন তাদের বাগানে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়।
এই ছয় তরুণ হলেন- নজরুল ইসলাম, রেজাউল করিম, রুকনউদ্দিন, ফরহাদ আহমদ, পারভেজ আহমদ ও রুবেল হোসেন। প্রতিদিন প্রায় ছয় হাজার টাকা আয় করছেন আসা দর্শনার্থীদের কাছে টিকিট বিক্রি করে।
গৌরারং ইউনিয়নের লালপুর গ্রামের স্বাধীন বাজারের পাশে প্রায় ৬০ শতাংশ জমিতে এ বাগান করেছেন তারা। জমি তৈরি ও বীজ কেনা বাবদ খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। বাগানের ভেতরে বাচ্চাদের দোলনা ও অন্যান্য আসবাবপত্র দিয়ে সাজাতে খরচ হয়েছে আরও ২৫ হাজার টাকা। এই দুয়ের সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে তাদের ‘স্বপ্ন ছোঁয়া সানফ্লাওয়ার গার্ডেন’।
বাগানে প্রতিটি গাছে ফুল ফোটায় পুরো জমিজুড়ে তৈরি হয়েছে অভাবনীয় এক সৌন্দর্য। সূর্যের দিকে মুখ করে ফুটে থাকা ঘন ফুলের সমারোহ সৌন্দর্যপ্রেমী মানুষদের সড়ক থেকে বাগানে টেনে আনছে। পুরো বাগানে এখন হলুদের আগুন। শিমুল বাগান, শহীদ সিরাজ লেক, টাঙ্গুয়ার হাওর ও বারেকের টিলায় যাওয়ার রাস্তায় পড়ে বাগানটি। এসব জায়গায় ঘুরতে যাওয়া পর্যটকরা যাত্রাপথে বাগানে নেমে ছবি তুলছেন, সেলফি তুলছেন, ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
এদিকে সূর্যমুখী বাগানের ছবিতে ফেসবুক সয়লাব। অনেকেই নিজের বা বন্ধুবান্ধব সমেত ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন। এসব পোস্ট দেখে বাগান দেখতে আগ্রহী লোকের সংখ্যা বাড়ছে।
বাগানের মালিক ফরহাদ আহমদ জানালেন, তিনি ছোটখাটো একজন ব্যবসায়ী। করোনাকালে ব্যবসায় লোকসান হয়। কী করবেন তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান। তখন মাথায় এই পরিকল্পনা আসে। গেল বছরের ডিসেম্বরে জমি তৈরি করে সূর্যমুখী ফুলের বীজ বপন করেছেন। এখন বাগানের প্রায় সব গাছেই ফুল চলে এসেছে। দর্শনার্থীও আসছেন। আয়ও হচ্ছে। বাগানের ভেতরে বাচ্চাদের দোলনা, ছবি তোলার ফ্রেম, বসার ব্যবস্থাও রয়েছে। এখন ফুল ফুটেছে। অনেক দর্শনার্থী আসছেন। তাদের কাছ থেকে ১০ টাকা করে নিচ্ছেন। প্রতিদিন ২০০ থেকে ৬০০ দর্শনার্থী হয় বাগানে। এতে এক দিনে সর্বোচ্চ ছয় হাজার টাকা আয়ও হয়।